মযহারুল ইসলাম বাবলা
তিন মাস পার হলো, আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের অধীনে আছি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটেছে। অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছিল—সামাজিক সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে, আমাদের সামগ্রিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা ও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটেনি। অতীতের ধারাবাহিকতায় কেবল ক্ষমতারই পরিবর্তন ঘটেছে, আর কিছু নয়।
দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনিত ঘটেছে। দেশজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দাবিদাওয়া আদায়ের ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে। সড়ক অবরোধ করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ; সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত অবরোধ, সমাবেশ, ঘেরাও কর্মসূচি পালন; তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি নিয়ে পথ অবরোধ। মহাখালী এলাকায় চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে ট্রেনযাত্রীদের আহত করার নৃশংস ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইডিয়াল কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হানাহানিতে জন ও যান চলাচল স্থবির হওয়ার বিষয়টি যেন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেলের গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে দীর্ঘ চার-পাঁচ ঘণ্টায় দাঙ্গা পরিস্থিতি কোনোক্রমে নিয়ন্ত্রণ করেছে। শিক্ষার্থীদের একের পর এক দাবিদাওয়ার মাশুল দিতে হয়েছে পথচারী, যানবাহন, সাধারণ মানুষকে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবদান অপরিসীম। তিন মাস যাবৎ শ্রমিকদের মজুরি প্রদান না করার ফলে পরিবারসহ তাঁদের জীবনধারণ চরম সংকটের মুখে। বাধ্য হয়ে তাঁরা আশুলিয়ায় মজুরি প্রদানের দাবিতে পথে নামেন। ভবিতব্য এই যে অতীতের সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারও মালিকের পক্ষ অবলম্বন করে অসহায় শ্রমিকদের ওপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিলে একজন শ্রমিক নিহত এবং অনেক শ্রমিক আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বেশ কয়েকটি কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসে অগণিত শ্রমিক কর্মহীন বেকারে পরিণত হয়েছেন। পরিবার নিয়ে পথে বসেছে প্রচুর শ্রমজীবী মানুষ। দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর। নিজের জমাকৃত অর্থ বেশ কটি ব্যাংক প্রদান করতে পারছে না, অর্থের অভাবে। জনগণের জমাকৃত অর্থ ব্যাংক থেকে লোপাট হওয়ার ফলে অনেক ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ পথে বসে পড়েছেন। ওদিকে দেশের খাদ্য-পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে দেশজুড়ে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ।
দেশের সমষ্টিগত মানুষ খাদ্য-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার। অতীতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা চাউর ছিল। এখন তবে কিসের খপ্পরে আমরা পড়েছি? খাদ্য-পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানির নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে। খোদ ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি রোধে স্থানীয়রা রাত জেগে পাহারা দেওয়ার সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বেকারত্বের কারণে শহরজুড়ে চলছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও চীনের তৈরি অটো। এসবের চালকের নেই প্রশিক্ষণ এবং রিকশা-অটোর নেই কোনো প্রকার অনুমোদন। বেপরোয়া এই ব্যাটারিচালিত যানে অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রী এবং পথচারী। এসব যান চলাচলের ফলে শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আদালত সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে। এতে ব্যাটারিচালিত রিকশাশ্রমিকেরা পথে নেমে অবরোধ, সভা-সমাবেশ শুরু করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্রীর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর আদালত ওই যান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। গত আড়াই মাসে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোতে অজস্র মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। টনক নড়েছে জাবির ছাত্রীর প্রাণ হারানোর পর। আমরা নিশ্চয় এই বেপরোয়া অবৈধ যানমুক্ত চাই। তবে পাশাপাশি চাইব বন্ধ করে দেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোচালকদের বিকল্প কর্মসংস্থান। শেখ হাসিনা সরকার ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢাকা শহরে বন্ধের ঘোষণা দিয়েও আন্দোলনের তীব্রতায় আপস করতে বাধ্য হয়েছিল। ওই যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিল।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী আমরা প্রবল আশাবাদী হয়েছিলাম। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে আমাদের সামগ্রিক দুরবস্থা যেন পিছু ছাড়ছে না। আমরা কি তবে জলের কুমিরের কবল থেকে ডাঙার বাঘের খপ্পরে পড়ে গেলাম?
বর্তমান সরকারের আগমনের পর মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার ঘটেছিল। বেড়েছিল প্রত্যাশাও। মানুষ যেমন স্বাধীনতা চায়, তেমনি চায় মুক্তিও। বিগত ৫৩ বছর দেশে গণতন্ত্র অধরাই ছিল। মানুষের জীবন ছিল রাজতান্ত্রিক শাসনামলের প্রজাস্বরূপ। আমাদের দেশের প্রাতিষ্ঠানিক নামেই তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কেন? রাজা-প্রজা দেশের প্রাতিষ্ঠানিক নামে থাকলে তার প্রভাবমুক্ত হব কীভাবে? হওয়া আবশ্যক ছিল জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। কিন্তু প্রজা শব্দের ব্যবহারে রাজা ও প্রজার বিষয়টি যেমন রয়েছে আমাদের শাসক সংস্কৃতিতে, তেমনি দেশের সংবিধানেও। সংবিধানে লেখা আছে, এই রাষ্ট্রের মালিক রাষ্ট্রের জনগণ। আবার এটাও লেখা রয়েছে রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী সরকারের প্রধান নির্বাহীর।
আমরা শক্তিশালী রাষ্ট্রের বিপরীতে শক্তিশালী সমাজ চাইব। যাতে রাষ্ট্র সাবেকি আমলের ধারাবাহিকতায় জনগণের ওপর কর্তৃত্ব, নিপীড়ন করা থেকে বিরত থাকতে পারে। সমাজে এবং রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সব প্রকার বৈষম্যের অবসান ঘটাতে, সব মানুষের সম-অধিকার, সমমর্যাদার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। অর্থাৎ একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেমন চাই, তেমনি চাই জনগণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারও। তেমন আলামত কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। এই অন্ধকারের অবসান হয়ে আলো কবে আসবে?
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, নতুন দিগন্ত
তিন মাস পার হলো, আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের অধীনে আছি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটেছে। অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছিল—সামাজিক সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে, আমাদের সামগ্রিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা ও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটেনি। অতীতের ধারাবাহিকতায় কেবল ক্ষমতারই পরিবর্তন ঘটেছে, আর কিছু নয়।
দেশের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনিত ঘটেছে। দেশজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দাবিদাওয়া আদায়ের ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে। সড়ক অবরোধ করে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ; সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্রমাগত অবরোধ, সমাবেশ, ঘেরাও কর্মসূচি পালন; তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি নিয়ে পথ অবরোধ। মহাখালী এলাকায় চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে ট্রেনযাত্রীদের আহত করার নৃশংস ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইডিয়াল কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের হানাহানিতে জন ও যান চলাচল স্থবির হওয়ার বিষয়টি যেন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেলের গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে দীর্ঘ চার-পাঁচ ঘণ্টায় দাঙ্গা পরিস্থিতি কোনোক্রমে নিয়ন্ত্রণ করেছে। শিক্ষার্থীদের একের পর এক দাবিদাওয়ার মাশুল দিতে হয়েছে পথচারী, যানবাহন, সাধারণ মানুষকে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অবদান অপরিসীম। তিন মাস যাবৎ শ্রমিকদের মজুরি প্রদান না করার ফলে পরিবারসহ তাঁদের জীবনধারণ চরম সংকটের মুখে। বাধ্য হয়ে তাঁরা আশুলিয়ায় মজুরি প্রদানের দাবিতে পথে নামেন। ভবিতব্য এই যে অতীতের সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারও মালিকের পক্ষ অবলম্বন করে অসহায় শ্রমিকদের ওপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিলে একজন শ্রমিক নিহত এবং অনেক শ্রমিক আহত হন। আহতদের মধ্যে দুজন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বেশ কয়েকটি কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসে অগণিত শ্রমিক কর্মহীন বেকারে পরিণত হয়েছেন। পরিবার নিয়ে পথে বসেছে প্রচুর শ্রমজীবী মানুষ। দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর। নিজের জমাকৃত অর্থ বেশ কটি ব্যাংক প্রদান করতে পারছে না, অর্থের অভাবে। জনগণের জমাকৃত অর্থ ব্যাংক থেকে লোপাট হওয়ার ফলে অনেক ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ পথে বসে পড়েছেন। ওদিকে দেশের খাদ্য-পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে দেশজুড়ে চলছে নীরব দুর্ভিক্ষ।
দেশের সমষ্টিগত মানুষ খাদ্য-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার। অতীতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা চাউর ছিল। এখন তবে কিসের খপ্পরে আমরা পড়েছি? খাদ্য-পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এসেছে। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানির নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে। খোদ ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি-ডাকাতি রোধে স্থানীয়রা রাত জেগে পাহারা দেওয়ার সংবাদও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বেকারত্বের কারণে শহরজুড়ে চলছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও চীনের তৈরি অটো। এসবের চালকের নেই প্রশিক্ষণ এবং রিকশা-অটোর নেই কোনো প্রকার অনুমোদন। বেপরোয়া এই ব্যাটারিচালিত যানে অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রী এবং পথচারী। এসব যান চলাচলের ফলে শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আদালত সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে। এতে ব্যাটারিচালিত রিকশাশ্রমিকেরা পথে নেমে অবরোধ, সভা-সমাবেশ শুরু করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্রীর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর আদালত ওই যান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। গত আড়াই মাসে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোতে অজস্র মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। টনক নড়েছে জাবির ছাত্রীর প্রাণ হারানোর পর। আমরা নিশ্চয় এই বেপরোয়া অবৈধ যানমুক্ত চাই। তবে পাশাপাশি চাইব বন্ধ করে দেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোচালকদের বিকল্প কর্মসংস্থান। শেখ হাসিনা সরকার ব্যাটারিচালিত রিকশা ঢাকা শহরে বন্ধের ঘোষণা দিয়েও আন্দোলনের তীব্রতায় আপস করতে বাধ্য হয়েছিল। ওই যান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিল।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী আমরা প্রবল আশাবাদী হয়েছিলাম। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে আমাদের সামগ্রিক দুরবস্থা যেন পিছু ছাড়ছে না। আমরা কি তবে জলের কুমিরের কবল থেকে ডাঙার বাঘের খপ্পরে পড়ে গেলাম?
বর্তমান সরকারের আগমনের পর মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার ঘটেছিল। বেড়েছিল প্রত্যাশাও। মানুষ যেমন স্বাধীনতা চায়, তেমনি চায় মুক্তিও। বিগত ৫৩ বছর দেশে গণতন্ত্র অধরাই ছিল। মানুষের জীবন ছিল রাজতান্ত্রিক শাসনামলের প্রজাস্বরূপ। আমাদের দেশের প্রাতিষ্ঠানিক নামেই তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কেন? রাজা-প্রজা দেশের প্রাতিষ্ঠানিক নামে থাকলে তার প্রভাবমুক্ত হব কীভাবে? হওয়া আবশ্যক ছিল জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। কিন্তু প্রজা শব্দের ব্যবহারে রাজা ও প্রজার বিষয়টি যেমন রয়েছে আমাদের শাসক সংস্কৃতিতে, তেমনি দেশের সংবিধানেও। সংবিধানে লেখা আছে, এই রাষ্ট্রের মালিক রাষ্ট্রের জনগণ। আবার এটাও লেখা রয়েছে রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী সরকারের প্রধান নির্বাহীর।
আমরা শক্তিশালী রাষ্ট্রের বিপরীতে শক্তিশালী সমাজ চাইব। যাতে রাষ্ট্র সাবেকি আমলের ধারাবাহিকতায় জনগণের ওপর কর্তৃত্ব, নিপীড়ন করা থেকে বিরত থাকতে পারে। সমাজে এবং রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সব প্রকার বৈষম্যের অবসান ঘটাতে, সব মানুষের সম-অধিকার, সমমর্যাদার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। অর্থাৎ একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেমন চাই, তেমনি চাই জনগণতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারও। তেমন আলামত কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। এই অন্ধকারের অবসান হয়ে আলো কবে আসবে?
লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, নতুন দিগন্ত
‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ঐক্য ফোরামের নেতা ছিলেন। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বই লিখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে...
৬ ঘণ্টা আগেসদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে নানা মাত্রিক আলোচনার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন: ‘গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’
৬ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার নাছিয়াঘোনা এলাকায় যাওয়া-আসা করতে গেলে বোঝা যায় সেটি দুর্গম এলাকা। এ কারণেই সেখানে বসানো হয়েছিল ফাঁড়ি। কিন্তু ৫ আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশের থানা ও ফাঁড়িগুলোয় যখন আক্রমণ করা হচ্ছিল, তখন নুরু আলম নুরু নামের এক সন্ত্রাসীও সে সুযোগ নেন। তিনি পুলিশের ফাঁড়ি দখল করে...
৬ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি তাঁদের জনাকয়েক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের দুঃশাসনকালে বিএনপিসহ অন্য নেতাদের যেভাবে হেলমেট পরিয়ে জেলখানা থেকে আদালতে হাজির করা হতো, এখন আওয়ামী লীগের নেতাদের একই কায়দায়
১ দিন আগে