অবরুদ্ধ দেশের সাংবাদিকতা
জাহীদ রেজা নূর
‘জয় বাংলার’ জয়—১৯৭১ সালের ৫ মার্চ এটাই ছিল দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোনাম। সাংবাদিকতার ছাত্রমাত্রই জানেন, শিরোনাম তৈরিতে সিরাজুদ্দীন হোসেন ছিলেন অতুলনীয়। ৩ মার্চ প্রকাশিত ইত্তেফাক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম তিনি দিয়েছিলেন ‘বিক্ষুব্ধ নগরীর ভয়াল গর্জন’।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি কোনো দলের সম্পত্তি ছিল না। ১৯৭১ সালে এই স্লোগানই হয়ে উঠেছিল এই ভূখণ্ডের মানুষের প্রাণের স্লোগান। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নাইন মান্থস টু ফ্রিডম’ তথ্যচিত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের যে সমাবেশের ছবি দেখানো হয়, সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা সমস্বরে দুটি স্লোগান উচ্চারণ করেছিলেন, ‘জয় বাংলা’ ও ‘তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব।’ মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময়ই স্লোগানটি ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছে এই অঞ্চলে।
অবরুদ্ধ দেশে ‘জয় বাংলা’ শব্দ দুটি পত্রিকার পাতায় প্রকাশ করা ছিল অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু সেটাও কৌশলে ব্যবহার করেছিল ইত্তেফাক। সে কথাই বলব এখন।
প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হওয়ার পর তাদের কথা বলার জন্য একটি সংবাদপত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। মুক্তিসংগ্রাম, রণাঙ্গনের সংবাদ, উদ্বাস্তুদের অবস্থা, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্ব জনসমর্থন আদায়ের জন্য সরকারের মুখপত্র হিসেবে যে পত্রিকাটির জন্ম হয়, সেটির নাম ছিল ‘জয় বাংলা’। ২২/১ বালু হক্কাক লেন থেকে প্রকাশিত এই সাপ্তাহিকটির প্রকাশক ছিলেন আবদুল মান্নান এমএনএ। সম্পাদক ছিলেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। সেই পত্রিকাটিকে যখন পাকিস্তান সরকার ভারতীয় ছলনা বলে আখ্যায়িত করল, তখন কালবিলম্ব না করে ইত্তেফাকে তার শিরোনাম হলো, ‘জয় বাংলা পত্রিকা ভারত সরকারের নয়া ছলনা’। দেশের পাঠক বুঝে গেল, প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার ‘জয় বাংলা’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা চালাচ্ছে এবং তা বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে সহায়তা করছে।
মুক্ত দেশে বসে সাংবাদিকতা করা অপেক্ষাকৃত সহজ। তাতে ঘাতকের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আশঙ্কা কম। কিন্তু অবরুদ্ধ দেশে? কেন সাংবাদিকেরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন অবরুদ্ধ দেশে, সেটা তাঁদের সাহসী সাংবাদিকতা ও বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রতি অবিচল আস্থা দিয়েই বর্ণনা করা যায়। সে ব্যাপারে আলোকপাত করার আগে অবরুদ্ধ বাংলায় যে বিদেশি সাংবাদিকেরা এসেছিলেন, দেখে গেছেন জেনোসাইড, ফিরে গিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তাঁদের প্রতিবেদনগুলো নিয়েও কিছু কথা বলা দরকার।
২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের সময় বিদেশি সাংবাদিকদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর তাঁদের ঢাকা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই সাংবাদিকেরা উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনার খবর বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রচার করার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। ২৫ মার্চ ম্যাসাকার শুরু হওয়ার পর যখন সাংবাদিকদের বহিষ্কার করা হচ্ছিল, তখন সাইমন ড্রিং ও এপির ফটোসাংবাদিক মিশেল লঁরে লুকিয়ে থেকে গিয়েছিলেন ইন্টারকন্টিনেন্টালেই। ২৭ মার্চ সকালে সান্ধ্য আইন শিথিল হলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের খাবারবাহী গাড়িতে করে তাঁরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জেনোসাইডের ঘটনাবলি প্রত্যক্ষ করেন। তাঁদের পাকিস্তান থেকে বের করে দেওয়া হলেও সাইমন ড্রিংয়ের লুকানো তথ্য-উপাত্ত হাইজ্যাক করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। এরপর ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সাইমন ড্রিংয়ের প্রতিবেদনটি ছাপা হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায়। তারা বুঝতে পারে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ইয়াহিয়া সরকার জেনোসাইড ঘটিয়েছে। ড্রিংয়ের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বিদ্রোহ দমনে পাকিস্তানে ট্যাংক আক্রমণ: ৭০০০ নিহত, ঘরবাড়ি ভস্মীভূত’। সাইমন ড্রিং অবরুদ্ধ ঢাকায় বসেই এই নৃশংসতা দেখেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহ এবং অখণ্ড পাকিস্তানের’ নামে শুরু করা লড়াইয়ে ঢাকা এখন ধ্বংস এবং ভীতির নগরী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঠান্ডা মাথায় ২৪ ঘণ্টাব্যাপী অবিরাম শেল বর্ষণে সেখানে ৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে, ঢাকাসহ সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে সেনা অভিযানে ১৫ হাজার লোক নিহত হয়েছে।’ (অনুবাদ সম্পাদনা: দাউদ হোসেন, মূল সংগ্রহ ও সম্পাদনা: ফজলুল কাদের কাদেরী, বাংলাদেশ জেনোসাইড অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড প্রেস, সংঘ প্রকাশন, ২০০৩। )
অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীতে এসেছিলেন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। পূর্ব পাকিস্তানে কোনো জেনোসাইড ঘটেনি, সে কথা প্রমাণ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের আট সাংবাদিককে পূর্ব বাংলা সফরে এনেছিল পাকিস্তান সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, এই সাংবাদিকেরা তাঁদের লেখনীতে প্রমাণ করে দেবেন, পূর্ব বাংলায় সবকিছুই চলছে সাধারণ নিয়মে। কোনো গোলাগুলি, হত্যাকাণ্ড ঘটেনি এখানে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে এবং বলা হবে, জেনোসাইড-বিষয়ক সবকিছুই মিথ্যা প্রচারণা।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস তখন করাচির মর্নিং নিউজ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং সানডে টাইমস পত্রিকার পাকিস্তানের সংবাদদাতা। এপ্রিলের কোনো এক সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের আট সাংবাদিক পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। বাকি সাত সাংবাদিক সামরিক সরকারের অভিপ্রায় অনুযায়ী প্রতিবেদন লেখেন। ব্যতিক্রম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। ১৮ মে তিনি লন্ডনের সানডে টাইমস অফিসে এসে বলেন, পূর্ব বাংলায় যে ম্যাসাকার হয়েছে, তা নিয়েই লিখতে চান তিনি। বলতে চান, কেন ৫০ লাখ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবেদন লিখলে করাচিতে আর ফিরে যাওয়া যাবে না।
মাসকারেনহাস তখন একটা পথ বাতলে দিলেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে। তিনি করাচিতে যাবেন, স্ত্রী-সন্তানদের লন্ডনে পাঠিয়ে দেবেন, তারপর সুযোগ বুঝে নিজেও চলে আসবেন লন্ডনে। এরপর ছাপা হবে তাঁর লেখা প্রতিবেদন।
জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
‘জয় বাংলার’ জয়—১৯৭১ সালের ৫ মার্চ এটাই ছিল দৈনিক ইত্তেফাকের শিরোনাম। সাংবাদিকতার ছাত্রমাত্রই জানেন, শিরোনাম তৈরিতে সিরাজুদ্দীন হোসেন ছিলেন অতুলনীয়। ৩ মার্চ প্রকাশিত ইত্তেফাক পত্রিকার প্রধান শিরোনাম তিনি দিয়েছিলেন ‘বিক্ষুব্ধ নগরীর ভয়াল গর্জন’।
‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি কোনো দলের সম্পত্তি ছিল না। ১৯৭১ সালে এই স্লোগানই হয়ে উঠেছিল এই ভূখণ্ডের মানুষের প্রাণের স্লোগান। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নাইন মান্থস টু ফ্রিডম’ তথ্যচিত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের যে সমাবেশের ছবি দেখানো হয়, সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা সমস্বরে দুটি স্লোগান উচ্চারণ করেছিলেন, ‘জয় বাংলা’ ও ‘তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব।’ মুক্তিযুদ্ধের গোটা সময়ই স্লোগানটি ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছে এই অঞ্চলে।
অবরুদ্ধ দেশে ‘জয় বাংলা’ শব্দ দুটি পত্রিকার পাতায় প্রকাশ করা ছিল অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু সেটাও কৌশলে ব্যবহার করেছিল ইত্তেফাক। সে কথাই বলব এখন।
প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হওয়ার পর তাদের কথা বলার জন্য একটি সংবাদপত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। মুক্তিসংগ্রাম, রণাঙ্গনের সংবাদ, উদ্বাস্তুদের অবস্থা, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্ব জনসমর্থন আদায়ের জন্য সরকারের মুখপত্র হিসেবে যে পত্রিকাটির জন্ম হয়, সেটির নাম ছিল ‘জয় বাংলা’। ২২/১ বালু হক্কাক লেন থেকে প্রকাশিত এই সাপ্তাহিকটির প্রকাশক ছিলেন আবদুল মান্নান এমএনএ। সম্পাদক ছিলেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। সেই পত্রিকাটিকে যখন পাকিস্তান সরকার ভারতীয় ছলনা বলে আখ্যায়িত করল, তখন কালবিলম্ব না করে ইত্তেফাকে তার শিরোনাম হলো, ‘জয় বাংলা পত্রিকা ভারত সরকারের নয়া ছলনা’। দেশের পাঠক বুঝে গেল, প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার ‘জয় বাংলা’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা চালাচ্ছে এবং তা বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে সহায়তা করছে।
মুক্ত দেশে বসে সাংবাদিকতা করা অপেক্ষাকৃত সহজ। তাতে ঘাতকের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আশঙ্কা কম। কিন্তু অবরুদ্ধ দেশে? কেন সাংবাদিকেরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন অবরুদ্ধ দেশে, সেটা তাঁদের সাহসী সাংবাদিকতা ও বাংলাদেশ আন্দোলনের প্রতি অবিচল আস্থা দিয়েই বর্ণনা করা যায়। সে ব্যাপারে আলোকপাত করার আগে অবরুদ্ধ বাংলায় যে বিদেশি সাংবাদিকেরা এসেছিলেন, দেখে গেছেন জেনোসাইড, ফিরে গিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তাঁদের প্রতিবেদনগুলো নিয়েও কিছু কথা বলা দরকার।
২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের সময় বিদেশি সাংবাদিকদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর তাঁদের ঢাকা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই সাংবাদিকেরা উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনার খবর বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রচার করার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন। ২৫ মার্চ ম্যাসাকার শুরু হওয়ার পর যখন সাংবাদিকদের বহিষ্কার করা হচ্ছিল, তখন সাইমন ড্রিং ও এপির ফটোসাংবাদিক মিশেল লঁরে লুকিয়ে থেকে গিয়েছিলেন ইন্টারকন্টিনেন্টালেই। ২৭ মার্চ সকালে সান্ধ্য আইন শিথিল হলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের খাবারবাহী গাড়িতে করে তাঁরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জেনোসাইডের ঘটনাবলি প্রত্যক্ষ করেন। তাঁদের পাকিস্তান থেকে বের করে দেওয়া হলেও সাইমন ড্রিংয়ের লুকানো তথ্য-উপাত্ত হাইজ্যাক করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। এরপর ১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সাইমন ড্রিংয়ের প্রতিবেদনটি ছাপা হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায়। তারা বুঝতে পারে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ইয়াহিয়া সরকার জেনোসাইড ঘটিয়েছে। ড্রিংয়ের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বিদ্রোহ দমনে পাকিস্তানে ট্যাংক আক্রমণ: ৭০০০ নিহত, ঘরবাড়ি ভস্মীভূত’। সাইমন ড্রিং অবরুদ্ধ ঢাকায় বসেই এই নৃশংসতা দেখেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আল্লাহ এবং অখণ্ড পাকিস্তানের’ নামে শুরু করা লড়াইয়ে ঢাকা এখন ধ্বংস এবং ভীতির নগরী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঠান্ডা মাথায় ২৪ ঘণ্টাব্যাপী অবিরাম শেল বর্ষণে সেখানে ৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মনে হচ্ছে, ঢাকাসহ সব মিলিয়ে এ অঞ্চলে সেনা অভিযানে ১৫ হাজার লোক নিহত হয়েছে।’ (অনুবাদ সম্পাদনা: দাউদ হোসেন, মূল সংগ্রহ ও সম্পাদনা: ফজলুল কাদের কাদেরী, বাংলাদেশ জেনোসাইড অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড প্রেস, সংঘ প্রকাশন, ২০০৩। )
অবরুদ্ধ ঢাকা নগরীতে এসেছিলেন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। পূর্ব পাকিস্তানে কোনো জেনোসাইড ঘটেনি, সে কথা প্রমাণ করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানের আট সাংবাদিককে পূর্ব বাংলা সফরে এনেছিল পাকিস্তান সরকার। উদ্দেশ্য ছিল, এই সাংবাদিকেরা তাঁদের লেখনীতে প্রমাণ করে দেবেন, পূর্ব বাংলায় সবকিছুই চলছে সাধারণ নিয়মে। কোনো গোলাগুলি, হত্যাকাণ্ড ঘটেনি এখানে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হবে এবং বলা হবে, জেনোসাইড-বিষয়ক সবকিছুই মিথ্যা প্রচারণা।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস তখন করাচির মর্নিং নিউজ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং সানডে টাইমস পত্রিকার পাকিস্তানের সংবাদদাতা। এপ্রিলের কোনো এক সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের আট সাংবাদিক পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। বাকি সাত সাংবাদিক সামরিক সরকারের অভিপ্রায় অনুযায়ী প্রতিবেদন লেখেন। ব্যতিক্রম ছিলেন অ্যান্থনি মাসকারেনহাস। ১৮ মে তিনি লন্ডনের সানডে টাইমস অফিসে এসে বলেন, পূর্ব বাংলায় যে ম্যাসাকার হয়েছে, তা নিয়েই লিখতে চান তিনি। বলতে চান, কেন ৫০ লাখ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবেদন লিখলে করাচিতে আর ফিরে যাওয়া যাবে না।
মাসকারেনহাস তখন একটা পথ বাতলে দিলেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে। তিনি করাচিতে যাবেন, স্ত্রী-সন্তানদের লন্ডনে পাঠিয়ে দেবেন, তারপর সুযোগ বুঝে নিজেও চলে আসবেন লন্ডনে। এরপর ছাপা হবে তাঁর লেখা প্রতিবেদন।
জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মার্চ মাস চলছে। এখনো লাখ লাখ শিক্ষার্থী তাদের সম্পূর্ণ পাঠ্যপুস্তক পায়নি। এটিকে যদি আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থা না বলি, তাহলে আর কোনটাকে বলব? শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। প্রথম দিকে আমরা দেখলাম বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সমন্বয়কদের নামে হেনস্তা করা হচ্ছে।
২ মিনিট আগেপ্রবীণ বয়সে অনেকের প্রয়োজন ফুরিয়ে আসে এবং গুরুত্ব কমতে থাকে। দীর্ঘ জীবনলাভের মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠেন। সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে ভালো লাগে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের চোখের সামনে দেখলে জীবনের নানা চড়াই-উতরাইয়ের কথা মনে পড়ে।
৮ মিনিট আগেআন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন প্রকাশিত পত্রিকায় যদি পড়তে হয় ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তাহলে দিবসটির মূল প্রতিপাদ্যই ম্লান হয়ে পড়ে। ঘটনাটির নৃশংসতা বিবেচনা করুন। মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে এসেছে ৮ বছর বয়সী অভয়া (কল্পিত নাম)।
১১ মিনিট আগেবাংলাদেশের রাজনীতি রাজনৈতিক নেতাদের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। আগে দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ক্রাইসিসের সময় সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতা দখল করত। এ সময়ের অন্তর্বর্তী সরকারও সেনাবাহিনীর সরকার না।
১ দিন আগে