সম্পাদকীয়
শওকত ওসমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে লিখেছিলেন, ‘আর তো কিছু শোনার প্রয়োজন করে না।’ ঘাতকদের উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদীরা ঘাতক খুঁজে পায় তৃতীয় বিশ্বের সামাজিক নর্দমা থেকে!’ লিখেছিলেন, ‘এমন ফেরেবের গর্তে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চলে গেলেন বড় চড়া দাম দিয়ে। দেশপ্রেমের অভাব থাকলে তিনি সাম্রাজ্যবাদের শিকার হতেন না।’
‘বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশ!’ একজন লেখকের মনের তোলপাড় বুঝতে হলে শওকত ওসমানের ওই সময়কার লেখা শব্দাবলির দিকে চোখ রাখতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তিনি লিখেছেন, ‘বজ্রাহত। বসে থাকি। পায়চারি করি। মাথার ভেতর নানা দাপাদাপি।...ইতিহাস কোথায় নিয়ে চলেছে আমাদের?’ ১৮ আগস্ট লেখেন, ‘হেথা নয় অন্য কোনোখানে!’ ফিরে এলেন রবীন্দ্রনাথ। না এইভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে পারব না।...ঘাতকেরা গদি রক্ষায় মগ্ন। ওদের বেতার ভাষণ আমি আর শুনি না।’
কয়েকটি বিষণ্ণ দিন কাটিয়ে এরপর কলকাতায় চলে গেলেন তিনি। সেখানে গিয়ে অনিদ্রা হলো। কদিন ঘুমাতে পারলেন না। ঢাকার রাজনৈতিক সংবাদ জানার জন্য ব্যাকুল থাকলেন। ডায়েরি লেখা কমে গেল। ২২ অক্টোবর রাতে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দুরন্ত বন্যার মধ্যে জল–প্রান্তর হেঁটে পার হচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু হেঁকে বলছেন, ‘ওইখানে আশ্রয় নিতে হবে...ওই যে ডাঙ্গা...তাহলেই নিরাপদ।’
স্রোতের শব্দ শোনা যাচ্ছে, শোনা যাচ্ছে জনতার কোলাহল। বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘এগোও, এগোও’...।
বঙ্গবন্ধু আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিলেন শওকত ওসমানকে। এ কারণেই বাস্তব আর স্বপ্নের জগতে তিনি খুঁজে বেড়াতে থাকেন বঙ্গবন্ধুকে।
এরপর ৫ নভেম্বর খবর পেলেন জেলহত্যার। প্রথমে শুনলেন তিনজনের কথা। নজরুল ইসলামও যে খুনের শিকার হয়েছেন, সেটা প্রথমে শোনেননি। রেডিওতে সেই খবর শুনে জানলেন চারজনের কথা। বুঝলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সব বড় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই কষ্ট জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আচ্ছন্ন করে রেখেছিল শওকত ওসমানকে।
সূত্র: শওকত ওসমান, উত্তরপর্ব মুজিবনগর,
পৃষ্ঠা: ১৩, ১৭, ২৮
শওকত ওসমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে লিখেছিলেন, ‘আর তো কিছু শোনার প্রয়োজন করে না।’ ঘাতকদের উদ্দেশে লিখেছিলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদীরা ঘাতক খুঁজে পায় তৃতীয় বিশ্বের সামাজিক নর্দমা থেকে!’ লিখেছিলেন, ‘এমন ফেরেবের গর্তে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চলে গেলেন বড় চড়া দাম দিয়ে। দেশপ্রেমের অভাব থাকলে তিনি সাম্রাজ্যবাদের শিকার হতেন না।’
‘বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশ!’ একজন লেখকের মনের তোলপাড় বুঝতে হলে শওকত ওসমানের ওই সময়কার লেখা শব্দাবলির দিকে চোখ রাখতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তিনি লিখেছেন, ‘বজ্রাহত। বসে থাকি। পায়চারি করি। মাথার ভেতর নানা দাপাদাপি।...ইতিহাস কোথায় নিয়ে চলেছে আমাদের?’ ১৮ আগস্ট লেখেন, ‘হেথা নয় অন্য কোনোখানে!’ ফিরে এলেন রবীন্দ্রনাথ। না এইভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে পারব না।...ঘাতকেরা গদি রক্ষায় মগ্ন। ওদের বেতার ভাষণ আমি আর শুনি না।’
কয়েকটি বিষণ্ণ দিন কাটিয়ে এরপর কলকাতায় চলে গেলেন তিনি। সেখানে গিয়ে অনিদ্রা হলো। কদিন ঘুমাতে পারলেন না। ঢাকার রাজনৈতিক সংবাদ জানার জন্য ব্যাকুল থাকলেন। ডায়েরি লেখা কমে গেল। ২২ অক্টোবর রাতে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দুরন্ত বন্যার মধ্যে জল–প্রান্তর হেঁটে পার হচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু হেঁকে বলছেন, ‘ওইখানে আশ্রয় নিতে হবে...ওই যে ডাঙ্গা...তাহলেই নিরাপদ।’
স্রোতের শব্দ শোনা যাচ্ছে, শোনা যাচ্ছে জনতার কোলাহল। বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘এগোও, এগোও’...।
বঙ্গবন্ধু আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিলেন শওকত ওসমানকে। এ কারণেই বাস্তব আর স্বপ্নের জগতে তিনি খুঁজে বেড়াতে থাকেন বঙ্গবন্ধুকে।
এরপর ৫ নভেম্বর খবর পেলেন জেলহত্যার। প্রথমে শুনলেন তিনজনের কথা। নজরুল ইসলামও যে খুনের শিকার হয়েছেন, সেটা প্রথমে শোনেননি। রেডিওতে সেই খবর শুনে জানলেন চারজনের কথা। বুঝলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সব বড় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। এই কষ্ট জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আচ্ছন্ন করে রেখেছিল শওকত ওসমানকে।
সূত্র: শওকত ওসমান, উত্তরপর্ব মুজিবনগর,
পৃষ্ঠা: ১৩, ১৭, ২৮
তথ্যের অফুরন্ত ভান্ডার থাকা সত্ত্বেও আজ লেখাটির ইতি টানব। আশা করব, ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মের কেউ একজন আমার হাত থেকে রিলে রেসের ব্যাটনটি তুলে নেবেন এবং ইতিহাসের এই স্বল্প আলোকপাত করা বিষয়টি নিয়ে গভীর গবেষণা করবেন।
১৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের ইতিহাসে বিজয় দিবস এক অনন্য দিন। স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সব দিন সমান গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিজয় দিবস সবচেয়ে বেশি গৌরবের। কেন জানি না, দিনটি তেমনভাবে উদ্যাপিত হয় না। তেমন আলোড়নও দেখি না, যা সত্যিকার অর্থে ছিল বিজয়ের প্রাপ্য। অথচ আমি এমন দুজন বিদেশির কথা জানি, যাঁরা আমার সঙ্গে...
১৭ ঘণ্টা আগেবিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রতিবছর উদ্যাপনের যেমন উদ্যোগ-আয়োজন দেখা যায়, এবার তেমন দেখা যায়নি। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়েছে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল কি সত্যি আমাদের চিন্তাচেতনায় বড় পরিবর্তন এনেছে? গণতন্ত্রের ঢং দেখিয়ে টানা ক্ষমতায় থাকা শাসকগোষ্ঠীকে পরাভূত করা নিশ্চয়ই গৌরবের। কিন্তু সে গৌরব কি...
১৭ ঘণ্টা আগে১৯ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কে এক মাতাল চালকের গাড়ির ধাক্কায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহত হন। আহত হন মেহেদী হাসান খান ও অমিত সাহা নামের বুয়েটের সিএসই বিভাগের আরও দুই শিক্ষার্থী। মেহেদী রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এবং অমিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ
১৭ ঘণ্টা আগে