সম্পাদকীয়
পটুয়াখালীর সিনেমা হলগুলো দর্শক পাচ্ছে না। লকডাউনের পুরো সময়ই সেগুলো বন্ধ ছিল। এখনো দর্শক হবে না ভেবে খোলার ভরসা পাচ্ছেন না হলমালিকেরা। একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে দেখা যায়, যেকোনো বড় আন্দোলনে রাজনীতির সঙ্গী হয় সংস্কৃতি। রাজনীতি ও সংস্কৃতির মিলনেই আন্দোলন দৃঢ়তা পায়, ব্যঞ্জনা পায়। নিকট অতীতে ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি ঋজু হয়েছে। বাঙালি, বিশেষ করে বাঙালি মুসলমান সে সময় তার আত্মপরিচয় জানার চেষ্টা করেছে। ভিনদেশি লেবাস শরীর থেকে সরিয়ে নিজের অতীত গৌরব নিয়ে গবেষণা করেছে। নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে ভিন্ন সংস্কৃতির মিলনের প্রয়াস পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সংস্কৃতির প্রকাশমাধ্যমগুলোয় অনেক কাজ হয়েছে। এর একটি চলচ্চিত্র। একটা সময় ঢাকায় নির্মিত চলচ্চিত্র উপমহাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া শুরু করেছিল। মেধাবী মানুষেরা চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
সাংস্কৃতিকভাবে রুচিহীনতার অনেক কারণ রয়েছে, তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পালাবদল হয়েছিল, তাকে সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের বড় একটা দায় নিতে হবে। সূক্ষ্মভাবে এ সময় বিজাতীয় সংস্কৃতি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছিল আমাদের চলমান সংস্কৃতির শরীরে। আর যাত্রার মতো লোক-সংস্কৃতিকে নষ্ট করা হচ্ছিল প্রিন্সেসদের নামিয়ে। এই সংস্কৃতিহীনতার প্রকাশ ঘটছিল চলচ্চিত্রেও। কাহিনি বা অভিনয় দিয়ে যতটা, তার চেয়ে বেশি ভ্যাম্প চরিত্রগুলোকে দিয়ে অশ্লীল অভিনয় করিয়ে দর্শক-রুচিকে প্রভাবিত করা হয়েছিল। রুচিশীল চলচ্চিত্রের বিপরীতে ধীরে ধীরে এ ধারাটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে গ্রাস করে নিতে থাকে।
ঢাকায় এফডিসি হওয়ার পর প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল এক সুনিপুণ সৃজনশীল সম্পর্ক। যে গল্পগুলো বেছে নেওয়া হতো, তাতে প্রাণের ছোঁয়া থাকত বলে হল ভরে যেত দর্শকে।
ভালো ছবি হয় না, এটা হলে দর্শক না হওয়ার একটা কারণ। কারা আগে এ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখন কারা আছেন, তার একটা বিশ্লেষণ করলেও আরেকটা কারণ বেরিয়ে আসবে।
এফডিসিকেন্দ্রিক ছবি আর এফডিসির বাইরে ভিন্নধারার পরিচালকদের ছবির মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব আছে, সেটা স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি এটাও স্বীকার করে নিতে হবে, এই দুই ভিন্ন ধারার ছবি অল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদে দর্শক টানতে পারছে না। ধীরে ধীরে দেশব্যাপী সিনেমা হলের সংখ্যা কমতে কমতে এখন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। হলের পরিবেশও ক্ষুণ্ন হয়েছে। পটুয়াখালীর সিনেমা হলগুলো আসলে সেই চক্রে পড়ে গেছে।
নতুন প্রযুক্তি হলকেন্দ্রিক সিনেমার ব্যবসাকে ধসিয়ে দিয়েছে, এটা যদি সত্য হতো তাহলে হলিউড, বলিউডের ছবিগুলো ব্যবসাসফল হতো না, কোটি কোটি টাকা মুনাফা করত না। তবে চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীতের নতুন যেসব প্ল্যাটফর্ম বিশ্বব্যাপী গড়ে উঠছে, সেগুলো কীভাবে কাজ করছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাল্টিপ্লেক্স চলচ্চিত্রকে বাঁচানোর একটা উপায় কি না, সেটাও ভেবে দেখতে হবে। এই শিল্পকে টিকে থাকতে হলে শুধু বাজার ধরার জন্য শর্টকাট খুঁজলে হবে না, মানুষের সাংস্কৃতিক খিদে মেটানোর কৌশলটা জানতে হবে। নইলে মুখ থুবড়ে পড়া এ মাধ্যমটি বাংলাদেশে হালে পানি পাবে না, এই শঙ্কা থেকেই যাবে।
পটুয়াখালীর সিনেমা হলগুলো দর্শক পাচ্ছে না। লকডাউনের পুরো সময়ই সেগুলো বন্ধ ছিল। এখনো দর্শক হবে না ভেবে খোলার ভরসা পাচ্ছেন না হলমালিকেরা। একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে দেখা যায়, যেকোনো বড় আন্দোলনে রাজনীতির সঙ্গী হয় সংস্কৃতি। রাজনীতি ও সংস্কৃতির মিলনেই আন্দোলন দৃঢ়তা পায়, ব্যঞ্জনা পায়। নিকট অতীতে ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি ঋজু হয়েছে। বাঙালি, বিশেষ করে বাঙালি মুসলমান সে সময় তার আত্মপরিচয় জানার চেষ্টা করেছে। ভিনদেশি লেবাস শরীর থেকে সরিয়ে নিজের অতীত গৌরব নিয়ে গবেষণা করেছে। নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে ভিন্ন সংস্কৃতির মিলনের প্রয়াস পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সংস্কৃতির প্রকাশমাধ্যমগুলোয় অনেক কাজ হয়েছে। এর একটি চলচ্চিত্র। একটা সময় ঢাকায় নির্মিত চলচ্চিত্র উপমহাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া শুরু করেছিল। মেধাবী মানুষেরা চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।
সাংস্কৃতিকভাবে রুচিহীনতার অনেক কারণ রয়েছে, তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পালাবদল হয়েছিল, তাকে সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের বড় একটা দায় নিতে হবে। সূক্ষ্মভাবে এ সময় বিজাতীয় সংস্কৃতি ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছিল আমাদের চলমান সংস্কৃতির শরীরে। আর যাত্রার মতো লোক-সংস্কৃতিকে নষ্ট করা হচ্ছিল প্রিন্সেসদের নামিয়ে। এই সংস্কৃতিহীনতার প্রকাশ ঘটছিল চলচ্চিত্রেও। কাহিনি বা অভিনয় দিয়ে যতটা, তার চেয়ে বেশি ভ্যাম্প চরিত্রগুলোকে দিয়ে অশ্লীল অভিনয় করিয়ে দর্শক-রুচিকে প্রভাবিত করা হয়েছিল। রুচিশীল চলচ্চিত্রের বিপরীতে ধীরে ধীরে এ ধারাটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে গ্রাস করে নিতে থাকে।
ঢাকায় এফডিসি হওয়ার পর প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, কলাকুশলীদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল এক সুনিপুণ সৃজনশীল সম্পর্ক। যে গল্পগুলো বেছে নেওয়া হতো, তাতে প্রাণের ছোঁয়া থাকত বলে হল ভরে যেত দর্শকে।
ভালো ছবি হয় না, এটা হলে দর্শক না হওয়ার একটা কারণ। কারা আগে এ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এখন কারা আছেন, তার একটা বিশ্লেষণ করলেও আরেকটা কারণ বেরিয়ে আসবে।
এফডিসিকেন্দ্রিক ছবি আর এফডিসির বাইরে ভিন্নধারার পরিচালকদের ছবির মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব আছে, সেটা স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি এটাও স্বীকার করে নিতে হবে, এই দুই ভিন্ন ধারার ছবি অল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদে দর্শক টানতে পারছে না। ধীরে ধীরে দেশব্যাপী সিনেমা হলের সংখ্যা কমতে কমতে এখন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। হলের পরিবেশও ক্ষুণ্ন হয়েছে। পটুয়াখালীর সিনেমা হলগুলো আসলে সেই চক্রে পড়ে গেছে।
নতুন প্রযুক্তি হলকেন্দ্রিক সিনেমার ব্যবসাকে ধসিয়ে দিয়েছে, এটা যদি সত্য হতো তাহলে হলিউড, বলিউডের ছবিগুলো ব্যবসাসফল হতো না, কোটি কোটি টাকা মুনাফা করত না। তবে চলচ্চিত্র, নাটক, সংগীতের নতুন যেসব প্ল্যাটফর্ম বিশ্বব্যাপী গড়ে উঠছে, সেগুলো কীভাবে কাজ করছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাল্টিপ্লেক্স চলচ্চিত্রকে বাঁচানোর একটা উপায় কি না, সেটাও ভেবে দেখতে হবে। এই শিল্পকে টিকে থাকতে হলে শুধু বাজার ধরার জন্য শর্টকাট খুঁজলে হবে না, মানুষের সাংস্কৃতিক খিদে মেটানোর কৌশলটা জানতে হবে। নইলে মুখ থুবড়ে পড়া এ মাধ্যমটি বাংলাদেশে হালে পানি পাবে না, এই শঙ্কা থেকেই যাবে।
পাকিস্তানের জাতির পিতা ছিলেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। আমরা তাঁকে ভুলে যেতে চাইব। কেননা মৃতের সঙ্গে ঝগড়া নেই। জুলিয়াস সিজার প্রসঙ্গে শেক্সপিয়ারের মার্ক অ্যান্টর্নি যে বলেছিলেন তাঁর বিখ্যাত বক্তৃতায়, মৃতের ভালো কাজগুলো প্রায় সবই কবরে মিশে যায়, খারাপ কাজগুলোই বেঁচে থাকে, সেই কথা ঘুরিয়ে দিয়ে আমরা...
৯ ঘণ্টা আগেজলবায়ুসংকট আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। কারণ, জাতিসংঘের আরেকটি জলবায়ু সম্মেলন এ বিষয়ে জরুরি কাজের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও এর প্রভাব, যেমন নজিরবিহীন বন্যা, বিধ্বংসী খরা, ঝড়ের প্রকোপ, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং আরও তীব্র হারিকেন ঝড়গুলো গ্লোবাল নর্থ...
৯ ঘণ্টা আগেতাঁকে আমি দেখেছি, কিন্তু তাঁকে আমার দেখা হয়নি। আমার কিশোর বয়সের একেবারে প্রারম্ভে, খুব সম্ভবত পঞ্চাশের দশকের একদম প্রান্তসীমায় আমি তাঁকে প্রথম চাক্ষুষ দেখেছি। তারপর তাঁকে দেখেছি ষাটের দশকের একেবারে শেষদিকে, যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এলাম। বৈবাহিক সূত্রে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে যখন তাঁর...
৯ ঘণ্টা আগেঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের সেই জৌলুশ আর নেই। এ প্রতিষ্ঠানটি ব্রিটিশ ভারতের সময়ে গড়ে ওঠা একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যা একসময় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু আজ এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গত রোববার আজকের পত্রিকায় এ নিয়ে যে সংবাদটি প্রকাশিত
৯ ঘণ্টা আগে