সম্পাদকীয়
গত শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘বৃদ্ধ বাবাকে জঙ্গলে ফেলে গেলেন মেয়ে ও জামাতা’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি আমাদের সমাজের এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছে। একটি সমাজের প্রকৃত মেরুদণ্ড হলো তার মানবিকতা। সেই মানবিকতা তখনই বেশি প্রাসঙ্গিক হয়, যখন সমাজের সবচেয়ে দুর্বল কোনো মানুষ বিপদে পড়ে। আমাদের চারপাশে একের পর এক ঘটছে এমন ঘটনা, যা সামাজিক মেরুদণ্ডের ভঙ্গুরতার চরম বহিঃপ্রকাশ। গাজীপুরের গজারিবনে বৃদ্ধ সাকিব আলী সরদারকে ফেলে যাওয়া এর নির্মম উদাহরণ।
ষাটোর্ধ্ব সাকিব আলী, একসময় যিনি পেশায় ছিলেন বাসচালক, জীবনভর পরিশ্রম করে সন্তানদের মানুষ করেছেন অথচ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি পরিণত হয়েছেন ‘অবাঞ্ছিত বোঝা’য়। মেয়ের বাসায় আশ্রিত সাকিব আলী অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কিন্তু সেখানে জায়গা না পেয়ে তাঁকে ফেলে যাওয়া হয় গজারিবনের ভেতরে। এটা শুধু একজন পিতার দুর্ভাগ্যের গল্প নয়; এটি আমাদের মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ এবং পারিবারিক সম্পর্কের অবক্ষয়ের এক ভয়ংকর প্রতিচ্ছবি।
বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা না পাওয়া, পরিবারের সন্তানদের দায়িত্ব পালনে অনীহা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত জনবল ও বাজেটের ঘাটতি—এসব মিলে সমাজের সেই ভয়ানক চিত্র এঁকে দেয়, যেখানে প্রবীণেরা হয়ে ওঠেন পরিত্যক্ত। যে সন্তান অসহায় বাবাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে যাওয়ার মতো নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেই সন্তান কি সত্যি ‘মানুষ’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য?
প্রবীণদের অবহেলা কোনো সামান্য ঘটনা নয়। দেশে এমন অনেক বাবা-মা রয়েছেন, যাঁরা জীবনের শেষবেলায় ভরসার জন্য সন্তানদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। অথচ তাঁদের ভাগ্যে জোটে শীতল অবহেলা। শুধু পরিবার নয়, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাও প্রবীণদের প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রবীণদের জন্য যথেষ্টসংখ্যক বৃদ্ধাশ্রম নেই, সমাজসেবা খাতে বরাদ্দ সীমিত এবং অধিকাংশ পরিবারই বৃদ্ধদের দায়িত্ব নিতে নারাজ।
এখানে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিমের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা হলেও তাঁর মধ্যে বিরল মানবিকতার লক্ষণ স্পষ্ট দেখা গেছে। বৃদ্ধ সাকিব আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো, তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি—এ সবই আমাদের জন্য আলোকিত উদাহরণ। কিন্তু একটি রাষ্ট্র বা সমাজ কি একা একজন ওসির মানবিকতায় টিকে থাকতে পারে?
এখানে প্রয়োজন নীতি ও বাস্তবতার সমন্বয়। প্রথমত, প্রবীণদের জন্য আরও বেশি পুনর্বাসন কেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় বাজেট নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবারভিত্তিক মূল্যবোধকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। সন্তানদের মধ্যে প্রবীণ পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ববোধ জাগাতে হবে। তৃতীয়ত, সমাজে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কার্যক্রম চালাতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
গজারিবন থেকে উদ্ধার হওয়া অসহায় পিতা কি আমাদের মনে শুধু করুণা জাগাচ্ছেন, নাকি আত্মোপলব্ধির বার্তাও দিচ্ছেন? সাকিব আলী সরদারের মতো আর কোনো পিতাকে যেন কখনো জঙ্গলে ফেলে যেতে না হয়।
করুণা কিংবা দয়া নয়—মানুষ হিসেবে বাঁচার হক সবার। দায়িত্ব নিন।
গত শনিবার আজকের পত্রিকায় ‘বৃদ্ধ বাবাকে জঙ্গলে ফেলে গেলেন মেয়ে ও জামাতা’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি আমাদের সমাজের এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছে। একটি সমাজের প্রকৃত মেরুদণ্ড হলো তার মানবিকতা। সেই মানবিকতা তখনই বেশি প্রাসঙ্গিক হয়, যখন সমাজের সবচেয়ে দুর্বল কোনো মানুষ বিপদে পড়ে। আমাদের চারপাশে একের পর এক ঘটছে এমন ঘটনা, যা সামাজিক মেরুদণ্ডের ভঙ্গুরতার চরম বহিঃপ্রকাশ। গাজীপুরের গজারিবনে বৃদ্ধ সাকিব আলী সরদারকে ফেলে যাওয়া এর নির্মম উদাহরণ।
ষাটোর্ধ্ব সাকিব আলী, একসময় যিনি পেশায় ছিলেন বাসচালক, জীবনভর পরিশ্রম করে সন্তানদের মানুষ করেছেন অথচ জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি পরিণত হয়েছেন ‘অবাঞ্ছিত বোঝা’য়। মেয়ের বাসায় আশ্রিত সাকিব আলী অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কিন্তু সেখানে জায়গা না পেয়ে তাঁকে ফেলে যাওয়া হয় গজারিবনের ভেতরে। এটা শুধু একজন পিতার দুর্ভাগ্যের গল্প নয়; এটি আমাদের মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ এবং পারিবারিক সম্পর্কের অবক্ষয়ের এক ভয়ংকর প্রতিচ্ছবি।
বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা না পাওয়া, পরিবারের সন্তানদের দায়িত্ব পালনে অনীহা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত জনবল ও বাজেটের ঘাটতি—এসব মিলে সমাজের সেই ভয়ানক চিত্র এঁকে দেয়, যেখানে প্রবীণেরা হয়ে ওঠেন পরিত্যক্ত। যে সন্তান অসহায় বাবাকে জঙ্গলে ফেলে রেখে যাওয়ার মতো নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেই সন্তান কি সত্যি ‘মানুষ’ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য?
প্রবীণদের অবহেলা কোনো সামান্য ঘটনা নয়। দেশে এমন অনেক বাবা-মা রয়েছেন, যাঁরা জীবনের শেষবেলায় ভরসার জন্য সন্তানদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। অথচ তাঁদের ভাগ্যে জোটে শীতল অবহেলা। শুধু পরিবার নয়, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাও প্রবীণদের প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রবীণদের জন্য যথেষ্টসংখ্যক বৃদ্ধাশ্রম নেই, সমাজসেবা খাতে বরাদ্দ সীমিত এবং অধিকাংশ পরিবারই বৃদ্ধদের দায়িত্ব নিতে নারাজ।
এখানে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিমের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা হলেও তাঁর মধ্যে বিরল মানবিকতার লক্ষণ স্পষ্ট দেখা গেছে। বৃদ্ধ সাকিব আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো, তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি—এ সবই আমাদের জন্য আলোকিত উদাহরণ। কিন্তু একটি রাষ্ট্র বা সমাজ কি একা একজন ওসির মানবিকতায় টিকে থাকতে পারে?
এখানে প্রয়োজন নীতি ও বাস্তবতার সমন্বয়। প্রথমত, প্রবীণদের জন্য আরও বেশি পুনর্বাসন কেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় বাজেট নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবারভিত্তিক মূল্যবোধকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। সন্তানদের মধ্যে প্রবীণ পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ববোধ জাগাতে হবে। তৃতীয়ত, সমাজে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কার্যক্রম চালাতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
গজারিবন থেকে উদ্ধার হওয়া অসহায় পিতা কি আমাদের মনে শুধু করুণা জাগাচ্ছেন, নাকি আত্মোপলব্ধির বার্তাও দিচ্ছেন? সাকিব আলী সরদারের মতো আর কোনো পিতাকে যেন কখনো জঙ্গলে ফেলে যেতে না হয়।
করুণা কিংবা দয়া নয়—মানুষ হিসেবে বাঁচার হক সবার। দায়িত্ব নিন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া একটি পোস্ট নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি
১৪ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণার পর বিষয়টি নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ নিয়ে দলের বক্তব্য স্পষ্ট ক
১৪ ঘণ্টা আগেডিসেম্বর মাসে এসে বোঝা যাচ্ছিল, পাকিস্তানিদের চাপিয়ে দেওয়া সেন্সরশিপ সেভাবে কাজ করছে না। বহু খবরই তখন প্রকাশিত হচ্ছিল অবরুদ্ধ নগরীর সংবাদপত্রে। ইন্দিরা গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন কিংবা আওয়ামী লীগ নেতাদের বিবৃতি একই দিনে প্রকাশিত হলো। সেদিন ইত্তেফাক ‘পিটুনি কর’ বিষয়ক রিপোর্টটির যে শিরোনাম করেছিল,
১৪ ঘণ্টা আগেপৃথিবীতে গণহত্যা কিংবা জেনোসাইড কম হয়নি। যত যুদ্ধের যত গণকবর রয়েছে, সেগুলো বর্বরতার সাক্ষ্য দেয়, ইতিহাসের সাক্ষ্য দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হলোকাস্টে নিহত মানুষের গণকবর যেমন সাক্ষ্য দেয়, রুয়ান্ডার নিয়াবারোঙ্গো নদীও সাক্ষ্য দেয়, তার বুক দিয়ে ভেসে গেছে রক্তস্নাত মানুষের লাশ। তবে বর্বরতার চরম মাত্রা মনে
১৫ ঘণ্টা আগে