সম্পাদকীয়
শার্লক হোমস অথবা এরকুল পুয়ারো এসে ঢাকা মহানগরীর গুলশানে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারতেন কি না, তা আমাদের জানা নেই। যে বিশাল বিত্তের দাপটে একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি যা ইচ্ছে তাই করার সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন, সে বিত্ত-বৈভব তাঁকে তাঁর অপরাধ থেকে মুক্তি দেয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেই বেশির ভাগ পত্রপত্রিকা, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ করা হয়, যা মানুষের মনে প্রশ্ন তোলে। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রিন্টিং, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ওপর মানুষের আস্থা নেই বললেই চলে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পত্রপত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতি জনগণের অসহিষ্ণু গালাগাল দেখে বোঝা যায়, মিডিয়ার দায়িত্বশীলতার প্রকাশ নিয়ে সাধারণ জনগণ মোটেই সন্তুষ্ট নয়। গণমাধ্যমের বেশির ভাগ সদস্যই বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, ভুঁইফোড় কিছু পত্রপত্রিকা বা গণমাধ্যমে মৃত তরুণীকে দোষী বানিয়ে ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও হচ্ছে। ফলে এ ধরনের সামাজিক অনাচারের ব্যাপারে মিডিয়ার ভূমিকা প্রশ্নাতীত নয়, বরং বৃহৎ পুঁজির সঙ্গে গণমাধ্যমের একটা আঁতাত আছে বলে সন্দেহ করা হলে, তা মোটেই অযৌক্তিক হবে না।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর মৃত তরুণীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দেশত্যাগে তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যায় বিত্তশালী এই এমডির ‘কীর্তিগাথা’ কম নয়। তরুণী যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সে বাড়ির ভাড়া কে দিতেন, তরুণী কেমন ছিলেন, কেন তিনি বসুন্ধরার এমডির নানা শর্ত মেনে নিয়েছিলেন—সেসব প্রশ্ন তাঁর মৃত্যুর পর এখন অবান্তর হয়ে গেছে।
বিত্তশালী মানুষ সমাজের অন্যান্য স্তরের মানুষের সঙ্গে কী আচরণ করছেন, তা নিয়ে সামাজিক গবেষণা হতে পারে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে কিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হতে পারে, কিন্তু সেসব কর্মকাণ্ড মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যাবে না। দেখার বিষয়, বিত্তশালী প্রতিষ্ঠানটি সুকৌশলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টায় সফল হয় কি না। যদি এ রকম বড় একটি দুর্ঘটনার পরও সত্য ধামাচাপা দেওয়া যায়, তাহলে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছার অভাবই নয়, সামগ্রিকভাবে আমাদের মূল্যবোধের নিম্নগামিতাই প্রমাণিত হবে। এর দায় সরকারসহ সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবস্থিত নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই বহন করতে হবে।
এ রকম অবাঞ্ছিত ঘটনা আমাদের নৈতিক দেউলিয়াত্ব, বিত্তের কাছে রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলার পরাজয়, সমাজে চিন্তক শ্রেণির অভাব, লুটেরা সংস্কৃতির কাছে মানবতার পরাজয়কেই প্রকট করে তোলে।
মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থারই একটা অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে নেওয়া দরকার। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং বিচার হলে তা সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় একটি ছোট পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ছোট্ট একটি পদক্ষেপ পরবর্তীকালে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা থেকে রেহাই দিতে পারে মানুষকে। গণমাধ্যম যদি সুনির্দিষ্টভাবে লুটেরাদের তোষণ করতে থাকে, তাহলে সমাজে এ ধরনের গণমাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমকর্মীর প্রয়োজন আছে কি না—সেটাও সাংবাদিক মহলকে ভেবে দেখতে হবে। তাদের জন্যও এটি একটি অ্যাসিড টেস্ট।
শার্লক হোমস অথবা এরকুল পুয়ারো এসে ঢাকা মহানগরীর গুলশানে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারতেন কি না, তা আমাদের জানা নেই। যে বিশাল বিত্তের দাপটে একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি যা ইচ্ছে তাই করার সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন, সে বিত্ত-বৈভব তাঁকে তাঁর অপরাধ থেকে মুক্তি দেয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেই বেশির ভাগ পত্রপত্রিকা, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ করা হয়, যা মানুষের মনে প্রশ্ন তোলে। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রিন্টিং, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ওপর মানুষের আস্থা নেই বললেই চলে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পত্রপত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার প্রতি জনগণের অসহিষ্ণু গালাগাল দেখে বোঝা যায়, মিডিয়ার দায়িত্বশীলতার প্রকাশ নিয়ে সাধারণ জনগণ মোটেই সন্তুষ্ট নয়। গণমাধ্যমের বেশির ভাগ সদস্যই বসুন্ধরা গ্রুপের এমডিকে আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, ভুঁইফোড় কিছু পত্রপত্রিকা বা গণমাধ্যমে মৃত তরুণীকে দোষী বানিয়ে ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও হচ্ছে। ফলে এ ধরনের সামাজিক অনাচারের ব্যাপারে মিডিয়ার ভূমিকা প্রশ্নাতীত নয়, বরং বৃহৎ পুঁজির সঙ্গে গণমাধ্যমের একটা আঁতাত আছে বলে সন্দেহ করা হলে, তা মোটেই অযৌক্তিক হবে না।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর মৃত তরুণীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দেশত্যাগে তাঁর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যায় বিত্তশালী এই এমডির ‘কীর্তিগাথা’ কম নয়। তরুণী যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সে বাড়ির ভাড়া কে দিতেন, তরুণী কেমন ছিলেন, কেন তিনি বসুন্ধরার এমডির নানা শর্ত মেনে নিয়েছিলেন—সেসব প্রশ্ন তাঁর মৃত্যুর পর এখন অবান্তর হয়ে গেছে।
বিত্তশালী মানুষ সমাজের অন্যান্য স্তরের মানুষের সঙ্গে কী আচরণ করছেন, তা নিয়ে সামাজিক গবেষণা হতে পারে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে কিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হতে পারে, কিন্তু সেসব কর্মকাণ্ড মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যাবে না। দেখার বিষয়, বিত্তশালী প্রতিষ্ঠানটি সুকৌশলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টায় সফল হয় কি না। যদি এ রকম বড় একটি দুর্ঘটনার পরও সত্য ধামাচাপা দেওয়া যায়, তাহলে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদিচ্ছার অভাবই নয়, সামগ্রিকভাবে আমাদের মূল্যবোধের নিম্নগামিতাই প্রমাণিত হবে। এর দায় সরকারসহ সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবস্থিত নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই বহন করতে হবে।
এ রকম অবাঞ্ছিত ঘটনা আমাদের নৈতিক দেউলিয়াত্ব, বিত্তের কাছে রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলার পরাজয়, সমাজে চিন্তক শ্রেণির অভাব, লুটেরা সংস্কৃতির কাছে মানবতার পরাজয়কেই প্রকট করে তোলে।
মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনা আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থারই একটা অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে নেওয়া দরকার। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং বিচার হলে তা সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় একটি ছোট পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। এই ছোট্ট একটি পদক্ষেপ পরবর্তীকালে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা থেকে রেহাই দিতে পারে মানুষকে। গণমাধ্যম যদি সুনির্দিষ্টভাবে লুটেরাদের তোষণ করতে থাকে, তাহলে সমাজে এ ধরনের গণমাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমকর্মীর প্রয়োজন আছে কি না—সেটাও সাংবাদিক মহলকে ভেবে দেখতে হবে। তাদের জন্যও এটি একটি অ্যাসিড টেস্ট।
সাবেক জ্যেষ্ঠ নির্বাহী, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা আমেরিকার প্রভাবশালী দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থার বিশাল ঘাটতি সত্ত্বেও অনেকেই ভেবেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফার জয় একটি বিচ্যুতি। তারপর অবশ্য ট্রাম্পের দ্বিতীয় বিজয় বা যাকে ট্রাম্প-২.০ বলা হচ্ছে, সেই নির্বাচন একটি বিষয় নিশ
২ মিনিট আগেবাংলাদেশে বাম আন্দোলনের বিকাশ ও ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল কিন্তু তাকে কাজে লাগানো যায়নি। এই সংকট নিয়ে অনেক আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়েছে কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সংকট না কমে বরং বেড়েছে। বাম দলগুলোও আরও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রভাব ও আকৃতির দিক থেকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও যা আছে তা নিয়ে এভাবে নিজেদে
১৩ মিনিট আগেবাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ৫ আগস্টের পর ব্যাপকভাবে প্রকাশ্যে আসা শুরু করে। বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করা সরকারের ২৬টি ক্যাডারে সবাই একই পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রবেশ করলেও ধীরে ধীরে ক্যাডারভেদে বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে।
২১ মিনিট আগেছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের পর এক অভাবনীয় পরিস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট আর ক্ষমতার দম্ভে অতিষ্ঠ মানুষ চেয়েছিল দেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট বন্ধ হবে। জিনিসপত্রের দাম সহনীয় থাকবে। সবাই খেয়ে-পরে নিরাপদে বসবাস করতে...
১ দিন আগে