সম্পাদকীয়
তখন পুরো ভারতবর্ষ উত্তপ্ত। দেশভাগের আলামত পাওয়া যাচ্ছে। ১৯৪৬ সালে গণসংগীতের রেকর্ড বের হয়েছে এইচএমভি থেকে। কলিম শরাফী তখন গণনাট্য সঙ্ঘের একজন গায়ক। তবে হঠাৎ করেই কলকাতায় শুরু হলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সে এক ভয়াবহ অবস্থা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ডাক দিয়েছিলেন ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’ পালনের। কলিম শরাফীর ইচ্ছে ছিল গড়ের মাঠে সোহরাওয়ার্দীর বক্তৃতা শুনতে যাবেন। তিনি ছিলেন রামরাজাতলায়। অত দূর থেকে রওনা দিলেন; কিন্তু ততক্ষণে বেধে গেছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।
রাস্তাঘাটে দেখা গেল লাশ। কলিম শরাফী তখন বিপর্যস্ত অবস্থায়। পরদিন পরলেন ধুতি-পাঞ্জাবি। ভাবলেন, যাবেন সুচিত্রা মিত্রের বাড়ি। কিন্তু পথে ছড়িয়ে ছিল আতঙ্ক। সাহস করে সে পর্যন্ত যাওয়া আর হলো না। ঘুরে চলে এলেন দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে।
সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে তাঁর পাশের ঘরেই থাকতেন শম্ভু মিত্র আর তৃপ্তি মিত্র। অফিসের একজন বিশেষ পরিচিত বীরেন দে। তাঁর পরিবারেরও ঠাঁই হয়েছিল এই বাড়িতে। কলিম শরাফীকে দেখে দেবব্রত বিশ্বাস চিৎকার করে উঠলেন: ‘শালা বাঁইচ্যা আছে!’
দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে একটি খাটের নিচে কলিম শরাফী লুকিয়ে থাকলেন সাত দিন। শহরের অবস্থার একটু উন্নতি হলে কলিম শরাফীর মাথায় একটি গান্ধী-টুপি পরিয়ে ডেকার্স লেনের কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে পৌঁছে দিয়ে এলেন। সেখানে ছিলেন কমরেড মুজফ্ফর আহমেদ।
সে সময় কলিমদের কাজ হয়ে উঠল দাঙ্গা নিরসন তথা হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলা। যখন কোনো হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় অনুষ্ঠান করতে যেতেন, তখন তাঁর নাম পরিবর্তন করে বলতেন, ‘কল্যাণ মিত্র’।
কলিম শরাফী দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে ভারত থেকে পাকিস্তানে ফেরেন আবদুল আহাদ ও সিকান্দার আবু জাফরের পরামর্শে। সুকান্তের ‘অবাক পৃথিবী’ গানটি করার পর পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তাঁর পিছু নেন। জেরার প্রাবল্যে কিছুদিন আত্মগোপন করতে হয়।
সূত্র: দেবব্রত বিশ্বাস, ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত, পৃষ্ঠা: ৬৪
তখন পুরো ভারতবর্ষ উত্তপ্ত। দেশভাগের আলামত পাওয়া যাচ্ছে। ১৯৪৬ সালে গণসংগীতের রেকর্ড বের হয়েছে এইচএমভি থেকে। কলিম শরাফী তখন গণনাট্য সঙ্ঘের একজন গায়ক। তবে হঠাৎ করেই কলকাতায় শুরু হলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সে এক ভয়াবহ অবস্থা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ডাক দিয়েছিলেন ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে’ পালনের। কলিম শরাফীর ইচ্ছে ছিল গড়ের মাঠে সোহরাওয়ার্দীর বক্তৃতা শুনতে যাবেন। তিনি ছিলেন রামরাজাতলায়। অত দূর থেকে রওনা দিলেন; কিন্তু ততক্ষণে বেধে গেছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।
রাস্তাঘাটে দেখা গেল লাশ। কলিম শরাফী তখন বিপর্যস্ত অবস্থায়। পরদিন পরলেন ধুতি-পাঞ্জাবি। ভাবলেন, যাবেন সুচিত্রা মিত্রের বাড়ি। কিন্তু পথে ছড়িয়ে ছিল আতঙ্ক। সাহস করে সে পর্যন্ত যাওয়া আর হলো না। ঘুরে চলে এলেন দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে।
সে সময় দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে তাঁর পাশের ঘরেই থাকতেন শম্ভু মিত্র আর তৃপ্তি মিত্র। অফিসের একজন বিশেষ পরিচিত বীরেন দে। তাঁর পরিবারেরও ঠাঁই হয়েছিল এই বাড়িতে। কলিম শরাফীকে দেখে দেবব্রত বিশ্বাস চিৎকার করে উঠলেন: ‘শালা বাঁইচ্যা আছে!’
দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে একটি খাটের নিচে কলিম শরাফী লুকিয়ে থাকলেন সাত দিন। শহরের অবস্থার একটু উন্নতি হলে কলিম শরাফীর মাথায় একটি গান্ধী-টুপি পরিয়ে ডেকার্স লেনের কমিউনিস্ট পার্টির অফিসে পৌঁছে দিয়ে এলেন। সেখানে ছিলেন কমরেড মুজফ্ফর আহমেদ।
সে সময় কলিমদের কাজ হয়ে উঠল দাঙ্গা নিরসন তথা হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলা। যখন কোনো হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় অনুষ্ঠান করতে যেতেন, তখন তাঁর নাম পরিবর্তন করে বলতেন, ‘কল্যাণ মিত্র’।
কলিম শরাফী দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে ভারত থেকে পাকিস্তানে ফেরেন আবদুল আহাদ ও সিকান্দার আবু জাফরের পরামর্শে। সুকান্তের ‘অবাক পৃথিবী’ গানটি করার পর পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তাঁর পিছু নেন। জেরার প্রাবল্যে কিছুদিন আত্মগোপন করতে হয়।
সূত্র: দেবব্রত বিশ্বাস, ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত, পৃষ্ঠা: ৬৪
তথ্যের অফুরন্ত ভান্ডার থাকা সত্ত্বেও আজ লেখাটির ইতি টানব। আশা করব, ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মের কেউ একজন আমার হাত থেকে রিলে রেসের ব্যাটনটি তুলে নেবেন এবং ইতিহাসের এই স্বল্প আলোকপাত করা বিষয়টি নিয়ে গভীর গবেষণা করবেন।
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের ইতিহাসে বিজয় দিবস এক অনন্য দিন। স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সব দিন সমান গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিজয় দিবস সবচেয়ে বেশি গৌরবের। কেন জানি না, দিনটি তেমনভাবে উদ্যাপিত হয় না। তেমন আলোড়নও দেখি না, যা সত্যিকার অর্থে ছিল বিজয়ের প্রাপ্য। অথচ আমি এমন দুজন বিদেশির কথা জানি, যাঁরা আমার সঙ্গে...
৪ ঘণ্টা আগেবিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রতিবছর উদ্যাপনের যেমন উদ্যোগ-আয়োজন দেখা যায়, এবার তেমন দেখা যায়নি। আমার কাছে অন্তত তা-ই মনে হয়েছে। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পালাবদল কি সত্যি আমাদের চিন্তাচেতনায় বড় পরিবর্তন এনেছে? গণতন্ত্রের ঢং দেখিয়ে টানা ক্ষমতায় থাকা শাসকগোষ্ঠীকে পরাভূত করা নিশ্চয়ই গৌরবের। কিন্তু সে গৌরব কি...
৪ ঘণ্টা আগে১৯ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কে এক মাতাল চালকের গাড়ির ধাক্কায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহত হন। আহত হন মেহেদী হাসান খান ও অমিত সাহা নামের বুয়েটের সিএসই বিভাগের আরও দুই শিক্ষার্থী। মেহেদী রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এবং অমিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ
৪ ঘণ্টা আগে