ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
করোনার পর থেকে কোনো ভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না নিম্ন আয়ের মানুষ। দৈনন্দিন আয় দিয়ে টেনেটুনে সংসার চালাতে পারলেও যথেষ্ট আমিষ খাওয়া প্রায় অসাধ্য হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, ওএমএস এবং টিসিবির পণ্য যথেষ্ট না হওয়ায় মানুষের কষ্ট লাঘব হচ্ছে না।
জহিরুল ইসলাম। পেশায় একজন রিকশাচালক। কয়েক বছর আগে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ শহরে পাড়ি জমান পরিবার পরিজন নিয়ে। রিকশা চালিয়ে ভালোই চলছিল তাঁর সংসার। করোনার পর থেকে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আয়ও কমে গেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।
আজ রোববার কথা হয় জহিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৩০০ টাকা রিকশার আমদানি (মহাজনের জমা) দিতে হয় প্রতিদিন। আজকে দুপুর পর্যন্ত ২০০ টাকা আয় করেছি। দৈনিক সর্বোচ্চ ৬০০ টাকার ভাড়া মারতে পারি। এর মধ্যে নিজের ১০০ টাকা খরচ আছে। চারজনের সংসারে বাকি ২০০ টাকা দিয়ে চাল ডাল কেনা হয়তো যায়। কিন্তু কেউ অসুস্থ হলে ধারদেনা করে চলতে হয়। আমাদের জীবনটা খুব কষ্টের!’
জহিরুল ইসলামের মতো সব নিম্ন আয়ের মানুষের একই অবস্থা। সামান্য আয় দিয়ে কেউ একটি পাঙাশ মাছ কিনে খাওয়ারও কারও সামর্থ্য হচ্ছে না! অনেকে ওএমএসের লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে ব্যর্থ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
সদর উপজেলার সুহেলী গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা জমা দিয়ে রিকশা ভাড়া নিতে হয়। সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া আসে। এর মধ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পকেটে ঢোকে। এই টাকা দিয়ে সংসারের খরচসহ সমস্ত কিছু চালাতে হয়। সংসারের বোঝা টানতে টানতে এখন হাঁপিয়ে উঠেছি। মাঝে মধ্যে মনে হয়, মরে গেলেই বেঁচে যাই!’
বাজারে কথা হয় আরেক রিকশাচালকের সঙ্গে। ক্ষোভ ও হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘১৫ টাকার লবণ কিনতে হচ্ছে এখন ২৫ টাকায়। ২০ টাকার সাবান হয়েছে ৪৫ টাকা। সপ্তাহে একদিন সাবান দিয়ে গোসল করি। সবকিছুর দাম বাড়লেও রিকশা ভাড়া বাড়েনি। ছয় সদস্যের সংসারে এখন আর পারছি না। সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করলেও সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।’
ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। তাঁর একার আয়ে চলে সংসার। ইদানীংকালে আয়ও কমে গেছে। তিনি আর একা সংসার টানতে পারছেন না। বলেন, ‘নিজের আয়ে কোনো ভাবেই সংসার চালাতে পারছি না। সন্তানেরাও কোন কর্ম করছে না। বাবা হিসেবে সমস্যায় পড়েছি। গত দুই মাস ধরে একটি পাঙাশ কিনব সেই সামর্থ্য নেই। নিজেকে খুব বড় অপরাধী মনে হয়। না পারছি সইতে না পারছি কইতে। সরকারি চাল আটা কেনাতেও আমাদের কোনো সুযোগ নেই।’
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতেই খোলা বাজারে ওএমএস এবং টিসিবির পণ্য ক্রয় করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যাদের জন্য এই পণ্য তারাই কিনতে পারছে না। স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের বেড়াজালে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে। সেই জায়গাটিতে স্বচ্ছতা আনতে পারলে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহে ওএমএসের পণ্য ক্রয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএসের চাল এবং আটা স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও কোনো ধরনের অভিযোগ আমরা পাইনি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
করোনার পর থেকে কোনো ভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না নিম্ন আয়ের মানুষ। দৈনন্দিন আয় দিয়ে টেনেটুনে সংসার চালাতে পারলেও যথেষ্ট আমিষ খাওয়া প্রায় অসাধ্য হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন, ওএমএস এবং টিসিবির পণ্য যথেষ্ট না হওয়ায় মানুষের কষ্ট লাঘব হচ্ছে না।
জহিরুল ইসলাম। পেশায় একজন রিকশাচালক। কয়েক বছর আগে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহ শহরে পাড়ি জমান পরিবার পরিজন নিয়ে। রিকশা চালিয়ে ভালোই চলছিল তাঁর সংসার। করোনার পর থেকে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আয়ও কমে গেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।
আজ রোববার কথা হয় জহিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৩০০ টাকা রিকশার আমদানি (মহাজনের জমা) দিতে হয় প্রতিদিন। আজকে দুপুর পর্যন্ত ২০০ টাকা আয় করেছি। দৈনিক সর্বোচ্চ ৬০০ টাকার ভাড়া মারতে পারি। এর মধ্যে নিজের ১০০ টাকা খরচ আছে। চারজনের সংসারে বাকি ২০০ টাকা দিয়ে চাল ডাল কেনা হয়তো যায়। কিন্তু কেউ অসুস্থ হলে ধারদেনা করে চলতে হয়। আমাদের জীবনটা খুব কষ্টের!’
জহিরুল ইসলামের মতো সব নিম্ন আয়ের মানুষের একই অবস্থা। সামান্য আয় দিয়ে কেউ একটি পাঙাশ মাছ কিনে খাওয়ারও কারও সামর্থ্য হচ্ছে না! অনেকে ওএমএসের লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে ব্যর্থ হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
সদর উপজেলার সুহেলী গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা জমা দিয়ে রিকশা ভাড়া নিতে হয়। সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া আসে। এর মধ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পকেটে ঢোকে। এই টাকা দিয়ে সংসারের খরচসহ সমস্ত কিছু চালাতে হয়। সংসারের বোঝা টানতে টানতে এখন হাঁপিয়ে উঠেছি। মাঝে মধ্যে মনে হয়, মরে গেলেই বেঁচে যাই!’
বাজারে কথা হয় আরেক রিকশাচালকের সঙ্গে। ক্ষোভ ও হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘১৫ টাকার লবণ কিনতে হচ্ছে এখন ২৫ টাকায়। ২০ টাকার সাবান হয়েছে ৪৫ টাকা। সপ্তাহে একদিন সাবান দিয়ে গোসল করি। সবকিছুর দাম বাড়লেও রিকশা ভাড়া বাড়েনি। ছয় সদস্যের সংসারে এখন আর পারছি না। সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করলেও সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।’
ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। তাঁর একার আয়ে চলে সংসার। ইদানীংকালে আয়ও কমে গেছে। তিনি আর একা সংসার টানতে পারছেন না। বলেন, ‘নিজের আয়ে কোনো ভাবেই সংসার চালাতে পারছি না। সন্তানেরাও কোন কর্ম করছে না। বাবা হিসেবে সমস্যায় পড়েছি। গত দুই মাস ধরে একটি পাঙাশ কিনব সেই সামর্থ্য নেই। নিজেকে খুব বড় অপরাধী মনে হয়। না পারছি সইতে না পারছি কইতে। সরকারি চাল আটা কেনাতেও আমাদের কোনো সুযোগ নেই।’
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতেই খোলা বাজারে ওএমএস এবং টিসিবির পণ্য ক্রয় করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যাদের জন্য এই পণ্য তারাই কিনতে পারছে না। স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের বেড়াজালে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে। সেই জায়গাটিতে স্বচ্ছতা আনতে পারলে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহে ওএমএসের পণ্য ক্রয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএসের চাল এবং আটা স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। কোথাও কোনো ধরনের অভিযোগ আমরা পাইনি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভোরের আলো ফোটার আগেই রাজধানীর আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শ্রমজীবীদের হাটে জড়ো হন শত শত শ্রমজীবী মানুষ। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও নারী শ্রমিকেরা এই হাটে প্রতিদিন ভিড় করেন একটু কাজ পাওয়ার আশায়। তবে দিন যত যাচ্ছে, তাঁদের জীবনের লড়াই ততই কঠিন হয়ে উঠছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি তাঁদের জীবনকে দুর্বিষ
২৬ অক্টোবর ২০২৪ফেলুদার দার্জিলিং জমজমাট বইয়ে প্রথম পরিচয় দার্জিলিংয়ের সঙ্গে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানসহ আরও নানাভাবে হিল স্টেশনটির প্রতি এক ভালোবাসা তৈরি হয়। তাই প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। অবশ্য আজকের গল্প পুরো দার্জিলিং ভ্রমণের নয়, বরং তখন পরিচয়
২৩ অক্টোবর ২০২৪কথায় আছে না—‘ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরেমেঘ দেখলেই ডরায়’! আমার হইছে এই অবস্থা। বাড়িতে এখন বাড়িআলী, বয়স্ক বাপ-মা আর ছোট মেয়ে। সকাল থেকে চার-পাঁচবার কতা বলিচি। সংসার গোচাচ্ছে। আইজকা সন্ধ্যার দিকে ঝড় আসপি শুনতিছি। চিন্তায় রাতে ভালো ঘুমাতে পারিনি...
২৬ মে ২০২৪প্রতিদিন ভোরে ট্রেনের হুইসেলে ঘুম ভাঙে রাকিব হাসানের। একটু একটু করে গড়ে ওঠা রেলপথ নির্মাণকাজ তাঁর চোখে দেখা। এরপর রেলপথে ট্রেন ছুটে চলা, ট্রেন ছুঁয়ে দেখা—সবই হলো; কিন্তু এখনো হয়নি চড়া। রাকিবের মুখে তাই ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার বিখ্যাত গান। ‘আমার বলার কিছু ছিল না, চেয়ে চেয়ে দেখলাম, তুমি চলে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪