Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে ‘যুগান্তকারী’ সাফল্য পেল চীন 

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৫: ৫৯
যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে ‘যুগান্তকারী’ সাফল্য পেল চীন 

হাইপারসনিক মহাকাশযান বা যানের অগ্রযাত্রা আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা এমন এক ধরনের বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যা হাইপারসনিক কোনো যানের বহিরাবরণে ব্যবহার করা হলে তা টিকে থাকে দীর্ঘদিন। আগে এই প্রযুক্তিকে অসম্ভব বলেই মনে করা হতো। হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সাধারণত হাইপারসনিক (সাধারণত শব্দের গতির চেয়ে ৫-১০ গুণ বেশি গতিসম্পন্ন কোনো যানকে হাইপারসনিক যান বলা হয়।) কোনো যান—সাধারণত যুদ্ধবিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়—যখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়, তখন বাতাসে ভাসমান বিভিন্ন কণার সঙ্গে তীব্র গতিতে সংঘর্ষের কারণে সেই যানের বহিরাবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু চীনা বিজ্ঞানীরা এমন পদার্থ আবিষ্কার করেছেন, যা কেবল যানের বহিরাবরণকেই রক্ষা করবে না, পাশাপাশি যানের ভেতরের অংশকে বাইরের অংশে সংঘর্ষের কারণে সৃষ্ট তাপ থেকেও রক্ষা করবে।

সম্প্রতি চীনা বিজ্ঞানীরা ‘ওয়েভরেইডার’ নামে একধরনের হাইপারসনিক বিমানের বহিরাবরণে এই পদার্থ ব্যবহার করে পরীক্ষা চালিয়েছেন। সাধারণত হাইপারসনিক বিমানগুলো নিজস্ব ইঞ্জিনের সৃষ্ট শক ওয়েভ ব্যবহার করে ওপরের দিকে উঠে যায়। তবে এ সময় ইঞ্জিন থেকে ব্যাপক জ্বালানি পোড়ানোর কারণে বিপুল পরিমাণ তাপ নির্গত হয়, যা বিমানটির পেছন দিকের অংশটাকে উত্তপ্ত করে তোলে।

বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, নতুন এই পদার্থের বহিরাবরণ শক ওয়েভের কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, পাশাপাশি বিমানের অভ্যন্তরের যন্ত্রপাতিকেও ঠান্ডা রাখছে। এর বাইরে বিমানের ওয়্যারলেস যোগাযোগও মসৃণ করে তুলেছে। কারণ নতুন এই পদার্থের তৈরি বহিরাবরণ ভেদ পরে খুব সহজেই যোগাযোগের সংকেত আসা-যাওয়া করতে পারে, যার ফলে এসব যুদ্ধবিমানের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতাও বেড়ে গেছে।

পদার্থটি আবিষ্কারক গবেষক দলের প্রধান আই ব্যাংচেং। তাঁর নেতৃত্বে এই আবিষ্কারবিষয়ক একটি নিবন্ধ পিয়ার রিভিউড জার্নাল ফিজিকস অব গ্লাসে প্রকাশিত হয়েছে গত মাসে। তবে ওই নিবন্ধে ঠিক কোন সময় পরীক্ষাটি চালানো হয়, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সেখানে দাবি করা হয়েছে, ‘পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সফলভাবেই শেষ হয়েছে।’

ওই নিবন্ধে বেইজিংয়ে অবস্থিত চায়না একাডেমি অব অ্যারোস্পেস অ্যারোডাইনামিকসের উপপরিচালক ব্যাংচেং বলেছেন, এ ধরনের উচ্চ তাপ সহনীয় প্রযুক্তি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পুনর্ব্যবহারযোগ্য হাইপারসনিক যান তৈরির পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে, যা হবে আরও বেশি দূরপাল্লার এবং আরও বেশি গতিসম্পন্ন।

চীনা বিজ্ঞানীর কোন পদ্ধতিতে ওই পদার্থ আবিষ্কার করেছেন, তা নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়নি। তবে তাঁরা বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য পথের কথা বলেছেন। যেমন—যে পদার্থ দিয়েই তৈরি হোক না কেন, হাইপারসনিক যানের বহিরাবরণ যত বেশি মসৃণ বিশেষজ্ঞ হবে, তত বেশি টিকে থাকবে। আবার যানের কাঠামোর গায়ে নিওবিয়াম, মলিবডিনাম এবং বোরনের আবরণ ক্ষয় রোধ করবে। এর বাইরে তাঁরা বলেছেন—এমন কাঠামো তৈরি করা হবে, যার ফলে যানের ওজন কমে যাবে। পাশাপাশি ইঞ্জিন থেকে যে তাপ বের হয়, তাকে তরলীকরণ করে প্রপালশন থার্স্ট বা ইঞ্জিনের গতিবেগ বাড়ানো যায় কি না, সেই প্রচেষ্টার কথাও তাঁরা উল্লেখ করেছেন।

চীনের আগে এ ধরনের প্রযুক্তি আবিষ্কারের চেষ্টা শুরু করলেও যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এখনো এই আবিষ্কারে সফল হতে পারেনি। দেশটি এই প্রযুক্তি নিয়ে বিপুলসংখ্যক পরীক্ষা চালিয়েছে, কিন্তু কোনো ফলাফল আসেনি। চীনের এই আবিষ্কার যুক্তরাষ্ট্রকে এই প্রযুক্তি আবিষ্কারের পথে আরও বিনিয়োগে বাধ্য করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত