অনলাইন ডেস্ক
শীতকাল এলেই ঠান্ডায় আমাদের শরীর কাঁপতে শুরু করে। তবে কেন এমনটি হয় তা অনেকেরই অজানা। শরীরের এই প্রতিক্রিয়া অনেকটা অকার্যকর বলে মনে হলেও এটি তাপ উৎপন্ন করার জন্য মানবদেহে বিবর্তিত হয়েছে। এটি এক ধরনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, যা আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লেনক্স হিল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি চিকিৎসক ড. রবার্ট গ্ল্যাটার বলেন, প্রায় ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা বজায় রাখতে হয় মানব দেহকে। শরীরের তাপমাত্রা এর নিচে নামলে হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
হাইপোথার্মিয়া এমন এক অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে যায়। এই অবস্থা শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এবং জীবনের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মস্তিষ্ক শরীরের তাপমাত্রা সব সময় পর্যবেক্ষণ করে এবং খুব সতর্কভাবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে।
যদি ত্বকের পৃষ্ঠ খুব ঠান্ডা হয়ে যায়, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে সংকেত পাঠায় ত্বকের সংবেদী স্নায়ু। হাইপোথ্যালামাসের কাজ হলো শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করা, যাকে হোমিওস্ট্যাসিস বলা হয়। শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, মেজাজ এবং ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস।
ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বলেন, শরীরকে গরম রাখার জন্য কাঁপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে হাইপোথ্যালামাস। সেসময় শরীরের হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত পেশিগুলো দ্রুত সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে।
ড. রবার্ট গ্ল্যাটার বলেন, এই সংকোচন ও প্রসারণ শুধুমাত্র অঙ্গগুলোকে কাঁপায় না, সেই সঙ্গে চোয়ালের পেশিগুলোকেও টানতে পারে। ফলে ‘আপনার দাঁতে দাঁতে ঘষা লাগতে পারে বা দাঁত কিড়মিড় শুরু হয়।’
ইংরেজি ভাষার বিশ্বকোষ ব্রিটানিকা–এর মতে, পেশির সংকোচন থেকে রাসায়নিক শক্তি খরচ হয়। যদিও কিছু শক্তি গতি সৃষ্টিতে ব্যবহৃত হয়, তবে বেশির ভাগ শক্তি পেশিতে তাপ উৎপন্ন করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীর উষ্ণ হয়।
ড. গ্লাটার বলেন, ঠান্ডার কাঁপুনি শরীরের অন্য ধরনের কাঁপুনি থেকে আলাদা। উদাহরণস্বরূপ, বিপদ বা ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য শরীর কাঁপতে পারে যা মূলত ‘লড়াই বা পালানোর প্রতিক্রিয়া এবং অ্যাড্রিনালিনের উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিপদে সাড়া দেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত করতে শরীর এই প্রতিক্রিয়া দেখায়। এর মাধ্যমে দৌড়াতে বা লড়াই করতে প্রস্তুত হতে পারি আমরা।’
অ্যাড্রিনালিন নামক হরমোনটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন পেশিকে সংকুচিত বা সংকুচিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে। যখন আমরা বিপদ বা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়ি, তখন অ্যাড্রিনালিন আমাদের রক্তনালি ও শরীরজুড়ে প্রবাহিত হয়। এটি আমাদের পেশিকে এমনভাবে প্রস্তুত করে যেন আমরা দ্রুত পালাতে বা লড়াই করতে পারি।
হাইপোগ্লেসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে শরীরের অ্যাড্রিনালিনের উৎপাদন বেড়ে যায়। এর ফলে ফলে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন: কাঁপুনি (শিভারিং), ঝাঁকুনি (ট্রেমর), হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, উদ্বেগ, অতিরিক্ত ঘাম এবং ক্ষুধা অনুভূতি।
ড. গ্লাটার বলেন, কাঁপুনি ও ঝাঁকুনি এক নয়। ট্রেমর হলো সেই ধরনের কাঁপুনি যা স্নায়ুতন্ত্রের রোগ যেমন পারকিনসন্স ডিজিজের সময় দেখা যায়। ট্রেমর হলো একটি অনিচ্ছাকৃত পেশি সংকোচন যা সাধারণত হাত ও পায়ে মধ্যে কাঁপুনি সৃষ্টি করে। তবে পা, মাথা এবং পুরো শরীরেও এই ঝাঁকুনি হতে পারে।
শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে অসুস্থতা হতে পারে, তাই শীত থেকে রক্ষা পেতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি—
১. গরম পোশাক পরুন: সোয়েটার, কোট, স্কার্ফ, হাতমোজা এবং উলের মোজা পরিধান করলে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা সহজ হয়।
২. ফোল্ড বা কম্বল ব্যবহার করুন: শিভারিং (কাঁপন) শুরু হলে গরম কম্বল বা ফোল্ড দিয়ে নিজেকে ঢেকে নিন, এতে তাপমাত্রা দ্রুত ফিরে আসে।
৩. উষ্ণ পানীয় পান করুন: গরম চা, কফি বা স্যুপ পান করলে শরীরের ভেতর থেকে তাপ উৎপন্ন হয় এবং কাঁপন কমে আসে।
৪. দীর্ঘ সময় ঠান্ডা পরিবেশে না থাকুন: ঠান্ডায় বেশি সময় না কাটানোর চেষ্টা করুন, প্রয়োজন হলে গরম পরিবেশে ফিরে আসুন।
৫. হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি থেকে সতর্ক থাকুন: শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। শীতে হাত পায়ের অনুভূতি হারানো বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকে শরণাপন্ন হতে হবে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
শীতকাল এলেই ঠান্ডায় আমাদের শরীর কাঁপতে শুরু করে। তবে কেন এমনটি হয় তা অনেকেরই অজানা। শরীরের এই প্রতিক্রিয়া অনেকটা অকার্যকর বলে মনে হলেও এটি তাপ উৎপন্ন করার জন্য মানবদেহে বিবর্তিত হয়েছে। এটি এক ধরনের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া, যা আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য কাজ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লেনক্স হিল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি চিকিৎসক ড. রবার্ট গ্ল্যাটার বলেন, প্রায় ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রা বজায় রাখতে হয় মানব দেহকে। শরীরের তাপমাত্রা এর নিচে নামলে হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
হাইপোথার্মিয়া এমন এক অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক কমে যায়। এই অবস্থা শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এবং জীবনের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে মস্তিষ্ক শরীরের তাপমাত্রা সব সময় পর্যবেক্ষণ করে এবং খুব সতর্কভাবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে।
যদি ত্বকের পৃষ্ঠ খুব ঠান্ডা হয়ে যায়, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে সংকেত পাঠায় ত্বকের সংবেদী স্নায়ু। হাইপোথ্যালামাসের কাজ হলো শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করা, যাকে হোমিওস্ট্যাসিস বলা হয়। শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, মেজাজ এবং ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস।
ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বলেন, শরীরকে গরম রাখার জন্য কাঁপানোর প্রক্রিয়া শুরু করে হাইপোথ্যালামাস। সেসময় শরীরের হাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত পেশিগুলো দ্রুত সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে।
ড. রবার্ট গ্ল্যাটার বলেন, এই সংকোচন ও প্রসারণ শুধুমাত্র অঙ্গগুলোকে কাঁপায় না, সেই সঙ্গে চোয়ালের পেশিগুলোকেও টানতে পারে। ফলে ‘আপনার দাঁতে দাঁতে ঘষা লাগতে পারে বা দাঁত কিড়মিড় শুরু হয়।’
ইংরেজি ভাষার বিশ্বকোষ ব্রিটানিকা–এর মতে, পেশির সংকোচন থেকে রাসায়নিক শক্তি খরচ হয়। যদিও কিছু শক্তি গতি সৃষ্টিতে ব্যবহৃত হয়, তবে বেশির ভাগ শক্তি পেশিতে তাপ উৎপন্ন করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীর উষ্ণ হয়।
ড. গ্লাটার বলেন, ঠান্ডার কাঁপুনি শরীরের অন্য ধরনের কাঁপুনি থেকে আলাদা। উদাহরণস্বরূপ, বিপদ বা ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য শরীর কাঁপতে পারে যা মূলত ‘লড়াই বা পালানোর প্রতিক্রিয়া এবং অ্যাড্রিনালিনের উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিপদে সাড়া দেওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত করতে শরীর এই প্রতিক্রিয়া দেখায়। এর মাধ্যমে দৌড়াতে বা লড়াই করতে প্রস্তুত হতে পারি আমরা।’
অ্যাড্রিনালিন নামক হরমোনটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন পেশিকে সংকুচিত বা সংকুচিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত করে। যখন আমরা বিপদ বা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পড়ি, তখন অ্যাড্রিনালিন আমাদের রক্তনালি ও শরীরজুড়ে প্রবাহিত হয়। এটি আমাদের পেশিকে এমনভাবে প্রস্তুত করে যেন আমরা দ্রুত পালাতে বা লড়াই করতে পারি।
হাইপোগ্লেসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে শরীরের অ্যাড্রিনালিনের উৎপাদন বেড়ে যায়। এর ফলে ফলে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন: কাঁপুনি (শিভারিং), ঝাঁকুনি (ট্রেমর), হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, উদ্বেগ, অতিরিক্ত ঘাম এবং ক্ষুধা অনুভূতি।
ড. গ্লাটার বলেন, কাঁপুনি ও ঝাঁকুনি এক নয়। ট্রেমর হলো সেই ধরনের কাঁপুনি যা স্নায়ুতন্ত্রের রোগ যেমন পারকিনসন্স ডিজিজের সময় দেখা যায়। ট্রেমর হলো একটি অনিচ্ছাকৃত পেশি সংকোচন যা সাধারণত হাত ও পায়ে মধ্যে কাঁপুনি সৃষ্টি করে। তবে পা, মাথা এবং পুরো শরীরেও এই ঝাঁকুনি হতে পারে।
শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে অসুস্থতা হতে পারে, তাই শীত থেকে রক্ষা পেতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি—
১. গরম পোশাক পরুন: সোয়েটার, কোট, স্কার্ফ, হাতমোজা এবং উলের মোজা পরিধান করলে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা সহজ হয়।
২. ফোল্ড বা কম্বল ব্যবহার করুন: শিভারিং (কাঁপন) শুরু হলে গরম কম্বল বা ফোল্ড দিয়ে নিজেকে ঢেকে নিন, এতে তাপমাত্রা দ্রুত ফিরে আসে।
৩. উষ্ণ পানীয় পান করুন: গরম চা, কফি বা স্যুপ পান করলে শরীরের ভেতর থেকে তাপ উৎপন্ন হয় এবং কাঁপন কমে আসে।
৪. দীর্ঘ সময় ঠান্ডা পরিবেশে না থাকুন: ঠান্ডায় বেশি সময় না কাটানোর চেষ্টা করুন, প্রয়োজন হলে গরম পরিবেশে ফিরে আসুন।
৫. হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি থেকে সতর্ক থাকুন: শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। শীতে হাত পায়ের অনুভূতি হারানো বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকে শরণাপন্ন হতে হবে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ মঙ্গলে আজ থেকে ৩৬০ কোটি বছর আগে বিশাল এক মহাসাগর ছিল এবং তার ঢেউ সৈকতে আছড়ে পড়ত। সম্প্রতি এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে নতুন গবেষণা। চীনের ঝুরং রোভার ২০২১-২২ সাল সময়ের মধ্যে মঙ্গলের ইউটোপিয়া প্লানিশিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভূগর্ভস্থ রাডার ব্যবহার করে সম্ভাব্য এই প্রাচীন মহাসাগরের উপকূলরেখ
১৪ মিনিট আগেঅতীতের দিকে তাকালে পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনকে রোলার কোস্টারের সঙ্গে তুলনা করা যায়। সময়ে সময়ে এই গ্রহের তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটেছে। একবার উষ্ণ হয়ে উঠেছে, আবার বরফযুগ শুরু হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলো কখনোই স্থায়ী নয়। কিছু সময় পর পৃথিবী বর্তমানে উষ্ণ পরিবেশে ফিরে আসে। তবে নতুন এক গবেষণায় জানা যায়, আজ থেকে ১১
১ দিন আগেবিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক দল। তারা একটি নতুন পরমাণু ব্যাটারি উদ্ভাবন করেছেন, যা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। কারণ এই ধরনের পরমাণু ব্যাটারি কোনো চার্জ বা রক্ষণাবেক্ষণ...
২ দিন আগেহিমশীতল বরফে আচ্ছাদিত প্রত্যন্ত আর্কটিক অঞ্চলে বসবাস করে বিশালদেহী সাদা লোমের পোলার বিয়ার বা মেরু ভালুক। এই তীব্র ঠান্ডায় থাকলেও তাদের লোমে বরফ জমে না। তাই মেরু ভালুকের লোম নিয়ে বেশ আগ্রহী হন বিজ্ঞানীরা। প্রাণীটির লোম নিয়ে গবেষণা করে এর কারণ খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। মূলত তৈলাক্ত হওয়ায় লোমগুলো জমে যায়
৩ দিন আগে