জাহাঙ্গীর আলম
ভোলার চরফ্যাশনে একটি দেশি হাঁস কালো ডিম দিচ্ছে। এ নিয়ে পুরো দেশেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে নানা জনে নানা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে। এর বৈজ্ঞানিক কী হতে পারে?
পৃথিবীতে মুরগির বহু জাত থাকলেও ডিমের রং সাধারণ দুটি—সাদা এবং বাদামি। তবে কিছু জাতের মুরগি ক্রিম, পিংক, নীল এবং সবুজ রঙের ডিমও দেয়। তবে হাঁসের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। একই জাতের হাঁস হলেও একেক হাঁস একেক রঙের ডিম দিতে পারে।
মুরগির ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোড আইল্যান্ড জাতের মুরগি বাদামি ডিম পাড়ে, আর লংহর্নের ডিম হয় সাদা। আবার আমেরুকানাস জাতের মুরগি নীল রঙের ডিম দেয়। ফলে পালনের জন্য কোনো জাত বাছাই করলে আগে থেকেই জানা যায় সেটি কোন রঙের ডিম দেবে। কিন্তু হাঁসের ক্ষেত্রে কখনোই নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই।
একই জাতের ভিন্ন ভিন্ন হাঁস সাদা, নীলচে সবুজ অথবা কালো বা চারকোল ধূসর রঙের ডিম দিতে পারে। অবশ্য পুরো জীবৎকালে একটি হাঁস একই রঙের ডিমই দেয়।
এমনটি কেন হয়? ডিমের খোসার রং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। এটি হাঁস ও মুরগি উভয়ের ক্ষেত্রেই সত্য। দেখা যায়, ডিম দেওয়া শুরুর দিকে ডিমের রং বেশি গাঢ় এবং উজ্জ্বল হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে শুরু করে। অবশ্য মূল রং অপরিবর্তিতই থাকে।
খোসার রঙের পেছনে একটা সরল বিজ্ঞান আছে। হাঁসদের ডিমের রঙের জন্য দায়ী দুটি জিন। এই দুই জিনই একসঙ্গে বহন করে তারা। হতে পারে, সাদা রঙের জন্য দায়ী জিনটি প্রচ্ছন্ন, আর নীল বা সবুজ রঙের জন্য দায়ী জিনটি প্রকট। অথবা এর উল্টোটা। মিলনের সময় পুরুষ ও স্ত্রী হাঁস একটি করে জিন সরবরাহ করে। অর্থাৎ জাইগোট গঠনের সময় পুরুষ হাঁস থেকে একটি এবং স্ত্রী হাঁস থেকে এটি করে জিন যুক্ত হয়।
যে হাঁসটি নিয়মিত নীল ডিম দেয় অথবা নীল ডিম থেকে জন্ম হয় তার সঙ্গে পরবর্তীতে সাদা জিনের সংমিশ্রণেও শেষ পর্যন্ত নীল ডিম পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে সব সময় এমন হয় না। দেখা যায়, সারা জীবন সাদা ডিম দিয়েছে এমন হাঁসের ডিম থেকে জন্মানো বাচ্চাটিও বড় হয়ে নীল খোসার ডিম পাড়তে শুরু করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, গৃহপালিত সব হাঁসেরই আদি জাত মূলত বুনোহাঁস। এই বুনোহাঁসের ডিম হয় সাধারণত হালকা সবুজ। প্রকৃতিতে নিরাপত্তার জন্যই পাখির ডিমের বিভিন্ন রং হয়ে থাকে বলে বিবর্তনবাদীরা মনে করেন।
এই একটি প্রজাতি থেকে আধুনিক বিভিন্ন জাতের হাঁসের ডিমের বিভিন্ন রং হওয়ার পেছনে ব্রিডার এবং মানুষের নান্দনিকতার আকাঙ্ক্ষাকে দায়ী করা যেতে পারে।
ধারণা করা হয়, হাঁস প্রথম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গৃহপালিত পাখিতে পরিণত হয়। ইউরোপে জনপ্রিয় হতে বেশ সময় লেগেছে। সতেরো শতকে হাঁসের প্রজনন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। প্রায় একই সময়ে ইউরোপীয়রা মুরগির প্রজনন শুরু করে। ইউরোপীয়রা হাঁসের সাদা ডিম পছন্দ করত। ‘ব্রিড স্ট্যান্ডার্ড’ বা প্রজননের আদর্শ মান নির্ধারণ হয় ভিক্টোরিয়ান যুগে। মূল ব্রিটিশ পোল্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬৫ সালে।হাঁসের ডিমের রং ইউরোপে জাত উন্নয়নের
ইতিহাসের সঙ্গে মিলে যায়। যেমন, আইলেসবারি হাঁস প্রাথমিকভাবে সাদা ডিম দিত। ১৮১০ সালে ‘হোয়াইট ইংলিশ’ হিসেবে এ জাত রেকর্ড করা হয়। ১৮৪৫ সালে প্রথম পোল্ট্রি শোতে এই হাঁসই বেশি ছিল। ১৮৭৩ সালে চীনা পেকিন হাঁসের সঙ্গে এর সংকর শুরু হয়। পেকিনগুলো এক বছর পরে আদর্শ মানে পৌঁছায়। যেখানে সাদা পালকযুক্ত সাদা ডিম পাড়া হাঁস আজকের ইউরোপের বাজারে আধিপত্য করছে।
ভারতীয় রানার হাঁসও এসেছে চীন থেকে। তবে সেটি ইউরোপের ওই ঘটনার অনেক পরে। তারা প্রথম যুক্তরাজ্যে পৌঁছায় ১৮৩৫ সালে। ১৯০০ সালে আদর্শ মানে পৌঁছায়। সেই সময়ে সাদা ডিম ‘বিশুদ্ধ’ জাত হিসেবে বিবেচিত হতো, এখনো এই মানই অনুসরণ করা হয়।
এভাবেই মানুষ বিভিন্ন জাতের মধ্যে সংকরায়ণের মাধ্যমে তাদের পছন্দের জাত উন্নয়ন করেছে। একেক দেশ ও সংস্কৃতির মানুষের রুচি পছন্দ অনুযায়ী হাঁসের চেহারা ও ডিমের রং উন্নয়নে চেষ্টা হয়েছে। যেমন ইউরোপীয়রাই প্রথম সাদা ডিম দেওয়া জাতের উন্নয়ন করে, পরে তারা বিভিন্ন জাতের সংকর থেকেও সাদা ডিম দেওয়া জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হয়।
বলতে গেলে কয়েক শতক ধরে বিভিন্ন জাত উন্নয়ন ও সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে হাঁস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যান্য বৈশিষ্ট্য উন্নয়নের জন্য এসব সংকর করা হয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটির প্রভাব পড়েছে ডিমের খোসার রঙে।
তার মানে, কোন হাঁসের ডিমের রং কী হবে সেটি আগে থেকে বলতে পারাটা মুশকিল। একটি হাঁসের প্রজনন ইতিহাস সম্পর্কে জানা থাকলেও ডিমের রং সম্পর্কে হয়তো অনুমান করা যাবে কিন্তু শতভাগ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
এরপরও আধুনিক জাত বিবেচনায় দেখা গেছে, সাদা ডিম দেওয়া জাতগুলো হলো—পেকিন, স্যাক্সনি, সিলভার অ্যাপল ইয়ার্ড। নীল ডিম পাড়া জাতগুলো—অ্যানকোনা, ম্যাগপাই, ম্যালার্ড এবং রানার। আর কালো বা চারকোল ধূসর রঙের ডিম দেওয়া হাঁসের জাতটি হলো—কাইউগাস।
বলা যায়, হাঁসের ডিমের রং ব্যাখ্যায় সঠিক কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নেই। এটি হতে পারে তার জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে। আবার অনেক সময় খাবার, আবহাওয়া বা শারীরিক সমস্যার কারণেও ডিমের রং নির্ধারণ হতে পারে।
শারীরবৃত্তীয় বিষয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিমের খোসার মূল উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বোনেট। ডিমের রঙের জন্য দায়ী দুটি রঞ্জক। সবুজ রঞ্জক হলো বিলিভারডিন। আর নীল রঞ্জক ওসায়ানিন—এটি পিত্ত এবং হিমোগ্লোবিন ভাঙনের উপজাত। ডিমের খোসায় বিলিভারডিন অথবা ওসায়ানিনের উপস্থিতি থাকলে তা পুরো খোসায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ডিমের খোসার রং সবুজ বা নীল হয়।
বাদামি এবং লালচে রঙের যে দাগ এবং প্যাটার্ন ডিমে দেখা যায়, এটি খোসা গ্রন্থিতে সংশ্লেষিত প্রোটোপোরফাইরিন থেকে আসে। এটি উৎপাদিত হয় লোহিত রক্তকণিকার ভাঙন থেকে। ডিম উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এটি নিঃসৃত ও জমা হয়। এ কারণেই মারান মুরগি ডিম পাড়ার পর সেটি শুকিয়ে যাওয়ার আগে রং ঘষে তুলে ফেলা যায়। আবার কাইউগা হাঁসের ডিমের কিউটিকল (ডিমের ওপরের প্রোটিন স্তর) ঘষে তোলা যায়।
সাদা ডিমের খোসায় শুধু প্রোটোপোরফাইরিন থাকে। এটি নীল এবং সবুজ খোসায়ও বিভিন্ন পরিমাণে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেমিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিউজে ২০০৬ সালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এসব তথ্যেরই প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, বেশিরভাগ রঙিন ডিমের ক্ষেত্রে রঞ্জক মূলত ডিমের ওপরের স্তরে প্রলেপের মতো করে ছড়িয়ে পড়ে ডিম্বনালীতে থাকার সময়।
ভোলার চরফ্যাশনে একটি দেশি হাঁস কালো ডিম দিচ্ছে। এ নিয়ে পুরো দেশেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে নানা জনে নানা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে। এর বৈজ্ঞানিক কী হতে পারে?
পৃথিবীতে মুরগির বহু জাত থাকলেও ডিমের রং সাধারণ দুটি—সাদা এবং বাদামি। তবে কিছু জাতের মুরগি ক্রিম, পিংক, নীল এবং সবুজ রঙের ডিমও দেয়। তবে হাঁসের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। একই জাতের হাঁস হলেও একেক হাঁস একেক রঙের ডিম দিতে পারে।
মুরগির ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোড আইল্যান্ড জাতের মুরগি বাদামি ডিম পাড়ে, আর লংহর্নের ডিম হয় সাদা। আবার আমেরুকানাস জাতের মুরগি নীল রঙের ডিম দেয়। ফলে পালনের জন্য কোনো জাত বাছাই করলে আগে থেকেই জানা যায় সেটি কোন রঙের ডিম দেবে। কিন্তু হাঁসের ক্ষেত্রে কখনোই নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই।
একই জাতের ভিন্ন ভিন্ন হাঁস সাদা, নীলচে সবুজ অথবা কালো বা চারকোল ধূসর রঙের ডিম দিতে পারে। অবশ্য পুরো জীবৎকালে একটি হাঁস একই রঙের ডিমই দেয়।
এমনটি কেন হয়? ডিমের খোসার রং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। এটি হাঁস ও মুরগি উভয়ের ক্ষেত্রেই সত্য। দেখা যায়, ডিম দেওয়া শুরুর দিকে ডিমের রং বেশি গাঢ় এবং উজ্জ্বল হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রং হালকা হতে শুরু করে। অবশ্য মূল রং অপরিবর্তিতই থাকে।
খোসার রঙের পেছনে একটা সরল বিজ্ঞান আছে। হাঁসদের ডিমের রঙের জন্য দায়ী দুটি জিন। এই দুই জিনই একসঙ্গে বহন করে তারা। হতে পারে, সাদা রঙের জন্য দায়ী জিনটি প্রচ্ছন্ন, আর নীল বা সবুজ রঙের জন্য দায়ী জিনটি প্রকট। অথবা এর উল্টোটা। মিলনের সময় পুরুষ ও স্ত্রী হাঁস একটি করে জিন সরবরাহ করে। অর্থাৎ জাইগোট গঠনের সময় পুরুষ হাঁস থেকে একটি এবং স্ত্রী হাঁস থেকে এটি করে জিন যুক্ত হয়।
যে হাঁসটি নিয়মিত নীল ডিম দেয় অথবা নীল ডিম থেকে জন্ম হয় তার সঙ্গে পরবর্তীতে সাদা জিনের সংমিশ্রণেও শেষ পর্যন্ত নীল ডিম পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তবে সব সময় এমন হয় না। দেখা যায়, সারা জীবন সাদা ডিম দিয়েছে এমন হাঁসের ডিম থেকে জন্মানো বাচ্চাটিও বড় হয়ে নীল খোসার ডিম পাড়তে শুরু করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, গৃহপালিত সব হাঁসেরই আদি জাত মূলত বুনোহাঁস। এই বুনোহাঁসের ডিম হয় সাধারণত হালকা সবুজ। প্রকৃতিতে নিরাপত্তার জন্যই পাখির ডিমের বিভিন্ন রং হয়ে থাকে বলে বিবর্তনবাদীরা মনে করেন।
এই একটি প্রজাতি থেকে আধুনিক বিভিন্ন জাতের হাঁসের ডিমের বিভিন্ন রং হওয়ার পেছনে ব্রিডার এবং মানুষের নান্দনিকতার আকাঙ্ক্ষাকে দায়ী করা যেতে পারে।
ধারণা করা হয়, হাঁস প্রথম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গৃহপালিত পাখিতে পরিণত হয়। ইউরোপে জনপ্রিয় হতে বেশ সময় লেগেছে। সতেরো শতকে হাঁসের প্রজনন নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়। প্রায় একই সময়ে ইউরোপীয়রা মুরগির প্রজনন শুরু করে। ইউরোপীয়রা হাঁসের সাদা ডিম পছন্দ করত। ‘ব্রিড স্ট্যান্ডার্ড’ বা প্রজননের আদর্শ মান নির্ধারণ হয় ভিক্টোরিয়ান যুগে। মূল ব্রিটিশ পোল্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬৫ সালে।হাঁসের ডিমের রং ইউরোপে জাত উন্নয়নের
ইতিহাসের সঙ্গে মিলে যায়। যেমন, আইলেসবারি হাঁস প্রাথমিকভাবে সাদা ডিম দিত। ১৮১০ সালে ‘হোয়াইট ইংলিশ’ হিসেবে এ জাত রেকর্ড করা হয়। ১৮৪৫ সালে প্রথম পোল্ট্রি শোতে এই হাঁসই বেশি ছিল। ১৮৭৩ সালে চীনা পেকিন হাঁসের সঙ্গে এর সংকর শুরু হয়। পেকিনগুলো এক বছর পরে আদর্শ মানে পৌঁছায়। যেখানে সাদা পালকযুক্ত সাদা ডিম পাড়া হাঁস আজকের ইউরোপের বাজারে আধিপত্য করছে।
ভারতীয় রানার হাঁসও এসেছে চীন থেকে। তবে সেটি ইউরোপের ওই ঘটনার অনেক পরে। তারা প্রথম যুক্তরাজ্যে পৌঁছায় ১৮৩৫ সালে। ১৯০০ সালে আদর্শ মানে পৌঁছায়। সেই সময়ে সাদা ডিম ‘বিশুদ্ধ’ জাত হিসেবে বিবেচিত হতো, এখনো এই মানই অনুসরণ করা হয়।
এভাবেই মানুষ বিভিন্ন জাতের মধ্যে সংকরায়ণের মাধ্যমে তাদের পছন্দের জাত উন্নয়ন করেছে। একেক দেশ ও সংস্কৃতির মানুষের রুচি পছন্দ অনুযায়ী হাঁসের চেহারা ও ডিমের রং উন্নয়নে চেষ্টা হয়েছে। যেমন ইউরোপীয়রাই প্রথম সাদা ডিম দেওয়া জাতের উন্নয়ন করে, পরে তারা বিভিন্ন জাতের সংকর থেকেও সাদা ডিম দেওয়া জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হয়।
বলতে গেলে কয়েক শতক ধরে বিভিন্ন জাত উন্নয়ন ও সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেছে হাঁস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যান্য বৈশিষ্ট্য উন্নয়নের জন্য এসব সংকর করা হয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটির প্রভাব পড়েছে ডিমের খোসার রঙে।
তার মানে, কোন হাঁসের ডিমের রং কী হবে সেটি আগে থেকে বলতে পারাটা মুশকিল। একটি হাঁসের প্রজনন ইতিহাস সম্পর্কে জানা থাকলেও ডিমের রং সম্পর্কে হয়তো অনুমান করা যাবে কিন্তু শতভাগ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
এরপরও আধুনিক জাত বিবেচনায় দেখা গেছে, সাদা ডিম দেওয়া জাতগুলো হলো—পেকিন, স্যাক্সনি, সিলভার অ্যাপল ইয়ার্ড। নীল ডিম পাড়া জাতগুলো—অ্যানকোনা, ম্যাগপাই, ম্যালার্ড এবং রানার। আর কালো বা চারকোল ধূসর রঙের ডিম দেওয়া হাঁসের জাতটি হলো—কাইউগাস।
বলা যায়, হাঁসের ডিমের রং ব্যাখ্যায় সঠিক কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নেই। এটি হতে পারে তার জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে। আবার অনেক সময় খাবার, আবহাওয়া বা শারীরিক সমস্যার কারণেও ডিমের রং নির্ধারণ হতে পারে।
শারীরবৃত্তীয় বিষয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিমের খোসার মূল উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বোনেট। ডিমের রঙের জন্য দায়ী দুটি রঞ্জক। সবুজ রঞ্জক হলো বিলিভারডিন। আর নীল রঞ্জক ওসায়ানিন—এটি পিত্ত এবং হিমোগ্লোবিন ভাঙনের উপজাত। ডিমের খোসায় বিলিভারডিন অথবা ওসায়ানিনের উপস্থিতি থাকলে তা পুরো খোসায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ডিমের খোসার রং সবুজ বা নীল হয়।
বাদামি এবং লালচে রঙের যে দাগ এবং প্যাটার্ন ডিমে দেখা যায়, এটি খোসা গ্রন্থিতে সংশ্লেষিত প্রোটোপোরফাইরিন থেকে আসে। এটি উৎপাদিত হয় লোহিত রক্তকণিকার ভাঙন থেকে। ডিম উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এটি নিঃসৃত ও জমা হয়। এ কারণেই মারান মুরগি ডিম পাড়ার পর সেটি শুকিয়ে যাওয়ার আগে রং ঘষে তুলে ফেলা যায়। আবার কাইউগা হাঁসের ডিমের কিউটিকল (ডিমের ওপরের প্রোটিন স্তর) ঘষে তোলা যায়।
সাদা ডিমের খোসায় শুধু প্রোটোপোরফাইরিন থাকে। এটি নীল এবং সবুজ খোসায়ও বিভিন্ন পরিমাণে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেমিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিউজে ২০০৬ সালে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে এসব তথ্যেরই প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, বেশিরভাগ রঙিন ডিমের ক্ষেত্রে রঞ্জক মূলত ডিমের ওপরের স্তরে প্রলেপের মতো করে ছড়িয়ে পড়ে ডিম্বনালীতে থাকার সময়।
সেলিব্রিটি শেফ বা ইতালি নানিরা যা কখনোই কল্পনা করতে পারেননি তাই তৈরি করে দেখালেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা। বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা স্প্যাগেটি তৈরি করলেন তাঁরা। গবেষকেরা এমন এক স্টার্চ ন্যানোফাইবারের তৈরি স্প্যাগেটি তৈরি করেছে, যা মাত্র ৩৭২ ন্যানোমিটার চওড়া। চুলের চেয়ে ২০০ গুণ পাত
১৫ ঘণ্টা আগেপ্রথমবারের মতো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে একটি নক্ষত্রের মৃত্যুর মুহূর্তের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে সুপারনোভা বিস্ফোরণের আগের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। ছবিতে নক্ষত্রটিকে অদ্ভুত ডিম আকারের কোকুনের (রেশমগুটি) মতো দেখা যায়।
১৭ ঘণ্টা আগেআমাদের অনেকেরই অফিসে কাজ করতে গিয়ে দীর্ঘসময় বসে থাকতে হয়। আর দিনের একটা বড় সময় বসে থাকাটা বাড়ায় হৃৎপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি। এমনকি অবসর সময়ে শরীরচর্চা করেও এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রেহাই মিলবে না। এসব তথ্য উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
৩ দিন আগেবিজ্ঞানীরা বলছেন, জিপিএসের সাহায্য ছাড়াই এআই ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া থেকে কোনো ব্যক্তির সাম্প্রতিক অবস্থান চিহ্নিত করা যাবে।
৯ দিন আগে