জাহাঙ্গীর আলম
এরউইন শ্রোডিঙ্গার। কোয়ান্টাম মেকানিকসের প্রবাদপুরুষ। তাঁর বিখ্যাত থট প্রসেসের নাম ‘শ্রোডিঙ্গারের কালো বিড়াল’। যাঁরা কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার কিছুই বোঝেন না, তাঁরাও এই গল্প শুনে থাকবেন। এতটাই বিখ্যাত মানুষ তিনি।
কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে বেরিয়ে এসেছে শ্রোডিঙ্গারের জীবনের ভয়ানক এক অন্ধকার দিক। এই মহান বিজ্ঞানী নাকি ছিলেন ভয়ঙ্কর শিশু যৌন নিপীড়ক। গত বছর আয়ারল্যান্ডের পত্রিকা দ্য আইরিশ টাইমসের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়, এই বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ‘মেয়েদের সিরিয়াল পালক’ ছিলেন। শিশুদের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ ছিল তাঁর। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী কমপক্ষে চারটি কন্যাশিশুকে যৌন নিপীড়ন করেছেন। বেশ কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীও তাঁর শিকার ছিলেন।
এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে ডাবলিনে ট্রিনিটি কলেজের এরউইন শ্রোডিঙ্গার লেকচার থিয়েটারের নাম পরিবর্তন করার দাবিতে একটি পিটিশন শুরু হয়।
কণা পদার্থবিদ্যা নিয়ে বিজ্ঞানী ও সাধারণ মহলে রহস্যের শেষ নেই। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে আরও কত কত তত্ত্ব এসেছে! এই ধারণার প্রাণপুরুষ শ্রোডিঙ্গার। এর কল্যাণেই রীতিমতো তারকাবিজ্ঞানী বনে গেছেন তিনি। তাঁর এমন আচরণের কথা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শ্রোডিঙ্গারের লালসা থেকে নাকি রক্ষা পাননি তাঁর শিক্ষার্থীরাও। তাঁর বয়স যখন ৪৫, তখন নাকি ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অন্তঃসত্ত্বা করেছিলেন।
শ্রোডিঙ্গার মারা যান ১৯৬১ সালে। তিনি তাঁর ডায়েরিতে তাঁর কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের বহু ইঙ্গিত রেখে গেছেন। তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে ১৪ বছর বয়সী ছাত্রী ইথা জুঙ্গারকে যৌন সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। এই ছাত্রী ১৭ বছর বয়সে গর্ভবতী হয়েছিল। পরে শ্রোডিঙ্গার তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন। ওই সময় জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হয়।
শ্রোডিঙ্গার, লাইফ, অ্যান্ড থট (১৯৮৬) শিরোনামের জীবনীতে ওয়াল্টার মুর বর্ণনা করেছেন, কীভাবে শ্রোডিঙ্গার ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীর প্রতি ‘মোহগ্রস্ত’ হয়ে পড়েছিলেন। ইথা জুঙ্গারের ওই ঘটনার কিছুদিন পরই তিনি বারবারা ডি ব্রুন নামে এই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন। পরিবারের একজন সদস্য এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পরে শ্রোডিঙ্গার শিশুটির পিছু ছাড়তে সম্মত হন। বারবারা ছিল শ্রোডিঙ্গারের পারিবারিক বন্ধুর ভাগনি। তবে শ্রোডিঙ্গার ডায়েরিতে লিখেছেন, বারবার ছিল তাঁর ‘জীবনের ব্যর্থ ভালোবাসাগুলোর’ মধ্যে একটি। ২৬ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছিলেন শ্রোডিঙ্গার। ওই তরুণী গর্ভবতীও হয়েছিলেন।
ওয়াল্টার মুরের লেখা জীবনীতে শ্রোডিঙ্গারের অন্য অনেক ধরনের নিপীড়ন এবং পেডোফিলিক চিন্তাভাবনা ও আচরণের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। শ্রোডিঙ্গারের এই বৈশিষ্ট্যকে ‘লোলিটা কমপ্লেক্স’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন মুর। ১৯৮৯ সালে মুর লিখেছেন, নারীদের প্রতি এই পদার্থবিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গি ‘মূলত একজন পুরুষ আধিপত্যবাদীর মতো’ ছিল। কিন্তু কম বয়সী মেয়েদের প্রতি তাঁর মুগ্ধতাকে অনেকে হালকা করে এবং এমনকি রোম্যান্টিকভাবে তুলে ধরেছিলেন।
ব্যাপারটি শ্রোডিঙ্গারের মধ্যে শুরু হয়েছিল জীবনের প্রথম দিকেই। ২৪ বছর বয়সে তিনি ১৫ বছর বয়সী ফেলিস ক্রাউস এবং ২৫-এ ১৬ বছর বয়সী অ্যানেমারি বার্টেলের পিছে লেগেছিলেন। বার্টেলকে পরে তিনি বিয়ে করেন। একইভাবে, ২০১২ সালে প্রকাশিত শ্রোডিঙ্গারের আরেক আত্মজীবনীতে (শ্রোডিঙ্গার, এরউইন শ্রোডিঙ্গার অ্যান্ড কোয়ান্টাম রেভল্যুশন) জন গ্রিবিন অল্পবয়সী মেয়েদের ওপর এই পদার্থবিজ্ঞানীর যৌন নিপীড়নকে নিছক ‘স্নেহ বা আলিঙ্গন করা’ হিসেবে অনেকটা উপেক্ষা করে গেছেন।
শ্রোডিঙ্গারের যৌন অভ্যাসকে তাঁর জীবদ্দশায় প্রায়শই ‘অপ্রচলিত’ বা এ ধরনের মৃদু নেতিবাচক শব্দে বিশেষায়িত করা হতো। কিন্তু জার্মান সংবাদপত্র ডের স্পিগেল তাঁর মৃত্যুর ৬০তম বার্ষিকীতে উল্লেখ করে, শ্রোডিঙ্গারের কথিত ‘প্রতিভা’ এবং বিজ্ঞানে তাঁর গুরুত্বের কারণে নারী ও শিশুদের প্রতি তাঁর দুর্ব্যবহার প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়েছে।
১৯৩৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাগডালেন কলেজের ফেলো থাকাকালীন নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরও শ্রোডিঙ্গার অক্সফোর্ড ছেড়ে যান। কারণ, তিনি স্ত্রীর পাশাপাশি আরেক নারীকে (উপপত্নী) রাখার আবদার করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই অপ্রচলিত আবদার মেনে নেয়নি। ১৯৩৪ সালে শ্রোডিঙ্গার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দিতে যান। সেখানে স্থায়ী পদের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি ওই একই আবদার মেনে না নেওয়ার কারণে।
তবে ১৯৩৮ সালে ডাবলিনে পড়ানোর জন্য শ্রোডিঙ্গারকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানান আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট এমোন ডি ভ্যালেরা (নিজেও গণিতবিদ)। শ্রোডিঙ্গার ও তাঁর স্ত্রী বার্টেলের পাশাপাশি উপপত্নী হিলডে মার্চের জন্য আইরিশ ভিসা দেন প্রেসিডেন্ট।
এক অস্ট্রিয়ান সহকর্মীর স্ত্রীর সঙ্গেও শ্রোডিঙ্গারের সম্পর্ক ছিল। ১৯৩৪ সালে ওই নারী শ্রোডিঙ্গারের ঔরসে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
এই তথ্যগুলো শ্রোডিঙ্গারের জীবনীকারদের মাধ্যমে অন্তত আশির দশকের মাঝামাঝি থেকেই জানা গেছে। এরপরও এ নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য হয়নি। ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এরউইন শ্রোডিঙ্গার লেকচার থিয়েটার ছাড়াও আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রোডিঙ্গারের নামে একটি ভবন রয়েছে। এরউইন শ্রোডিঙ্গার ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ম্যাথমেটিক্যাল ফিজিকস ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রোডিঙ্গারের প্রতিকৃতি ছিল একটি অস্ট্রিয়ান ব্যাংকনোটের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ২০১৩ শ্রোডিঙ্গারের জন্মদিনে ডুডল বানিয়েছিল গুগল। চাঁদের একটি গভীর খাদের নামকরণ করা হয়েছে শ্রোডিঙ্গারের নামে।
বিজ্ঞানে শ্রোডিঙ্গারের অবদান নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। তাঁর তত্ত্ব ছাড়া মহাবিশ্ব ও কণা পদার্থবিদ্যাকে বোঝার সূত্রই হয়তো পাওয়া যেত না। কিন্তু তাই বলে সেই অসম্ভব প্রতিভার হাতে নারী-শিশুদের নিপীড়িত নির্যাতিত হওয়ার অপরাধ লঘু হয়ে যায় না। তাঁর অবদানকে স্মরণ করার পাশাপাশি তাঁর অন্যায়গুলোকেও আমাদের স্বীকার করতে হবে। সেটি মেনে নিয়েই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ তাদের একটি লেকটার হল থেকে শ্রোডিঙ্গারের নাম বাদ দিয়েছে।
এরউইন শ্রোডিঙ্গার। কোয়ান্টাম মেকানিকসের প্রবাদপুরুষ। তাঁর বিখ্যাত থট প্রসেসের নাম ‘শ্রোডিঙ্গারের কালো বিড়াল’। যাঁরা কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার কিছুই বোঝেন না, তাঁরাও এই গল্প শুনে থাকবেন। এতটাই বিখ্যাত মানুষ তিনি।
কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে বেরিয়ে এসেছে শ্রোডিঙ্গারের জীবনের ভয়ানক এক অন্ধকার দিক। এই মহান বিজ্ঞানী নাকি ছিলেন ভয়ঙ্কর শিশু যৌন নিপীড়ক। গত বছর আয়ারল্যান্ডের পত্রিকা দ্য আইরিশ টাইমসের এক নিবন্ধে দাবি করা হয়, এই বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ‘মেয়েদের সিরিয়াল পালক’ ছিলেন। শিশুদের প্রতি বাড়তি আকর্ষণ ছিল তাঁর। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী কমপক্ষে চারটি কন্যাশিশুকে যৌন নিপীড়ন করেছেন। বেশ কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীও তাঁর শিকার ছিলেন।
এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে ডাবলিনে ট্রিনিটি কলেজের এরউইন শ্রোডিঙ্গার লেকচার থিয়েটারের নাম পরিবর্তন করার দাবিতে একটি পিটিশন শুরু হয়।
কণা পদার্থবিদ্যা নিয়ে বিজ্ঞানী ও সাধারণ মহলে রহস্যের শেষ নেই। এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে আরও কত কত তত্ত্ব এসেছে! এই ধারণার প্রাণপুরুষ শ্রোডিঙ্গার। এর কল্যাণেই রীতিমতো তারকাবিজ্ঞানী বনে গেছেন তিনি। তাঁর এমন আচরণের কথা কেউ মেনে নিতে পারছেন না। শ্রোডিঙ্গারের লালসা থেকে নাকি রক্ষা পাননি তাঁর শিক্ষার্থীরাও। তাঁর বয়স যখন ৪৫, তখন নাকি ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অন্তঃসত্ত্বা করেছিলেন।
শ্রোডিঙ্গার মারা যান ১৯৬১ সালে। তিনি তাঁর ডায়েরিতে তাঁর কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের বহু ইঙ্গিত রেখে গেছেন। তিনি বর্ণনা করেছেন, কীভাবে ১৪ বছর বয়সী ছাত্রী ইথা জুঙ্গারকে যৌন সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। এই ছাত্রী ১৭ বছর বয়সে গর্ভবতী হয়েছিল। পরে শ্রোডিঙ্গার তাকে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেন। ওই সময় জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হয়।
শ্রোডিঙ্গার, লাইফ, অ্যান্ড থট (১৯৮৬) শিরোনামের জীবনীতে ওয়াল্টার মুর বর্ণনা করেছেন, কীভাবে শ্রোডিঙ্গার ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীর প্রতি ‘মোহগ্রস্ত’ হয়ে পড়েছিলেন। ইথা জুঙ্গারের ওই ঘটনার কিছুদিন পরই তিনি বারবারা ডি ব্রুন নামে এই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন। পরিবারের একজন সদস্য এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পরে শ্রোডিঙ্গার শিশুটির পিছু ছাড়তে সম্মত হন। বারবারা ছিল শ্রোডিঙ্গারের পারিবারিক বন্ধুর ভাগনি। তবে শ্রোডিঙ্গার ডায়েরিতে লিখেছেন, বারবার ছিল তাঁর ‘জীবনের ব্যর্থ ভালোবাসাগুলোর’ মধ্যে একটি। ২৬ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছিলেন শ্রোডিঙ্গার। ওই তরুণী গর্ভবতীও হয়েছিলেন।
ওয়াল্টার মুরের লেখা জীবনীতে শ্রোডিঙ্গারের অন্য অনেক ধরনের নিপীড়ন এবং পেডোফিলিক চিন্তাভাবনা ও আচরণের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। শ্রোডিঙ্গারের এই বৈশিষ্ট্যকে ‘লোলিটা কমপ্লেক্স’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন মুর। ১৯৮৯ সালে মুর লিখেছেন, নারীদের প্রতি এই পদার্থবিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গি ‘মূলত একজন পুরুষ আধিপত্যবাদীর মতো’ ছিল। কিন্তু কম বয়সী মেয়েদের প্রতি তাঁর মুগ্ধতাকে অনেকে হালকা করে এবং এমনকি রোম্যান্টিকভাবে তুলে ধরেছিলেন।
ব্যাপারটি শ্রোডিঙ্গারের মধ্যে শুরু হয়েছিল জীবনের প্রথম দিকেই। ২৪ বছর বয়সে তিনি ১৫ বছর বয়সী ফেলিস ক্রাউস এবং ২৫-এ ১৬ বছর বয়সী অ্যানেমারি বার্টেলের পিছে লেগেছিলেন। বার্টেলকে পরে তিনি বিয়ে করেন। একইভাবে, ২০১২ সালে প্রকাশিত শ্রোডিঙ্গারের আরেক আত্মজীবনীতে (শ্রোডিঙ্গার, এরউইন শ্রোডিঙ্গার অ্যান্ড কোয়ান্টাম রেভল্যুশন) জন গ্রিবিন অল্পবয়সী মেয়েদের ওপর এই পদার্থবিজ্ঞানীর যৌন নিপীড়নকে নিছক ‘স্নেহ বা আলিঙ্গন করা’ হিসেবে অনেকটা উপেক্ষা করে গেছেন।
শ্রোডিঙ্গারের যৌন অভ্যাসকে তাঁর জীবদ্দশায় প্রায়শই ‘অপ্রচলিত’ বা এ ধরনের মৃদু নেতিবাচক শব্দে বিশেষায়িত করা হতো। কিন্তু জার্মান সংবাদপত্র ডের স্পিগেল তাঁর মৃত্যুর ৬০তম বার্ষিকীতে উল্লেখ করে, শ্রোডিঙ্গারের কথিত ‘প্রতিভা’ এবং বিজ্ঞানে তাঁর গুরুত্বের কারণে নারী ও শিশুদের প্রতি তাঁর দুর্ব্যবহার প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়েছে।
১৯৩৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাগডালেন কলেজের ফেলো থাকাকালীন নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরও শ্রোডিঙ্গার অক্সফোর্ড ছেড়ে যান। কারণ, তিনি স্ত্রীর পাশাপাশি আরেক নারীকে (উপপত্নী) রাখার আবদার করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এই অপ্রচলিত আবদার মেনে নেয়নি। ১৯৩৪ সালে শ্রোডিঙ্গার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দিতে যান। সেখানে স্থায়ী পদের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি ওই একই আবদার মেনে না নেওয়ার কারণে।
তবে ১৯৩৮ সালে ডাবলিনে পড়ানোর জন্য শ্রোডিঙ্গারকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানান আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট এমোন ডি ভ্যালেরা (নিজেও গণিতবিদ)। শ্রোডিঙ্গার ও তাঁর স্ত্রী বার্টেলের পাশাপাশি উপপত্নী হিলডে মার্চের জন্য আইরিশ ভিসা দেন প্রেসিডেন্ট।
এক অস্ট্রিয়ান সহকর্মীর স্ত্রীর সঙ্গেও শ্রোডিঙ্গারের সম্পর্ক ছিল। ১৯৩৪ সালে ওই নারী শ্রোডিঙ্গারের ঔরসে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
এই তথ্যগুলো শ্রোডিঙ্গারের জীবনীকারদের মাধ্যমে অন্তত আশির দশকের মাঝামাঝি থেকেই জানা গেছে। এরপরও এ নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য হয়নি। ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এরউইন শ্রোডিঙ্গার লেকচার থিয়েটার ছাড়াও আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রোডিঙ্গারের নামে একটি ভবন রয়েছে। এরউইন শ্রোডিঙ্গার ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ম্যাথমেটিক্যাল ফিজিকস ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রোডিঙ্গারের প্রতিকৃতি ছিল একটি অস্ট্রিয়ান ব্যাংকনোটের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ২০১৩ শ্রোডিঙ্গারের জন্মদিনে ডুডল বানিয়েছিল গুগল। চাঁদের একটি গভীর খাদের নামকরণ করা হয়েছে শ্রোডিঙ্গারের নামে।
বিজ্ঞানে শ্রোডিঙ্গারের অবদান নিঃসন্দেহে অনস্বীকার্য। তাঁর তত্ত্ব ছাড়া মহাবিশ্ব ও কণা পদার্থবিদ্যাকে বোঝার সূত্রই হয়তো পাওয়া যেত না। কিন্তু তাই বলে সেই অসম্ভব প্রতিভার হাতে নারী-শিশুদের নিপীড়িত নির্যাতিত হওয়ার অপরাধ লঘু হয়ে যায় না। তাঁর অবদানকে স্মরণ করার পাশাপাশি তাঁর অন্যায়গুলোকেও আমাদের স্বীকার করতে হবে। সেটি মেনে নিয়েই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ তাদের একটি লেকটার হল থেকে শ্রোডিঙ্গারের নাম বাদ দিয়েছে।
সেলিব্রিটি শেফ বা ইতালি নানিরা যা কখনোই কল্পনা করতে পারেননি তাই তৈরি করে দেখালেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকেরা। বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা স্প্যাগেটি তৈরি করলেন তাঁরা। গবেষকেরা এমন এক স্টার্চ ন্যানোফাইবারের তৈরি স্প্যাগেটি তৈরি করেছে, যা মাত্র ৩৭২ ন্যানোমিটার চওড়া। চুলের চেয়ে ২০০ গুণ পাত
৫ ঘণ্টা আগেপ্রথমবারের মতো মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে একটি নক্ষত্রের মৃত্যুর মুহূর্তের ছবি তুলতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ছবিতে সুপারনোভা বিস্ফোরণের আগের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। ছবিতে নক্ষত্রটিকে অদ্ভুত ডিম আকারের কোকুনের (রেশমগুটি) মতো দেখা যায়।
৭ ঘণ্টা আগেআমাদের অনেকেরই অফিসে কাজ করতে গিয়ে দীর্ঘসময় বসে থাকতে হয়। আর দিনের একটা বড় সময় বসে থাকাটা বাড়ায় হৃৎপিণ্ডের রোগের ঝুঁকি। এমনকি অবসর সময়ে শরীরচর্চা করেও এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রেহাই মিলবে না। এসব তথ্য উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
৩ দিন আগেবিজ্ঞানীরা বলছেন, জিপিএসের সাহায্য ছাড়াই এআই ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া থেকে কোনো ব্যক্তির সাম্প্রতিক অবস্থান চিহ্নিত করা যাবে।
৯ দিন আগে