অনলাইন ডেস্ক
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘ভিটামিন সি’–এর গুরুত্ব অনেক। যেকোনো ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তুলতেও এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। হাড় ও দাঁতের জন্যও ভিটামিন সি দরকারি। এটি ত্বকের টিস্যুর গঠনেও সরাসরি অংশ নেয়। রসায়নের ভাষায় ‘ভিটামিন-সি’–কে বলা হয় ‘অ্যাসকরবিক অ্যাসিড’। এটি একটি অম্লধর্মী জৈব যৌগ। যা শাকসবজি ও টক ফলমূলে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য এটি একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।
ভিটামিন সি-এর ঘাটতির ফলে ‘স্কার্ভি’ রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। এ শব্দটির উৎপত্তি স্কোরবুতাস (ল্যাটিন), স্করবাত (ফরাসি) এবং স্কোরবাট (জার্মান) থেকে। স্কার্ভি ছিল সারা বিশ্বের নৌ বাহিনীর সদস্যদের একটি নিয়মিত রোগ। অনুমান করা হয়, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ নাবিক এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
১৯৪৭ সালে স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত ১২ জন নাবিকের জন্য ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসার একটি ট্রায়াল পরিচালনা করেন জেমস লিন্ড। যে ট্রায়ালে স্কার্ভি চিকিৎসায় শুধু কমলালেবু এবং লেবু জাতীয় ফল কার্যকর প্রমাণিত হয়। ১৮৪৫ সালে আয়ারল্যান্ডে ‘আলুর দুর্ভিক্ষ’–এর সময়ও সেখানে বহু মানুষ স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত হয়।
অনেক প্রাণী শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ভিটামিন-সি’ সংশ্লেষ করতে পারে। কিন্তু মানুষ করতে পারে না। অ্যাক্সেল হোলস্ট এবং থিওডোর ফ্রোলিচ একটি গিনিপিগের মধ্যে সৌভাগ্যক্রমে স্কার্ভি তৈরি করতে সক্ষম হন। এ প্রাণীরও মানুষের মতো ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হয়। ১৯২৮ সালে আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গি ‘অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি’ থেকে একটি পদার্থ নিষ্কাশন করেন। তিনি এটির নাম দেন ‘হেক্সুরোনিক অ্যাসিড’।
এর চার বছর পর, চার্লস গ্লেন কিং তাঁর গবেষণাগারে ‘ভিটামিন সি’ আলাদা করেন এবং সিদ্ধান্তে আসেন যে হেক্সুরোনিক অ্যাসিডই হচ্ছে ভিটামিন সি। নরম্যান হাওয়ার্থ ১৯৩৩ সালে ভিটামিন সি-এর রাসায়নিক গঠন আবিষ্কার করেন।
গতকাল (২৪ জানুয়ারি) ছিল ভিটামিন ‘সি’র আবিষ্কারক প্রাণ-রসায়নবিদ চার্লস গ্লিন কিংয়ের মৃত্যু দিবস। ১৯৮৮ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।
ভিটামিন সি–এর ইতিহাস
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ সাল—এবার্স প্যাপিরাস
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ সালে প্রকাশিত মিসরীয় চিকিৎসা গ্রন্থের সংকলন ‘এবার্স প্যাপিরাস’–এ স্কার্ভির মতো একটি রোগের বিবরণ ছিল। এই রোগের প্রস্তাবিত চিকিৎসা দেওয়া হয়—পেঁয়াজ খাওয়া। আমরা এখন জানি যে পেঁয়াজে অল্প পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ সাল—হিপোক্রেটিস
আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস স্কার্ভির লক্ষণ হিসেবে শ্বাসে দুর্গন্ধ, মাড়ি এবং নাক থেকে রক্তক্ষরণের কথা উল্লেখ করেছেন।
১৫৩৫ সাল—স্কার্ভির আদিবাসী চিকিৎসা
শীতকালে বরফে পরিণত হওয়া কানাডার সেন্ট লরেন্স নদীতে আটকে যায় ফরাসি অভিযাত্রী জ্যাক কার্টিয়ের জাহাজ। জাহাজের খাবারও প্রায় ফুরিয়ে আসে। জাহাজে থাকা লোকদের মাঝে স্কার্ভি রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ওই জাহাজে থাকা আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের একটি প্রতিকারের পরামর্শ দেয়—একটি স্থানীয় গাছের ছাল ভিজিয়ে তৈরি পানীয় পান করা। এই প্রতিকার বেশ কাজে দেয়।
১৭৪৭ সাল—সাইট্রাস ফল
ব্রিটিশ নেভাল সার্জন জেমস লিন্ড এইচএমএস সালিসবারি জাহাজ থেকে স্কার্ভিতে ভোগা ১২ জন পুরুষকে বেছে নেন। তিনি তাঁদের ছয় জোড়ায় বিভক্ত করেন। প্রতিটি গ্রুপকে তাঁদের দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গে নতুন নতুন খাবার যুক্ত করেন প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন। দেখা গেল, যাদের ‘সাইট্রাস’ জাতীয় ফল খাওয়ানো হয়েছিল, তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
১৭৯৫—নিয়মিত খাবারে সাইট্রাস
ব্রিটিশ নৌবাহিনীর চিকিৎসক গিলবার্ট ব্লেন ব্রিটিশ নৌযানগুলোতে খাবারে সাইট্রাস জাতীয় ফলের রস ব্যবহারের নিয়ম করতে অ্যাডমিরালকে প্রভাবিত করেন। ফলে, ব্রিটিশ নৌবাহিনী থেকে স্কার্ভি রোগ চিরতরে দূর হয়।
১৮৮০—স্কার্ভি প্রতিরোধে লেবুর ব্যবহার
ব্রিটিশদের প্রভাবের ফলে ক্যারিবীয় অঞ্চলে লেবু এবং কমলালেবুর স্থলে কাগজি লেবু ব্যবহার করা হতো। কারণ এ অঞ্চলে কাগজি লেবু বেশি পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলে ব্রিটিশ নাবিকেরা ‘লাইমি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। কারণ স্কার্ভি প্রতিরোধে ব্রিটিশ নাবিকদের বিপুল পরিমাণে কাগজি লেবুর জুস সরবরাহ করা হতো।
১৯০৭—গিনিপিগ এবং বাঁধাকপি
নরওয়েজিয়ান জৈব রসায়নবিদ অ্যাক্সেল হোলস্ট এবং আলফ্রেড ফ্রোহলিচ দেখান, নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করা থেকে গিনিপিগকে বিরত রাখা হলে এর মধ্যে স্কার্ভি রোগের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। বাঁধাকপি খাওয়ালে লক্ষণগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। ঠিক কোন পুষ্টির কারণে এমন ঘটে তা পরবর্তীতে অনুসন্ধান করা হয়।
১৯২৮—হেক্সুরোনিক অ্যাসিড
হাঙ্গেরীয় জৈব রসায়নবিদ আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গি উদ্ভিদের নির্যাস এবং প্রাণীর টিস্যু থেকে একটি জৈব ক্ষয়কারী এজেন্ট আলাদা করেন এবং এটিকে ‘হেক্সুরোনিক অ্যাসিড’ নাম দেন। চার বছর পরে, তিনি প্রমাণ করেন যে এই যৌগটিই অ্যান্টিসকরবিউটিক ফ্যাক্টর যা ১৯০৭ সালে হোলস্ট এবং ফ্রোহলিচ আবিষ্কার করেছিলেন।
১৯৩২—অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
ব্রিটিশ রসায়নবিদ ওয়াল্টার হাওয়ার্থ হেক্সুরোনিক অ্যাসিডের আণবিক গঠন আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেন ‘অ্যাসকরবিক অ্যাসিড’। এই জৈবটিই আজ ‘ভিটামিন-সি’ নামে পরিচিত। এর পরের বছর, হাওয়ার্থ বিজ্ঞানীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দেন যারা কৃত্রিমভাবে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড তৈরি করতে সক্ষম হন।
১৯৩৭—নোবেল পুরস্কার
ভিটামিন সি আবিষ্কারের জন্য আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন সি নিয়ে কাজ করার জন্য ওয়াল্টার হাওয়ার্থকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
১৯৭০—ভিটামিন সি এবং সাধারণ ঠান্ডাজনিত রোগ
রসায়নবিদ লিনাস পলিংয়ের ‘ভিটামিন সি এবং কমন কোল্ড’ শীর্ষক বই প্রকাশিত হয়। বইটি ওই বছরের বেস্টসেলার স্বীকৃতি পায়। এই বইয়ের মাধ্যমে অনেক মানুষ ঠান্ডা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় ভিটামিন সি–এর গুরুত্ব বুঝতে পারে।
২০০৭ সাল—অজানার খোঁজে
২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ডের উদ্ভিদ ও খাদ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদে ভিটামিন সি তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান। বিজ্ঞানীরা কিউই প্রজাতির বিভিন্ন এবং কিউই ফলের ডিএনএ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ডেটাবেইস নিয়ে কাজ করে শেষ পর্যন্ত ভিটামিন সি উৎপাদনে সহায়ক অনাবিষ্কৃত এনজাইমটিকে আলাদা করতে সক্ষম হন।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘ভিটামিন সি’–এর গুরুত্ব অনেক। যেকোনো ক্ষত দ্রুত সারিয়ে তুলতেও এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। হাড় ও দাঁতের জন্যও ভিটামিন সি দরকারি। এটি ত্বকের টিস্যুর গঠনেও সরাসরি অংশ নেয়। রসায়নের ভাষায় ‘ভিটামিন-সি’–কে বলা হয় ‘অ্যাসকরবিক অ্যাসিড’। এটি একটি অম্লধর্মী জৈব যৌগ। যা শাকসবজি ও টক ফলমূলে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য এটি একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।
ভিটামিন সি-এর ঘাটতির ফলে ‘স্কার্ভি’ রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। এ শব্দটির উৎপত্তি স্কোরবুতাস (ল্যাটিন), স্করবাত (ফরাসি) এবং স্কোরবাট (জার্মান) থেকে। স্কার্ভি ছিল সারা বিশ্বের নৌ বাহিনীর সদস্যদের একটি নিয়মিত রোগ। অনুমান করা হয়, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ নাবিক এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
১৯৪৭ সালে স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত ১২ জন নাবিকের জন্য ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসার একটি ট্রায়াল পরিচালনা করেন জেমস লিন্ড। যে ট্রায়ালে স্কার্ভি চিকিৎসায় শুধু কমলালেবু এবং লেবু জাতীয় ফল কার্যকর প্রমাণিত হয়। ১৮৪৫ সালে আয়ারল্যান্ডে ‘আলুর দুর্ভিক্ষ’–এর সময়ও সেখানে বহু মানুষ স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত হয়।
অনেক প্রাণী শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ভিটামিন-সি’ সংশ্লেষ করতে পারে। কিন্তু মানুষ করতে পারে না। অ্যাক্সেল হোলস্ট এবং থিওডোর ফ্রোলিচ একটি গিনিপিগের মধ্যে সৌভাগ্যক্রমে স্কার্ভি তৈরি করতে সক্ষম হন। এ প্রাণীরও মানুষের মতো ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেতে হয়। ১৯২৮ সালে আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গি ‘অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি’ থেকে একটি পদার্থ নিষ্কাশন করেন। তিনি এটির নাম দেন ‘হেক্সুরোনিক অ্যাসিড’।
এর চার বছর পর, চার্লস গ্লেন কিং তাঁর গবেষণাগারে ‘ভিটামিন সি’ আলাদা করেন এবং সিদ্ধান্তে আসেন যে হেক্সুরোনিক অ্যাসিডই হচ্ছে ভিটামিন সি। নরম্যান হাওয়ার্থ ১৯৩৩ সালে ভিটামিন সি-এর রাসায়নিক গঠন আবিষ্কার করেন।
গতকাল (২৪ জানুয়ারি) ছিল ভিটামিন ‘সি’র আবিষ্কারক প্রাণ-রসায়নবিদ চার্লস গ্লিন কিংয়ের মৃত্যু দিবস। ১৯৮৮ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।
ভিটামিন সি–এর ইতিহাস
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ সাল—এবার্স প্যাপিরাস
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫০ সালে প্রকাশিত মিসরীয় চিকিৎসা গ্রন্থের সংকলন ‘এবার্স প্যাপিরাস’–এ স্কার্ভির মতো একটি রোগের বিবরণ ছিল। এই রোগের প্রস্তাবিত চিকিৎসা দেওয়া হয়—পেঁয়াজ খাওয়া। আমরা এখন জানি যে পেঁয়াজে অল্প পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ সাল—হিপোক্রেটিস
আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস স্কার্ভির লক্ষণ হিসেবে শ্বাসে দুর্গন্ধ, মাড়ি এবং নাক থেকে রক্তক্ষরণের কথা উল্লেখ করেছেন।
১৫৩৫ সাল—স্কার্ভির আদিবাসী চিকিৎসা
শীতকালে বরফে পরিণত হওয়া কানাডার সেন্ট লরেন্স নদীতে আটকে যায় ফরাসি অভিযাত্রী জ্যাক কার্টিয়ের জাহাজ। জাহাজের খাবারও প্রায় ফুরিয়ে আসে। জাহাজে থাকা লোকদের মাঝে স্কার্ভি রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ওই জাহাজে থাকা আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের একটি প্রতিকারের পরামর্শ দেয়—একটি স্থানীয় গাছের ছাল ভিজিয়ে তৈরি পানীয় পান করা। এই প্রতিকার বেশ কাজে দেয়।
১৭৪৭ সাল—সাইট্রাস ফল
ব্রিটিশ নেভাল সার্জন জেমস লিন্ড এইচএমএস সালিসবারি জাহাজ থেকে স্কার্ভিতে ভোগা ১২ জন পুরুষকে বেছে নেন। তিনি তাঁদের ছয় জোড়ায় বিভক্ত করেন। প্রতিটি গ্রুপকে তাঁদের দৈনন্দিন খাবারের সঙ্গে নতুন নতুন খাবার যুক্ত করেন প্রভাব পর্যবেক্ষণ করেন। দেখা গেল, যাদের ‘সাইট্রাস’ জাতীয় ফল খাওয়ানো হয়েছিল, তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
১৭৯৫—নিয়মিত খাবারে সাইট্রাস
ব্রিটিশ নৌবাহিনীর চিকিৎসক গিলবার্ট ব্লেন ব্রিটিশ নৌযানগুলোতে খাবারে সাইট্রাস জাতীয় ফলের রস ব্যবহারের নিয়ম করতে অ্যাডমিরালকে প্রভাবিত করেন। ফলে, ব্রিটিশ নৌবাহিনী থেকে স্কার্ভি রোগ চিরতরে দূর হয়।
১৮৮০—স্কার্ভি প্রতিরোধে লেবুর ব্যবহার
ব্রিটিশদের প্রভাবের ফলে ক্যারিবীয় অঞ্চলে লেবু এবং কমলালেবুর স্থলে কাগজি লেবু ব্যবহার করা হতো। কারণ এ অঞ্চলে কাগজি লেবু বেশি পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলে ব্রিটিশ নাবিকেরা ‘লাইমি’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। কারণ স্কার্ভি প্রতিরোধে ব্রিটিশ নাবিকদের বিপুল পরিমাণে কাগজি লেবুর জুস সরবরাহ করা হতো।
১৯০৭—গিনিপিগ এবং বাঁধাকপি
নরওয়েজিয়ান জৈব রসায়নবিদ অ্যাক্সেল হোলস্ট এবং আলফ্রেড ফ্রোহলিচ দেখান, নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করা থেকে গিনিপিগকে বিরত রাখা হলে এর মধ্যে স্কার্ভি রোগের মতো অবস্থা তৈরি হতে পারে। বাঁধাকপি খাওয়ালে লক্ষণগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। ঠিক কোন পুষ্টির কারণে এমন ঘটে তা পরবর্তীতে অনুসন্ধান করা হয়।
১৯২৮—হেক্সুরোনিক অ্যাসিড
হাঙ্গেরীয় জৈব রসায়নবিদ আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গি উদ্ভিদের নির্যাস এবং প্রাণীর টিস্যু থেকে একটি জৈব ক্ষয়কারী এজেন্ট আলাদা করেন এবং এটিকে ‘হেক্সুরোনিক অ্যাসিড’ নাম দেন। চার বছর পরে, তিনি প্রমাণ করেন যে এই যৌগটিই অ্যান্টিসকরবিউটিক ফ্যাক্টর যা ১৯০৭ সালে হোলস্ট এবং ফ্রোহলিচ আবিষ্কার করেছিলেন।
১৯৩২—অ্যাসকরবিক অ্যাসিড
ব্রিটিশ রসায়নবিদ ওয়াল্টার হাওয়ার্থ হেক্সুরোনিক অ্যাসিডের আণবিক গঠন আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেন ‘অ্যাসকরবিক অ্যাসিড’। এই জৈবটিই আজ ‘ভিটামিন-সি’ নামে পরিচিত। এর পরের বছর, হাওয়ার্থ বিজ্ঞানীদের একটি দলকে নেতৃত্ব দেন যারা কৃত্রিমভাবে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড তৈরি করতে সক্ষম হন।
১৯৩৭—নোবেল পুরস্কার
ভিটামিন সি আবিষ্কারের জন্য আলবার্ট সেজেন্ট-জিয়র্গিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। একই বছর কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন সি নিয়ে কাজ করার জন্য ওয়াল্টার হাওয়ার্থকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
১৯৭০—ভিটামিন সি এবং সাধারণ ঠান্ডাজনিত রোগ
রসায়নবিদ লিনাস পলিংয়ের ‘ভিটামিন সি এবং কমন কোল্ড’ শীর্ষক বই প্রকাশিত হয়। বইটি ওই বছরের বেস্টসেলার স্বীকৃতি পায়। এই বইয়ের মাধ্যমে অনেক মানুষ ঠান্ডা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় ভিটামিন সি–এর গুরুত্ব বুঝতে পারে।
২০০৭ সাল—অজানার খোঁজে
২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ডের উদ্ভিদ ও খাদ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদে ভিটামিন সি তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান। বিজ্ঞানীরা কিউই প্রজাতির বিভিন্ন এবং কিউই ফলের ডিএনএ নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ডেটাবেইস নিয়ে কাজ করে শেষ পর্যন্ত ভিটামিন সি উৎপাদনে সহায়ক অনাবিষ্কৃত এনজাইমটিকে আলাদা করতে সক্ষম হন।
প্রথমবারের মতো নজরদারি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করল পাকিস্তান। গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) উত্তর চীনের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এই স্যাটেলাইট পাকিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ পর্যবেক্ষণ, দুর্যোগ মোকাবিলা, শহর পরিকল্পনা এবং কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
১৮ ঘণ্টা আগেপ্রথম পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে ‘নিউ গ্লেন’ রকেট সফলভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপণে সমর্থ হয়েছে মার্কিন ধনকুবের জেফ বেজোসের মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার সকালে কেপ ক্যানাভেরাল থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
২১ ঘণ্টা আগেএখন পর্যন্ত কেউ মৃত্যুর পর ক্রায়োপ্রিজারভেশনের মাধ্যমে আবারও বেঁচে উঠেছেন এমন নজির নেই। এমনকি এ রকম ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি রক্ষা করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কিংস কলেজ লন্ডনের নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক ক্লাইভ কোয়েন এই ধারণাকে ‘অবাস্তব’ বলে মন্তব্য করেছেন।
১ দিন আগেজে-০৪১০-০১৩৯ নামের এই ব্ল্যাক হোলটির ভর সূর্যের ভরের প্রায় ৭০ কোটি গুণ। এটি এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত অন্যতম প্রাচীন ব্ল্যাক হোল। নাসার চন্দ্র অবজারভেটরি এবং চিলির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপসহ বিভিন্ন টেলিস্কোপের মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা হয়েছে। এটি শিশু মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুনভাবে জানার সুযোগ করে দিয়েছে।
২ দিন আগে