বিএসএমএমইউয়ের গবেষণা: ভবিষ্যৎ আশঙ্কার কারণ ব্যাকটেরিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
Thumbnail image

বিশ্বে ২০১৯ সালে ব্যাকটেরিয়াজনিত ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণুর কারণে প্রায় ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে কয়েকটি ব্যাকটেরিয়াকে ভবিষ্যতের আশঙ্কার কারণ হিসেবে শনাক্ত করেছেন গবেষকেরা। এগুলো হলো এমডিআর টিবি, কুইনোলোন, অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী টাইফয়েট, ইকোলাই, ক্লেবসিয়েলা।

সম্প্রতি প্রখ্যাত মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এই গবেষণায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বি চৌধুরী। এই প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মানুষের শরীরে ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতি, জীবাণু ধ্বংসে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতাসহ সব ধরনের জীবাণুর অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল সংবেদনশীলতা নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসের ইবনে সাত্তার। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার রায় এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহেদা আনোয়ার।

ডা. শাহেদা আনোয়ার জানান ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য উপস্থাপন করেন। সেখানে বলা হয়, এই সময়ে পরীক্ষাকৃত নমুনার সংখ্যা ৭২ হাজার ৬৭০টি। এই চিকিৎসক জানান, গবেষণায় যে ব্যাক্টেরিয়াগুলোক ভবিষ্যতের জন্য আশঙ্কাজনক বলে উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো হলো ইকোলাই, নিউমোনিয়া, সিওডোমানস অ্যারিজিনোসা, অ্যাসিনেটোব্যাক্টর, এন্টারোকোকাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস। তিনি বলেন, সেফট্রিয়াক্সোন এবং সেফিক্সাইম দেশে টাইফয়েড ও প্যারটাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসার জন্য এখনো প্রথম ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। এজিথ্রোমাইসিনও পছন্দের তালিকায় রয়েছে। ইমিপেনেমের সংবেদনশীলতা গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর কমেছে।

দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় যুক্ত থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বি চৌধুরী বলেন, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নিউমোনায়াজনিত অসুখ, সেপসিস এবং অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী প্রস্রাবের সংক্রমণের চিকিৎসায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এ ছাড়া হাসপাতাল থেকে সংক্রমিত হওয়ার হার বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে।

প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না। চিকিৎসকদেরও রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক লিখতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক বিষয়টি পরির্বতনশীল। তাই এর কার্যকারিতার সব শেষ অবস্থা চিকিৎসকের জানা থাকতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

হাসপাতাল থেকে সংক্রমিত হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।

মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত