রানা আব্বাস, মাসকাট থেকে
ওমান-পাপুয়া নিউগিনির ম্যাচ তখনো শেষ হয়নি। আল আমেরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামের তিন ও এক নম্বর গেটের মাঝামাঝি জায়গায় একটু খোলামতো জায়গা আছে, সেখানে জমে উঠেছে এক ফুটবল ম্যাচ। রোদের তেজ কমে আসা স্নিগ্ধ বিকেলে একদল ওমানি তরুণ মেতে উঠেছেন ফুটবল-আনন্দে।
শুরুতে পাড়ার ফুটবল মনে হলেও পরে দেখা গেল, এই তরুণেরা ফুটবল খেলছেন একেবারে পেশাদারি মনোভাবে। খেলার আগে ওয়ার্মআপ; ম্যাচে তাঁদের ফুটবল স্কিল, সিরিয়াসনেস দেখে সত্যি মুগ্ধ হতে হলো। একজন ফাউলের শিকার হয়ে পড়ে যেতেই মুহূর্তেই তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হলো। পায়ে ছিটানো হলো ব্যথানাশক।
ওমানি তরুণদের ড্রিবলিং, হেড, সেট পিস নেওয়ার দক্ষতায় সত্যি মুগ্ধ হতে হলো। ‘আপনারা কি মনের আনন্দে খেলছেন নাকি এখানে সবাই পেশাদার ফুটবলার?’—বড় কৌতূহল নিয়ে প্রশ্নটা করা হলো কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা এক গোলরক্ষককে। আগন্তুকের দিকে তাকিয়ে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমরা প্রতি বিকেলেই এখানে খেলতে আসি। বেশির ভাগই স্থানীয় একটা ক্লাবের সদস্য। তবে ফুটবলটা আমরা মনের আনন্দেই খেলি।’
গোলরক্ষকের নাম সাউদ। পাথুরে এই ছোট্ট সমতলভূমিটা আসলে তাঁরা ব্যবহার করছেন মাঠ হিসেবেই। যে মাঠের পাশে ওমানের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, যেখানে শুরু হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবং স্বাগতিক ওমানের শুরুটাও হয়েছে দুর্দান্ত। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। সাউদের তাতে যেন কিছুই এসে যায় না! ‘নো কিরিকেট, ওনলি ফুতবল। উই লাভ ফুতবল’—কথা বলতেই তাঁর মুখজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দন্তবিকশিত হাসি। সে হাসিটা যেন তাচ্ছিল্য করছে স্টেডিয়ামে বেজে ওঠা ক্রিকেটের সুরকেই!
মাসকাটে আসার পর থেকেই কথাটা শুনছি, ওমানের স্থানীয় লোকজন ক্রিকেট খুব একটা পছন্দ করেন না। তাঁদের প্রেম-ভালোবাসা ফুটবলকে ঘিরেই। এখানে ক্রিকেট হচ্ছে উপমহাদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের জন্য।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ওমানের অবস্থান বেশ ভালো। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ৭৮ নম্বরে। সেরা ৫০-এর ভেতর থাকারও অভিজ্ঞতা আছে তাদের। যদিও ওমানের কখনো বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। তবু এশিয়ায় তারা সমীহ জাগানিয়া দল। এই ওমানের কাছেই গত জুনে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হেরেছে। দেশটির ঘরোয়া ফুটবলও যথেষ্ট শক্তিশালী। সর্বোচ্চ পেশাদার লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আল সিব ক্লাব।
তবু বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের শক্ত অবস্থানে নেওয়া যতটা কঠিন, ক্রিকেটে সেটি তুলনামূলক সহজ! এই যেমন আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে ওমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হয়ে গেছে। স্বাগতিক হিসেবে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করেছে। তবু ওমানিরা কেন ক্রিকেটে আগ্রহী হচ্ছে না? ফুটবল ম্যাচ শেষে কথা হলো আরেক ফুটবলার ইউসুফের সঙ্গে। যাঁর প্রিয় দল আর্জেন্টিনা, প্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসি। ‘ক্রিকেট খুব জটিল খেলা। ফুটবল সেখানে খুবই সহজ আর এটা যেখানে-সেখানে খেলা যায়। আমার পরিবার-বন্ধুরা সবাই ফুটবল পছন্দ করে’—ইউসুফের কথাটা যথেষ্ট যৌক্তিক। ঊষর পাথুরে এই ভূখণ্ডে চাইলেই যেকোনো জায়গায় ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। তবে চাইলেই পায়ে বুট গলিয়ে খালি সমতল পাথুরে জমিতে ইচ্ছেমতো ফুটবল খেলা সম্ভব।
অবশ্য সাউদ-ইউসুফের মতো তরুণেরা সব সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকা জায়গায় ফুটবল খেলেন না। অনেক স্টেডিয়াম ঘণ্টাপ্রতি ২০ রিয়াল, ৩০ রিয়ালে ভাড়ায়ও মেলে। সেখানে টার্ফে আরও ভালোভাবে খেলা যায় ফুটবল।
ইউসুফদের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছে তখন আমেরাত স্টেডিয়ামে ওমানের দুর্দান্ত জয়টা নিশ্চিত হয়েছে। আপনাদের ক্রিকেট দল তো দারুণ শুরু করেছে—খবরটা শুনে সাউদ-ইউসুফরা নির্লিপ্ত! যে খেলার সঙ্গে হৃদয়ের বন্ধন নেই, সেটির সুখবর খুব একটা দোলা দেয় না তাঁদের মনে! প্রশ্নটা আসলেই এখানেই, যে খেলায় স্থানীয় লোকজনের নিবিড় যোগ নেই, সেটি এই কঠিন পাথুরে পাহাড়-পর্বতে ঘেরা দেশে ছড়িয়ে পড়া কি এতই সহজ?
ওমান-পাপুয়া নিউগিনির ম্যাচ তখনো শেষ হয়নি। আল আমেরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামের তিন ও এক নম্বর গেটের মাঝামাঝি জায়গায় একটু খোলামতো জায়গা আছে, সেখানে জমে উঠেছে এক ফুটবল ম্যাচ। রোদের তেজ কমে আসা স্নিগ্ধ বিকেলে একদল ওমানি তরুণ মেতে উঠেছেন ফুটবল-আনন্দে।
শুরুতে পাড়ার ফুটবল মনে হলেও পরে দেখা গেল, এই তরুণেরা ফুটবল খেলছেন একেবারে পেশাদারি মনোভাবে। খেলার আগে ওয়ার্মআপ; ম্যাচে তাঁদের ফুটবল স্কিল, সিরিয়াসনেস দেখে সত্যি মুগ্ধ হতে হলো। একজন ফাউলের শিকার হয়ে পড়ে যেতেই মুহূর্তেই তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হলো। পায়ে ছিটানো হলো ব্যথানাশক।
ওমানি তরুণদের ড্রিবলিং, হেড, সেট পিস নেওয়ার দক্ষতায় সত্যি মুগ্ধ হতে হলো। ‘আপনারা কি মনের আনন্দে খেলছেন নাকি এখানে সবাই পেশাদার ফুটবলার?’—বড় কৌতূহল নিয়ে প্রশ্নটা করা হলো কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা এক গোলরক্ষককে। আগন্তুকের দিকে তাকিয়ে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমরা প্রতি বিকেলেই এখানে খেলতে আসি। বেশির ভাগই স্থানীয় একটা ক্লাবের সদস্য। তবে ফুটবলটা আমরা মনের আনন্দেই খেলি।’
গোলরক্ষকের নাম সাউদ। পাথুরে এই ছোট্ট সমতলভূমিটা আসলে তাঁরা ব্যবহার করছেন মাঠ হিসেবেই। যে মাঠের পাশে ওমানের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, যেখানে শুরু হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবং স্বাগতিক ওমানের শুরুটাও হয়েছে দুর্দান্ত। নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। সাউদের তাতে যেন কিছুই এসে যায় না! ‘নো কিরিকেট, ওনলি ফুতবল। উই লাভ ফুতবল’—কথা বলতেই তাঁর মুখজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দন্তবিকশিত হাসি। সে হাসিটা যেন তাচ্ছিল্য করছে স্টেডিয়ামে বেজে ওঠা ক্রিকেটের সুরকেই!
মাসকাটে আসার পর থেকেই কথাটা শুনছি, ওমানের স্থানীয় লোকজন ক্রিকেট খুব একটা পছন্দ করেন না। তাঁদের প্রেম-ভালোবাসা ফুটবলকে ঘিরেই। এখানে ক্রিকেট হচ্ছে উপমহাদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের জন্য।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে ওমানের অবস্থান বেশ ভালো। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ৭৮ নম্বরে। সেরা ৫০-এর ভেতর থাকারও অভিজ্ঞতা আছে তাদের। যদিও ওমানের কখনো বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। তবু এশিয়ায় তারা সমীহ জাগানিয়া দল। এই ওমানের কাছেই গত জুনে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হেরেছে। দেশটির ঘরোয়া ফুটবলও যথেষ্ট শক্তিশালী। সর্বোচ্চ পেশাদার লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আল সিব ক্লাব।
তবু বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের শক্ত অবস্থানে নেওয়া যতটা কঠিন, ক্রিকেটে সেটি তুলনামূলক সহজ! এই যেমন আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে ওমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হয়ে গেছে। স্বাগতিক হিসেবে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করেছে। তবু ওমানিরা কেন ক্রিকেটে আগ্রহী হচ্ছে না? ফুটবল ম্যাচ শেষে কথা হলো আরেক ফুটবলার ইউসুফের সঙ্গে। যাঁর প্রিয় দল আর্জেন্টিনা, প্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসি। ‘ক্রিকেট খুব জটিল খেলা। ফুটবল সেখানে খুবই সহজ আর এটা যেখানে-সেখানে খেলা যায়। আমার পরিবার-বন্ধুরা সবাই ফুটবল পছন্দ করে’—ইউসুফের কথাটা যথেষ্ট যৌক্তিক। ঊষর পাথুরে এই ভূখণ্ডে চাইলেই যেকোনো জায়গায় ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। তবে চাইলেই পায়ে বুট গলিয়ে খালি সমতল পাথুরে জমিতে ইচ্ছেমতো ফুটবল খেলা সম্ভব।
অবশ্য সাউদ-ইউসুফের মতো তরুণেরা সব সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকা জায়গায় ফুটবল খেলেন না। অনেক স্টেডিয়াম ঘণ্টাপ্রতি ২০ রিয়াল, ৩০ রিয়ালে ভাড়ায়ও মেলে। সেখানে টার্ফে আরও ভালোভাবে খেলা যায় ফুটবল।
ইউসুফদের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছে তখন আমেরাত স্টেডিয়ামে ওমানের দুর্দান্ত জয়টা নিশ্চিত হয়েছে। আপনাদের ক্রিকেট দল তো দারুণ শুরু করেছে—খবরটা শুনে সাউদ-ইউসুফরা নির্লিপ্ত! যে খেলার সঙ্গে হৃদয়ের বন্ধন নেই, সেটির সুখবর খুব একটা দোলা দেয় না তাঁদের মনে! প্রশ্নটা আসলেই এখানেই, যে খেলায় স্থানীয় লোকজনের নিবিড় যোগ নেই, সেটি এই কঠিন পাথুরে পাহাড়-পর্বতে ঘেরা দেশে ছড়িয়ে পড়া কি এতই সহজ?
‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’—সময় এখন সাবিনাদের জয়ধ্বনি করার। দেশের অন্যান্য খেলায় যখন হার আর হার, যখন হতাশার সাগরে ভাসছে ক্রিকেটও। তখন মেয়েদের ফুটবল ভেসেছে সাফল্যের উচ্ছ্বাসে।
৩ ঘণ্টা আগেকাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় আজ বাংলাদেশ নেমেছিল শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে। নেপালের জন্য সেটা ছিল ‘প্রতিশোধের’ মিশন। রঙ্গশালায় শেষ হাসি হেসেছে সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। নারী সাফের দ্বিতীয় শিরোপা বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের উৎসর্গ করতে চায় বাংলাদেশ।
৪ ঘণ্টা আগেদায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বহু বাধা। কখনো দল নির্বাচন নিয়ে তৃতীয় কারও বাগড়া, কখনো ড্রেসিংরুমে অশান্তির আগুন। মুখ বুঝেই সব সয়েছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার। শেষ পর্যন্ত গতকাল সাবিনারা ট্রফি হাতে নেওয়ার পরই বলে দিলেন গুডবাই। যদিও এই ইংলিশ কোচের সঙ্গে বাফুফের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ৩১ ডিসেম
৫ ঘণ্টা আগেদুই বছর পর সেই কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। আবারও নেপালকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। গতবারের মতো এবারও সাবিনা খাতুনদের বাংলাদেশ দলকে বরণ করা হবে ছাদখোলা বাসে।
৫ ঘণ্টা আগে