সেই দিনটার অপেক্ষায় হাথুরু

রানা আব্বাস, পুনে থেকে
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৯: ৩৮
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ০৫

মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এমসিএ) স্টেডিয়ামে গতকাল ম্যাচের আগের দিন ঐচ্ছিক অনুশীলনে পাঁচ ক্রিকেটার এসেছিলেন ঝালিয়ে নিতে। ব্যাটারদের মধ্যে এলেন শুধু মুশফিকুর রহিম আর তানজিদ তামিম। চণ্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বেশি ব্যস্ত দেখাল জুনিয়র তামিমকে নিয়ে।

দুই মাসও হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছেন তানজিদ তামিম। এই অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে। সুযোগ পেয়েছেন তামিম ইকবালের জায়গায়, যাঁর নেতৃত্বে সুপার লিগের শীর্ষ তিনে থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে বিশ্বকাপের টিকিট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই বিষম চাপ, আর সেটি যদি হয় বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে, তাহলে তো কথাই নেই। অনভিজ্ঞতা আর টানা ব্যর্থতায় জুনিয়র তামিম হন্যে হয়ে উপায় খুঁজছেন ছন্দে ফেরার। বাংলাদেশ টপ অর্ডার যে ধারাবাহিক ব্যর্থ হচ্ছে, সেটির দায় তাঁর কাঁধেও বর্তায়। তিনি, লিটন দাস আর নাজমুল হোসেন শান্ত—একই সঙ্গে নিষ্প্রভ থাকলে বড় স্কোর দল পাবে কীভাবে?

পুনের উইকেটে যখন মুঠো মুঠো রান অপেক্ষা করছে, তখন এই ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ? তারা কীভাবে তৈরি হচ্ছে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে? বাস্তবতাবাদী, আবেগ নয়, যুক্তিতে বিশ্বাসী চণ্ডিকা হাথুরুসিংহেকে পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর নিয়তির ওপর ছেড়ে দিতে হচ্ছে। গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু বললেন, ‘বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যত ভেন্যুতে খেলেছি, এই উইকেট সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ব্যাটিংবান্ধব। এমনকি অনুশীলনের উইকেটও প্রায় এক। খুবই ভালো। গতকাল (পরশু) সত্যি আমাদের খুব ভালো নেট সেশন ছিল। এখনো আমাদের ভালো ব্যাটিং পারফরম্যান্স হয়নি। আমরা একটা পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স আশা করছি। জানি আমরা যখন দল হিসেবে খেলব, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলব, বড় দলকেও হারিয়ে দিতে পারব। অতীতে আমরা ভালো করেছি। প্রার্থনা করছি, সে রকম একটা দিন আমাদের পাওনা হয়ে আছে।’

স্ট্রোক প্লেতে সিদ্ধহস্ত লিটন দাসের মতো ওপেনারের চোখ চকচক করে ওঠার কথা পুনের এই উইকেট দেখে। বল ভালো ব্যাটে আসে, ঠিকঠাক টাইমিং মানে রানের উৎসবে মেতে ওঠা। বাস্তবতা হচ্ছে, লিটনের ব্যাটেও রান নেই। এই হতাশার মধ্যে এমন সব কাণ্ডকীর্তি করছেন, তাতে অহেতুক চাপ আরও তাঁর ওপর বাড়ছে। হাথুরু মনে করেন, এই পিচে উইকেট ছুড়ে না দিয়ে এলে বড় রান করা কঠিন কিছু নয়। বাংলাদেশ কোচ বললেন, ‘এই উইকেট সত্যি ব্যাটারদের জন্য অনেক ভালো। যেকোনো ব্যাটারের জন্য প্রথম ১০-২০ বল চ্যালেঞ্জিং। যদি এখানে রান না করতে পারে, উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসে—সত্যি বোকামি হবে। দুই দলেই ভালো বোলার আছে। তবে ব্যাটার ভালো শুরু পেয়ে গেলে প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হবে।’

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে যথেষ্ট কথা হচ্ছে। ব্যাটারদের কোনো নির্দিষ্ট কিংবা নিশ্চিত পজিশন নেই। একেক ম্যাচে একেক ব্যাটিং অর্ডারে খেলা নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। হাথুরু অবশ্য এতে কোনো সমস্যাই দেখছেন না, ‘আমরা আমাদের কৌশল অনুযায়ী এগোচ্ছি। সেভাবেই সেরা সমন্বয় সাজাচ্ছি। আর সেটা আগেই খেলোয়াড়দের জানিয়ে দিচ্ছি। সেভাবেই তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। এখনো কেউ এটা নিয়ে অভিযোগ করেনি। কখনো সফল হচ্ছে, কখনো এই কৌশলে কাজ করছে না। তবে বিশ্বকাপে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় অনড় থাকছি।’

পরিকল্পনায় অনড় থাকায় সমস্যা নেই। যদি পরিকল্পনা ধারাবাহিক কাজে না লাগে, প্রশ্ন ওঠে তখনই—দুই দফায় বাংলাদেশে কাজ করা হাথুরুর সেটা নিশ্চয়ই অজানা নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত