Ajker Patrika

তামিমের জাদুতে গুলশানের রুদ্ধশ্বাস জয়, জিতলেন শান্তরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলতে অভ্যস্ত আজিজুল হাকিম তামিম দেখিয়েছেন বোলিং ভেলকি। ছবি: সৌজন্য ছবি
ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলতে অভ্যস্ত আজিজুল হাকিম তামিম দেখিয়েছেন বোলিং ভেলকি। ছবি: সৌজন্য ছবি

কখনো ব্যাটিংয়ে, কখনোবা বোলিংয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন আজিজুল হাকিম তামিম। এবারের ডিপিএলে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব তামিমের থেকে পাচ্ছে পুরোদস্তুর অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। পাশাপাশি অধিনায়কত্ব তো আছেই। মিরপুর শেরেবাংলায় আজ তামিমের ঘূর্ণিতে কুপোকাত শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।

১৭৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে বর্তমানে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ম্যাচ জেতা যায় কালেভদ্রে। সচরাচর যেটা হয় না, ডিপিএলে আজ সেটাই হলো মিরপুর স্টেডিয়ামে। তামিমের ঘূর্ণিজাদুতে হাঁসফাঁস করতে থাকা শাইনপুকুর গুটিয়ে গেছে ১৭৩ রানে। ৫ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন গুলশান অধিনায়ক তামিম। গুলশানের রুদ্ধশ্বাস জয়ের দিনে জিতেছে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন আবাহনী। প্রাইম ব্যাংককে আবাহনী হারিয়েছে ১৩৩ রানে।

টস জিতে আজ ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়ক রায়ান রাফসান রহমান। শাইনপুকুরের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে গুলশানের। একটা পর্যায়ে গুলশানের স্কোর হয়ে যায় ২৮ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৪ রান। সপ্তম উইকেটে ফরহাদ রেজা ও সাকিব শাহরিয়ার গড়েছেন ৩৪ রানের জুটি। এটাই তাদের ইনিংসে সর্বোচ্চ জুটি। ৩৬তম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিবকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নিয়ন জামান।

সপ্তম উইকেটের জুটি ভাঙতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে গুলশান। ১৫ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ৪১ ওভারে ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন সাকিব। ওপেনার জাওয়াদ আবরার ৩৭ বলে করেন ৩৭ রান। শাইনপুকুরের নিওন ৮ ওভারে ৩৭ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোহাম্মদ রহিম আহমেদ পেয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রায়ান, শাহীন আলম ও শরীফুল ইসলাম।

১৭৯ রানের লক্ষ্যে নেমে ৮ রানেই ভেঙে যায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের তৃতীয় বলে শাইনপুকুর ওপেনার রানা শেখকে ফিরিয়েছেন গুলশানের বাঁহাতি পেসার আনিল। দ্বিতীয় উইকেটে শাইনপুকুরের আরেক ওপেনার মঈনুল ইসলাম তন্ময়ের সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়েন নিয়ন জামান। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে তন্ময়কে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন গুলশান পেসার আসাদুজ্জামান পায়েল। এই জুটি ভাঙতেই ধস নামে শাইনপুকুরের ইনিংসে। ৯৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৬.৫ ওভারে ১৪৪ রানে পরিণত হয় দলটি।

হাতে ১ উইকেটে ৩৫ রানের সমীকরণ মেলানোর প্রায় কাছাকাছি চলে গিয়েছিল শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। শেষ পর্যন্ত আর তাদের জেতা হয়নি। ৪৩ ওভারে ১৭৩ রানে গুটিয়ে যায় তারা। শাইনপুকুরের উইকেটরক্ষক ব্যাটার মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ইতি টানেন নাঈম ইসলাম। শাহরিয়ার সাকিবের ৪০ রানই তাদের ইনিংসে সর্বোচ্চ। গুলশানের বোলারদের মধ্যে তিনটি করে উইকেট পেয়েছেন তামিম ও নিহাদ উজ জামান। ১০ ওভারে ২০ রান খরচ করেন তামিম। বোলিংয়ে ভেলকি দেখানো গুলশান অধিনায়ক করেছেন ১৬ রান।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে আজ টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন আবাহনী অধিনায়ক শান্ত। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে দলটি করেছে ২৯০ রান।ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৯ রান করেছেন পারভেজ হোসেন ইমন। ৭১ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৬ চার ও ৫ ছক্কা। অধিনায়ক শান্ত করেছেন ৭০ বলে ৫৮ রান। প্রাইম ব্যাংকের হাসান মাহমুদ ও নাঈম আহমেদ পেয়েছেন ৪ ও ৩ উইকেট। জয়ের লক্ষ্যে নেমে ৩২ ওভারে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। নাঈম শেখের ৭৪ বলে ৭৩ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছুই নেই তাদের ইনিংসে। আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৭ ওভারে ২৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তাঁর হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।

দিনের অপর খেলায় বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৭৪ রানের আয়েশি জয় পেয়েছে অগ্রনী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পেয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৭ রান করেছে মোহামেডান। মুশফিকুর রহিম ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন করেন ৭৫ ও ৬৪ রান। ২৮৮ রানের লক্ষ্যে নামা অগ্রনী ব্যাংকের অমিত হাসানের সেঞ্চুরি ছাড়া বলার মতো আর কিছুই ছিল না তাদের ইনিংসে। ১২৩ বলে ১০৫ রান করেন অমিত। অগ্রনী ব্যাংক ৪৭.২ ওভারে ২১৩ রানে গুটিয়ে যায়। মোহামেডানের ৭৩ রানের জয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিক। ৫৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৭৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত