স্টোকসের সেঞ্চুরি ব্যর্থ করে অস্ট্রেলিয়ার রোমাঞ্চকর জয়

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৩, ২১: ৪৯
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩, ২২: ১৬

স্কোরকার্ড দেখে সব সময় ম্যাচের আবহ বোঝা যায় না। লর্ডসে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টটাও ঠিক সে রকম। রোমাঞ্চ, বিতর্ক সবই ছিল এই ম্যাচে। বেন স্টোকসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সিরিজে সমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। ৪৩ রানে জিতে অ্যাশেজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। 

লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনই চোটে পড়েন নাথান লায়ন। ফিল্ডিংয়ের সময় মাংসপেশিতে টান পেয়ে তৎক্ষণাৎ মাঠ ছেড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই স্পিনার। গতকাল চতুর্থ দিন অস্ট্রেলিয়ার ৯ উইকেট পড়ার পর লায়ন ব্যাটিংয়ে নেমেছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। পায়ের চোট যে সারেনি, তা তাঁর (লায়ন) হাঁটার ধরনেই বোঝা গেছে। ব্যাটিংয়ে নামলেও পরে আর বোলিং করতে পারেননি। লায়নের চোট নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েন কেভিন পিটারসেন। 

চতুর্থ দিনেই অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে যায় ২৭৯ রানে। আর প্রথম ইনিংসে সফরকারীরা নিয়েছিল ৯১ রানের লিড। ৩৭১-এর লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের ইনিংসে গতকালই ঘটে বিতর্কিত ঘটনা। তবে গতকাল বেন ডাকেট আউট হলে হয়তো রোমাঞ্চের বিষয়টা না-ও আসতে পারত। ২৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যামেরুন গ্রিনের বাউন্সারকে থার্ড ম্যান দিয়ে মারতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দেন তিনি। কিছু দূর দৌড়ে এসে ক্যাচটি লুফে নেন মিচেল স্টার্ক। এরপর সতীর্থ উসমান খাজার সঙ্গে উইকেট উদ্‌যাপনও করলেন তিনি। ব্যাটার ডাকেটও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ছিলেন। সীমানার কাছে পৌঁছালে দুই আম্পায়ার এহসান রাজা ও ক্রিস গ্যাফানি তাঁকে থামিয়ে দেন। এই আউট নিয়ে চলে তুমুল সমালোচনা। 

ডাকেটের বিতর্কিত ঘটনার পরের দিন আজ পঞ্চম দিন ঘটেছে আরও এক আলোচিত ঘটনা। গ্রিনের বাউন্সার কোনো রকমে সামাল দিয়ে বসে যান জনি বেয়ারস্টো। স্বাভাবিকভাবে সতীর্থ স্টোকসের সঙ্গে কথা বলতে ক্রিজ থেকে বেরিয়ে আসেন বেয়ারস্টো। মুহূর্তে বল ছুড়ে স্টাম্প ভাঙেন অজি উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি। বেয়ারস্টো ভেবেছিলেন বলটি ডেড হয়ে গেছে। তবে আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস রিভিউ দেখে আউট দেন। সতীর্থর মন খারাপ করে ফিরতে দেখেই খেপে গেলেন স্টোকস। লর্ডসে বাজবল খেলা শুরু করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। গ্রিনের করা ইনিংসের ৫৬তম ওভারে ৩ ছয় ও ১ চার মারেন স্টোকস। ১৪৩ বলে পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ঘরে। যা এই বাঁহাতি ব্যাটারের টেস্টে ১৩তম সেঞ্চুরি। 

১৩তম টেস্ট সেঞ্চুরির পর আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেন স্টোকস। যতক্ষণ ব্যাটিং করছিলেন, জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। সপ্তম উইকেটে জুটি গড়তে স্টোকসের সঙ্গে অবদান ছিল ব্রডেরও। তবে স্টোকসকে ফিরিয়েই ম্যাচের বাঁক বদলানো শুরু করেন জশ হ্যাজলউড। ২১৪ বলে ৯টি করে চার ও ছক্কায় ১৫৫ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক। ভেঙে যায় সপ্তম উইকেটে স্টোকস-ব্রডের ১২২ বলে ১০৮ রানের জুটি। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৭ উইকেটে ৩০১ রান। স্বাগতিকদের স্কোর মুহূর্তেই হয়ে যায় ৯ উইকেটে ৩০২ রান। ইংল্যান্ডের পরাজয় তখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। তবে হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্সদের একের পর এক বাউন্সার ভালোই সামাল দিতে থাকেন জস টাঙ ও জেমস অ্যান্ডারসন। স্বাগতিকদের কিছুটা হলেও জয়ের আশা জাগাচ্ছিলেন এই দুই টেলএন্ডার ব্যাটার। তবে মিচেল স্টার্কের বলে টাঙ বোল্ড হয়ে গেলে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ৩২৭ রানে। ম্যাচসেরা হয়েছেন স্টিভ স্মিথ। প্রথম ইনিংসে ১১০ রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৪ রান করেন অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটার।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত