সাইফকে হারিয়ে বসুন্ধরার ঘরে হ্যাটট্রিক শিরোপা

নিজস্ব প্রতিবেদক, মুন্সিগঞ্জ থেকে
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২২, ১৮: ৩৭

রেফারির শেষ বাজি শোনা মাত্রই হুড়োহুড়ি লেগে গেলে বসুন্ধরা কিংসের ডাগআউটে। খোঁজ পরে গেল নতুন জার্সির। ‘চ্যাম্পিয়ন’ খচিত সেই জার্সি গায়ে গোল হয়ে মাঠের মাঝখানে উৎসবে মাতলেন বসুন্ধরার ফুটবলাররা। সাইফ স্পোর্টিংয়ের হোম ভেন্যু মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম তখন বসুন্ধরার লাল রঙে রঙিন।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফুটবলে কাগজে কলমে এখনো দুই রাউন্ডের খেলা বাকি আছে। নিজেদের হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপা ঘরে তুলতে পরের দুই ম্যাচের জন্য অপেক্ষায় থাকেনি বসুন্ধরা কিংস। সাইফ স্পোর্টিংকে তাদের হোম ভেন্যু মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতল বসুন্ধরা।

সাইফকে হারিয়ে ২০ ম্যাচ শেষে বসুন্ধরার পয়েন্ট হলো ৫১। এক ম্যাচ কম খেলে ৪১ পয়েন্টে দ্বিতীয় স্থানে আবাহনী লিমিটেড। ২০ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্টে আপাতত তিনে আছে সাইফ। লিগের পরের ম্যাচটি বসুন্ধরা খেলবে এই আবাহনীর বিপক্ষেই। সেই ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষায় না থেকে বসুন্ধরা তাদের কাঙ্ক্ষিত শিরোপা জিতে নেওয়ার পাশাপাশি নিশ্চিত করল এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বও।

এমন এক ম্যাচে খেলার চেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়াল দুই দলের ফুটবলারদের দ্বন্দ্ব। হাতাহাতি, ফাউলের কারণে কিছুক্ষণ পর পর থামল খেলা। ৩৪ মিনিটে রেফারিকে বের করতে হলো লাল কার্ডও। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের উত্তাপ বুঝি এমনই হয়! শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বসুন্ধরা দলে পায়নি তাদের সেরা খেলোয়াড় রবসন রবিনহোকে। চোটের কারণে আজ ম্যাচে ছিলেন না ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এমন ম্যাচেই কিনা আবার ৩৪ মিনিট থেকে ১০ জনের দল নিয়ে খেলেছে বসুন্ধরা।

আক্রমণের শুরুটা অবশ্য হয়েছিল সাইফের কাছ থেকে। ১৭ মিনিটে এমেরি বাইসাঙ্গের ফ্রি-কিক থেকে মেরাজ হোসেন অপির ভলি ঝাঁপিয়ে ফেরান বসুন্ধরা গোলরক্ষক জিকো। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন এমফোন সানডে। জিকোর গ্লাভসে আটকে গেছে সেই শটও। ২৩ মিনিটে বসুন্ধরাকে গোলবঞ্চিত করেছে ক্রসবার। বিশ্বনাথ ঘোষের দূর পাল্লার পাস ধরে তৌহিদুল আলম সবুজের কাটব্যাকে বল পান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগেল দামাশিনা। বাঁ পায়ে গোলার মতো এক শটই নিয়েছিলেন মিগেল দামাশিনা। কিন্তু সেই শট আটকে যায় ক্রসবারে। ২৭ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ ছিল বসুন্ধরার সামনে। ডান প্রান্ত ধরে মিগেল দামাশিনার পাসে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড নুহা মারংয়ের শট আটকান সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পু।

অবশ্য পরের মিনিটেই বসুন্ধরা এগিয়ে দেন মতিন মিয়া। মিগেল দামাশিনার পাস ধরে বক্সে ফাঁকাতে বল পান মতিন। সাইফের দুই খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে তাঁর প্লেসিং শট সাইফ গোলরক্ষককে দর্শক বানিয়ে জড়ায় জালে। ৩৪ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে পড়ে বসুন্ধরা। সাইফ মিডফিল্ডার রহিমউদ্দিনকে বিপজ্জনকভাবে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত। ৯ মিনিটে এই রহিমকে ফাউল করেই প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন ইয়াসিন আরাফাত।

প্রথমার্ধের উত্তেজনা অনেকটাই থিতিয়ে গেছে দ্বিতীয়ার্ধে। এই অর্ধে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণটা এসেছে মেরাজ হোসেনের পা থেকে। ৭৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে মেরাজের গোলার গতিতে নেওয়া শট ফিস্ট করে ফেরান বসুন্ধরা গোলরক্ষক জিকো। এক খেলোয়াড় বেশি নিয়ে সাইফ সমতায় ফিরতে পারত যেকোনো সময়ই। দলকে সে ঝুঁকিতে পড়তেই দেননি মতিন মিয়ার বদলি হিসেবে মাঠে নামা মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদ। নুহা মারংয়ের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ৮১ মিনিটে সাইফের বক্সে ঢুকে পড়েন বিপলু। প্রথম দফা না পারলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় নেওয়া বিপলুর বাঁ পায়ের শট ঠেকানোর সাধ্য ছিল না সাইফ গোলরক্ষক পাপ্পুর। সেই গোলেই শেষ অব্দি নির্ধারণ হয়ে যায় শিরোপা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত