স্পেন থেকে আসছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট, ব্যয় হবে ৩৯ কোটি

জহির উদ্দিন মিশু
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৪০
Thumbnail image
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম খেলার উপযোগী হওয়ার আশা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। ছবি: সংগৃহীত

মাস দুয়েক আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি বোধ হয় হচ্ছে না! বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, স্টেডিয়ামটি পুরোপুরি খেলার উপযোগী করে তুলতে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

সংস্কারকাজ কত দূর এগোল, এমনটা জানতে গতকাল আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার প্রকল্পের পরিচালক শামসুল আলমের। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ডিসেম্বরের মধ্যে ফ্লাডলাইট বাদে বাকি সব কাজ শেষ করা। সেভাবেই আমরা এগোচ্ছি। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরেই স্টেডিয়ামটি খেলার উপযোগী হয়ে যাবে।’

সূত্র জানিয়েছে, পুরো সংস্কার শেষ হতে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগতে পারে। আর স্টেডিয়ামটির জন্য স্পেন থেকে আনা হচ্ছে ফিলিপস ব্র্যান্ডের ফ্লাডলাইট। আগের মেটাল হ্যালাইডের জায়গায় এবার বসানো হবে এলইডি লাইট।

এদিকে পুরো স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮০ কোটি টাকা। পরে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যার মধ্যে ফ্লাডলাইট বসানো বাবদ ব্যয়ই ধরা হয় প্রায় ৩৯ কোটি টাকা। সংস্কার কাজের বাজেট বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে প্রকল্প শেষ হওয়ার সময়ও। ২০১৭ সালে যখন ৮০ কোটি টাকা বাজেটে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি), তখন কাজ শেষের সময়সীমা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর।

এরপর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্টেডিয়াম সংস্কার পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনলে বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯৮ কোটি টাকা এবং কাজ শেষের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের জুন। পরে কাজ শেষ করার সময় আরো ৬ মাস বাড়িয়ে করা হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর। শুরুর পর কাজ আবার থেমে গেলে বাজেট ও প্রকল্পের সময় আরো বেড়েছে। ৬০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বাজেট বেড়ে ১৫৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হওয়ার পর প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বৃদ্ধি হয়ে চলে যায় এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর। এখন এই সময়ের মধ্যে সংস্কার পুরো শেষ হওয়া নিয়েও শঙ্কা।

ফ্লাডলাইটের কাজ পেয়েছে বিসিবি ও মোহামেডানের পরিচালক মাহবুব আনামের প্রতিষ্ঠান। গতকাল এ ব্যাপারে তিনি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ফ্লাডলাইটের অনুমোদন গত সপ্তাহে পেয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠান; অনুমোদন পেতে বিলম্ব হওয়ায় কাজটা শুরু করা যায়নি, ‘গত সপ্তাহে আমরা এনএসসি থেকে অনুমোদনের চিঠিটা হাতে পাই। আসলে অনুমোদন না পেলে তো কাজ শুরু করা যায় না। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। আমরা দ্রুতই কাজ শুরু করব।’

২০২১ সালের আগস্টে শুরু হয় সংস্কারকাজ। এরপর করোনা মহামারিতে কাজের গতি কমে যায়। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও বর্তমানে চলমান এই সংস্কার। কাজের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে শামসুল আলম বলেন, ‘মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তার কাজ শেষ করা যায়নি। তবে এখন আবার শুরু করেছি। শিগগির আমরা রাস্তার কাজও শেষ করে ফেলব। আর শেডের কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ। অন্যান্য কাজগুলোও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, স্টেডিয়ামের বিদ্যমান কাঠামো ঠিক রেখেই চলছে এই সংস্কারকাজ; যার মধ্যে রয়েছে গ্যালারিতে শেড নির্মাণ, মাঠ উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় খেলোয়াড়দের সাজঘরের আধুনিকায়ন, ফ্লাডলাইট, গ্যালারিতে চেয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, জেনারেটর, এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন, অ্যাথলেটিক ট্র্যাক, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ড, সাবস্টেশন সরঞ্জাম স্থাপন; মিডিয়া সেন্টার, টিকিট কাউন্টার, ডোপ টেস্ট রুম, চিকিৎসাকক্ষ, ভিআইপি বক্স, প্রেসিডেন্ট বক্স তৈরি এবং টয়লেট উন্নয়ন, চিকিৎসা সরঞ্জাম, এসি ও সৌর প্যানেল সরবরাহ করার কাজও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত