অ্যাথলেটরা কেন বিদেশমুখী

‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রেই থেকে যাব’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০: ৩৫
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৪৭
Thumbnail image
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের লক্ষ্য নিয়েই দেশ ছেড়েছেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। ছবি: ফাইল ছবি

একটু সুখের আশায় হলাম প্রবাসী’—আর্চার রোমান সানার কথার সারমর্ম এটাই। গত শনিবার অনেকটা গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রোমান-দিয়া সিদ্দিকী। তাঁদের এভাবে চলে যাওয়া নিয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। যদিও এসবে একদমই কান দিতে নারাজ রোমান। উল্টো জানিয়ে দিলেন, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবেই মার্কিন মুলুকে আসা তাঁদের। সেখানেই স্থায়ী হয়ে সুখে-শান্তিতে বাকি জীবনটা পার করতে চান।

যদিও দেশের অ্যাথলেটদের বিদেশমুখী হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সেই নব্বইয়ের দশকে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে আছেন দেশের প্রথম অলিম্পিয়ান সাইদুর রহমান ডন। একই পথের পথিক জাতীয় ভলিবল দলের সাবেক অধিনায়ক সৈয়দ আল জাবির। তিনি খেলা ছেড়ে এখন ফ্রান্সপ্রবাসী। এরপর জাতীয় দলের আর্চার অসীম কুমার ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে খেলা ছেড়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। গত বছরের অক্টোবরে স্বর্ণজয়ী আর্চার আবদুল হাকিম রুবেলও যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সর্বশেষ সেই তালিকায় নাম ওঠালেন আর্চার দম্পতি রোমান-দিয়া।

এক এক করে কেন অ্যাথলেটরা দেশ ছাড়ছেন? তিন আর্চার অসীম, রুবেল ও রোমানের কথার সারমর্ম অনেকটা একই। মূলত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় তাঁদের বিদেশে যাওয়া এবং সেখানে স্থায়ী হওয়ার কথা ভাবা। গতকাল আজকের পত্রিকাকে যেমনটা বলেছেন রোমানও, ‘দেখুন, অতীত নিয়ে এখন আর কথা বলতে চাই না। আমরা (রোমান-দিয়া) এখানে এসেছি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে। এখানেই (যুক্তরাষ্ট্রে) থেকে যাব।’

আর্চারি নিয়ে রোমানের আক্ষেপ অনেক। দেশে থাকার সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সৌজন্যে সেসব বেশ আলোচনারও জন্ম দেয়। একপর্যায়ে অনেকটা অভিমান নিয়ে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। তাঁর স্ত্রী দিয়ার পারফরম্যান্সের গ্রাফও ছিল নিম্নমুখী। এসব ভেবেই হয়তো এখন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। তাঁদের এমন চলে যাওয়াকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন না এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী শুটার শারমিন আক্তার রত্না, ‘আসলে আমাদের দেশে অ্যাথলেটরা পায় কী! তারাও চায় সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ। সে ক্ষেত্রে রোমান-দিয়া বা যে কেউই যদি এমন সিদ্ধান্ত নেয়, আমি তাদের সাধুবাদ জানাব।’ সাবেক ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন এলিনা সুলতানা অবশ্য ফেডারেশনের ব্যর্থতা খুঁজে পেলেন, ‘আপনি যদি খেলোয়াড়দের উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা দিতে না পারেন, তাহলে সেটা আপনার (ফেডারেশন) ব্যর্থতা।’

এদিকে চার আর্চারই বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য একটা সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। ২০২১ সালের নভেম্বরে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন চারজন। সেই সুবাদে তাঁদের পাসপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ বছরের ভিসা লাগানো ছিল। আর এই পথ ধরেই দেশ ছেড়েছেন রুবেল-রোমানরা। কেন এত লম্বা সময় ভিসার মেয়াদ? এমন প্রশ্নের উত্তরে আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন চপল বলেন, ‘এটা আমাদের হাতে নেই। দূতাবাসই মেয়াদ ঠিক করেন।’ এভাবে একের পর এক আর্চার বিদেশে পাড়ি জমানোয় দেশের আর্চারিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও জানালেন চপল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত