অনলাইন ডেস্ক
লেবাননে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ সারা দুনিয়াতেই ভীতি ছড়িয়েছে। লেবাননজুড়ে একযোগে হাজারখানেক পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ জনের প্রাণহানি এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। অনেকে বলছেন, ডিভাইসগুলো হ্যাক করা হয়েছে। ফলে এই ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এটি কি তাহলে নতুন সাইবার যুদ্ধের আলামত— এমন প্রশ্নও উঠছে।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একজন পুরুষ একটি মুদি দোকানে কেনাকাটা করছেন, তখন তাঁর কোমরে থাকা পেজার হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় এবং তিনি মাটিতে ছিটকে পড়েন। চারপাশের লোকজন আতঙ্কে এদিক–সেদিক ছুটতে থাকে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পেজার বা ওয়াকিটকির ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়িয়ে এই বিস্ফোরক ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এটি স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে কিনা সেটি নিয়ে উদ্বেগ জোরালো হচ্ছে।
লেবাননে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণগুলো নিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বহুল ব্যবহৃত লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ এই ব্যাটারি স্মার্টফোনেও ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, পেজার হলো একটি ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যেটি স্থানীয় যোগাযোগে ব্যবহার করা হয়। এই ডিভাইস পকেটে রাখা যায়। আর কম দূরত্বে যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকির ব্যবহার সম্পর্কে প্রায় সবারই জানা থাকার কথা।
হ্যাকারেরা স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারবে কিনা
স্মার্টফোনের বিস্তৃত ব্যবহার এবং লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির ওপর নির্ভরতা বিবেচনা করলে ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে একই ধরনের আক্রমণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও স্মার্টফোনে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো বেশ কঠিন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মূলত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি নিয়ে উদ্বেগের কারণে স্মার্টফোনের তুলনায় পেজারকে বেশি সুরক্ষিত মনে করেছিল হিজবুল্লাহ। পেজারের বিশেষ হার্ডওয়্যারের কারণে এগুলো ট্র্যাক করা কঠিন এবং স্মার্টফোনের তুলনায় ডিজিটাল হ্যাকিংয়ের সুযোগ কম। তবে পেজার ও স্মার্টফোনে একই মৌলিক প্রযুক্তি—লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।
লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চয় করে এবং দ্রুত রিচার্জ করার ক্ষমতার জন্য স্মার্টফোনে ব্যাপকভাবে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে এর ব্যবহার সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। অতিরিক্ত তাপ, ওভারচার্জিং বা বাহ্যিক আঘাত ব্যাটারিগুলোকে অতিরিক্ত গরম করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে বিস্ফোরিত হতে পারে। উৎপাদন এবং নকশার ত্রুটির কারণে এই ঝুঁকি বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে স্যামসাং স্মার্টফোনের একটি মডেলের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা দেখা গেছে।
সাধারণত স্মার্টফোন বিস্ফোরিত হয় না। তবে দীর্ঘ সময় ব্যবহার, বাহ্যিক আঘাত ও ত্রুটিপূর্ণ হার্ডওয়্যারের কারণে স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যদিও এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
হিজবুল্লাহর পেজার বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো আরও জটিল বিষয়। সম্ভবত উৎপাদনের সময়ই সেগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল এবং আগে থেকেই বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা ছিল।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান গোল্ড অ্যাপোলো থেকে অর্ডার করা পেজারের একটি ব্যাচে বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখেছিল ইসরায়েল। যদিও গোল্ড অ্যাপোলো এসব প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য একটি সুইচ এতে যুক্ত করা হয়েছিল। স্মার্টফোনগুলোতে একই কৌশল ব্যবহার করতে হলে উৎপাদনের সময় এগুলোতে পরিবর্তন বা বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য সমন্বিত রেডিও সিগন্যাল বা একটি ইলেকট্রনিক পালসের মতো দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োজন।
তাত্ত্বিকভাবে এই ধারণা স্মার্টফোনগুলোতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। স্মার্টফোনগুলোর জটিল সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্ক সংযোগের কারণে এগুলো দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও সুযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে যদি ডিভাইসের ফার্মওয়্যারে কোনো ত্রুটি থাকে। তবে এত বড় পরিসরে হামলা চালানো বেশ চ্যালেঞ্জিং। কারণ স্মার্টফোনের ব্র্যান্ড, মডেল এবং সফটওয়্যার সিস্টেমগুলো অনেক ভিন্ন। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোর বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থা একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর যোগ করে, যা এই ধরনের হামলা চালানো কঠিন করে তোলে।
স্মার্টফোন নিজে থেকেই বিস্ফোরিত হয় না। যদি হ্যাকারেরা ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়, তবুও একসঙ্গে অনেক ফোন বিস্ফোরিত হবে না; একটি বা দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। এর কারণ হলো—ফোনগুলোর মধ্যে এমন একটি সার্কিট রয়েছে যা তাপের অতিরিক্ত সরবরাহ হলে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হয়। উদাহরণস্বরূপ: গরম আবহাওয়ায় বেশি তাপে আইফোন গরম হতে শুরু করলে এর চার্জিং ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া বর্তমানের অনেক স্মার্টফোনে উন্নত কুলিং চেম্বার ব্যবহার করা হয়, যা ডিভাইসে তৈরি হওয়া তাপকে দূর করতে সাহায্য করে। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে প্রায়শই বাষ্প চেম্বার এবং গ্রাফাইট কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এসব প্রযুক্তি তাপকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এতে তরল বাষ্পীভূত এবং পুনরায় ঘনীভূত হয়ে স্মার্টফোনের তাপ কমায়। গ্রাফাইট স্তরগুলো স্মার্টফোনের প্রসেসরের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো থেকে তাপ দূর করতে সাহায্য করে।
স্মার্টফোন যদি অত্যধিক তাপের সম্মুখীন হয়, তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোনটি বিস্ফোরিত হওয়ার পরিবর্তে কিছুটা গলতে পারে, যা ব্যাটারির ফুলে ওঠা বা ফুটো হওয়ার কারণ হয়। খুব কম ক্ষেত্রেই ফোন বিস্ফোরিত হয়। এমনকি যখন কারও ফোন বিস্ফোরণের খবর গণমাধ্যমে দেখা যায় সেখানে আসলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সামান্য আগুন ধরতে পারে, কিন্তু বিস্ফোরিত হয় না।
একজন প্রাক্তন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, বিস্ফোরক ডিভাইসগুলোতে পাঁচটি প্রধান উপাদান থাকে—একটি কনটেইনার, ব্যাটারি, ট্রিগারিং ডিভাইস, ডেটোনেটর এবং বিস্ফোরক চার্জ। আর একটি পেজারে এর মধ্যে তিনটি উপাদানই উপস্থিত। বিস্ফোরক ডিভাইস তৈরির জন্য শুধু ডেটোনেটর এবং চার্জ যুক্ত করতে হবে।
অর্থাৎ স্মার্টফোনগুলো বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে নেই, যতক্ষণ না সেগুলোর হার্ডওয়্যার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয় বা বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা হয়।
পেজার কী
পেজারের অপর একটি নাম হলো—বিপার। এটি বেশ ছোট, সহজে বহনযোগ্য টেলিযোগাযোগ যন্ত্র, যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত লিখিত বার্তা, সংখ্যাসূচক বা আলফানিউমেরিক বার্তা আদান–প্রদানে ব্যবহৃত হয়। সেলফোন জনপ্রিয় হওয়ার আগে নব্বই দশকে পেজার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সে সময় যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল এটি। বিশেষ করে চিকিৎসক, সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ এবং সিনেমা পরিচালকদের মতো পেশাদারদের কাছে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এটির জন্য আলাদা কোনো নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর প্রয়োজন হয় না।
পেজার দিয়ে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তবে এর জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্য কিছুটা দক্ষ হতে হয়। এই যন্ত্রে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠানো হয়। পরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যবহারকারী ডিভাইসটি থেকে আসা একটি স্বতন্ত্র বিপের মাধ্যমে বার্তা গ্রহণ করেন। কিন্তু বার্তায় কী বলা হয়েছে তা জানার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই নিকটস্থ ল্যান্ডফোন সংযোগের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য ইকোনমিক টাইমস
লেবাননে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ সারা দুনিয়াতেই ভীতি ছড়িয়েছে। লেবাননজুড়ে একযোগে হাজারখানেক পেজার এবং ওয়াকিটকি বিস্ফোরিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০ জনের প্রাণহানি এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। অনেকে বলছেন, ডিভাইসগুলো হ্যাক করা হয়েছে। ফলে এই ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের নিরাপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এটি কি তাহলে নতুন সাইবার যুদ্ধের আলামত— এমন প্রশ্নও উঠছে।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একজন পুরুষ একটি মুদি দোকানে কেনাকাটা করছেন, তখন তাঁর কোমরে থাকা পেজার হঠাৎ বিস্ফোরিত হয় এবং তিনি মাটিতে ছিটকে পড়েন। চারপাশের লোকজন আতঙ্কে এদিক–সেদিক ছুটতে থাকে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পেজার বা ওয়াকিটকির ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়িয়ে এই বিস্ফোরক ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এটি স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে কিনা সেটি নিয়ে উদ্বেগ জোরালো হচ্ছে।
লেবাননে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণগুলো নিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বহুল ব্যবহৃত লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কারণ এই ব্যাটারি স্মার্টফোনেও ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, পেজার হলো একটি ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যেটি স্থানীয় যোগাযোগে ব্যবহার করা হয়। এই ডিভাইস পকেটে রাখা যায়। আর কম দূরত্বে যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকির ব্যবহার সম্পর্কে প্রায় সবারই জানা থাকার কথা।
হ্যাকারেরা স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারবে কিনা
স্মার্টফোনের বিস্তৃত ব্যবহার এবং লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারির ওপর নির্ভরতা বিবেচনা করলে ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে একই ধরনের আক্রমণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও স্মার্টফোনে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো বেশ কঠিন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মূলত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি নিয়ে উদ্বেগের কারণে স্মার্টফোনের তুলনায় পেজারকে বেশি সুরক্ষিত মনে করেছিল হিজবুল্লাহ। পেজারের বিশেষ হার্ডওয়্যারের কারণে এগুলো ট্র্যাক করা কঠিন এবং স্মার্টফোনের তুলনায় ডিজিটাল হ্যাকিংয়ের সুযোগ কম। তবে পেজার ও স্মার্টফোনে একই মৌলিক প্রযুক্তি—লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। আর এই প্রযুক্তি ব্যবহারে বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে।
লিথিয়াম–আয়ন ব্যাটারি বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চয় করে এবং দ্রুত রিচার্জ করার ক্ষমতার জন্য স্মার্টফোনে ব্যাপকভাবে এটি ব্যবহৃত হয়। তবে এর ব্যবহার সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। অতিরিক্ত তাপ, ওভারচার্জিং বা বাহ্যিক আঘাত ব্যাটারিগুলোকে অতিরিক্ত গরম করতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে বিস্ফোরিত হতে পারে। উৎপাদন এবং নকশার ত্রুটির কারণে এই ঝুঁকি বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে স্যামসাং স্মার্টফোনের একটি মডেলের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা দেখা গেছে।
সাধারণত স্মার্টফোন বিস্ফোরিত হয় না। তবে দীর্ঘ সময় ব্যবহার, বাহ্যিক আঘাত ও ত্রুটিপূর্ণ হার্ডওয়্যারের কারণে স্মার্টফোন বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যদিও এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
হিজবুল্লাহর পেজার বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো আরও জটিল বিষয়। সম্ভবত উৎপাদনের সময়ই সেগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল এবং আগে থেকেই বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা ছিল।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান গোল্ড অ্যাপোলো থেকে অর্ডার করা পেজারের একটি ব্যাচে বিস্ফোরক লুকিয়ে রেখেছিল ইসরায়েল। যদিও গোল্ড অ্যাপোলো এসব প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য একটি সুইচ এতে যুক্ত করা হয়েছিল। স্মার্টফোনগুলোতে একই কৌশল ব্যবহার করতে হলে উৎপাদনের সময় এগুলোতে পরিবর্তন বা বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য সমন্বিত রেডিও সিগন্যাল বা একটি ইলেকট্রনিক পালসের মতো দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োজন।
তাত্ত্বিকভাবে এই ধারণা স্মার্টফোনগুলোতে প্রয়োগ করা যেতে পারে। স্মার্টফোনগুলোর জটিল সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্ক সংযোগের কারণে এগুলো দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও সুযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে যদি ডিভাইসের ফার্মওয়্যারে কোনো ত্রুটি থাকে। তবে এত বড় পরিসরে হামলা চালানো বেশ চ্যালেঞ্জিং। কারণ স্মার্টফোনের ব্র্যান্ড, মডেল এবং সফটওয়্যার সিস্টেমগুলো অনেক ভিন্ন। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোর বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থা একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর যোগ করে, যা এই ধরনের হামলা চালানো কঠিন করে তোলে।
স্মার্টফোন নিজে থেকেই বিস্ফোরিত হয় না। যদি হ্যাকারেরা ব্যাটারির তাপমাত্রা বাড়ানোর জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়, তবুও একসঙ্গে অনেক ফোন বিস্ফোরিত হবে না; একটি বা দুটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া। এর কারণ হলো—ফোনগুলোর মধ্যে এমন একটি সার্কিট রয়েছে যা তাপের অতিরিক্ত সরবরাহ হলে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু হয়। উদাহরণস্বরূপ: গরম আবহাওয়ায় বেশি তাপে আইফোন গরম হতে শুরু করলে এর চার্জিং ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়া বর্তমানের অনেক স্মার্টফোনে উন্নত কুলিং চেম্বার ব্যবহার করা হয়, যা ডিভাইসে তৈরি হওয়া তাপকে দূর করতে সাহায্য করে। আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে প্রায়শই বাষ্প চেম্বার এবং গ্রাফাইট কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এসব প্রযুক্তি তাপকে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এতে তরল বাষ্পীভূত এবং পুনরায় ঘনীভূত হয়ে স্মার্টফোনের তাপ কমায়। গ্রাফাইট স্তরগুলো স্মার্টফোনের প্রসেসরের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো থেকে তাপ দূর করতে সাহায্য করে।
স্মার্টফোন যদি অত্যধিক তাপের সম্মুখীন হয়, তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোনটি বিস্ফোরিত হওয়ার পরিবর্তে কিছুটা গলতে পারে, যা ব্যাটারির ফুলে ওঠা বা ফুটো হওয়ার কারণ হয়। খুব কম ক্ষেত্রেই ফোন বিস্ফোরিত হয়। এমনকি যখন কারও ফোন বিস্ফোরণের খবর গণমাধ্যমে দেখা যায় সেখানে আসলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সামান্য আগুন ধরতে পারে, কিন্তু বিস্ফোরিত হয় না।
একজন প্রাক্তন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, বিস্ফোরক ডিভাইসগুলোতে পাঁচটি প্রধান উপাদান থাকে—একটি কনটেইনার, ব্যাটারি, ট্রিগারিং ডিভাইস, ডেটোনেটর এবং বিস্ফোরক চার্জ। আর একটি পেজারে এর মধ্যে তিনটি উপাদানই উপস্থিত। বিস্ফোরক ডিভাইস তৈরির জন্য শুধু ডেটোনেটর এবং চার্জ যুক্ত করতে হবে।
অর্থাৎ স্মার্টফোনগুলো বিস্ফোরণের ঝুঁকিতে নেই, যতক্ষণ না সেগুলোর হার্ডওয়্যার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হয় বা বিস্ফোরক উপাদান যুক্ত করা হয়।
পেজার কী
পেজারের অপর একটি নাম হলো—বিপার। এটি বেশ ছোট, সহজে বহনযোগ্য টেলিযোগাযোগ যন্ত্র, যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সিগন্যালের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত লিখিত বার্তা, সংখ্যাসূচক বা আলফানিউমেরিক বার্তা আদান–প্রদানে ব্যবহৃত হয়। সেলফোন জনপ্রিয় হওয়ার আগে নব্বই দশকে পেজার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সে সময় যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল এটি। বিশেষ করে চিকিৎসক, সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ এবং সিনেমা পরিচালকদের মতো পেশাদারদের কাছে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। এটির জন্য আলাদা কোনো নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর প্রয়োজন হয় না।
পেজার দিয়ে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তবে এর জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্য কিছুটা দক্ষ হতে হয়। এই যন্ত্রে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠানো হয়। পরে অপর প্রান্তে থাকা ব্যবহারকারী ডিভাইসটি থেকে আসা একটি স্বতন্ত্র বিপের মাধ্যমে বার্তা গ্রহণ করেন। কিন্তু বার্তায় কী বলা হয়েছে তা জানার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই নিকটস্থ ল্যান্ডফোন সংযোগের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও দ্য ইকোনমিক টাইমস
চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এখন টিকটকের মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঝ্যাং ইয়িমিং। দেশটির ধনী ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই তালিকায় ৪৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার সম্পদ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন ঝ্যাং। ২০২৩ সালের তুলনায় তা
৭ ঘণ্টা আগেগুগলের নতুন কোডগুলোর প্রায় এক–চতুর্থাংশের বেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। গত মঙ্গলবার কোম্পানিটির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এসব তথ্য জানায় সিইও সুন্দর পিচাই।
৯ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই সিস্টেমগুলোর জন্য ব্রডকম ও টিএসএমসি–এর সহযোগিতায় নিজস্ব চিপ তৈরি করছে ওপেনএআই। এর পাশাপাশি অবকাঠামোগত চাহিদা পূরণের জন্য এনভিডিয়া ও এএমডি–এর চিপগুলোও ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
১০ ঘণ্টা আগেমেটা, টিকটক ও কোয়াইয় নামের চীনের শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে ব্রাজিলের ভোক্তা অধিকার গ্রুপ কালেকটিভ ডিফেন্স ইনস্টিটিউট। মামলার অভিযোগ বলা হয়, কোম্পানিগুলো অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই মামলায় ৩ বিলিয়ন রেইস বা প্রায় ৫২৫ মি
১২ ঘণ্টা আগে