কে এম সানাউল হক
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আসে সবখানেই। খাবারের থালা থেকে শুরু করে স্মার্টফোন কোনো কিছুই এর বাইরে নয়। জীবনে কর্মের প্রতিটি পর্যায়ে যেমন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, তেমনি ঐতিহ্য, আচার-প্রথাও এসবে মিলে নতুন রূপে বিকশিত হয়েছে। মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংস্কার। এর মূলে রয়েছে বিশ্বাস। এই বিশ্বাস তৈরি হয় মানুষের ভৌগোলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক আবহ, ধর্ম-গোত্র ইত্যাদি থেকে। সমাজ যতই পরিবর্তিত হয়, মানুষের জীবনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকাণ্ডে সে বিশ্বাস মিশে থাকে। আমাদের এখনকার জীবনও এর বাইরে নয়।
ধরা যাক, স্মার্টফোনের ওয়ালপেপার। স্ক্রিনসেভারে ডিফল্ট ছবিটি পরিবর্তন করে যে ছবিটি একজন ব্যবহারকারী রাখেন, সেটা তাঁর খুব প্রিয় বলেই রাখেন। অনেকে হয়তো সেখানে বিশেষ কিছু রাখতে চেয়েও পারেন না, নানা বিবেচনায়। স্মার্টফোনের অনেক ছবির মাঝখানে দিনে শতবার দেখা ওই ছবিটির মাহাত্ম্য একজন মানুষের জীবনে অনেক গভীর; খুব ব্যক্তিগত।
আবার কোনো করপোরেট কর্মকর্তার একই রঙের টাই ব্যবহারের গভীরে তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ছোঁয়াকে অস্বীকার করা যায় না। হয়তো নীল রঙের টাই পরে কোনো একদিন অফিসে হাজির হয়ে তিনি কোনো এক অভাবনীয় শুভ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছেন। এরপরই তাঁর মনে বিশ্বাস জন্মেছে যে নীল রঙের টাই তাঁর জন্য শুভ। তিনি সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিন সেই একই রঙের টাই পরে অফিসে যান। এসব সংস্কার স্মার্ট জীবনে রয়েছে।
প্রবণতাটা প্রাচীন
প্রিয় বা শুভ কোনো কিছুকে আগলে রাখার বাসনা মানুষের বহু প্রাচীন। আদিম সভ্যতা থেকেই নানা পরিপ্রেক্ষিতে এর বিবর্তন ঘটেছে বহুমাত্রিক উপায়ে। এখনো এমন কিছু ভাস্কর্য, চিত্রকলা দেখা যায়, যেগুলো দৃশ্যমান করে রাখাই হতো নিজেদের স্মরণে, মননে, চিন্তায় সে বিষয়বস্তুকে স্থান দিতে। যেমন মানিব্যাগে রাখা ছবি, টেবিলে রাখা বা দেয়ালে বাঁধাই করা ছবি, নানা ভাস্কর্যে কিংবা নানা স্মৃতিময় বস্তু, যেমন আংটি, মালা বা চেইন, ঘড়ি, চুড়ি ইত্যাদি। বর্তমানে এসবেরই পরম্পরায় স্মার্টফোনে আমরা ছবি তুলি এবং দেখি কিংবা ভিডিও করি। নিদেনপক্ষে কথা বা শব্দ ধরে রাখি, ফোনবুকে সেভ করে রাখি বিশেষ কোনো নাম। এই জমানায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সম্পর্কগত বিষয়গুলো যখন ভার্চুয়াল হয়ে গেছে, এ প্রবণতা তখন বাড়ছে বই কমছে না।
স্মার্ট দুনিয়ায় যাপন সংস্কার
দৈনন্দিন নানা কাজে যখন স্মার্ট ডিভাইস যুক্ত হলো তখন মানুষ সহজভাবেই তার হাজার বছর ধরে বয়ে বেড়ানো সংস্কারচর্চার স্থান অবচেতনভাবেই দিয়েছে। নানা কাজের মধ্য দিয়ে সেসবের প্রতিফলন দেখা যায় প্রতিনিয়ত। ধর্মীয় কৃত্যকে সহায়তা করার জন্য আজান বা সাহ্রির সময়ের অ্যালার্ট, কিবলার দিক সন্ধান, বিভিন্ন দিনক্ষণের হিসাব, বিভিন্ন পূজার সময়, মহালয়ার ধ্বনি, বিভিন্ন ধর্মীয় বক্তব্য, ধর্মীয় সংগীত ইত্যাদিসহ আরও অনেক সেবা প্রতিদিন আপগ্রেডসহ স্মার্ট ডিভাইসে পাওয়া যাচ্ছে। স্মার্ট ডিভাইসগুলো স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংস্কার, আচার-প্রথা পালনের ব্যবস্থা করেই তাদের বাণিজ্য টিকিয়ে রেখেছে। প্রযুক্তিপণ্যের বাণিজ্যের প্রসারে সংস্কারের ভূমিকা কোনো অংশেই নগণ্য নয়।
মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংস্কার। এর মূলে রয়েছে বিশ্বাস। এই বিশ্বাস তৈরি হয় মানুষের ভৌগোলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক আবহ, ধর্ম-গোত্র ইত্যাদি থেকে। সমাজ যতই পরিবর্তিত হয়, মানুষের জীবনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকাণ্ডে সে বিশ্বাস মিশে থাকে। আমাদের এখনকার জীবনও এর বাইরে নয়।
যদি গানের কথা ধরা যায়, বলতে হয় গান শুধু আমাদের নয়, পুরো বিশ্বসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই গান নিয়ে স্মার্ট দুনিয়ায় উন্মাদনার শেষ নেই। ইন্টারনেট সংযোগ সাপেক্ষে স্মার্টফোন বা স্মার্টটিভিতে ব্যবহার উপযোগী ইউটিউব, স্পটিফাই, সাউন্ড ক্লাউড, ফেসবুক উল্লেখযোগ্য অ্যাপস মানুষের কাছে গান পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যেকোনো সময় যেকোনো গান শোনা বা গান গাওয়ার বৈচিত্র্যময় ফিচারও এখন স্মার্টফোনে সহজলভ্য। বলা যায়, এই জমানায় গান স্মার্ট ডিভাইসেই জনপ্রিয় হয়, সেখানেই আলোচনা-সমালোচনা হয়, সেটা নিয়ে নানা মিমস-মিমিক্রি-কভারও হয়। গানের চর্চায় পরিবর্তন এসেছে এটা সত্য। কিন্তু গান আরও গভীর ব্যঞ্জনায় আরও সহজে মিশে রয়েছে জীবনের প্রতিটি স্মরণীয় এবং সাধারণ মুহূর্তে।
প্রাত্যহিক জীবনে জমা-খরচের হিসাব, দিনক্ষণের হিসাব, পিরিয়ডের হিসাব, ভ্রমণ পরিকল্পনা, সব ধরনের কেনাকাটা, চিকিৎসকের পরামর্শ, এমনকি ফোনকলে কথা শুরুর আগে ও শেষে ছোট্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়ে সালাম বা প্রণাম জানানো হয়, সেখানেও, সংস্কার বহন করে চলে মানুষ। বিনিময়প্রথা থেকে শুরু হওয়া আজকের স্মার্টব্যাংকিং আমাদের আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজনকে আধুনিক উপায়ে মেটাচ্ছে। ট্রেন, বাস, বিমান, লঞ্চ-সব ধরনের টিকিট স্মার্টফোনেই কাটা যাচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট আইডি আমাদের দাপ্তরিক কাজের প্রক্রিয়াকে করেছে তুলনামূলক সহজ। অনেক ক্ষেত্রে স্মার্টফোনে আইডি কার্ডের ছবি প্রদর্শন করে বা কিউআর কোড স্ক্যান করেও প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেওয়া যাচ্ছে।
অন্যায়ের প্রতিবাদ ও দাবি আদায়ের আন্দোলনের চেতনা, আমাদের ভূমিতে সংঘটিত বিভিন্ন সংগ্রামের ইতিহাসে প্রোজ্জ্বল। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও রাজনীতিচর্চার বড় অংশ ঘটছে স্মার্ট ডিভাইসেই। সশরীরে প্রতিবাদ-আন্দোলনের আগে সংগঠিত হওয়ার জন্য স্মার্ট দুনিয়ার শরণাপন্ন হওয়াই বর্তমান সময়ের সহজ সমাধান। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমের কোনো পোস্ট-কমেন্টের মাধ্যমে জানানো সাধুবাদ কিংবা সমালোচনাও এই চেতনার আধুনিক রূপ।
চিঠির বদলে ভিন্ন কিছু
এখন সেই চিঠির প্রচলন আর তেমন নেই। কাগজ-কলমের সম্মিলনে মনের কথা সাজানো এক কারুশিল্প। সে কারু ঠিক হারায়নি; নবরূপে রূপান্তরিত হয়েছে। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটের ফিচারের দিকে লক্ষ করলেই এই ডিজিটাল ক্র্যাফটিং প্রতীয়মান হয়। এখন মানুষের সঙ্গে মানুষের সরাসরি দেখা করার মতো যোগাযোগ কমলেও মনের সঙ্গে মনের সংযুক্তি আরও শক্তিশালী। মানুষের হয়তো এখন অনেক বিচ্ছিন্ন। কিন্তু স্মার্টলি অনেক সন্নিকটে এবং একতাবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, স্মার্টটিভি, স্মার্টফ্রিজ, স্মার্টলাইট, স্মার্ট স্পিকার ইত্যাদি ডিভাইসের ভূমিকা বর্তমানে অত্যধিক। এখানে ব্যবহারের উপযোগী বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বহুমাত্রিক সেবা পেয়ে থাকে ব্যবহারকারী। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, করোনাকালীন মহামারির ভেতর প্রথাগত কর্মসম্পাদন প্রক্রিয়ার বাইরে এসে প্রযুক্তির উৎকর্ষে নির্ধারিত কাজের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে।
পুরো পৃথিবীই এখন নতুন যৌগিক, সমন্বিত সংস্কারের পথে এগিয়ে চলেছে। সেই ছন্দে মিল পেয়ে হয়তো একজন লেখক লিখছেন, শিল্পী ছবি আঁকছেন কিংবা যে যাঁর অফিসের বা ব্যবসার কাজ করে অন্ন সংস্থান করছেন বা গৃহস্থালির কাজ করছেন। অ্যানালগ কিংবা স্মার্ট, এমনতর প্রতিটি জীবনকর্মের ভেতর দিয়ে প্রতিনিয়ত
প্রতিফলিত হচ্ছে নিজেদের সংস্কার।
লেখক: শিক্ষক, থিয়েটার স্টাডিজ বিভাগ, কক্সবাজার সিটি কলেজ, কক্সবাজার
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আসে সবখানেই। খাবারের থালা থেকে শুরু করে স্মার্টফোন কোনো কিছুই এর বাইরে নয়। জীবনে কর্মের প্রতিটি পর্যায়ে যেমন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, তেমনি ঐতিহ্য, আচার-প্রথাও এসবে মিলে নতুন রূপে বিকশিত হয়েছে। মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংস্কার। এর মূলে রয়েছে বিশ্বাস। এই বিশ্বাস তৈরি হয় মানুষের ভৌগোলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক আবহ, ধর্ম-গোত্র ইত্যাদি থেকে। সমাজ যতই পরিবর্তিত হয়, মানুষের জীবনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকাণ্ডে সে বিশ্বাস মিশে থাকে। আমাদের এখনকার জীবনও এর বাইরে নয়।
ধরা যাক, স্মার্টফোনের ওয়ালপেপার। স্ক্রিনসেভারে ডিফল্ট ছবিটি পরিবর্তন করে যে ছবিটি একজন ব্যবহারকারী রাখেন, সেটা তাঁর খুব প্রিয় বলেই রাখেন। অনেকে হয়তো সেখানে বিশেষ কিছু রাখতে চেয়েও পারেন না, নানা বিবেচনায়। স্মার্টফোনের অনেক ছবির মাঝখানে দিনে শতবার দেখা ওই ছবিটির মাহাত্ম্য একজন মানুষের জীবনে অনেক গভীর; খুব ব্যক্তিগত।
আবার কোনো করপোরেট কর্মকর্তার একই রঙের টাই ব্যবহারের গভীরে তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ছোঁয়াকে অস্বীকার করা যায় না। হয়তো নীল রঙের টাই পরে কোনো একদিন অফিসে হাজির হয়ে তিনি কোনো এক অভাবনীয় শুভ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছেন। এরপরই তাঁর মনে বিশ্বাস জন্মেছে যে নীল রঙের টাই তাঁর জন্য শুভ। তিনি সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিন সেই একই রঙের টাই পরে অফিসে যান। এসব সংস্কার স্মার্ট জীবনে রয়েছে।
প্রবণতাটা প্রাচীন
প্রিয় বা শুভ কোনো কিছুকে আগলে রাখার বাসনা মানুষের বহু প্রাচীন। আদিম সভ্যতা থেকেই নানা পরিপ্রেক্ষিতে এর বিবর্তন ঘটেছে বহুমাত্রিক উপায়ে। এখনো এমন কিছু ভাস্কর্য, চিত্রকলা দেখা যায়, যেগুলো দৃশ্যমান করে রাখাই হতো নিজেদের স্মরণে, মননে, চিন্তায় সে বিষয়বস্তুকে স্থান দিতে। যেমন মানিব্যাগে রাখা ছবি, টেবিলে রাখা বা দেয়ালে বাঁধাই করা ছবি, নানা ভাস্কর্যে কিংবা নানা স্মৃতিময় বস্তু, যেমন আংটি, মালা বা চেইন, ঘড়ি, চুড়ি ইত্যাদি। বর্তমানে এসবেরই পরম্পরায় স্মার্টফোনে আমরা ছবি তুলি এবং দেখি কিংবা ভিডিও করি। নিদেনপক্ষে কথা বা শব্দ ধরে রাখি, ফোনবুকে সেভ করে রাখি বিশেষ কোনো নাম। এই জমানায় সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সম্পর্কগত বিষয়গুলো যখন ভার্চুয়াল হয়ে গেছে, এ প্রবণতা তখন বাড়ছে বই কমছে না।
স্মার্ট দুনিয়ায় যাপন সংস্কার
দৈনন্দিন নানা কাজে যখন স্মার্ট ডিভাইস যুক্ত হলো তখন মানুষ সহজভাবেই তার হাজার বছর ধরে বয়ে বেড়ানো সংস্কারচর্চার স্থান অবচেতনভাবেই দিয়েছে। নানা কাজের মধ্য দিয়ে সেসবের প্রতিফলন দেখা যায় প্রতিনিয়ত। ধর্মীয় কৃত্যকে সহায়তা করার জন্য আজান বা সাহ্রির সময়ের অ্যালার্ট, কিবলার দিক সন্ধান, বিভিন্ন দিনক্ষণের হিসাব, বিভিন্ন পূজার সময়, মহালয়ার ধ্বনি, বিভিন্ন ধর্মীয় বক্তব্য, ধর্মীয় সংগীত ইত্যাদিসহ আরও অনেক সেবা প্রতিদিন আপগ্রেডসহ স্মার্ট ডিভাইসে পাওয়া যাচ্ছে। স্মার্ট ডিভাইসগুলো স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংস্কার, আচার-প্রথা পালনের ব্যবস্থা করেই তাদের বাণিজ্য টিকিয়ে রেখেছে। প্রযুক্তিপণ্যের বাণিজ্যের প্রসারে সংস্কারের ভূমিকা কোনো অংশেই নগণ্য নয়।
মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংস্কার। এর মূলে রয়েছে বিশ্বাস। এই বিশ্বাস তৈরি হয় মানুষের ভৌগোলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক আবহ, ধর্ম-গোত্র ইত্যাদি থেকে। সমাজ যতই পরিবর্তিত হয়, মানুষের জীবনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকাণ্ডে সে বিশ্বাস মিশে থাকে। আমাদের এখনকার জীবনও এর বাইরে নয়।
যদি গানের কথা ধরা যায়, বলতে হয় গান শুধু আমাদের নয়, পুরো বিশ্বসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই গান নিয়ে স্মার্ট দুনিয়ায় উন্মাদনার শেষ নেই। ইন্টারনেট সংযোগ সাপেক্ষে স্মার্টফোন বা স্মার্টটিভিতে ব্যবহার উপযোগী ইউটিউব, স্পটিফাই, সাউন্ড ক্লাউড, ফেসবুক উল্লেখযোগ্য অ্যাপস মানুষের কাছে গান পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যেকোনো সময় যেকোনো গান শোনা বা গান গাওয়ার বৈচিত্র্যময় ফিচারও এখন স্মার্টফোনে সহজলভ্য। বলা যায়, এই জমানায় গান স্মার্ট ডিভাইসেই জনপ্রিয় হয়, সেখানেই আলোচনা-সমালোচনা হয়, সেটা নিয়ে নানা মিমস-মিমিক্রি-কভারও হয়। গানের চর্চায় পরিবর্তন এসেছে এটা সত্য। কিন্তু গান আরও গভীর ব্যঞ্জনায় আরও সহজে মিশে রয়েছে জীবনের প্রতিটি স্মরণীয় এবং সাধারণ মুহূর্তে।
প্রাত্যহিক জীবনে জমা-খরচের হিসাব, দিনক্ষণের হিসাব, পিরিয়ডের হিসাব, ভ্রমণ পরিকল্পনা, সব ধরনের কেনাকাটা, চিকিৎসকের পরামর্শ, এমনকি ফোনকলে কথা শুরুর আগে ও শেষে ছোট্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়ে সালাম বা প্রণাম জানানো হয়, সেখানেও, সংস্কার বহন করে চলে মানুষ। বিনিময়প্রথা থেকে শুরু হওয়া আজকের স্মার্টব্যাংকিং আমাদের আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজনকে আধুনিক উপায়ে মেটাচ্ছে। ট্রেন, বাস, বিমান, লঞ্চ-সব ধরনের টিকিট স্মার্টফোনেই কাটা যাচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট আইডি আমাদের দাপ্তরিক কাজের প্রক্রিয়াকে করেছে তুলনামূলক সহজ। অনেক ক্ষেত্রে স্মার্টফোনে আইডি কার্ডের ছবি প্রদর্শন করে বা কিউআর কোড স্ক্যান করেও প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেওয়া যাচ্ছে।
অন্যায়ের প্রতিবাদ ও দাবি আদায়ের আন্দোলনের চেতনা, আমাদের ভূমিতে সংঘটিত বিভিন্ন সংগ্রামের ইতিহাসে প্রোজ্জ্বল। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও রাজনীতিচর্চার বড় অংশ ঘটছে স্মার্ট ডিভাইসেই। সশরীরে প্রতিবাদ-আন্দোলনের আগে সংগঠিত হওয়ার জন্য স্মার্ট দুনিয়ার শরণাপন্ন হওয়াই বর্তমান সময়ের সহজ সমাধান। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যমের কোনো পোস্ট-কমেন্টের মাধ্যমে জানানো সাধুবাদ কিংবা সমালোচনাও এই চেতনার আধুনিক রূপ।
চিঠির বদলে ভিন্ন কিছু
এখন সেই চিঠির প্রচলন আর তেমন নেই। কাগজ-কলমের সম্মিলনে মনের কথা সাজানো এক কারুশিল্প। সে কারু ঠিক হারায়নি; নবরূপে রূপান্তরিত হয়েছে। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটের ফিচারের দিকে লক্ষ করলেই এই ডিজিটাল ক্র্যাফটিং প্রতীয়মান হয়। এখন মানুষের সঙ্গে মানুষের সরাসরি দেখা করার মতো যোগাযোগ কমলেও মনের সঙ্গে মনের সংযুক্তি আরও শক্তিশালী। মানুষের হয়তো এখন অনেক বিচ্ছিন্ন। কিন্তু স্মার্টলি অনেক সন্নিকটে এবং একতাবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোন, স্মার্টওয়াচ, স্মার্টটিভি, স্মার্টফ্রিজ, স্মার্টলাইট, স্মার্ট স্পিকার ইত্যাদি ডিভাইসের ভূমিকা বর্তমানে অত্যধিক। এখানে ব্যবহারের উপযোগী বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বহুমাত্রিক সেবা পেয়ে থাকে ব্যবহারকারী। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, করোনাকালীন মহামারির ভেতর প্রথাগত কর্মসম্পাদন প্রক্রিয়ার বাইরে এসে প্রযুক্তির উৎকর্ষে নির্ধারিত কাজের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে।
পুরো পৃথিবীই এখন নতুন যৌগিক, সমন্বিত সংস্কারের পথে এগিয়ে চলেছে। সেই ছন্দে মিল পেয়ে হয়তো একজন লেখক লিখছেন, শিল্পী ছবি আঁকছেন কিংবা যে যাঁর অফিসের বা ব্যবসার কাজ করে অন্ন সংস্থান করছেন বা গৃহস্থালির কাজ করছেন। অ্যানালগ কিংবা স্মার্ট, এমনতর প্রতিটি জীবনকর্মের ভেতর দিয়ে প্রতিনিয়ত
প্রতিফলিত হচ্ছে নিজেদের সংস্কার।
লেখক: শিক্ষক, থিয়েটার স্টাডিজ বিভাগ, কক্সবাজার সিটি কলেজ, কক্সবাজার
চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এখন টিকটকের মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঝ্যাং ইয়িমিং। দেশটির ধনী ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই তালিকায় ৪৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪ হাজার ৯৩০ কোটি ডলার সম্পদ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন ঝ্যাং। ২০২৩ সালের তুলনায় তা
১৪ ঘণ্টা আগেগুগলের নতুন কোডগুলোর প্রায় এক–চতুর্থাংশের বেশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি। গত মঙ্গলবার কোম্পানিটির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় এসব তথ্য জানায় সিইও সুন্দর পিচাই।
১৫ ঘণ্টা আগেকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই সিস্টেমগুলোর জন্য ব্রডকম ও টিএসএমসি–এর সহযোগিতায় নিজস্ব চিপ তৈরি করছে ওপেনএআই। এর পাশাপাশি অবকাঠামোগত চাহিদা পূরণের জন্য এনভিডিয়া ও এএমডি–এর চিপগুলোও ব্যবহার করছে কোম্পানিটি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেমেটা, টিকটক ও কোয়াইয় নামের চীনের শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে ব্রাজিলের ভোক্তা অধিকার গ্রুপ কালেকটিভ ডিফেন্স ইনস্টিটিউট। মামলার অভিযোগ বলা হয়, কোম্পানিগুলো অপ্রাপ্তবয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছে। তাই মামলায় ৩ বিলিয়ন রেইস বা প্রায় ৫২৫ মি
১৮ ঘণ্টা আগে