Ajker Patrika

মুরগির জন্য স্মার্ট হোম

আবির আহসান রুদ্র
মুরগির জন্য স্মার্ট হোম

পৃথিবীতে প্রতিবছর যে পরিমাণ ডিমের চাহিদা, তা পূরণ করতে বেশির ভাগ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানই হিমশিম খায়। মুরগি থেকে বেশি ডিম পেতে তার জন্য যেমন পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন একটি আদর্শ ঘরের। এমন ধারণা থেকেই ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এ জে ফরসাইথ ও জরদান বার্নস মুরগির জন্য প্রতিষ্ঠা করেন স্মার্ট হোম ‘কুপ’।

কুপের প্রথম প্রজন্মের স্মার্ট হোমে আছে মুরগির জন্য একটি ঘর, বৈদ্যুতিক বেড়া, দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন লাইট, ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই এবং ১০০ বর্গফুট ঘাস।

মুরগি পালনের ক্ষেত্রে বড় বাধা হচ্ছে নিয়মিত মল পরিষ্কার করে খাঁচার পরিবেশ ঠিক রাখা। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি চার সপ্তাহ ধরে বর্জ্য নিষ্কাশনের ডিজাইন নিয়ে কাজ করে। বাজারে আসার কয়েক মাস আগে কুপ তাদের বৈদ্যুতিক বেড়ার মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনে, যাতে শিয়ালসহ অন্যান্য প্রাণী ঢুকে মুরগি শিকার করতে না পারে। প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য, প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুনদের মুরগি পালনে উৎসাহিত করা। বর্তমানে কুপের ৫৬ ভাগ ক্রেতাই মুরগি পালনে একেবারে নতুন।

যেভাবে কাজ করে
মুরগি ও হিংস্র জন্তু চিহ্নিত করতে আলবার্ট এগস্টাইন নামে একটি এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করে কুপ। ক্যামেরার তথ্য এআইয়ের মাধ্যমে একটি অ্যাপে পাঠানো হয়। সফটওয়্যারটি কাছাকাছি দূরত্বে থাকা চিল, বাজপাখি থেকে শুরু করে কুকুরের সমজাতীয় প্রাণীকে ৯৮ ভাগ নির্ভুলভাবে চিহ্নিত করতে পারে। তারপর সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেয়। যেমন শিয়াল শনাক্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে ঘরের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।

পুরো প্রক্রিয়ার জন্য ঘরের বাইরে ও ভেতরে একটি করে ক্যামেরা থাকে। প্রতিদিন সূর্যোদয়ের ২০ মিনিট পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুপের দরজা খুলে যায়, আর রাতে ‘নেস্ট মুড’ ফিচারের মাধ্যমে মালিক জানতে পারেন, সব মুরগি বাসায় ফিরেছে কি না। আওয়াজ পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে শব্দ শনাক্তকারী সফটওয়্যার। মুরগির বিভিন্ন ধরনের শব্দ শুনে মেজাজ ও আচরণের তথ্য সরবরাহ করে সফটওয়্যারটি।

ছবি: সংগৃহীতসপ্তাহ শেষে মালিকের কাছে নোট পাঠানো হয়। যেমন বাসায় কোনো শিয়াল এসেছে কি না বা ডিম কখন সংগ্রহ করতে হবে। স্মার্ট হোমে থাকা মুরগিগুলো কখন ক্ষুধার্ত, হাসিখুশি, ভীত কিংবা ডিমে কখন তা দেবে, সেগুলো ‘ক্লাক টক’ ফিচারের মাধ্যমে মুরগির আওয়াজ শুনে নির্ধারণ করা হয়।

ভবিষ্যতে মুরগির স্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা আছে প্রতিষ্ঠানটির। মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা তৈরি করতে ৬ থেকে ১০ মাস প্রয়োজন। এরপর যদি কোনো মুরগি ছয় ঘণ্টা ধরে পানি পান না করে, সফটওয়্যার বলে দেবে মুরগিটি অলস। এর বাইরেও টেলিহেলথের মাধ্যমে যেন প্রানি চিকিৎসকের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করা যায়, সেটা নিয়েও কাজ চলছে।

গত মাসে বাজারে আসা শুরু করেছে কুপের স্মার্ট হোম। বাংলাদেশি টাকায় প্রতিটি ঘরের দাম প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার। এইআই টুলের জন্য অতিরিক্ত ২ হাজার ২০০ টাকা মাসিক ফি দিতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের স্মার্ট হোম কেমন হবে, তা নিয়ে এখনই ভাবতে শুরু করেছেন দুই প্রতিষ্ঠাতা ফরসাইথ ও বার্নস। ধারণা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে মুরগির জন্য বড় আকারের স্মার্ট হোম তৈরি করা হবে। বর্তমানে যেখানে চার থেকে ছয়টি মুরগি থাকতে পারে, সেখানে দশটি মুরগি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছেন তাঁরা। চিল ও বাজপাখির হাত থেকে রক্ষার জন্য আসতে পারে জলকামানও।

সূত্র: পপুলার সায়েন্স, 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীর পিঠে পাড়া দিয়ে অটোরিকশায় শহর ঘোরাল ছাত্রদল, সঙ্গে উচ্চ স্বরে গান

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত