কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
ঢাকা শহরের বনশ্রী এলাকার একটি বাড়ি। এটির গ্যারেজের পাশের ছোট্ট একটি কক্ষে প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান কোড ব্ল্যাকের সদস্যরা স্বপ্ন বুনে চলেছেন।
এক বিকেলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে উপস্থিত হলাম নির্দিষ্ট বাড়িটির প্রধান দরজায়। যিনি অভ্যর্থনা জানাতে এলেন, তাঁর শরীরে ক্লান্তির ছাপ। প্রায় সারা দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শেষ করে এসেছেন নিজেদের স্বপ্নের দুনিয়ায়। ক্লান্তি ছাপিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন তিনি। নিয়ে গেলেন ভেতরে, কোড ব্ল্যাকের স্বপ্নের ল্যাবে।
বিভক্তি থেকে জন্ম
কোড ব্ল্যাক প্রথম যে বাসাটি ভাড়ায় নিয়েছিল তার মালিকপক্ষ বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেননি। ফলে তাঁদের পড়তে হয় বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে। ‘কিসের গবেষণা?’ ‘কী রোবট বানাবা?’ ‘ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে কিসের কাজ?’ ‘কী বানাও তোমরা?’ এমন নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হয় মেয়েরা আলাদাভাবে কাজ করবে। এক সময় ছেলেরা আসবে, অন্য সময়ে মেয়েরা। এভাবেই চলবে আবিষ্কার আর গবেষণার কাজ। এই বিভক্তি থেকেই জন্ম নিয়েছিল দেশের একমাত্র নারী রোবোটিকস দল কোড ব্ল্যাক।
কোড ব্ল্যাকের কান্ডারিরা
তিনজন নারী সদস্য নিয়ে ২০২১ সালের ৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে টিম কোড ব্ল্যাক। সারা দেশ থেকে যেসব মেয়ে রোবটিক ও স্টেমের প্রতি আগ্রহী, তাঁদের গ্রুমিং এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শুরু হয় বাছাই পর্ব। বর্তমানে দেশের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন সদস্য যুক্ত আছেন টিম ব্ল্যাক কোডের সঙ্গে। বিভিন্ন প্রকল্পে অনেকে অনলাইন মাধ্যমে এবং অনেকে ল্যাবে এসে কাজ করে যাচ্ছেন এই টিমের সঙ্গে। ব্ল্যাক কোডের এই লড়াইয়ের প্রথম সৈনিক ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, বায়োটেকনোলজি বিভাগের নুসরাত জাহান সিনহা, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের তাহিয়া রহমান। এর পরে দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের নুসরাত জাহান ও সনিয়া ইসলাম।
অর্জন
তিন বছরের কিছু বেশি বয়স কোড ব্ল্যাকের। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সাফল্যের ঝুড়িতে এসেছে একাধিক পদক ও স্বীকৃতি।
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইনোভেশন ফেস্ট ২০২২-এ স্বর্ণপদক, ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডে ২০১৯ ও ২০২২ সালে ব্রোঞ্জপদক, আইটেক এক্সপো টেক ফেস্ট আইআইটি বম্বে ২০২২-এর প্রথম রানার্সআপসহ বেশ কিছু জাতীয় অর্জন আছে দলটির। এ ছাড়া এ বছরের মে মাসে ইন্দোনেশিয়ান ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্স, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কমপিটিশন’-এ প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছে কোড ব্ল্যাক। এ ছাড়া পেয়েছে মালয়েশিয়ান ইয়ং সায়েন্টিস্ট অর্গানাইজেশনের (মাইসো) বিশেষ পুরস্কার।
সমস্যা সমাধানের চেষ্টা
কোড ব্ল্যাক মূলত দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমস্যা সমাধানের কথা বিবেচনায় রেখে কাজ করে। যেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা বিবেচনায় রেখে তারা কাজ করেছে রেসকিউ রোবট নিয়ে। কৃষিভিত্তিক দেশে কৃষি ও কৃষকদের কথা বিবেচনায় রেখে কোড ব্ল্যাক ফিমো নামে তৈরি করেছে একটি রোবট। এটিকে তারা ডাকে কৃষকের রোবট বলে।
স্কুলশিক্ষার্থীদের সঙ্গে
কোড ব্ল্যাকের দলনেতা জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি জানালেন, বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করে কোড ব্ল্যাক। এ স্কুল প্রোগ্রাম থেকে অনেকে পরবর্তীকালে কোড ব্ল্যাকের সঙ্গে যুক্ত হন। ক্যাম্পেইনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, মার্সরোভার ও ড্রোন বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রতি শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, অভিভাবকেরাও বেশ আগ্রহী। কোডিংয়ের ক্ষেত্রে ছেলেশিশুদের পাশাপাশি মেয়েশিক্ষার্থীরা ভীষণ আগ্রহী। টিম ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা নুসরাত জাহান সিনহা জানান, দক্ষতাটা আসল। চেষ্টা আর ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব।
কৃষকের জন্য ব্ল্যাক কোড
টিম ব্ল্যাক কোডের তৈরি রোবট ফিমো কৃষককে জানিয়ে দেবে জমির মাটির পিএইচের পরিমাণ কিংবা সার ব্যবহারের তথ্য। আবার ধানের চারা রোপণ ও কাটার কাজও করে দেবে ফিমো। এ জন্য তাকে নির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
দেশের কৃষকদের কথা বিবেচনায় রেখে রোবটগুলোকে বাংলায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবার ভয়েস কমান্ডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। যাতে কোনো কৃষক পড়তে না পারলেও শুনে শুনে বুঝতে পারেন এবং ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে যন্ত্রটিকে চালাতে পারেন। এ ছাড়া তাদের তৈরি যন্ত্র ব্যবহার করার জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করছে টিম ব্ল্যাক কোড।
রেসকিউ মিশন নিয়ে ব্ল্যাক কোড
কোড ব্ল্যাক এ বছর আলোচনায় আসে তাদের সাফল্যের কারণে। তারা রেসকিউ রোবট প্রহরীর চতুর্থ সংস্করণ নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। রেসকিউ রোবটটি অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধারকাজে সাহায্য করতে সক্ষম।
কোড ব্ল্যাক আমাদের স্বপ্নবাজ তরুণীদের প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোগ। আমরা চাই, অ্যাপল কিংবা আমাজনের মতো গ্যারেজে জন্ম নেওয়া এই উদ্যোগটিও স্বপ্নের ডালপালা মেলে আকাশে উড়ুক।
প্রহরীতে যেসব ফিচার আছে
• প্রহরীতে আছে ভ্যাকিউম ক্যান ফিচার। এতে ধোঁয়ার কারণে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে প্রাণহানির ঘটনা কমে যাবে।
• রোবটটি আগুন লাগা জায়গায় গিয়ে নিজেই আগুনের মাত্রা ও উৎস বুঝে তা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম।
• এটি জীবিত ও মৃত মানুষের সন্ধান করতে সক্ষম। সে ক্ষেত্রে প্রহরী নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে আগে কাকে বাঁচাতে হবে।
• কাজের সময় সামনে শক্ত দেওয়াল থাকলে ভেঙে কাজ করার সামর্থ্য আছে প্রহরীর।
• এটি ১২৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।
• বাইরে থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রোবটটিতে একটি ড্রোন যুক্ত করে ওয়াটার প্রুফ বডি যুক্ত করার জন্য কাজ করছে কোড ব্ল্যাক। এতে সফল হলে প্রহরী নামের রোবটটি বন্যা কবলিত জায়গায় ত্রাণ বণ্টনের কাজ করতে পারবে।
কিছু ক্ষোভ আর আশার কথা
দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নুসরাত জাহান নওরিন ও সনিয়া ইসলাম সারা জানান, আপাতত দলগত কাজ করতে ইচ্ছুক তাঁরা। কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যে পরিমাণ অর্থ দরকার, তা তারা পান না। ফলে দলগত কাজ করা ছাড়া আপাতত কোনো পথ নেই বলে মনে করেন তাঁরা।
দলনেতা জান্নাতুল জানান, আইসিটি ডিভিশনের সঙ্গে কিছু প্রকল্পের কাজ করেছেন তাঁরা। সেগুলোর কিছু বাস্তবায়ন করতে বা বাজেট পেতে দীর্ঘ লেগে যায়। তত দিন পর্যন্ত রোবট টেস্টিং পর্যায়ে থাকে। এরপর তা নিয়ে বড় পরিসরে কাজ হবে। সেটি আরও সময় সাপেক্ষ কাজ। ফলে যেকোনো প্রকল্প হয়ে যায় ধীর। এ প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত হবে বলে মনে করেন জান্নাতুল।
রোবট নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে জান্নাতুল বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে বাইরের অনেক দেশেই সরকারি তহবিলে গবেষণা করা রোবট বানিয়ে তারা আয়োজনে অংশ নেয়। আর আমরা নিজেদের টাকায় গবেষণা করে তারপর সরকারের কাছে টেস্টিংয়ের জন্য অনুমতি চাচ্ছি।’ তবে সব বাঁধা পেড়িয়ে নিজেদের কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ কোড ব্ল্যাক। ওয়াটার রোবট নিয়ে কাজ করার কথা তুলে ধরে নুসরাত জাহান সিনহা জানান, ‘পানি সংস্কার নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। যাতে দূষিত পানি বিশুদ্ধ পানিতে রূপান্তরিত হতে পারে।’
ঢাকা শহরের বনশ্রী এলাকার একটি বাড়ি। এটির গ্যারেজের পাশের ছোট্ট একটি কক্ষে প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান কোড ব্ল্যাকের সদস্যরা স্বপ্ন বুনে চলেছেন।
এক বিকেলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে উপস্থিত হলাম নির্দিষ্ট বাড়িটির প্রধান দরজায়। যিনি অভ্যর্থনা জানাতে এলেন, তাঁর শরীরে ক্লান্তির ছাপ। প্রায় সারা দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শেষ করে এসেছেন নিজেদের স্বপ্নের দুনিয়ায়। ক্লান্তি ছাপিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেন তিনি। নিয়ে গেলেন ভেতরে, কোড ব্ল্যাকের স্বপ্নের ল্যাবে।
বিভক্তি থেকে জন্ম
কোড ব্ল্যাক প্রথম যে বাসাটি ভাড়ায় নিয়েছিল তার মালিকপক্ষ বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারেননি। ফলে তাঁদের পড়তে হয় বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে। ‘কিসের গবেষণা?’ ‘কী রোবট বানাবা?’ ‘ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে কিসের কাজ?’ ‘কী বানাও তোমরা?’ এমন নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হয় মেয়েরা আলাদাভাবে কাজ করবে। এক সময় ছেলেরা আসবে, অন্য সময়ে মেয়েরা। এভাবেই চলবে আবিষ্কার আর গবেষণার কাজ। এই বিভক্তি থেকেই জন্ম নিয়েছিল দেশের একমাত্র নারী রোবোটিকস দল কোড ব্ল্যাক।
কোড ব্ল্যাকের কান্ডারিরা
তিনজন নারী সদস্য নিয়ে ২০২১ সালের ৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে টিম কোড ব্ল্যাক। সারা দেশ থেকে যেসব মেয়ে রোবটিক ও স্টেমের প্রতি আগ্রহী, তাঁদের গ্রুমিং এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শুরু হয় বাছাই পর্ব। বর্তমানে দেশের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ জন সদস্য যুক্ত আছেন টিম ব্ল্যাক কোডের সঙ্গে। বিভিন্ন প্রকল্পে অনেকে অনলাইন মাধ্যমে এবং অনেকে ল্যাবে এসে কাজ করে যাচ্ছেন এই টিমের সঙ্গে। ব্ল্যাক কোডের এই লড়াইয়ের প্রথম সৈনিক ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, বায়োটেকনোলজি বিভাগের নুসরাত জাহান সিনহা, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের তাহিয়া রহমান। এর পরে দলটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের নুসরাত জাহান ও সনিয়া ইসলাম।
অর্জন
তিন বছরের কিছু বেশি বয়স কোড ব্ল্যাকের। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সাফল্যের ঝুড়িতে এসেছে একাধিক পদক ও স্বীকৃতি।
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইনোভেশন ফেস্ট ২০২২-এ স্বর্ণপদক, ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডে ২০১৯ ও ২০২২ সালে ব্রোঞ্জপদক, আইটেক এক্সপো টেক ফেস্ট আইআইটি বম্বে ২০২২-এর প্রথম রানার্সআপসহ বেশ কিছু জাতীয় অর্জন আছে দলটির। এ ছাড়া এ বছরের মে মাসে ইন্দোনেশিয়ান ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্স, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কমপিটিশন’-এ প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছে কোড ব্ল্যাক। এ ছাড়া পেয়েছে মালয়েশিয়ান ইয়ং সায়েন্টিস্ট অর্গানাইজেশনের (মাইসো) বিশেষ পুরস্কার।
সমস্যা সমাধানের চেষ্টা
কোড ব্ল্যাক মূলত দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সমস্যা সমাধানের কথা বিবেচনায় রেখে কাজ করে। যেমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কথা বিবেচনায় রেখে তারা কাজ করেছে রেসকিউ রোবট নিয়ে। কৃষিভিত্তিক দেশে কৃষি ও কৃষকদের কথা বিবেচনায় রেখে কোড ব্ল্যাক ফিমো নামে তৈরি করেছে একটি রোবট। এটিকে তারা ডাকে কৃষকের রোবট বলে।
স্কুলশিক্ষার্থীদের সঙ্গে
কোড ব্ল্যাকের দলনেতা জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি জানালেন, বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করে কোড ব্ল্যাক। এ স্কুল প্রোগ্রাম থেকে অনেকে পরবর্তীকালে কোড ব্ল্যাকের সঙ্গে যুক্ত হন। ক্যাম্পেইনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানান, মার্সরোভার ও ড্রোন বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রতি শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, অভিভাবকেরাও বেশ আগ্রহী। কোডিংয়ের ক্ষেত্রে ছেলেশিশুদের পাশাপাশি মেয়েশিক্ষার্থীরা ভীষণ আগ্রহী। টিম ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা নুসরাত জাহান সিনহা জানান, দক্ষতাটা আসল। চেষ্টা আর ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব।
কৃষকের জন্য ব্ল্যাক কোড
টিম ব্ল্যাক কোডের তৈরি রোবট ফিমো কৃষককে জানিয়ে দেবে জমির মাটির পিএইচের পরিমাণ কিংবা সার ব্যবহারের তথ্য। আবার ধানের চারা রোপণ ও কাটার কাজও করে দেবে ফিমো। এ জন্য তাকে নির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
দেশের কৃষকদের কথা বিবেচনায় রেখে রোবটগুলোকে বাংলায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবার ভয়েস কমান্ডের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। যাতে কোনো কৃষক পড়তে না পারলেও শুনে শুনে বুঝতে পারেন এবং ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে যন্ত্রটিকে চালাতে পারেন। এ ছাড়া তাদের তৈরি যন্ত্র ব্যবহার করার জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করছে টিম ব্ল্যাক কোড।
রেসকিউ মিশন নিয়ে ব্ল্যাক কোড
কোড ব্ল্যাক এ বছর আলোচনায় আসে তাদের সাফল্যের কারণে। তারা রেসকিউ রোবট প্রহরীর চতুর্থ সংস্করণ নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। রেসকিউ রোবটটি অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধারকাজে সাহায্য করতে সক্ষম।
কোড ব্ল্যাক আমাদের স্বপ্নবাজ তরুণীদের প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোগ। আমরা চাই, অ্যাপল কিংবা আমাজনের মতো গ্যারেজে জন্ম নেওয়া এই উদ্যোগটিও স্বপ্নের ডালপালা মেলে আকাশে উড়ুক।
প্রহরীতে যেসব ফিচার আছে
• প্রহরীতে আছে ভ্যাকিউম ক্যান ফিচার। এতে ধোঁয়ার কারণে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে প্রাণহানির ঘটনা কমে যাবে।
• রোবটটি আগুন লাগা জায়গায় গিয়ে নিজেই আগুনের মাত্রা ও উৎস বুঝে তা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম।
• এটি জীবিত ও মৃত মানুষের সন্ধান করতে সক্ষম। সে ক্ষেত্রে প্রহরী নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে আগে কাকে বাঁচাতে হবে।
• কাজের সময় সামনে শক্ত দেওয়াল থাকলে ভেঙে কাজ করার সামর্থ্য আছে প্রহরীর।
• এটি ১২৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।
• বাইরে থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রোবটটিতে একটি ড্রোন যুক্ত করে ওয়াটার প্রুফ বডি যুক্ত করার জন্য কাজ করছে কোড ব্ল্যাক। এতে সফল হলে প্রহরী নামের রোবটটি বন্যা কবলিত জায়গায় ত্রাণ বণ্টনের কাজ করতে পারবে।
কিছু ক্ষোভ আর আশার কথা
দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নুসরাত জাহান নওরিন ও সনিয়া ইসলাম সারা জানান, আপাতত দলগত কাজ করতে ইচ্ছুক তাঁরা। কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যে পরিমাণ অর্থ দরকার, তা তারা পান না। ফলে দলগত কাজ করা ছাড়া আপাতত কোনো পথ নেই বলে মনে করেন তাঁরা।
দলনেতা জান্নাতুল জানান, আইসিটি ডিভিশনের সঙ্গে কিছু প্রকল্পের কাজ করেছেন তাঁরা। সেগুলোর কিছু বাস্তবায়ন করতে বা বাজেট পেতে দীর্ঘ লেগে যায়। তত দিন পর্যন্ত রোবট টেস্টিং পর্যায়ে থাকে। এরপর তা নিয়ে বড় পরিসরে কাজ হবে। সেটি আরও সময় সাপেক্ষ কাজ। ফলে যেকোনো প্রকল্প হয়ে যায় ধীর। এ প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত হবে বলে মনে করেন জান্নাতুল।
রোবট নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে জান্নাতুল বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে বাইরের অনেক দেশেই সরকারি তহবিলে গবেষণা করা রোবট বানিয়ে তারা আয়োজনে অংশ নেয়। আর আমরা নিজেদের টাকায় গবেষণা করে তারপর সরকারের কাছে টেস্টিংয়ের জন্য অনুমতি চাচ্ছি।’ তবে সব বাঁধা পেড়িয়ে নিজেদের কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ কোড ব্ল্যাক। ওয়াটার রোবট নিয়ে কাজ করার কথা তুলে ধরে নুসরাত জাহান সিনহা জানান, ‘পানি সংস্কার নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। যাতে দূষিত পানি বিশুদ্ধ পানিতে রূপান্তরিত হতে পারে।’
মার্কেট ইন্টেলিজেন্স ফার্ম সিমিলার ওয়েবের মতে, প্রতিদিনের সক্রিয় ব্যবহারকারীদের দিক থেকে থ্রেডসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে ব্লুস্কাই। বর্তমানে ব্লুস্কাইয়ের অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড করা অ্যাপ। এরপরেই রয়েছে থ্রেডস।
১৫ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানি ভ্যালে শহরে অত্যাধুনিক ও পরিবেশবান্ধব পাঁচতলা অফিস ভবন তৈরি করেছে টেক জায়ান্ট গুগল। এই ভবনের বিশেষত্ব হলো—এটি তৈরিতে প্রথমবারের মতো ‘মাস টিম্বার’ ব্যবহার করেছে কোম্পানিটি। কাঠ বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে মাস টিম্বার তৈরি করা হয়। তাই ভবনটি...
২ দিন আগেপাশ্চাত্যে উৎসবের মৌসুমে বা নতুন বছর আসার আগে প্রায় সবাই ছুটি উপভোগ করেন। এই সময়টিতে পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, বিশ্রাম নেওয়া এবং গত বছরের কঠিন কাজের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া একটি সাধারণ বিষয়। অনেক কোম্পানি এসময় কর্মীদের ছুটি দেয়, যাতে তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। তবে এ
২ দিন আগেদৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারে জন্য টেকসই স্মার্টফোনের চাহিদা অনেক বেশি। এজন্য মিড রেঞ্জের টেকসই স্মার্টফোন ‘অনার এক্স ৯ সি’ উন্মোচন করেছে অনার। এই মডেল গত অক্টোবর মাসে লঞ্চ হওয়া এক্স ৯ বি–এর উত্তরসূরি। ফোনটি হাত থেকে পড়ে গেলেও অক্ষত থাকবে বলে কোম্পানিটি দাবি করছে। ফোনটির ব্যাটারি চার্জ ২ শতাংশে নেমে আসে ত
২ দিন আগে