খান মুহাম্মদ রুমেল

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা লাইন দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা। ফাঁকা মানে—একেবারেই সুনসান! দু-একটি স্টলের সামনে যা-ও কিছুটা ভিড় আছে—হাতে গোনা যায়। এত মানুষ তাহলে গেল কোথায়? গেট দিয়ে ঢুকে নিশ্চয় বাতাসে মিলিয়ে যায়নি তারা? হাঁটতে থাকি আপনমনে। পরিচিত কারও খোঁজ মেলে না। হঠাৎ ফোন করেন মনি হায়দার। জনপ্রিয় লেখক, বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক! মনি ভাইয়ের উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠ।
— কোথায় তুমি?
— এই তো ভাই, মেলায় ঢুকলাম মাত্র।
— কোথায় আছ?
— হাঁটছি।
— আমিও আছি, দেখা হবে!
— জি, দেখা হবে।
ফোন রেখে দেন মনি হায়দার। হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দাঁড়াই অনিন্দ্য প্রকাশের সামনে। বই নেড়েচেড়ে দেখি। বিষণ্ন মুখে বসে আছেন বিক্রয়কর্মীরা। আমাকে দেখে আগ্রহ জাগে তাঁদের মনে। হয়তো ভাবেন, একজন ক্রেতা তো পাওয়া গেল।
— দাদা?
পেছন থেকে ডেকে ওঠেন কেউ একজন! তাকিয়ে দেখি অরুণ কুমার বিশ্বাস। এই শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোয়েন্দা কাহিনি লিখে এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন। কিশোর থ্রিলার, ভ্রমণকাহিনি এবং বড়দের জন্যও লেখেন তিনি। এবারও মেলায় এসেছে তাঁর বেশ কয়েকটি বই। এর মধ্যে অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে এসেছে গোয়েন্দা কাহিনি— সিগনেট।
— কাহিনি কী বইয়ের? জিজ্ঞেস করি আমি।
— এটা আমার অলোকেশ রায় সিরিজের একটি বই। সম্পূর্ণ গোয়েন্দা কাহিনি।
— আপনার অলোকেশ রায় সিরিজ খুব পাঠকপ্রিয় হয়েছে।
— হুম্, এটা ঠিক। বাংলাদেশে গোয়েন্দা কাহিনির পাঠক বাড়ছে। আমি ছাড়াও আর যাঁরা লিখছেন, সবাই ভালো সাড়া পাচ্ছেন।
— জি দাদা। এমনটাই দেখছি।
দুজন গণমাধ্যমকর্মী এসে দাঁড়ান আমাদের পাশে। অরুণ কুমার বিশ্বাসের সাক্ষাৎকার নেবেন তাঁরা। ক্যামেরা প্রস্তুত হচ্ছে।
— দাদা, তাহলে আপনি কথা বলেন। আমি সামনের দিকে যাই।
— জি দাদা, ভালো থাকবেন। দেখা হবে আবার।
যাই সামনের দিকে। আস্তে আস্তে ডুবছে সূর্যটা। কমে আসছে দিনের আলো। স্টলগুলোয় জ্বলে উঠছে সাদা হলুদ বাতি। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি শিশুচত্বরে। এদিকটায় ভীষণ ভিড়। বেচাকেনাও চলছে ধুমসে। সাধারণত শুক্র-শনিবার ছাড়া শিশুদের এত সমাগম হয় না। কিন্তু সোমবারে এত ভিড়ের হেতু কী? সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে, এদিন সরস্বতীপূজা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। আর এ জন্যই বাবা-মায়েরা সন্তানদের নিয়ে ছুটে এসেছেন মেলায়। প্রায় সব শিশুর হাতেই বইয়ের প্যাকেট, একাধিক। বাবা-মায়ের হাত ধরে স্টলে স্টলে ঘুরছে তারা। ভালো লাগে। ভীষণ ভালো লাগে শিশুদের কলকাকলি দেখে।
হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি মেলার পুব দিকে একেবারে শেষ মাথায়। এদিকটায় সারি সারি অসংখ্য খাবারের দোকান। দোকানগুলোর সামনে চেয়ার-টেবিল পাতা। কোনো টেবিলই খালি নেই। চেয়ার না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক মানুষ। তা-ও বিক্রেতারা হাঁকডাক করে ডাকছেন মানুষজনকে— আসেন আসেন, ভালো কাবাব আছে...চটপটি ফুচকা আছে...আসেন...আসেন...বসেন! এবার আমার বোধোদয় হয়, প্রবেশমুখের উপচে পড়া মানুষ থাকার পরেও মেলার মাঠ কেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল! মানুষ বেশির ভাগ এসে ভিড় জমিয়েছেন খাবারের দোকানে!
হাঁটা পথে দেখা হয়ে যায় মনি হায়দারের সঙ্গে। মনি হায়দার মানেই উচ্ছল প্রাণবন্ত আড্ডা আর প্রাণখোলা ঠা ঠা হাসি। তবে এদিন মনি হায়দারের সঙ্গে মাত্র একজন মানুষ। খুব শান্ত নিরিবিলি গোছের। মনি ভাই পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর সঙ্গে। ড. সাগর রশিদ সাভার অধর চন্দ্র সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। খুবই পড়াশোনা জানা মানুষ। মেলায় এবার আসছে তাঁর লেখা বই—বাংলা বানান সংস্কার: বাংলাদেশ। ড. সাগর রশিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে বাংলা পড়াতে পড়াতে তাঁর মনে হয়েছে ব্যাকরণ ও বানান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভীতি আছে। এ ছাড়া সঠিক নির্দেশনাও পায় না তারা। সেই তাগিদ থেকেই এই বই লেখা। বেশ আগ্রহ জাগে তাঁকে ঘিরে! কথা বলে মনে হয়, এ বিষয়ে তাঁর পড়াশোনাও প্রচুর। বানান নিয়ে নানা আলাপ হয় তাঁর সঙ্গে। কিছু প্রচলিত শব্দের বানানের খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরেন তিনি। যেমন ‘তৈরি’ শব্দটি সাধারণত এখন আমরা হ্রস্ব ই-কার দিয়ে লিখি। কিন্তু সাগর রশিদ জানান, এটি দীর্ঘ ই–কার দিয়েও লেখা যায়।
— সেটা কেমন? কৌতূহলী জিজ্ঞাসা আমার!
— যেমন ধরেন, আপনি বলছেন আমার জন্য এক কাপ চা তৈরি করো। এখানে র-এর ওপর হ্রস্ব ই-কার হবে। আবার, আমার জন্য একটি জামা তৈরী করুন। এখানে র-এর ওপর দীর্ঘ ই-কার হবে।
— বাহ্, বেশ মজা তো!
— হুম্, বাংলা বানানে এমন আরও অনেক মজা আছে। এসব বিষয়ই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বইটিতে।
— আচ্ছা, বলুন তো, বানান নিয়ে আমাদের মধ্যে এত সংশয়, গোলমাল কেন?
— আরেকটু বুঝিয়ে বলবেন? খুব শান্ত স্বরে বলেন সাগর রশিদ।
— মানে, বাংলা একাডেমি কিছুদিন পরপর বানানরীতি পরিবর্তন করে। আর সেটা নিয়ে তৈরি হয় দ্বিধা। যেমন বাংলা একাডেমি একবার বলল—‘ঈদ’ না লিখে ‘ইদ’ লেখার জন্য। এই পরিবর্তনটা বেশির ভাগ মানুষ গ্রহণ করেননি। তবে এখন যেটা হচ্ছে ‘ইদ’ এবং ‘ঈদ’ দুটোই চলছে। যে যার মতো লিখছে। আবার ধরুন, ‘কাহিনী’ নাকি ’কাহিনি’—কোনটা লিখব। এ নিয়েও দেখি বাহাস আছে। এমন আরও অনেক উদাহরণ দিতে পারব।
— আচ্ছা, একটা গল্প বলি আপনাকে। একবার সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বললেন—গুরুজি, এখন থেকে আমি এমএ ক্লাসের ছাত্রদের তুমি করে বলতে চাই। আর ‘গরু’ না লিখে ‘গোরু’ লিখতে চাই। রবীন্দ্রনাথ বললেন—হ্যাঁ, এমএ ক্লাসের ছাত্রদের তুমি—তুমি বলতেই পারো। আর গরুতে ও-কার দিলে গরুগুলো একটু মোটাতাজা হবে এই আরকি! এ ছাড়া আর বিশেষ কোনো হেরফের হবে বলে আমি মনে করিনে!
ড. সাগর রশিদের কথা শুনে হাহা করে হেসে ওঠেন মনি হায়দার। হাসতে থাকি আমিও। হাসেন সাগর রশিদও।
বিশেষ কী কাজ আছে বলে চলে যেতে চান মনি হায়দার।
— এত তাড়া কিসের আপনার? বলি আমি।
— তাড়া কিছু নেই। তবে তুমি লিখে দিয়ো—‘মোকাম সদরঘাট’ নিয়ে অস্থির হয়ে আছে মনি হায়দার।
— আচ্ছা ভাই। লিখব।
আবার সেই প্রাণখোলা ঠা ঠা হাসি মনি হায়দারের।
মোকাম সদরঘাট নামে একটা উপন্যাস বের হওয়ার কথা রয়েছে এবার মনি হায়দারের। চলে যান তিনি। আমিও বিদায় নিই সাগর রশিদের কাছ থেকে। ধীর পায়ে বের হয়ে আসি মেলা থেকে। ঢোকার মুখে ভিড় আরও বেড়েছে। মানুষের চাপ সামলে কোনোমতে বের হয়ে ফুটপাতে দাঁড়াই। টিএসসির দিক থেকে ভেসে আসছে গানের সুর—
জাত গেল জাত গেল বলে
একি আজব কারখানা
সত্য কাজে কেউ নয় রাজি
সবই দেখি তা না না না।
আসবার কালে কী জাত ছিলে
এসে তুমি কী জাত নিলে...

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা লাইন দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা। ফাঁকা মানে—একেবারেই সুনসান! দু-একটি স্টলের সামনে যা-ও কিছুটা ভিড় আছে—হাতে গোনা যায়। এত মানুষ তাহলে গেল কোথায়? গেট দিয়ে ঢুকে নিশ্চয় বাতাসে মিলিয়ে যায়নি তারা? হাঁটতে থাকি আপনমনে। পরিচিত কারও খোঁজ মেলে না। হঠাৎ ফোন করেন মনি হায়দার। জনপ্রিয় লেখক, বাংলা একাডেমির সহকারী পরিচালক! মনি ভাইয়ের উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠ।
— কোথায় তুমি?
— এই তো ভাই, মেলায় ঢুকলাম মাত্র।
— কোথায় আছ?
— হাঁটছি।
— আমিও আছি, দেখা হবে!
— জি, দেখা হবে।
ফোন রেখে দেন মনি হায়দার। হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দাঁড়াই অনিন্দ্য প্রকাশের সামনে। বই নেড়েচেড়ে দেখি। বিষণ্ন মুখে বসে আছেন বিক্রয়কর্মীরা। আমাকে দেখে আগ্রহ জাগে তাঁদের মনে। হয়তো ভাবেন, একজন ক্রেতা তো পাওয়া গেল।
— দাদা?
পেছন থেকে ডেকে ওঠেন কেউ একজন! তাকিয়ে দেখি অরুণ কুমার বিশ্বাস। এই শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোয়েন্দা কাহিনি লিখে এরই মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন। কিশোর থ্রিলার, ভ্রমণকাহিনি এবং বড়দের জন্যও লেখেন তিনি। এবারও মেলায় এসেছে তাঁর বেশ কয়েকটি বই। এর মধ্যে অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে এসেছে গোয়েন্দা কাহিনি— সিগনেট।
— কাহিনি কী বইয়ের? জিজ্ঞেস করি আমি।
— এটা আমার অলোকেশ রায় সিরিজের একটি বই। সম্পূর্ণ গোয়েন্দা কাহিনি।
— আপনার অলোকেশ রায় সিরিজ খুব পাঠকপ্রিয় হয়েছে।
— হুম্, এটা ঠিক। বাংলাদেশে গোয়েন্দা কাহিনির পাঠক বাড়ছে। আমি ছাড়াও আর যাঁরা লিখছেন, সবাই ভালো সাড়া পাচ্ছেন।
— জি দাদা। এমনটাই দেখছি।
দুজন গণমাধ্যমকর্মী এসে দাঁড়ান আমাদের পাশে। অরুণ কুমার বিশ্বাসের সাক্ষাৎকার নেবেন তাঁরা। ক্যামেরা প্রস্তুত হচ্ছে।
— দাদা, তাহলে আপনি কথা বলেন। আমি সামনের দিকে যাই।
— জি দাদা, ভালো থাকবেন। দেখা হবে আবার।
যাই সামনের দিকে। আস্তে আস্তে ডুবছে সূর্যটা। কমে আসছে দিনের আলো। স্টলগুলোয় জ্বলে উঠছে সাদা হলুদ বাতি। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি শিশুচত্বরে। এদিকটায় ভীষণ ভিড়। বেচাকেনাও চলছে ধুমসে। সাধারণত শুক্র-শনিবার ছাড়া শিশুদের এত সমাগম হয় না। কিন্তু সোমবারে এত ভিড়ের হেতু কী? সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে, এদিন সরস্বতীপূজা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। আর এ জন্যই বাবা-মায়েরা সন্তানদের নিয়ে ছুটে এসেছেন মেলায়। প্রায় সব শিশুর হাতেই বইয়ের প্যাকেট, একাধিক। বাবা-মায়ের হাত ধরে স্টলে স্টলে ঘুরছে তারা। ভালো লাগে। ভীষণ ভালো লাগে শিশুদের কলকাকলি দেখে।
হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি মেলার পুব দিকে একেবারে শেষ মাথায়। এদিকটায় সারি সারি অসংখ্য খাবারের দোকান। দোকানগুলোর সামনে চেয়ার-টেবিল পাতা। কোনো টেবিলই খালি নেই। চেয়ার না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক মানুষ। তা-ও বিক্রেতারা হাঁকডাক করে ডাকছেন মানুষজনকে— আসেন আসেন, ভালো কাবাব আছে...চটপটি ফুচকা আছে...আসেন...আসেন...বসেন! এবার আমার বোধোদয় হয়, প্রবেশমুখের উপচে পড়া মানুষ থাকার পরেও মেলার মাঠ কেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল! মানুষ বেশির ভাগ এসে ভিড় জমিয়েছেন খাবারের দোকানে!
হাঁটা পথে দেখা হয়ে যায় মনি হায়দারের সঙ্গে। মনি হায়দার মানেই উচ্ছল প্রাণবন্ত আড্ডা আর প্রাণখোলা ঠা ঠা হাসি। তবে এদিন মনি হায়দারের সঙ্গে মাত্র একজন মানুষ। খুব শান্ত নিরিবিলি গোছের। মনি ভাই পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর সঙ্গে। ড. সাগর রশিদ সাভার অধর চন্দ্র সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। খুবই পড়াশোনা জানা মানুষ। মেলায় এবার আসছে তাঁর লেখা বই—বাংলা বানান সংস্কার: বাংলাদেশ। ড. সাগর রশিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে বাংলা পড়াতে পড়াতে তাঁর মনে হয়েছে ব্যাকরণ ও বানান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভীতি আছে। এ ছাড়া সঠিক নির্দেশনাও পায় না তারা। সেই তাগিদ থেকেই এই বই লেখা। বেশ আগ্রহ জাগে তাঁকে ঘিরে! কথা বলে মনে হয়, এ বিষয়ে তাঁর পড়াশোনাও প্রচুর। বানান নিয়ে নানা আলাপ হয় তাঁর সঙ্গে। কিছু প্রচলিত শব্দের বানানের খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরেন তিনি। যেমন ‘তৈরি’ শব্দটি সাধারণত এখন আমরা হ্রস্ব ই-কার দিয়ে লিখি। কিন্তু সাগর রশিদ জানান, এটি দীর্ঘ ই–কার দিয়েও লেখা যায়।
— সেটা কেমন? কৌতূহলী জিজ্ঞাসা আমার!
— যেমন ধরেন, আপনি বলছেন আমার জন্য এক কাপ চা তৈরি করো। এখানে র-এর ওপর হ্রস্ব ই-কার হবে। আবার, আমার জন্য একটি জামা তৈরী করুন। এখানে র-এর ওপর দীর্ঘ ই-কার হবে।
— বাহ্, বেশ মজা তো!
— হুম্, বাংলা বানানে এমন আরও অনেক মজা আছে। এসব বিষয়ই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বইটিতে।
— আচ্ছা, বলুন তো, বানান নিয়ে আমাদের মধ্যে এত সংশয়, গোলমাল কেন?
— আরেকটু বুঝিয়ে বলবেন? খুব শান্ত স্বরে বলেন সাগর রশিদ।
— মানে, বাংলা একাডেমি কিছুদিন পরপর বানানরীতি পরিবর্তন করে। আর সেটা নিয়ে তৈরি হয় দ্বিধা। যেমন বাংলা একাডেমি একবার বলল—‘ঈদ’ না লিখে ‘ইদ’ লেখার জন্য। এই পরিবর্তনটা বেশির ভাগ মানুষ গ্রহণ করেননি। তবে এখন যেটা হচ্ছে ‘ইদ’ এবং ‘ঈদ’ দুটোই চলছে। যে যার মতো লিখছে। আবার ধরুন, ‘কাহিনী’ নাকি ’কাহিনি’—কোনটা লিখব। এ নিয়েও দেখি বাহাস আছে। এমন আরও অনেক উদাহরণ দিতে পারব।
— আচ্ছা, একটা গল্প বলি আপনাকে। একবার সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বললেন—গুরুজি, এখন থেকে আমি এমএ ক্লাসের ছাত্রদের তুমি করে বলতে চাই। আর ‘গরু’ না লিখে ‘গোরু’ লিখতে চাই। রবীন্দ্রনাথ বললেন—হ্যাঁ, এমএ ক্লাসের ছাত্রদের তুমি—তুমি বলতেই পারো। আর গরুতে ও-কার দিলে গরুগুলো একটু মোটাতাজা হবে এই আরকি! এ ছাড়া আর বিশেষ কোনো হেরফের হবে বলে আমি মনে করিনে!
ড. সাগর রশিদের কথা শুনে হাহা করে হেসে ওঠেন মনি হায়দার। হাসতে থাকি আমিও। হাসেন সাগর রশিদও।
বিশেষ কী কাজ আছে বলে চলে যেতে চান মনি হায়দার।
— এত তাড়া কিসের আপনার? বলি আমি।
— তাড়া কিছু নেই। তবে তুমি লিখে দিয়ো—‘মোকাম সদরঘাট’ নিয়ে অস্থির হয়ে আছে মনি হায়দার।
— আচ্ছা ভাই। লিখব।
আবার সেই প্রাণখোলা ঠা ঠা হাসি মনি হায়দারের।
মোকাম সদরঘাট নামে একটা উপন্যাস বের হওয়ার কথা রয়েছে এবার মনি হায়দারের। চলে যান তিনি। আমিও বিদায় নিই সাগর রশিদের কাছ থেকে। ধীর পায়ে বের হয়ে আসি মেলা থেকে। ঢোকার মুখে ভিড় আরও বেড়েছে। মানুষের চাপ সামলে কোনোমতে বের হয়ে ফুটপাতে দাঁড়াই। টিএসসির দিক থেকে ভেসে আসছে গানের সুর—
জাত গেল জাত গেল বলে
একি আজব কারখানা
সত্য কাজে কেউ নয় রাজি
সবই দেখি তা না না না।
আসবার কালে কী জাত ছিলে
এসে তুমি কী জাত নিলে...

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৮ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা সারি দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা সারি দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৮ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা সারি দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৮ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

তৃতীয় দিনে বইমেলার প্রবেশমুখে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এদিন প্রবেশমুখে ফিরেছে শৃঙ্খলাও। তল্লাশি করে সবাইকে ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ, তবে কিছুটা ঢিলেঢালা। গেটে মানুষের লম্বা সারি দেখে মনে হয়, বেচাবিক্রি জমে উঠেছে নিশ্চয়। কিন্তু মেলার মাঠে ঢুকে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে সব। স্টলগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা।
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৮ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে