ইশতিয়াক হাসান
ছোটবেলা থেকেই বরফে ঢাকা হিমালয়, এর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট, হিলারি-তেনজিং নোরগের এভারেস্ট জয়ের গল্পে মজে গিয়েছিলাম। আর হিমালয় নিয়ে নানা লেখা পড়তে পড়তে একসময় ইয়েতির কথাও জেনে গেলাম। ইয়েতি নিয়ে বই-পত্রিকায় যত পড়লাম, তত আবিষ্কার করলাম ইয়েতি হলো এক হিসাবে হিমালয়ের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর একটি, যার জট ছোটাতে পারেননি কেউ। আর এতে এর প্রতি আগ্রহটা আরও ডালপালা মেলল। চলুন তাহলে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাই হিমালয়ের বরফরাজ্যে, ইয়েতির খোঁজে।
ইয়েতির মূল কাহিনি শুরুর আগে বরং ইয়েতি নিয়ে আমাকে আগ্রহী করে তুলতে ভূমিকা রাখা দুটি বইয়ের ব্যাপারে দু-চার কথা লিখি। শুরুতেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পাহাড়চূড়ায় আতঙ্ক’। কাঠমান্ডু থেকে ছোট্ট এক উড়োজাহাজে চেপে কাকাবাবু ও সন্তু চলে যায় হিমালয়ের দুর্গম এক এলাকায়। আমাদের বাসার ডাইনিং রুমের ছোট্ট খাটটায় শুয়ে স্কুলপড়ুয়া আমি ভরদুপুরে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও যেন সন্তুর সঙ্গে শীতে কাঁপছিলাম, কান পাতলেই যেন শুনতে পাচ্ছিলাম হিমবাহ পতনের কান ফাটানো আওয়াজ। কাকাবাবুর খুব সাবধানে আগলে রাখা ছোট্ট বাক্সের দাঁতটা কি তবে ইয়েতির? বরফের পাহাড়ের আড়ালে একমুহূর্তের জন্য দেখা যাওয়া ওই বিশাল ছায়ামূর্তিটা কী? শেষ পর্যন্ত কি ওরা দেখা পাবে ইয়েতির? এমন সব প্রশ্ন মাথায় নিয়ে উত্তেজনায় টগবগ করছিলাম।
তারপর আসে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বের হওয়া টিনটিন ইন টিবেটের অসাধারণ অনুবাদ ‘তিব্বতে টিনটিন’। বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ এক বন্ধুর খোঁজ করতে ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও কুকুর স্নোয়ি বা কুট্টুসকে নিয়ে টিনটিন যায় তিব্বতে। রোমাঞ্চকর সেই অভিযানের পরতে পরতে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে ইয়েতি। সেই সঙ্গে ইয়েতিতে আরও বেশি করে মজে যাই আমি।
এবার তাহলে মূল গল্পে প্রবেশ করা যাক। হিমালয় পর্বতশ্রেণির বিভিন্ন পাহাড়ে রহস্যময় এক প্রাণী বিচরণের খবর মেলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী বিশালদেহী গরিলা কিংবা ভালুকসদৃশ লোমশ এক জন্তু ওটা। শুরুতে এক পশ্চিমা সাংবাদিক ধারণা করেছিলেন, তিব্বতিরা একে যে নামে ডাকে তার অর্থ ‘অপরিষ্কার তুষারমানব’। এর সূত্র ধরেই পশ্চিমারা একে এবমিনেবল স্নোম্যান বা খারাপ তুষারমানব নামে পরিচয় করিয়ে দিতে শুরু করে। আসলে গোটা ব্যাপারটাই ছিল একটা ভুল বোঝাবুঝি।
১৯২১ সালে হেনরি নিউম্যান নামের ওই সাংবাদিক এভারেস্ট অভিযান শেষে ফেরা একদল ব্রিটিশ অভিযাত্রীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ওই অভিযাত্রীরা বিশাল আকারের পায়ের ছাপ দেখার বর্ণনা দেন পর্বতের সফেদ শরীরে, জানান তাঁদের গাইড বলেছে, এটা মেতোহ-কাংমি, অর্থাৎ ‘মেন-বিয়ার স্নোম্যান’-এর ছাপ। তবে নিউম্যান মেতোহর অর্থ ধরে নিলেন অপরিষ্কার। তাঁর মনে হলো, এর চেয়ে এবমিনেবল বা খারাপ তুষার মানবই বেশি জুতসই, ব্যাস আপাতত পরিচিতি পেয়ে গেল এবমিনেবল স্নোম্যান নামটি। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য টিকে যায়, নেপালিদের ডাকা নাম ইয়েতি, যার অর্থ বড় খাদক। এখন গোটা পৃথিবীর মানুষ এ নামেই চেনে একে।
কিন্তু সত্যি কি ইয়েতি আছে? এর উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করব এখন। বেশির ভাগের ধারণা, ইয়েতি হিমালয়ের কল্পকথার এক প্রাণী ছাড়া আর কিছু নয়। তবে কিংবদন্তি ও ইতিহাসের পাতা উল্টালে মনে হয় এ ধরনের কিছু একটা থাকাটা খুব অস্বাভাবিক নয়। কথিত আছে, ইয়েতি রহস্য কৌতূহলী করে তোলে আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটকেও। সিন্ধু নদীর অববাহিকায় এসে রহস্যময় প্রাণীটির কথা শুনে দেখতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় লোকেরা অবশ্য তাঁকে নিরাশ করে, জানায়, এত নিচে ওই জন্তুটা বাঁচে না, তাই তাঁর সামনে হাজির করা সম্ভব নয়।
এখন প্রশ্ন হলো, ইয়েতি আছে এ ব্যাপারে যাঁরা বাজি ধরতে রাজি, তাঁদের তুরুপের তাস কী? ওটা কি তবে ব্রিটিশ অভিযাত্রী ও আলোকচিত্রী এরিক শিপটনের তোলা সেই ছবি। হিমালয় অঞ্চলের সংস্কৃতিতে ইয়েতি জড়িয়ে আছে বহু পুরোনো কাল থেকে। তবে একে ইউরোপ-আমেরিকার অভিযাত্রীদের সামনে নিয়ে আসায় মূল ভূমিকা এরিক শিপটনের।
সালটা ১৯৫১, এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর একটা বিকল্প পথের খোঁজ করছিলেন শিপটন ও তাঁর দলবল। ওই সময় অপ্রত্যাশিতভাবেই অদ্ভুত এক পায়ের ছাপের সামনে চলে আসেন। এর ছবিও তুলে নেন শিপটন। আর এভাবেই বলা, ইয়েতির কথা জানতে শুরু করে বিশ্ববাসী। সবচেয়ে বিখ্যাত ও অভিজ্ঞ হিমালয় অভিযাত্রীদের একজন বলে পরিচিত এরিক শিপটন ছবিটি তুলেছিলেন এভারেস্টের পশ্চিমে মেনলাং হিমবাহে, জায়গাটি সাগর সমতল থেকে প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায়। পায়ের ছাপটি ছিল ১৩ ইঞ্চি লম্বা। অনেকেই একে বিবেচনা করেন হিমালয়ে তোলা সবচেয়ে চমক জাগানো ছবি হিসেবে। ওই সময় ইয়েতি নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। নেপাল সরকার তো ১৯৫০-এর দশকে ইয়েতি শিকারের লাইসেন্স পর্যন্ত দিয়েছিল। যদিও একটি ইয়েতিকেও জীবিত কিংবা মৃত অবস্থায় হাজির করা সম্ভব হয়নি।
তবে ইয়েতি নিয়ে যাঁরা তর্কে জড়ান, তাঁদের বড় একটি অংশের ধারণা, তবে ইয়েতিপ্রেমীরা এটা মানতে নারাজ। শিপটন ওই ছবিটি তোলার আগেই ইয়েতির পায়ের ছাপ এমনকি জন্তুটাকে দেখার দাবি এসেছে হিমালয় অভিযাত্রী এবং শেরপাদের কাছ থেকে। পশ্চিমা বিশ্বেও এর খবর একটু একটু করে রটছিল।
ইউরোপীয়দের মধ্যে হিমালয়ের গহিনে এ ধরনের কিছু একটা থাকতে পারে বলে প্রথম যাঁরা ধারণা দেন, তাঁদের একজন ব্রিটিশ অভিযাত্রী চার্লস হওয়ার্ড-বারি। ১৯২১ সালের হিমালয় অভিযানে লাখপা লা পাসের কাছে ইয়েতির পায়ের ছাপ পাওয়ার কথা বলেন। তাঁর বই ‘মাউন্ট এভারেস্ট: দ্য রিকনিসনস, ১৯২১’-এ ঘটনাটির উল্লেখ করেন তিনি। বারি দাবি করেন, মানুষের মতো কোনো প্রাণীর বেশ বড় পায়ের ছাপ খুঁজে পান তিনি। পরে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন, হিমালয়ের গভীরে ঘুরে বেড়ানো বুনো, লোমশ এক রহস্যময় জন্তুর ছাপ এগুলো।
১৯২৫ সালে এন এ টমবাজি নামের এক আলোকচিত্রী ও রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সদস্য দাবি করে বসেন, জেমু হিমবাহের কাছে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় মানবসদৃশ আশ্চর্য এক প্রাণী দেখেছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে ফ্রাংক এস স্মিথি নামের এক অভিযাত্রীও ইয়েতির পায়ের ছাপের ছবি তোলার দাবি করেন। ১৯৫২ সালে পপুলার সায়েন্সে এটি প্রকাশিত হয়। ১৯৪২ সালে দুই পর্বতারোহী এভারেস্ট অভিযানে তাঁদের পোয়া মাইল নিচে আট ফুটি কালো দুটো অবয়ব হেঁটে যাওয়ার কথা বলেন। ব্রায়ান বার্নি নামের অপর এক অভিযাত্রী আবার অরুণ উপত্যকায় ১৯৫৯ সালে ইয়েতির পায়ের ছাপ আবিষ্কারের কথা বলেন।
ইয়েতিতে সবচেয়ে বেশি মোহিত হওয়া অভিযাত্রীদের তালিকা করলে ওপরের দিকে থাকবেন ইতালিয়ান পর্বতারোহী রেইনহোল্ড মেসনার। ১৯৮৬ সালে তিব্বতের কোনো এক জায়গায় প্রথম ইয়েতি দেখার দাবি করেন মেসনার। সেদিন হাঁটতে হাঁটতে পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। অন্ধকার নেমে এলে সামনে কালো, বিশাল এক ছায়ামূর্তি আবিষ্কার করেন। মানুষের মতোই হাঁটছিল, তবে আরও দ্রুতগতিতে, শক্তিশালী পদক্ষেপে। ওই রাতেই আবারও ওটাকে দেখেন, প্রায় সাত ফুট ছিল এর দৈর্ঘ্য। বলা চলে, এ ঘটনাই প্রাণীটির আচ্ছন্ন করে ফেলে। পরের এক যুগ ব্যস্ত থাকেন ইয়েতির সন্ধানে।
এই দীর্ঘ সময়ে অসংখ্যবার হিমালয়ে অভিযানে গিয়েছেন। বেশির ভাগ সময় হতাশাই জোটে তাঁর কপালে। অবশ্য লাসা আর কারাকোরাম এলাকায় আরও কয়েকবার ইয়েতি দেখার কথা বলেন তিনি। শেষমেশ অবশ্য সিদ্ধান্তে পৌঁছান—ওগুলো পার্বত্য ভালুকই। এদিকে আর্নস্ট স্ক্যাফের নামের এক জার্মান অভিযাত্রীও ১৯৩৯ সালে জার্মান সরকারের সহায়তায় এক গোপন মিশন থেকে ফিরে একই যবনিকা টানেন ইয়েতি রহস্যের। স্ক্যাফেরের ভাষায় ইয়েতি একটা প্রমাণ সাইজের ভালুক ছাড়া আর কিছু নয়।
এমনকি ১৯৫৩ সালে স্যার অ্যাডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে এভারেস্ট অভিযানের সময় বড় কোনো প্রাণীর পায়ের ছাপ দেখার কথা বলেন। নোরগেকে তাঁর প্রথম আত্মজীবনীতে লিখেছেন নিজে না দেখলেও তার বাবা রহস্যময় এই জন্তুকে দুই বার দেখেছেন। অবশ্য দ্বিতীয় আত্মজীবনীতে সন্দিহান মনে হয়েছে তাঁকে।
১৯৫৪ সালে ডেইলি মেইল ‘স্নোম্যান’ নামের অভিযানের আয়োজন করে ইয়েতির খোঁজে। তখন একটি গুম্ফা থেকে কোনো প্রাণীর মাথার খুলির কিছু লোমও পাওয়া যায়, স্থানীয়দের দাবি, ওগুলো ইয়েতির লোম। একটু অন্ধকারে একে কালো থেকে গাঢ় বাদামি এবং উজ্জ্বল আলোয় লালচে দেখাচ্ছিল। কিন্তু গবেষণায় উঠে আসে ওটা খুরওলা কোনো প্রাণীর কাঁধের লোম।
এদিকে স্যার হিলারির ১৯৬০ সালের অভিযানের উদ্দেশ্যই ছিল ইয়েতির ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ। খুমজাং নামে এক গুম্ফা থেকে স্থানীয়রা ইয়েতির খুলির চামড়া বলে দাবি করা জিনিসটা লন্ডনে নিয়েও আসেন। অবশ্য বিজ্ঞানীরা পরে নিশ্চিত হোন ওগুলো অ্যান্টিলোপ জাতীয় প্রাণী সেরোর লোম।
আপনি যদি ইয়েতিপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে অক্সফোর্ডের জিন বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান সাইকেসের পরীক্ষার ফলাফল আপনাকে হতাশই করবে। ২০১৩ সালে ইয়েতিভক্তদের ইয়েতির চুল, দাঁতসহ শরীরের অন্য কোনো অংশ হাজির করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি, পরীক্ষার জন্য। যে ৫৭টি নমুনা পান, এর ৩৬টি বাছাই করা হয় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য। ওই এলাকায় বিচরণ করা বিভিন্ন প্রাণীর জিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় ওগুলো। বেশির ভাগই মেলে ভালুকের সঙ্গে। অবশ্য এখানেও চমক ছিল। দুটি নমুনা, যার একটি পাওয়া গিয়েছে ভুটানে ও অপরটি ভারতে, এমন এক প্রজাতির ভালুকের সঙ্গে মিলে যায়, যেগুলো ৪০-১২০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে! পরে কয়েকজন বিজ্ঞানী ওই দুটি নমুনা পরীক্ষা করে দাবি করেন, ওগুলো সাধারণ ভালুকেরই নমুনা!
২০১৭ সালে আরেক দল গবেষক হিমালয় ও তিব্বত থেকে সংগ্রহ করা লোম, মল, দাঁত পরীক্ষা করে জানান, ওগুলো তিব্বতি ভালুকের নমুনা। তবে গবেষকদের এত সব যুক্তির পরও কিন্তু ইয়েতিপ্রেমীরা প্রাণীটি নেই এটা মানতে রাজি ছিলেন না। তবে বহু দিন ধরে ইয়েতি সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যেই ২০১৯ সালে ভারতীয় সেনারা হিমালয়ের মাকালু বেস ক্যাম্পে ইয়েতির পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়ার দাবি করার পাশাপাশি এর ছবিও প্রকাশ করে। আর এতে ইয়েতি বিশ্বাসীরা যেন হালে পানি পান।
ইয়েতি নিয়ে বানানো হয়েছে অনেক সিনেমা, টিভি সিরিজ, ভিডিও গেম এবং কার্টুন ছবি। শুরুতে যে পাহাড়চূড়ায় ‘আতঙ্ক’ নামে বইটির কথা বলেছিলাম, তার কাহিনি নিয়ে ইয়েতি অভিযান নামে একটি বাংলা সিনেমা তৈরি করেছেন কলকাতার নামি পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। ২০১৭ সালের ঘটনা এটি। কালক্রমে ইয়েতি পরিণত হয়েছে নেপাল, ভারত, ভুটান ও তিব্বত জুড়ে সংস্কৃতি ও ব্যবসার অনুষঙ্গে। ভুটানে ইয়েতি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ডাক টিকিট। নেপালে আছে ইয়েতি এয়ারলাইনস, সম্প্রতি যাদের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। মোদ্দা কথা বিশেষজ্ঞরা যাই বলুন, রোমাঞ্চপ্রেমীদের ইয়েতির প্রতি আগ্রহে ভাটা পড়েনি একটুও। বরং যত দিন গড়িয়েছে, রহস্যে যোগ হয়েছে নতুন নতুন মাত্রা। কি ইয়েতির কথা আগে জানা না থাকলেও এখন নিশ্চয় ইয়েতি নিয়ে কৌতূহলীদের কাতারে ভিড়ে গেছেন আপনিও।
সূত্র. বিবিসি, উইকিপিডিয়া, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন
ছোটবেলা থেকেই বরফে ঢাকা হিমালয়, এর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট, হিলারি-তেনজিং নোরগের এভারেস্ট জয়ের গল্পে মজে গিয়েছিলাম। আর হিমালয় নিয়ে নানা লেখা পড়তে পড়তে একসময় ইয়েতির কথাও জেনে গেলাম। ইয়েতি নিয়ে বই-পত্রিকায় যত পড়লাম, তত আবিষ্কার করলাম ইয়েতি হলো এক হিসাবে হিমালয়ের সবচেয়ে বড় রহস্যগুলোর একটি, যার জট ছোটাতে পারেননি কেউ। আর এতে এর প্রতি আগ্রহটা আরও ডালপালা মেলল। চলুন তাহলে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে যাই হিমালয়ের বরফরাজ্যে, ইয়েতির খোঁজে।
ইয়েতির মূল কাহিনি শুরুর আগে বরং ইয়েতি নিয়ে আমাকে আগ্রহী করে তুলতে ভূমিকা রাখা দুটি বইয়ের ব্যাপারে দু-চার কথা লিখি। শুরুতেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পাহাড়চূড়ায় আতঙ্ক’। কাঠমান্ডু থেকে ছোট্ট এক উড়োজাহাজে চেপে কাকাবাবু ও সন্তু চলে যায় হিমালয়ের দুর্গম এক এলাকায়। আমাদের বাসার ডাইনিং রুমের ছোট্ট খাটটায় শুয়ে স্কুলপড়ুয়া আমি ভরদুপুরে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও যেন সন্তুর সঙ্গে শীতে কাঁপছিলাম, কান পাতলেই যেন শুনতে পাচ্ছিলাম হিমবাহ পতনের কান ফাটানো আওয়াজ। কাকাবাবুর খুব সাবধানে আগলে রাখা ছোট্ট বাক্সের দাঁতটা কি তবে ইয়েতির? বরফের পাহাড়ের আড়ালে একমুহূর্তের জন্য দেখা যাওয়া ওই বিশাল ছায়ামূর্তিটা কী? শেষ পর্যন্ত কি ওরা দেখা পাবে ইয়েতির? এমন সব প্রশ্ন মাথায় নিয়ে উত্তেজনায় টগবগ করছিলাম।
তারপর আসে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে বের হওয়া টিনটিন ইন টিবেটের অসাধারণ অনুবাদ ‘তিব্বতে টিনটিন’। বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ এক বন্ধুর খোঁজ করতে ক্যাপ্টেন হ্যাডক ও কুকুর স্নোয়ি বা কুট্টুসকে নিয়ে টিনটিন যায় তিব্বতে। রোমাঞ্চকর সেই অভিযানের পরতে পরতে ধোঁয়াশা ছড়িয়েছে ইয়েতি। সেই সঙ্গে ইয়েতিতে আরও বেশি করে মজে যাই আমি।
এবার তাহলে মূল গল্পে প্রবেশ করা যাক। হিমালয় পর্বতশ্রেণির বিভিন্ন পাহাড়ে রহস্যময় এক প্রাণী বিচরণের খবর মেলে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী বিশালদেহী গরিলা কিংবা ভালুকসদৃশ লোমশ এক জন্তু ওটা। শুরুতে এক পশ্চিমা সাংবাদিক ধারণা করেছিলেন, তিব্বতিরা একে যে নামে ডাকে তার অর্থ ‘অপরিষ্কার তুষারমানব’। এর সূত্র ধরেই পশ্চিমারা একে এবমিনেবল স্নোম্যান বা খারাপ তুষারমানব নামে পরিচয় করিয়ে দিতে শুরু করে। আসলে গোটা ব্যাপারটাই ছিল একটা ভুল বোঝাবুঝি।
১৯২১ সালে হেনরি নিউম্যান নামের ওই সাংবাদিক এভারেস্ট অভিযান শেষে ফেরা একদল ব্রিটিশ অভিযাত্রীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ওই অভিযাত্রীরা বিশাল আকারের পায়ের ছাপ দেখার বর্ণনা দেন পর্বতের সফেদ শরীরে, জানান তাঁদের গাইড বলেছে, এটা মেতোহ-কাংমি, অর্থাৎ ‘মেন-বিয়ার স্নোম্যান’-এর ছাপ। তবে নিউম্যান মেতোহর অর্থ ধরে নিলেন অপরিষ্কার। তাঁর মনে হলো, এর চেয়ে এবমিনেবল বা খারাপ তুষার মানবই বেশি জুতসই, ব্যাস আপাতত পরিচিতি পেয়ে গেল এবমিনেবল স্নোম্যান নামটি। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য টিকে যায়, নেপালিদের ডাকা নাম ইয়েতি, যার অর্থ বড় খাদক। এখন গোটা পৃথিবীর মানুষ এ নামেই চেনে একে।
কিন্তু সত্যি কি ইয়েতি আছে? এর উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করব এখন। বেশির ভাগের ধারণা, ইয়েতি হিমালয়ের কল্পকথার এক প্রাণী ছাড়া আর কিছু নয়। তবে কিংবদন্তি ও ইতিহাসের পাতা উল্টালে মনে হয় এ ধরনের কিছু একটা থাকাটা খুব অস্বাভাবিক নয়। কথিত আছে, ইয়েতি রহস্য কৌতূহলী করে তোলে আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটকেও। সিন্ধু নদীর অববাহিকায় এসে রহস্যময় প্রাণীটির কথা শুনে দেখতে চেয়েছিলেন। স্থানীয় লোকেরা অবশ্য তাঁকে নিরাশ করে, জানায়, এত নিচে ওই জন্তুটা বাঁচে না, তাই তাঁর সামনে হাজির করা সম্ভব নয়।
এখন প্রশ্ন হলো, ইয়েতি আছে এ ব্যাপারে যাঁরা বাজি ধরতে রাজি, তাঁদের তুরুপের তাস কী? ওটা কি তবে ব্রিটিশ অভিযাত্রী ও আলোকচিত্রী এরিক শিপটনের তোলা সেই ছবি। হিমালয় অঞ্চলের সংস্কৃতিতে ইয়েতি জড়িয়ে আছে বহু পুরোনো কাল থেকে। তবে একে ইউরোপ-আমেরিকার অভিযাত্রীদের সামনে নিয়ে আসায় মূল ভূমিকা এরিক শিপটনের।
সালটা ১৯৫১, এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছানোর একটা বিকল্প পথের খোঁজ করছিলেন শিপটন ও তাঁর দলবল। ওই সময় অপ্রত্যাশিতভাবেই অদ্ভুত এক পায়ের ছাপের সামনে চলে আসেন। এর ছবিও তুলে নেন শিপটন। আর এভাবেই বলা, ইয়েতির কথা জানতে শুরু করে বিশ্ববাসী। সবচেয়ে বিখ্যাত ও অভিজ্ঞ হিমালয় অভিযাত্রীদের একজন বলে পরিচিত এরিক শিপটন ছবিটি তুলেছিলেন এভারেস্টের পশ্চিমে মেনলাং হিমবাহে, জায়গাটি সাগর সমতল থেকে প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায়। পায়ের ছাপটি ছিল ১৩ ইঞ্চি লম্বা। অনেকেই একে বিবেচনা করেন হিমালয়ে তোলা সবচেয়ে চমক জাগানো ছবি হিসেবে। ওই সময় ইয়েতি নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। নেপাল সরকার তো ১৯৫০-এর দশকে ইয়েতি শিকারের লাইসেন্স পর্যন্ত দিয়েছিল। যদিও একটি ইয়েতিকেও জীবিত কিংবা মৃত অবস্থায় হাজির করা সম্ভব হয়নি।
তবে ইয়েতি নিয়ে যাঁরা তর্কে জড়ান, তাঁদের বড় একটি অংশের ধারণা, তবে ইয়েতিপ্রেমীরা এটা মানতে নারাজ। শিপটন ওই ছবিটি তোলার আগেই ইয়েতির পায়ের ছাপ এমনকি জন্তুটাকে দেখার দাবি এসেছে হিমালয় অভিযাত্রী এবং শেরপাদের কাছ থেকে। পশ্চিমা বিশ্বেও এর খবর একটু একটু করে রটছিল।
ইউরোপীয়দের মধ্যে হিমালয়ের গহিনে এ ধরনের কিছু একটা থাকতে পারে বলে প্রথম যাঁরা ধারণা দেন, তাঁদের একজন ব্রিটিশ অভিযাত্রী চার্লস হওয়ার্ড-বারি। ১৯২১ সালের হিমালয় অভিযানে লাখপা লা পাসের কাছে ইয়েতির পায়ের ছাপ পাওয়ার কথা বলেন। তাঁর বই ‘মাউন্ট এভারেস্ট: দ্য রিকনিসনস, ১৯২১’-এ ঘটনাটির উল্লেখ করেন তিনি। বারি দাবি করেন, মানুষের মতো কোনো প্রাণীর বেশ বড় পায়ের ছাপ খুঁজে পান তিনি। পরে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারেন, হিমালয়ের গভীরে ঘুরে বেড়ানো বুনো, লোমশ এক রহস্যময় জন্তুর ছাপ এগুলো।
১৯২৫ সালে এন এ টমবাজি নামের এক আলোকচিত্রী ও রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির সদস্য দাবি করে বসেন, জেমু হিমবাহের কাছে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় মানবসদৃশ আশ্চর্য এক প্রাণী দেখেছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে ফ্রাংক এস স্মিথি নামের এক অভিযাত্রীও ইয়েতির পায়ের ছাপের ছবি তোলার দাবি করেন। ১৯৫২ সালে পপুলার সায়েন্সে এটি প্রকাশিত হয়। ১৯৪২ সালে দুই পর্বতারোহী এভারেস্ট অভিযানে তাঁদের পোয়া মাইল নিচে আট ফুটি কালো দুটো অবয়ব হেঁটে যাওয়ার কথা বলেন। ব্রায়ান বার্নি নামের অপর এক অভিযাত্রী আবার অরুণ উপত্যকায় ১৯৫৯ সালে ইয়েতির পায়ের ছাপ আবিষ্কারের কথা বলেন।
ইয়েতিতে সবচেয়ে বেশি মোহিত হওয়া অভিযাত্রীদের তালিকা করলে ওপরের দিকে থাকবেন ইতালিয়ান পর্বতারোহী রেইনহোল্ড মেসনার। ১৯৮৬ সালে তিব্বতের কোনো এক জায়গায় প্রথম ইয়েতি দেখার দাবি করেন মেসনার। সেদিন হাঁটতে হাঁটতে পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। অন্ধকার নেমে এলে সামনে কালো, বিশাল এক ছায়ামূর্তি আবিষ্কার করেন। মানুষের মতোই হাঁটছিল, তবে আরও দ্রুতগতিতে, শক্তিশালী পদক্ষেপে। ওই রাতেই আবারও ওটাকে দেখেন, প্রায় সাত ফুট ছিল এর দৈর্ঘ্য। বলা চলে, এ ঘটনাই প্রাণীটির আচ্ছন্ন করে ফেলে। পরের এক যুগ ব্যস্ত থাকেন ইয়েতির সন্ধানে।
এই দীর্ঘ সময়ে অসংখ্যবার হিমালয়ে অভিযানে গিয়েছেন। বেশির ভাগ সময় হতাশাই জোটে তাঁর কপালে। অবশ্য লাসা আর কারাকোরাম এলাকায় আরও কয়েকবার ইয়েতি দেখার কথা বলেন তিনি। শেষমেশ অবশ্য সিদ্ধান্তে পৌঁছান—ওগুলো পার্বত্য ভালুকই। এদিকে আর্নস্ট স্ক্যাফের নামের এক জার্মান অভিযাত্রীও ১৯৩৯ সালে জার্মান সরকারের সহায়তায় এক গোপন মিশন থেকে ফিরে একই যবনিকা টানেন ইয়েতি রহস্যের। স্ক্যাফেরের ভাষায় ইয়েতি একটা প্রমাণ সাইজের ভালুক ছাড়া আর কিছু নয়।
এমনকি ১৯৫৩ সালে স্যার অ্যাডমন্ড হিলারি এবং তেনজিং নোরগে এভারেস্ট অভিযানের সময় বড় কোনো প্রাণীর পায়ের ছাপ দেখার কথা বলেন। নোরগেকে তাঁর প্রথম আত্মজীবনীতে লিখেছেন নিজে না দেখলেও তার বাবা রহস্যময় এই জন্তুকে দুই বার দেখেছেন। অবশ্য দ্বিতীয় আত্মজীবনীতে সন্দিহান মনে হয়েছে তাঁকে।
১৯৫৪ সালে ডেইলি মেইল ‘স্নোম্যান’ নামের অভিযানের আয়োজন করে ইয়েতির খোঁজে। তখন একটি গুম্ফা থেকে কোনো প্রাণীর মাথার খুলির কিছু লোমও পাওয়া যায়, স্থানীয়দের দাবি, ওগুলো ইয়েতির লোম। একটু অন্ধকারে একে কালো থেকে গাঢ় বাদামি এবং উজ্জ্বল আলোয় লালচে দেখাচ্ছিল। কিন্তু গবেষণায় উঠে আসে ওটা খুরওলা কোনো প্রাণীর কাঁধের লোম।
এদিকে স্যার হিলারির ১৯৬০ সালের অভিযানের উদ্দেশ্যই ছিল ইয়েতির ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ। খুমজাং নামে এক গুম্ফা থেকে স্থানীয়রা ইয়েতির খুলির চামড়া বলে দাবি করা জিনিসটা লন্ডনে নিয়েও আসেন। অবশ্য বিজ্ঞানীরা পরে নিশ্চিত হোন ওগুলো অ্যান্টিলোপ জাতীয় প্রাণী সেরোর লোম।
আপনি যদি ইয়েতিপ্রেমী হয়ে থাকেন, তবে অক্সফোর্ডের জিন বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান সাইকেসের পরীক্ষার ফলাফল আপনাকে হতাশই করবে। ২০১৩ সালে ইয়েতিভক্তদের ইয়েতির চুল, দাঁতসহ শরীরের অন্য কোনো অংশ হাজির করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি, পরীক্ষার জন্য। যে ৫৭টি নমুনা পান, এর ৩৬টি বাছাই করা হয় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য। ওই এলাকায় বিচরণ করা বিভিন্ন প্রাণীর জিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় ওগুলো। বেশির ভাগই মেলে ভালুকের সঙ্গে। অবশ্য এখানেও চমক ছিল। দুটি নমুনা, যার একটি পাওয়া গিয়েছে ভুটানে ও অপরটি ভারতে, এমন এক প্রজাতির ভালুকের সঙ্গে মিলে যায়, যেগুলো ৪০-১২০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে! পরে কয়েকজন বিজ্ঞানী ওই দুটি নমুনা পরীক্ষা করে দাবি করেন, ওগুলো সাধারণ ভালুকেরই নমুনা!
২০১৭ সালে আরেক দল গবেষক হিমালয় ও তিব্বত থেকে সংগ্রহ করা লোম, মল, দাঁত পরীক্ষা করে জানান, ওগুলো তিব্বতি ভালুকের নমুনা। তবে গবেষকদের এত সব যুক্তির পরও কিন্তু ইয়েতিপ্রেমীরা প্রাণীটি নেই এটা মানতে রাজি ছিলেন না। তবে বহু দিন ধরে ইয়েতি সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যেই ২০১৯ সালে ভারতীয় সেনারা হিমালয়ের মাকালু বেস ক্যাম্পে ইয়েতির পায়ের ছাপ খুঁজে পাওয়ার দাবি করার পাশাপাশি এর ছবিও প্রকাশ করে। আর এতে ইয়েতি বিশ্বাসীরা যেন হালে পানি পান।
ইয়েতি নিয়ে বানানো হয়েছে অনেক সিনেমা, টিভি সিরিজ, ভিডিও গেম এবং কার্টুন ছবি। শুরুতে যে পাহাড়চূড়ায় ‘আতঙ্ক’ নামে বইটির কথা বলেছিলাম, তার কাহিনি নিয়ে ইয়েতি অভিযান নামে একটি বাংলা সিনেমা তৈরি করেছেন কলকাতার নামি পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। ২০১৭ সালের ঘটনা এটি। কালক্রমে ইয়েতি পরিণত হয়েছে নেপাল, ভারত, ভুটান ও তিব্বত জুড়ে সংস্কৃতি ও ব্যবসার অনুষঙ্গে। ভুটানে ইয়েতি নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ডাক টিকিট। নেপালে আছে ইয়েতি এয়ারলাইনস, সম্প্রতি যাদের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। মোদ্দা কথা বিশেষজ্ঞরা যাই বলুন, রোমাঞ্চপ্রেমীদের ইয়েতির প্রতি আগ্রহে ভাটা পড়েনি একটুও। বরং যত দিন গড়িয়েছে, রহস্যে যোগ হয়েছে নতুন নতুন মাত্রা। কি ইয়েতির কথা আগে জানা না থাকলেও এখন নিশ্চয় ইয়েতি নিয়ে কৌতূহলীদের কাতারে ভিড়ে গেছেন আপনিও।
সূত্র. বিবিসি, উইকিপিডিয়া, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন
উড়োজাহাজ ভ্রমণ অনেক মানুষেরই পছন্দ। তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো কুমির কিংবা তার জাত ভাই অ্যালিগেটরদের এ ধরনের শখ হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার এক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজগুলোর মাঝখান দিয়ে হেঁটে বেড়ানো অ্যালিগেটরটিকে যারা দেখেছেন তাঁদের এই সন্দেহ মাথায় আসাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।
২০ ঘণ্টা আগেমার্কিন নাগরিক জেরি হিকস গত মঙ্গলবার যখন দরকারি কিছু জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছিলেন তখন কল্পনাও করেননি তাঁর জীবনটা বদলে যেতে চলেছে। দোকানটির পার্কিংয়ে ২০ ডলারের একটি নোট পড়ে থাকতে দেখেন এ সময়। ওটা তুলে নিয়ে খরচ করলেন লটারির টিকিট কিনতে। তাতেই জিতলেন দশ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
৩ দিন আগে২০১৯ সালে দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা এক লাখ ২০ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। তখন এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শিল্পকর্মটি দিয়ে আসলে কী বোঝানো হয়েছে সেটি নিয়েও শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
৪ দিন আগেপৃথিবীতে এমন কিছু প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যেগুলো দেখলে ওই সময় মানব নির্মিত কোনো স্থাপনা বলে বিশ্বাস করা কঠিন! কারণ, এসব স্থাপনার নির্মাণশৈলী একই সঙ্গে জটিল ও বিশাল।
৯ দিন আগে