গোলাম ওয়াদুদ
এ দেশে ট্রল আর উগান্ডা যেন হরিহর আত্মা। পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে চলে। পরিসংখ্যান নেই, তারপরও কাণ্ডজ্ঞান থেকে বুকে হাত দিয়ে বলাই যায়, পৃথিবীর আর কোনো দেশ নিয়ে এতটা ট্রল করে না বাঙালি, যতটা করে উগান্ডা নিয়ে। কেন ভাই? উগান্ডার অবস্থা কি এতই খারাপ? আপনারা না জেনেই বালসুলভ আচরণ করেন এবং উগান্ডাকে ভাসিয়ে দেন ট্রল-সাগরে। আপনারা কি জানেন, উগান্ডার গণমাধ্যমও স্বাধীন? অবশ্য এ নিয়ে দুর্মুখেরা এখন অন্য কথাও বলতে পারে।
এই পরশ্রীকাতরদের দিকে তাকিয়ে না হয় ‘স্বাধীন ছিল’ বলা যায়। তা, এক সময় মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্বাধীনভাবে কাজ করতেন উগান্ডার সাংবাদিক ভাইয়েরা—এ ভাবলেই তো চোখে জল আসে। কারণ, ‘করতেন’ বলা মানেই তো এখন আর ‘করেন না’ বলা। আহা সে কী দিন ছিল! সরকারের বা বড় ব্যবসাপতির দুর্নীতি, আয়ের পথ, অপরাধ, খুন-জখম ইত্যাদির খবর উগান্ডার সাংবাদিকেরা কত-না সাহসের সঙ্গে প্রচার করতেন। বড় দুর্নীতির খবর বেরোলে তাদের সরকার রাগ করা তো দূরের কথা, সাংবাদিককে ডেকে তার গালটি টিপে দিত আদর করে। শুধু কি তাই, সঙ্গে দিতে চাইত হাজারটা উপঢৌকন, মানে উপহার আরকি। কিন্তু, বললেই হবে নাকি। উগান্ডার সাংবাদিক বলে কথা। সততার পরাকাষ্ঠা সেই সাংবাদিকেরা সেই উপহার ‘দূর ছাই’ বলে ভীষণ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতেন।
আহা কী সে দিন! কিন্তু হায় ‘সময় গড়ায়ে যায়’। কীভাবে, সে প্রশ্ন তুলবেন না। কারণ, সময়ের আকার সম্পর্কে আইনস্টাইনও জানতেন না। সে যা হোক। এই সময়ের কোনো এক গলি-ঘুপচিতেই ঘাপটি মেরে ছিল আমাদের ট্রলবাজেরা। তারা কথায় কথায় উগান্ডার নাম নিতেন। ঈর্ষাকাতরতা আরকি। হিংসা, হিংসা। কারও ভালোই সহ্য হয় না; গায়ে ফোসকা পড়ে। আর এ জন্যই উগান্ডা নিয়ে এত কিছু। কথায় কথায় উগান্ডা। কেউ অভিনব কিছু করতে চাইছে, তো বলা হচ্ছে—উগান্ডা চইলা যা। অথচ যে বলছে, সেও হয়তো জীবনে উগান্ডা দেখেনি, এমনকি টিভি কিংবা ছবিতেও। তো এই সব করতে করতেই হাজার মাইল দূরের দেশটির ওপর নজর লাগল। তাও যে-সে নয়, এই বঙ্গীয় ব-দ্বীপের নজর। ফলাফল দেখতেই পাচ্ছেন।
বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে উগান্ডার অবস্থান এবার সাত ধাপ পিছিয়েছে। গতকাল সাংবাদিকদের প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করার পর অবশ্য এ খবর জানা গেল। তো কেন পেছাল?
ব্যাপার আহামরি তেমন কিছুই নয়। হয়েছে কি, খাতা কলমে গণমাধ্যমকে একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হলেও উগান্ডার কর্মকাণ্ডে তা বোঝা যায় না। এটা অবশ্য হুট করে নয়। আগেই বলেছি, নজর লাগার একটা ব্যাপার আছে। আমাদের মতো আরও অনেক দেশের মানুষের নজরও সম্ভবত পড়েছিল। আর নজর লাগার তুকতাক চিকিৎসা সম্পর্কে যারা জানেন, তাঁরা একমত হবেন যে, একটু কঠোর না হলে চলে না। উগান্ডা সরকারকেও বাধ্য হয়ে একটু কঠোর হতে হয়েছে। তাদের আয়-উন্নতির খবর যাতে বাইরে না আসে, সে জন্য খবরঅলাদের একটু বোঝাতে হয়েছে।
অনেক দেশেই রাষ্ট্রনায়কেরা বছরের পর বছর টিকে থাকার জন্য গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে রাখে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যতভাবে আটকানো যায়, তার সবগুলোই করে তারা। গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে বছরের পর বছর টিকে থাকতে চায় তারা। উগান্ডার রাষ্ট্রনায়কের মধ্যেও এ ব্যাপারে কিঞ্চিৎ আকারে দেখা যায়। ফলে উগান্ডা এবার বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৩২তম স্থান দখল করেছে (অবশ্য আমাদের থেকে এগিয়ে এখনো)। আশার কথা হচ্ছে, তাদের আগের অবস্থান থেকে তারা পিছিয়েছে। উগান্ডার অবস্থা গত বছর মানে ২০২১ সালে ছিল ১২৫। মানে এক বছরে তাদের অবনতি হয়েছে ৭ ধাপ। গণমাধ্যমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বছরের পর বছর টিকে আছে দেশটির সরকারপ্রধান।
দেশটিতে ষষ্ঠ মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন ইওয়েরি মুসেভেনি। ১৯৮৬ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ উগান্ডার ক্ষমতায় আছেন সাবেক গেরিলা কমান্ডার ইওয়েরি মুসেভেনি ৷ ২০১৯ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে ২০২১ সালে ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ২০২১ সালের নির্বাচনেও জয় লাভ করেন সাবেক এই গেরিলা কমান্ডার। নির্বাচনের সময় দেশটিতে অনেক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। তাঁর বিপক্ষে যিনি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁকেও গ্রেপ্তার করেছিলেন মুসেভেনি। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ছিল মুসেভেনির বিরুদ্ধে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে এখনো তিনি টিকে আছেন।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠলে মুসাভেনি জনগণের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
একই সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘কীভাবে বন্দুকের ব্যবহার করতে হয়, সেটি আমাদের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। আমাদের চেয়ে ভালো লড়াই করতে পারে—এমন কেউও নেই।’
সাংবাদিকদের চুপ করিয়ে দিতে তিনি বন্দুকের ভয় দেখিয়েছেন। তাঁর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা অনেক সাংবাদিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।
২০২১ সালে নির্বাচনের সময় নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়া নিয়ে নিজেদের শঙ্কার কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ। নির্বাচনের পর আন্দোলন দমাতে দেশটির রাস্তায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান।
দেশটির সংবিধানে মুক্ত গণমাধ্যমের কথা থাকলেও নানাভাবে তিনি তা দমিয়ে রাখছেন। নিজেদের বাহিনী দিয়ে হুমকি-ধমকি, এমনকি প্রকাশ্যে নিজেও হুমকি দিচ্ছেন সাংবাদিকদের, যার পরিণতি আজ বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে দেশটির ৭ ধাপ অবনতি।
দেশটিতে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই সম্প্রচার লাইসেন্স বাতিল করার ঘটনাও ঘটেছে। দেশটিতে প্রেস অ্যান্ড জার্নালিস্ট অ্যাক্ট ২০০০ আইনটির উদ্দেশ্য ছিল সাংবাদিকতা, কাঠামো এবং প্রক্রিয়া তৈরি করা; যার মাধ্যমে একজন সাংবাদিক হয়ে ওঠে এবং পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা অনুশীলন করে। যা হোক, এই আইনের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকতার অনুশীলনকে অপরাধীকরণের জন্য অপব্যবহার করেছে। এটি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে। যেখানে মিডিয়ার ভয়েস বন্ধ করা হয়েছিল; আইনত কাকে সাংবাদিক হিসেবে গণ্য করা হবে, তার ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় দেশটিতে। বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়।
যা হোক, সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করা, না করা নিয়ে আমাদের কী যায় আসে। একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যেটাকে ঠিক মনে করবেন, সেটাই হবে। তিনি তো বলতেই পারেন যে, ‘আমার শাসনে থাকবা, আমার খাবা, আমার পরবা, আর আমার বিরুদ্ধে লিখবা, তা হবে না।’ এটা আসলে আমি বা আপনিও হয়তে মানব না। আমার বাড়ির বিড়ালকে আমি দুধ-ভাত দিয়ে পোষার পরও যদি আমাকে দেখেই শব্দ করে, তাহলে তো আমিও মানব না। ব্যাপারটা এমনই সরল।
কথামতো না চললে তো বকে দিতেই হয়। এটা তো গুরুজনের কর্তব্য। এমন কর্তব্যের কথা বুঝে না বুঝে রাষ্ট্র করাটা কি মেনে নেওয়া যায়, যখন আবার দূর-অদূরের বহু দেশ নজর দিয়ে বসে আছে। সে যাক। আফ্রিকার দেশ উগান্ডার ভালো-মন্দে নজর লাগিয়ে দেশটিকে না হয় একটি সূচকে নামিয়ে আনা গেছে। কিন্তু আমাদের কী হলো? আমরা তো দিব্যি আছি।
এ দেশে ট্রল আর উগান্ডা যেন হরিহর আত্মা। পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে চলে। পরিসংখ্যান নেই, তারপরও কাণ্ডজ্ঞান থেকে বুকে হাত দিয়ে বলাই যায়, পৃথিবীর আর কোনো দেশ নিয়ে এতটা ট্রল করে না বাঙালি, যতটা করে উগান্ডা নিয়ে। কেন ভাই? উগান্ডার অবস্থা কি এতই খারাপ? আপনারা না জেনেই বালসুলভ আচরণ করেন এবং উগান্ডাকে ভাসিয়ে দেন ট্রল-সাগরে। আপনারা কি জানেন, উগান্ডার গণমাধ্যমও স্বাধীন? অবশ্য এ নিয়ে দুর্মুখেরা এখন অন্য কথাও বলতে পারে।
এই পরশ্রীকাতরদের দিকে তাকিয়ে না হয় ‘স্বাধীন ছিল’ বলা যায়। তা, এক সময় মুক্ত বিহঙ্গের মতো স্বাধীনভাবে কাজ করতেন উগান্ডার সাংবাদিক ভাইয়েরা—এ ভাবলেই তো চোখে জল আসে। কারণ, ‘করতেন’ বলা মানেই তো এখন আর ‘করেন না’ বলা। আহা সে কী দিন ছিল! সরকারের বা বড় ব্যবসাপতির দুর্নীতি, আয়ের পথ, অপরাধ, খুন-জখম ইত্যাদির খবর উগান্ডার সাংবাদিকেরা কত-না সাহসের সঙ্গে প্রচার করতেন। বড় দুর্নীতির খবর বেরোলে তাদের সরকার রাগ করা তো দূরের কথা, সাংবাদিককে ডেকে তার গালটি টিপে দিত আদর করে। শুধু কি তাই, সঙ্গে দিতে চাইত হাজারটা উপঢৌকন, মানে উপহার আরকি। কিন্তু, বললেই হবে নাকি। উগান্ডার সাংবাদিক বলে কথা। সততার পরাকাষ্ঠা সেই সাংবাদিকেরা সেই উপহার ‘দূর ছাই’ বলে ভীষণ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতেন।
আহা কী সে দিন! কিন্তু হায় ‘সময় গড়ায়ে যায়’। কীভাবে, সে প্রশ্ন তুলবেন না। কারণ, সময়ের আকার সম্পর্কে আইনস্টাইনও জানতেন না। সে যা হোক। এই সময়ের কোনো এক গলি-ঘুপচিতেই ঘাপটি মেরে ছিল আমাদের ট্রলবাজেরা। তারা কথায় কথায় উগান্ডার নাম নিতেন। ঈর্ষাকাতরতা আরকি। হিংসা, হিংসা। কারও ভালোই সহ্য হয় না; গায়ে ফোসকা পড়ে। আর এ জন্যই উগান্ডা নিয়ে এত কিছু। কথায় কথায় উগান্ডা। কেউ অভিনব কিছু করতে চাইছে, তো বলা হচ্ছে—উগান্ডা চইলা যা। অথচ যে বলছে, সেও হয়তো জীবনে উগান্ডা দেখেনি, এমনকি টিভি কিংবা ছবিতেও। তো এই সব করতে করতেই হাজার মাইল দূরের দেশটির ওপর নজর লাগল। তাও যে-সে নয়, এই বঙ্গীয় ব-দ্বীপের নজর। ফলাফল দেখতেই পাচ্ছেন।
বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে উগান্ডার অবস্থান এবার সাত ধাপ পিছিয়েছে। গতকাল সাংবাদিকদের প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচক প্রকাশ করার পর অবশ্য এ খবর জানা গেল। তো কেন পেছাল?
ব্যাপার আহামরি তেমন কিছুই নয়। হয়েছে কি, খাতা কলমে গণমাধ্যমকে একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হলেও উগান্ডার কর্মকাণ্ডে তা বোঝা যায় না। এটা অবশ্য হুট করে নয়। আগেই বলেছি, নজর লাগার একটা ব্যাপার আছে। আমাদের মতো আরও অনেক দেশের মানুষের নজরও সম্ভবত পড়েছিল। আর নজর লাগার তুকতাক চিকিৎসা সম্পর্কে যারা জানেন, তাঁরা একমত হবেন যে, একটু কঠোর না হলে চলে না। উগান্ডা সরকারকেও বাধ্য হয়ে একটু কঠোর হতে হয়েছে। তাদের আয়-উন্নতির খবর যাতে বাইরে না আসে, সে জন্য খবরঅলাদের একটু বোঝাতে হয়েছে।
অনেক দেশেই রাষ্ট্রনায়কেরা বছরের পর বছর টিকে থাকার জন্য গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে রাখে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যতভাবে আটকানো যায়, তার সবগুলোই করে তারা। গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে বছরের পর বছর টিকে থাকতে চায় তারা। উগান্ডার রাষ্ট্রনায়কের মধ্যেও এ ব্যাপারে কিঞ্চিৎ আকারে দেখা যায়। ফলে উগান্ডা এবার বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৩২তম স্থান দখল করেছে (অবশ্য আমাদের থেকে এগিয়ে এখনো)। আশার কথা হচ্ছে, তাদের আগের অবস্থান থেকে তারা পিছিয়েছে। উগান্ডার অবস্থা গত বছর মানে ২০২১ সালে ছিল ১২৫। মানে এক বছরে তাদের অবনতি হয়েছে ৭ ধাপ। গণমাধ্যমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বছরের পর বছর টিকে আছে দেশটির সরকারপ্রধান।
দেশটিতে ষষ্ঠ মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন ইওয়েরি মুসেভেনি। ১৯৮৬ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ উগান্ডার ক্ষমতায় আছেন সাবেক গেরিলা কমান্ডার ইওয়েরি মুসেভেনি ৷ ২০১৯ সালে সংবিধান পরিবর্তন করে ২০২১ সালে ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ২০২১ সালের নির্বাচনেও জয় লাভ করেন সাবেক এই গেরিলা কমান্ডার। নির্বাচনের সময় দেশটিতে অনেক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। তাঁর বিপক্ষে যিনি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁকেও গ্রেপ্তার করেছিলেন মুসেভেনি। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ছিল মুসেভেনির বিরুদ্ধে। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে এখনো তিনি টিকে আছেন।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠলে মুসাভেনি জনগণের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে বলেছিলেন, ‘কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’
একই সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘কীভাবে বন্দুকের ব্যবহার করতে হয়, সেটি আমাদের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। আমাদের চেয়ে ভালো লড়াই করতে পারে—এমন কেউও নেই।’
সাংবাদিকদের চুপ করিয়ে দিতে তিনি বন্দুকের ভয় দেখিয়েছেন। তাঁর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা অনেক সাংবাদিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।
২০২১ সালে নির্বাচনের সময় নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়া নিয়ে নিজেদের শঙ্কার কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ। নির্বাচনের পর আন্দোলন দমাতে দেশটির রাস্তায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান।
দেশটির সংবিধানে মুক্ত গণমাধ্যমের কথা থাকলেও নানাভাবে তিনি তা দমিয়ে রাখছেন। নিজেদের বাহিনী দিয়ে হুমকি-ধমকি, এমনকি প্রকাশ্যে নিজেও হুমকি দিচ্ছেন সাংবাদিকদের, যার পরিণতি আজ বৈশ্বিক গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে দেশটির ৭ ধাপ অবনতি।
দেশটিতে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই সম্প্রচার লাইসেন্স বাতিল করার ঘটনাও ঘটেছে। দেশটিতে প্রেস অ্যান্ড জার্নালিস্ট অ্যাক্ট ২০০০ আইনটির উদ্দেশ্য ছিল সাংবাদিকতা, কাঠামো এবং প্রক্রিয়া তৈরি করা; যার মাধ্যমে একজন সাংবাদিক হয়ে ওঠে এবং পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা অনুশীলন করে। যা হোক, এই আইনের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকতার অনুশীলনকে অপরাধীকরণের জন্য অপব্যবহার করেছে। এটি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে। যেখানে মিডিয়ার ভয়েস বন্ধ করা হয়েছিল; আইনত কাকে সাংবাদিক হিসেবে গণ্য করা হবে, তার ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় দেশটিতে। বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়।
যা হোক, সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করা, না করা নিয়ে আমাদের কী যায় আসে। একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যেটাকে ঠিক মনে করবেন, সেটাই হবে। তিনি তো বলতেই পারেন যে, ‘আমার শাসনে থাকবা, আমার খাবা, আমার পরবা, আর আমার বিরুদ্ধে লিখবা, তা হবে না।’ এটা আসলে আমি বা আপনিও হয়তে মানব না। আমার বাড়ির বিড়ালকে আমি দুধ-ভাত দিয়ে পোষার পরও যদি আমাকে দেখেই শব্দ করে, তাহলে তো আমিও মানব না। ব্যাপারটা এমনই সরল।
কথামতো না চললে তো বকে দিতেই হয়। এটা তো গুরুজনের কর্তব্য। এমন কর্তব্যের কথা বুঝে না বুঝে রাষ্ট্র করাটা কি মেনে নেওয়া যায়, যখন আবার দূর-অদূরের বহু দেশ নজর দিয়ে বসে আছে। সে যাক। আফ্রিকার দেশ উগান্ডার ভালো-মন্দে নজর লাগিয়ে দেশটিকে না হয় একটি সূচকে নামিয়ে আনা গেছে। কিন্তু আমাদের কী হলো? আমরা তো দিব্যি আছি।
উড়োজাহাজ ভ্রমণ অনেক মানুষেরই পছন্দ। তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো কুমির কিংবা তার জাত ভাই অ্যালিগেটরদের এ ধরনের শখ হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার এক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজগুলোর মাঝখান দিয়ে হেঁটে বেড়ানো অ্যালিগেটরটিকে যারা দেখেছেন তাঁদের এই সন্দেহ মাথায় আসাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।
১ দিন আগেমার্কিন নাগরিক জেরি হিকস গত মঙ্গলবার যখন দরকারি কিছু জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছিলেন তখন কল্পনাও করেননি তাঁর জীবনটা বদলে যেতে চলেছে। দোকানটির পার্কিংয়ে ২০ ডলারের একটি নোট পড়ে থাকতে দেখেন এ সময়। ওটা তুলে নিয়ে খরচ করলেন লটারির টিকিট কিনতে। তাতেই জিতলেন দশ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
৩ দিন আগে২০১৯ সালে দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা এক লাখ ২০ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। তখন এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শিল্পকর্মটি দিয়ে আসলে কী বোঝানো হয়েছে সেটি নিয়েও শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
৪ দিন আগেপৃথিবীতে এমন কিছু প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যেগুলো দেখলে ওই সময় মানব নির্মিত কোনো স্থাপনা বলে বিশ্বাস করা কঠিন! কারণ, এসব স্থাপনার নির্মাণশৈলী একই সঙ্গে জটিল ও বিশাল।
৯ দিন আগে