ইশতিয়াক হাসান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির চাটানুগায় আছে আশ্চর্য এক জলপ্রপাত। এর অবস্থান মাটির ওপরে নয় বরং পাতালের গুহায়। অর্থাৎ আশ্চর্য এই জলপ্রপাত দেখতে হলে আপনাকে ঢুঁ মারতে হবে পাতালরাজ্যে।
ধারণা করা হয়, কোটি কোটি বছর ধরে এভাবে টেনেসির মাটির নিচে পানি ঝরিয়ে যাচ্ছিল জলপ্রপাতটি। তবে মজার ব্যাপার, সাধারণ মানুষ এর কথা জানতে পারে বিশ শতকে।
রুবি ফলস নামের জলপ্রপাতটি যে পর্বতে অবস্থিত, সেটির নাম লুকআউট মাউন্টেন। এই পর্বতের গুহাগুলো আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় সৈনিকেরা লুকিয়ে থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতেন। এমনকি এর আগেও এসব গুহায় মানুষের আনাগোনা থাকতে পারে। তবে তখন পাতাল জলপ্রপাতটির কথা জানতে পারেনি মানুষ কিংবা দু-চার জন এটা দেখলেও অন্যদের এর গল্প বলেননি।
তারপরই একটি রেল রোড তৈরির কাজ শুরু হয়, যেটি এখানকার গুহাগুলোকে ছেদ করে যায়। এ সময় গুহাগুলোর প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরও পরে শৌখিন গুহা গবেষক লিও ল্যামবার্ট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পাহাড়ের আরও ওপরে ওঠার সময় বেশ কিছু গুহামুখ খুলে দেন। আর তখনই তাঁর নজর কাড়ে গুহার ভেতরের জলপ্রপাতটি। এটি ১৯২৮ সালের ঘটনা।
ল্যামবার্ট তাঁর স্ত্রীর নামে জলপ্রপাতটির নাম রাখেন রুবি ফলস বা রুবি জলপ্রপাত। তেমনি এটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। অল্প সময়ের মধ্যে রুবি ফলস পর্যটকদের নজর কাড়ে। এ সময় এই অঞ্চলের বিভিন্ন গোলাঘরের গায়ে ‘সি রুবি ফলস’ নামের বর্ণিল একটি স্লোগান বেশ জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তী সময়ে একই স্লোগান লেখা বিভিন্ন বিলবোর্ড জলপ্রপাতের দুই পাশে বড় পাশের মোটামুটি ১০০ মাইল পর্যন্ত এলাকায় স্থাপন করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে আমেরিকাজুড়ে জলপ্রপাতটি আরও পরিচিতি পায়।
একপর্যায়ে গুহার ভেতরে ও পাতাল জলপ্রপাতের চারপাশে নানা রঙের বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়। আলোগুলো জলপ্রপাতের জলে ও গুহায় পড়ে জায়গাটিকে আরও মোহনীয় করে তোলে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের আরও পাতাল জলপ্রপাতের খোঁজ পাওয়া গেলেও এগুলোর মধ্যে রুবি ফলস সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘতম। ১৪৫ ফুট ওপর থেকে পানির ধারা নেমে আসছে এতে। বৃষ্টি ও ঝরনার পানি জলপ্রপাতের মাধ্যমে নেমে আসে। এতে যেতে হলে পর্যটকদের ঢুকতে হয় পনেরো শতকের একটি আইরিশ দুর্গের রেপ্লিকার মধ্য দিয়ে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এমনিতে পর্যটকদের যেকোনো জলপ্রপাতে যেতে হয় পাহাড় কিংবা সমতলের কোনো ট্রেইল ধরে। আর এখানে আপনাকে যেতে হবে গুহার ভেতরের পথ ধরে। তাও আবার কাচের দরজার এক এলিভেটর আপনাকে রুবি ফলসে যাওয়ার পাতাল ট্রেইল যেখানে শুরু সেখানে পৌঁছে দেবে। অবশ্য হাঁটার পথ খুব বেশি নয়, আসা-যাওয়া মিলিয়ে এক মাইল।
জলপ্রপাতটির কাছে এবং সেখানে যাওয়ার পথে পাথরের বৈচিত্র্যময় সব প্রাকৃতিক কাঠামোর দেখা পাবেন গুহার দেয়ালে ও ছাদে। এগুলো স্ট্যালাগমাইট ও স্ট্যালেকটাইট। এগুলোর কোনো কোনোটিকে আকৃতি অনুযায়ী নানা নামে ডাকা হয়। যেমন—ড্রাগন ফুট বা ড্রাগনের পা, গাধা, পটেটো চিপস ইত্যাদি।
জলপ্রপাতের দিকে যাওয়ার পথের কোনো কোনো অংশ সরু, ভেজা। কাজেই ওই জায়গাগুলোতে কিছুটা সতর্কতা জরুরি। তাপমাত্রা বছরজুড়ে ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
জলপ্রপাত দেখা শেষে লুকাআউট মাউন্টেন টায়ারে উঠতে পারেন। ১৯২০-এর দশকে বানানো টাওয়ারটি থেকে চারপাশের পর্বতমালার চমৎকার দৃশ্য চোখে পড়ে।
কাজেই মার্কিন মুল্লুকের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে গেলে রুবি জলপ্রপাতটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না আশা করি। পাতালের আলো-আঁধারিতে হেঁটে যাওয়া, পাথরের বিচিত্র সব কাঠামো আর সবশেষে প্রপাতের জলে নানা আলোর খেলা দেখা বিচিত্র এক অভিজ্ঞতা স্মৃতিতে নিয়ে ফেরার সুযোগ করে দেবে আপনাকে।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, সিলভার সান সিকারস ডট কম, উইকিপিডিয়া
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসির চাটানুগায় আছে আশ্চর্য এক জলপ্রপাত। এর অবস্থান মাটির ওপরে নয় বরং পাতালের গুহায়। অর্থাৎ আশ্চর্য এই জলপ্রপাত দেখতে হলে আপনাকে ঢুঁ মারতে হবে পাতালরাজ্যে।
ধারণা করা হয়, কোটি কোটি বছর ধরে এভাবে টেনেসির মাটির নিচে পানি ঝরিয়ে যাচ্ছিল জলপ্রপাতটি। তবে মজার ব্যাপার, সাধারণ মানুষ এর কথা জানতে পারে বিশ শতকে।
রুবি ফলস নামের জলপ্রপাতটি যে পর্বতে অবস্থিত, সেটির নাম লুকআউট মাউন্টেন। এই পর্বতের গুহাগুলো আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় সৈনিকেরা লুকিয়ে থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতেন। এমনকি এর আগেও এসব গুহায় মানুষের আনাগোনা থাকতে পারে। তবে তখন পাতাল জলপ্রপাতটির কথা জানতে পারেনি মানুষ কিংবা দু-চার জন এটা দেখলেও অন্যদের এর গল্প বলেননি।
তারপরই একটি রেল রোড তৈরির কাজ শুরু হয়, যেটি এখানকার গুহাগুলোকে ছেদ করে যায়। এ সময় গুহাগুলোর প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরও পরে শৌখিন গুহা গবেষক লিও ল্যামবার্ট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পাহাড়ের আরও ওপরে ওঠার সময় বেশ কিছু গুহামুখ খুলে দেন। আর তখনই তাঁর নজর কাড়ে গুহার ভেতরের জলপ্রপাতটি। এটি ১৯২৮ সালের ঘটনা।
ল্যামবার্ট তাঁর স্ত্রীর নামে জলপ্রপাতটির নাম রাখেন রুবি ফলস বা রুবি জলপ্রপাত। তেমনি এটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। অল্প সময়ের মধ্যে রুবি ফলস পর্যটকদের নজর কাড়ে। এ সময় এই অঞ্চলের বিভিন্ন গোলাঘরের গায়ে ‘সি রুবি ফলস’ নামের বর্ণিল একটি স্লোগান বেশ জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তী সময়ে একই স্লোগান লেখা বিভিন্ন বিলবোর্ড জলপ্রপাতের দুই পাশে বড় পাশের মোটামুটি ১০০ মাইল পর্যন্ত এলাকায় স্থাপন করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে আমেরিকাজুড়ে জলপ্রপাতটি আরও পরিচিতি পায়।
একপর্যায়ে গুহার ভেতরে ও পাতাল জলপ্রপাতের চারপাশে নানা রঙের বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়। আলোগুলো জলপ্রপাতের জলে ও গুহায় পড়ে জায়গাটিকে আরও মোহনীয় করে তোলে।
যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের আরও পাতাল জলপ্রপাতের খোঁজ পাওয়া গেলেও এগুলোর মধ্যে রুবি ফলস সবচেয়ে গভীর ও দীর্ঘতম। ১৪৫ ফুট ওপর থেকে পানির ধারা নেমে আসছে এতে। বৃষ্টি ও ঝরনার পানি জলপ্রপাতের মাধ্যমে নেমে আসে। এতে যেতে হলে পর্যটকদের ঢুকতে হয় পনেরো শতকের একটি আইরিশ দুর্গের রেপ্লিকার মধ্য দিয়ে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এমনিতে পর্যটকদের যেকোনো জলপ্রপাতে যেতে হয় পাহাড় কিংবা সমতলের কোনো ট্রেইল ধরে। আর এখানে আপনাকে যেতে হবে গুহার ভেতরের পথ ধরে। তাও আবার কাচের দরজার এক এলিভেটর আপনাকে রুবি ফলসে যাওয়ার পাতাল ট্রেইল যেখানে শুরু সেখানে পৌঁছে দেবে। অবশ্য হাঁটার পথ খুব বেশি নয়, আসা-যাওয়া মিলিয়ে এক মাইল।
জলপ্রপাতটির কাছে এবং সেখানে যাওয়ার পথে পাথরের বৈচিত্র্যময় সব প্রাকৃতিক কাঠামোর দেখা পাবেন গুহার দেয়ালে ও ছাদে। এগুলো স্ট্যালাগমাইট ও স্ট্যালেকটাইট। এগুলোর কোনো কোনোটিকে আকৃতি অনুযায়ী নানা নামে ডাকা হয়। যেমন—ড্রাগন ফুট বা ড্রাগনের পা, গাধা, পটেটো চিপস ইত্যাদি।
জলপ্রপাতের দিকে যাওয়ার পথের কোনো কোনো অংশ সরু, ভেজা। কাজেই ওই জায়গাগুলোতে কিছুটা সতর্কতা জরুরি। তাপমাত্রা বছরজুড়ে ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
জলপ্রপাত দেখা শেষে লুকাআউট মাউন্টেন টায়ারে উঠতে পারেন। ১৯২০-এর দশকে বানানো টাওয়ারটি থেকে চারপাশের পর্বতমালার চমৎকার দৃশ্য চোখে পড়ে।
কাজেই মার্কিন মুল্লুকের টেনেসি অঙ্গরাজ্যে গেলে রুবি জলপ্রপাতটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না আশা করি। পাতালের আলো-আঁধারিতে হেঁটে যাওয়া, পাথরের বিচিত্র সব কাঠামো আর সবশেষে প্রপাতের জলে নানা আলোর খেলা দেখা বিচিত্র এক অভিজ্ঞতা স্মৃতিতে নিয়ে ফেরার সুযোগ করে দেবে আপনাকে।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, সিলভার সান সিকারস ডট কম, উইকিপিডিয়া
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
২ দিন আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
৪ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৪ দিন আগে