জাহীদ রেজা নূর
এখন তো আর ল্যান্ডফোনের ঝামেলা নেই; মেসেঞ্জারে কল দিয়ে কথা বলে নিলেই হয়। আটলান্টিকের ওপার থেকে ছবি ভেসে ওঠে। কথা হয়, মনে হয়, এই তো কথা হচ্ছে কাছাকাছি কোনো জায়গায় বসে। এটা যে ঢাকা আর নিউইয়র্কের দুস্তর ব্যবধান পার হয়ে যোগাযোগ—সেটা কি আর বোঝার উপায় আছে।
‘কেমন আছিস? কাল তো রোববার। অফিস বন্ধ!’ ঢাকা থেকে বাবা জিজ্ঞেস করে নিউইয়র্কে থাকা মেয়েকে।
‘হ্যাঁ, শুধু কাল না। পরশুও বন্ধ!’
‘পরশু! এ আবার কেন?’
‘পরশু এ দেশের ইনডিপেনডেন্স ডে।’ বলে মেয়ে।
‘তাতে অফিস বন্ধ? বাহ!’ বাবা হিসেব করছে, ঘণ্টা ধরে কাজ করা মেয়ের হাত থেকে বেরিয়ে গেল কটা টাকা, মানে ডলার। আর মেয়ে বলছে, ‘বাবা, এত বড় উৎসব এ দেশে খুব কমই আছে! ৪ জুলাই মানেই আনন্দ। সবার আনন্দ!’
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের উৎসবটা যে খুব বড়, সে কথা বাবা জানে। নানা ধরনের উৎসবে সবাই রাঙিয়ে নেয় দিনটি। ব্রিটিশের হাত থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা! এ তো যা–তা ব্যাপার নয়! সেই ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই!
সে যাক, বাবার মনে পড়ে যায়, একসময় ইতিহাসের পাশাপাশি সাহিত্য, চলচ্চিত্র নিয়েও আগ্রহ ছিল তাঁর। পৃথিবীর আনাচে–কানাচে লুকিয়ে থাকা সেরা ছবি কিংবা সেরা উপন্যাস তাকে টানত। এই যেমন রোলান্ড এমেরিখের ‘দ্য ইনডিপেনডেন্স ডে’ ছবিটি। উইলিয়াম স্মিথের সে কি অভিনয়! ১৯৯৬ সালে যখন এ ছবি মুক্তি পেল, বাবা তখন কেবল পিএইচডি শেষ করেছে। ছবিটা ঠিক ইতিহাসনির্ভর নয়। ভিনগ্রহের একদল জীব নেমে এল পৃথিবীতে, আক্রমণ করল বিশাল শহরটা। তারপর ধ্বংস করতে থাকল একের পর এক শহর। গ্রহান্তরের এই জীবগুলোকে অবশ্য শেষ পর্যন্ত হারিয়ে দেয় মানুষ। এবং এভাবেই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস হয়ে ওঠে সারা পৃথিবীর স্বাধীনতা দিবস।
হ্যাঁ, ভাবনার বাড়াবাড়ি আছে বটে। তবে সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে। মার্কিন অহংকার ধূলিসাৎ করে দেওয়ার মতো কেউ ছিল না তখন। কিন্তু ছবিটা ভালো লেগে যায় মানুষের জয় দেখানো হয়েছে বলে। আর স্বাধীনতার স্বপ্ন তো যেকোনো দেশের যেকোনো মানুষের জন্যই সুখকর।
এর আগে ‘বর্ন অন দ্য ফোর্থ অব জুলাই’ ছবিটির কথাও ভেসে আসে মনে। অলিভার স্টোনের তৈরি ছবি। সে ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এ ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টম ক্রুজ। রন কোভিক নামের এক মানুষের জীবন কাহিনি থেকেই এই ছবি উৎসারিত। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসেই অর্থাৎ ৪ জুলাই জন্মেছিল রন। নিজের দেশের প্রতি গর্ব বুকে নিয়েই সে বেড়ে উঠছিল। আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করার জন্য সে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই সে প্রথম সত্যিকারের যুদ্ধের মুখোমুখি হয়। ভয়ানক বাস্তবতা এসে ধরা দেয় তার চোখে। একের পর এক ট্র্যাজিক ঘটনা ঘটতে থাকে। ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে সে হারায়। মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালে থাকার সময়ই নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা আসে রনের। পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর রন বুঝতে পারে ওর আদর্শ আর কল্পনা ধুলোয় মিশে গেছে। রন সরকার নিজেদের ইচ্ছে চাপিয়ে দিয়েছে আমেরিকান নাগরিকদের ওপর। পাঠিয়েছে ভিয়েতনামে ট্র্যাজিক সত্যের মুখোমুখি হতে। ওর জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেল। দুশ্চিন্তায় রন ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারাতে শুরু করে এবং মদাসক্ত হয়ে পড়ে। এর কিছুদিন পর অবশ্য ওর মোহভঙ্গ হয়। সে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়। শান্তির স্বপক্ষে দাঁড়িয়ে সে আমার জীবনের আনন্দের কাছে ফিরে আসে।
রিচার্ড ফোর্ড তার ‘ইনডিপেনডেন্স ডে’ উপন্যাসটি লিখেছিলেন ১৯৯৫ সালে। এর আগে তিনি ‘স্পোর্টস রাইটার’ বইটি লিখে নাম করেছিলেন। দ্বিতীয় বইটি লেখা হয় প্রথম বইটির ধারাবাহিকতায়। ১৯৯৬ সালে তিনি বইটির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পান। ফ্র্যাঙ্ক ব্যাসকোম্ব নামে এক ভদ্রলোককে নিয়ে উপন্যাসের কাহিনি। নিউজার্সির স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির এজেন্ট বা দালাল তিনি। মাঝবয়সে একদিন তিনি স্বাধীনতা দিবসে ফিরে আসেন সাবেক স্ত্রী, পুত্র, প্রেমিকা, নিজ ফ্ল্যাটের ভাড়াটে আর কয়েকজন ক্লায়েন্টের কাছে, যারা ভালো বাড়ির অভাব বোধ করছিল। ফ্র্যাঙ্ক আসলে এই বয়সে এসে জীবনের স্বাদ গ্রহণ করতে চাইছিলেন।
‘তুমি কী ভাবছ বাবা?’ এতক্ষণ চুপ করে থাকতে দেখে বলল মেয়ে।
‘আমি একটু স্বাধীনভাবে ভাবার চেষ্টা করলাম। ঘুরে এলাম আমার জানা এক জগৎ থেকে।’
‘কোন জগৎ?’
‘স্বাধীনতা দিবস যার নাম। ইংরেজিতে ইনডিপেনডেন্স ডে।’
এখন তো আর ল্যান্ডফোনের ঝামেলা নেই; মেসেঞ্জারে কল দিয়ে কথা বলে নিলেই হয়। আটলান্টিকের ওপার থেকে ছবি ভেসে ওঠে। কথা হয়, মনে হয়, এই তো কথা হচ্ছে কাছাকাছি কোনো জায়গায় বসে। এটা যে ঢাকা আর নিউইয়র্কের দুস্তর ব্যবধান পার হয়ে যোগাযোগ—সেটা কি আর বোঝার উপায় আছে।
‘কেমন আছিস? কাল তো রোববার। অফিস বন্ধ!’ ঢাকা থেকে বাবা জিজ্ঞেস করে নিউইয়র্কে থাকা মেয়েকে।
‘হ্যাঁ, শুধু কাল না। পরশুও বন্ধ!’
‘পরশু! এ আবার কেন?’
‘পরশু এ দেশের ইনডিপেনডেন্স ডে।’ বলে মেয়ে।
‘তাতে অফিস বন্ধ? বাহ!’ বাবা হিসেব করছে, ঘণ্টা ধরে কাজ করা মেয়ের হাত থেকে বেরিয়ে গেল কটা টাকা, মানে ডলার। আর মেয়ে বলছে, ‘বাবা, এত বড় উৎসব এ দেশে খুব কমই আছে! ৪ জুলাই মানেই আনন্দ। সবার আনন্দ!’
আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের উৎসবটা যে খুব বড়, সে কথা বাবা জানে। নানা ধরনের উৎসবে সবাই রাঙিয়ে নেয় দিনটি। ব্রিটিশের হাত থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা! এ তো যা–তা ব্যাপার নয়! সেই ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই!
সে যাক, বাবার মনে পড়ে যায়, একসময় ইতিহাসের পাশাপাশি সাহিত্য, চলচ্চিত্র নিয়েও আগ্রহ ছিল তাঁর। পৃথিবীর আনাচে–কানাচে লুকিয়ে থাকা সেরা ছবি কিংবা সেরা উপন্যাস তাকে টানত। এই যেমন রোলান্ড এমেরিখের ‘দ্য ইনডিপেনডেন্স ডে’ ছবিটি। উইলিয়াম স্মিথের সে কি অভিনয়! ১৯৯৬ সালে যখন এ ছবি মুক্তি পেল, বাবা তখন কেবল পিএইচডি শেষ করেছে। ছবিটা ঠিক ইতিহাসনির্ভর নয়। ভিনগ্রহের একদল জীব নেমে এল পৃথিবীতে, আক্রমণ করল বিশাল শহরটা। তারপর ধ্বংস করতে থাকল একের পর এক শহর। গ্রহান্তরের এই জীবগুলোকে অবশ্য শেষ পর্যন্ত হারিয়ে দেয় মানুষ। এবং এভাবেই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস হয়ে ওঠে সারা পৃথিবীর স্বাধীনতা দিবস।
হ্যাঁ, ভাবনার বাড়াবাড়ি আছে বটে। তবে সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গেছে। মার্কিন অহংকার ধূলিসাৎ করে দেওয়ার মতো কেউ ছিল না তখন। কিন্তু ছবিটা ভালো লেগে যায় মানুষের জয় দেখানো হয়েছে বলে। আর স্বাধীনতার স্বপ্ন তো যেকোনো দেশের যেকোনো মানুষের জন্যই সুখকর।
এর আগে ‘বর্ন অন দ্য ফোর্থ অব জুলাই’ ছবিটির কথাও ভেসে আসে মনে। অলিভার স্টোনের তৈরি ছবি। সে ছবি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এ ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টম ক্রুজ। রন কোভিক নামের এক মানুষের জীবন কাহিনি থেকেই এই ছবি উৎসারিত। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসেই অর্থাৎ ৪ জুলাই জন্মেছিল রন। নিজের দেশের প্রতি গর্ব বুকে নিয়েই সে বেড়ে উঠছিল। আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করার জন্য সে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু সেখানেই সে প্রথম সত্যিকারের যুদ্ধের মুখোমুখি হয়। ভয়ানক বাস্তবতা এসে ধরা দেয় তার চোখে। একের পর এক ট্র্যাজিক ঘটনা ঘটতে থাকে। ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে সে হারায়। মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালে থাকার সময়ই নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা আসে রনের। পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর রন বুঝতে পারে ওর আদর্শ আর কল্পনা ধুলোয় মিশে গেছে। রন সরকার নিজেদের ইচ্ছে চাপিয়ে দিয়েছে আমেরিকান নাগরিকদের ওপর। পাঠিয়েছে ভিয়েতনামে ট্র্যাজিক সত্যের মুখোমুখি হতে। ওর জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেল। দুশ্চিন্তায় রন ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারাতে শুরু করে এবং মদাসক্ত হয়ে পড়ে। এর কিছুদিন পর অবশ্য ওর মোহভঙ্গ হয়। সে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়। শান্তির স্বপক্ষে দাঁড়িয়ে সে আমার জীবনের আনন্দের কাছে ফিরে আসে।
রিচার্ড ফোর্ড তার ‘ইনডিপেনডেন্স ডে’ উপন্যাসটি লিখেছিলেন ১৯৯৫ সালে। এর আগে তিনি ‘স্পোর্টস রাইটার’ বইটি লিখে নাম করেছিলেন। দ্বিতীয় বইটি লেখা হয় প্রথম বইটির ধারাবাহিকতায়। ১৯৯৬ সালে তিনি বইটির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পান। ফ্র্যাঙ্ক ব্যাসকোম্ব নামে এক ভদ্রলোককে নিয়ে উপন্যাসের কাহিনি। নিউজার্সির স্থাবর সম্পত্তি বিক্রির এজেন্ট বা দালাল তিনি। মাঝবয়সে একদিন তিনি স্বাধীনতা দিবসে ফিরে আসেন সাবেক স্ত্রী, পুত্র, প্রেমিকা, নিজ ফ্ল্যাটের ভাড়াটে আর কয়েকজন ক্লায়েন্টের কাছে, যারা ভালো বাড়ির অভাব বোধ করছিল। ফ্র্যাঙ্ক আসলে এই বয়সে এসে জীবনের স্বাদ গ্রহণ করতে চাইছিলেন।
‘তুমি কী ভাবছ বাবা?’ এতক্ষণ চুপ করে থাকতে দেখে বলল মেয়ে।
‘আমি একটু স্বাধীনভাবে ভাবার চেষ্টা করলাম। ঘুরে এলাম আমার জানা এক জগৎ থেকে।’
‘কোন জগৎ?’
‘স্বাধীনতা দিবস যার নাম। ইংরেজিতে ইনডিপেনডেন্স ডে।’
সাত বছর প্রেমের পর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছিলেন। বাধা হয়ে দাঁড়াল হবু শাশুড়ির আপত্তি। না বিয়ে নয়, তাঁর আপত্তি অন্য বিষয়ে। পুত্রবধূকে ঘরে আনতে আপত্তি নেই, কিন্তু কোনোভাবেই তাঁর পোষা কুকুরকে ঘরে তুলবেন না পাত্রের মা। এই আপত্তিতে শেষ পর্যন্ত বিয়েই ভেঙে দিলেন ভারতের এক তরুণী!
১ ঘণ্টা আগেরোমাঞ্চকর কোনো অভিযান বা কাজের প্রতি তরুণদের আগ্রহ নতুন কিছু নয়। আর সেই সঙ্গে যদি আকাশ থেকে বিস্তৃত এলাকা দেখার সুযোগ থাকে তাহলে তো কথাই নেই। চীনের ৩৭ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর মতো জায়গার অভাব নেই। তবে চীনা তরুণ পর্যটকদের এখন ঝোঁকটা আকাশ থেকে দেশ দেখায়।
১ ঘণ্টা আগেগত ৩০ অক্টোবর কেপ কোরাল শহরে আমেরিকার খুচরা পণ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠান টার্গেটের একটি স্টোর থেকে ৫০০ ডলার মূল্যের ১৬টি গৃহস্থালি পণ্য ও পোশাক চুরি করেন মার্লিনা। এই ঘটনাকে ‘ছোটখাটো চুরি’ বলা হলেও ৫০০ ডলার অর্থমূল্যের কারণে বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়া পর্যন্ত গড়িয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
৩ দিন আগে