ফজলুল কবির
ঘরে ঘরে ছবির ফ্রেমে আটকে থাকতে থাকতে ঠাকুরেরও হাঁফ ধরে গেল। ভাবলেন, যাই একটু ঘুরে আসি। অনেক তো হলো। যেই ভাবা, সেই কাজ। ফট করে নিউমার্কেটের একটি দোকানে টানানো ছবির ফ্রেম থেকে বের হয়ে এলেন। ভাগ্যিস লাইফ সাইজ ছিল ছবিটা। বেরিয়ে একটুক্ষণ খক খক করে কাশলেন। ‘এত ধুলা কোথা থেকে এল; হা পূর্ববঙ্গ, তুমিও!’
মুশকিল একটা হলো বটে। চারপাশে পোশাকের যে ধরন-ধারণ, তার সঙ্গে তাঁরটা একদমই যাচ্ছে না। সব কেমন ফিরিঙ্গি সাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে যাক। ঢাকার প্রতি অবশ্য তাঁর তেমন আকর্ষণ কোনো কালেই ছিল না। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় যেন তাঁর যাওয়ার ছিল, ঠিক মনে করতে পারছেন না। নিজের পুরোনো খাতা-পত্র দেখে যে মিলিয়ে নেবেন, তারও উপায় নেই। এ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় হাঁটছেন। এমন সময় একজনের কণ্ঠ কানে এল—‘চুল দেখছ ব্যাটার?’ ঝট করে তাকালেন, আর সঙ্গে সঙ্গে বুঝলেন, তাঁকে নিয়েই বলা হচ্ছে। সঙ্গে এও বুঝলেন যে, তিনি এরই মধ্যে দর্শনীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছেন। যতটা না পোশাকের কারণে, তারও চেয়ে বেশি, তাঁর চুল-দাঁড়ির কারণে।
একটু আড়ষ্ট হয়ে যেতে হলো। কিন্তু তাঁর তো স্মৃতিতে শান দেওয়াটা জরুরি। কী করা যায়? ভাবতে ভাবতেই চোখ পড়ল স্তূপ করা বইয়ের দোকানে। ‘বাহ বেশ তো, আমিও আছি!’ দ্রুত গিয়ে বই হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন। হন্যে হয়ে যখন খুঁজছেন, তখনই দোকানির সজোর কাশির আওয়াজ তাঁর কানে ঢুকল। কিছুক্ষণ এড়িয়ে গেলেন। তিনি তো আর চিকিৎসক নন। কিন্তু এবারে দোকানি বেশ রুষ্টভাবেই বললেন, ‘ভালো ফন্দি আঁটছেন মিয়া। খাড়ায়া খাড়ায়াই বইটা সাবাড় করতাছেন।’ একেবারে গুটিয়ে যেতে হলো। দ্রুত সেই স্থান থেকে সরে এসে দাঁড়ালেন আরেক দোকানের সামনে। কাচে ঘেরা সেই দোকানের ভেতরে বেশ চৌকোনা কিছু বাক্স, যার একটির ভেতরে নিজেকে দেখে রীতিমতো চমকে উঠলেন। ‘দারুণ ব্যাপার, এও হয় নাকি!’ কান খাড়া করলেন। শুনলেন তাঁকে নিয়েই আলাপ হচ্ছে। এক বক্তা বলছেন, ‘এই শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ বারবার ফিরে এসেছেন। এ ভূমির মায়ায় তিনি আটকা পড়েছিলেন। এই শাহজাদপুরের গ্রামেগঞ্জে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। এখানে বসেই তিনি লিখেছিলেন ‘ছুটি’-এর মতো ছোটগল্প। সোনার তরী কাব্যের ‘পুরস্কার’, ‘দুই পাখি’সহ বেশ কয়েকটি কবিতা তিনি এখানে বসেই লিখেছিলেন।’
চকিতে মনে পড়ে গেল সব। আহা শাহজাদপুর। এমন ব্রহ্ম মুহূর্তেই সে দোকানের ছোকরা সেলসম্যান এসে যমের মতো দাঁড়াল সামনে। কচি কণ্ঠে ভারিক্কি টেনে প্রশ্ন ছুড়ল—‘কী চাই হ্যাঁ?’ উত্তর দিতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে রবীন্দ্রনাথ বলে বসলেন, ‘শাহজাদপুর’। ‘এটা টিভির দোকান। কোনো শাহজাদপুর নাই’, বলল সেই ছোকরা। এবার একটু ধাতস্থ স্বরে রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘মানে শাহজাদপুর যেতে চাই। খুব ভালোবাসার জায়গা।’ এইটুকু বলে নিজের লেখা পুরস্কার কবিতা থেকে আবৃত্তি শুরু করলেন—‘বহু মানবের প্রেম দিয়ে ঢাকা,/বহু দিবসের সুখে দুখে আঁকা,/লক্ষ যুগের সংগীতে মাখা/সুন্দর ধরাতল।’ আরও কিছুটা এগোবেন ভাবছিলেন। কিন্তু ছোকরার ধৈর্যে কুলাল না—‘থামুন থামুন। কী সব বলছেন। দেখি কোন শাহজাদপুর।’ রবীন্দ্রনাথের চোখের কোণে একটু অশ্রুও জমা হলো। আহা ছোকরাকে যতটা রূঢ় মনে হয়েছিল, ততটা তো নয়। কী মায়ায় ভরা। কথা একটু চ্যাটাং চ্যাটাং বলে ঠিক, কিন্তু হদিস মেলানোর চেষ্টা তো করছে।
অবশেষে শাহজাদপুরের খোঁজ মিলল। কিন্তু মুশকিল হলো যাওয়ার উপায় নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ তো নৌপথ ছাড়া আর কিছুর কথা ভাবতেই পারছেন না। এদিকে নৌপথ তো সব হজম হয়ে গেছে। অগত্যা সেই ছোকরার মতো আরও দু-একজনের সাহায্যে পৌঁছালেন শাহজাদপুরে। সেখানে গিয়ে এদিক হাঁটেন, ওদিক হাঁটেন। যত এগোন ততই সব পরাবাস্তবময় হয়ে ওঠে। যে কুঠিবাড়ি রেখে গিয়েছিলেন গেল যাত্রায়, এ যাত্রায় তার দশা দেখে তিন দিন শুধু কেঁদে কাটালেন। নদী-মাখা গ্রামের দৃশ্যগুলো স্মৃতিতে তো আগেই ঝাপসা ছিল, এবার আরও কেমন যেন হয়ে গেলেন। সব মিলিয়ে তিনি কেমন একটা দমে গেলেন। রাস্তাতেই থাকছেন। কারণ, তাঁরই কুঠিবাড়ি এখন তাঁর নামের জাদুঘর। ফলে সেখানে থাকা বারণ।
রাস্তায় বিচিত্র মানুষের বাস। সেখানে বসে থাকেন, ঘুমান, কেউ কিছু দিলে খানও। কিন্তু ভালো লাগছে। এখনো কোনো শারীরিক হেনস্তার শিকার তো হতে হয়নি। ভাবেন, নাহ, এই পূর্ববঙ্গ এখনো বেশ মায়াময়ই আছে।
দিনটা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১। হঠাৎ রাস্তায় একটা ডাক বেশ কানে লাগল। এক ছোকরা চিৎকার করে রিকশা ডাকছে—‘এই যাবে মহিলা কলেজ।’ ছেলেটা রিকশা পেয়েও গেল। এদিকে রবীন্দ্রনাথ ভাবছেন—এই ছেলে মহিলা কলেজে কী করবে? নিশ্চয় লাইন মারতে যাচ্ছে। আহা ছেলে-মেয়েরা এখনো প্রেম করছে। যাই দেখে আসি। যেই ভাবা সেই কাজ। রবীন্দ্রনাথ গেলেন মহিলা কলেজের সামনে। সেখানে গিয়ে তাঁর চোখ চড়কগাছ। তাঁর নামেই একটা আস্ত বিশ্ববিদ্যালয়। আবেগের আতিশয্যে তিনিও ঢুকে পড়লেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। দেখলেন বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে লাইন ধরে। আর এক শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে। একজন একজন করে ছাত্র এগোচ্ছে, আর ওই শিক্ষক কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দিচ্ছেন। তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন। লাইনে দাঁড়িয়েই জানলেন, ওই শিক্ষক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের। বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব একাই পালন করছেন। নাম—ফারহানা ইয়াসমিন। এদিকে একে একে চৌদ্দজন ছাত্রের চুল কাটা হলো। এবার তাঁর পালা। ফারহানা ইয়াসমিন কাঁচি হাতে ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঘামছেন। শেষে কোনো কিছু না ভেবেই উল্টো দৌড় লাগালেন। পেছন থেকে ডাক এল—এই ছেলে এই ছেলে, ভালো হবে না বলছি।
রবীন্দ্রনাথ ছুটছেন। তাঁর সারা শরীর কাঁপছে। তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছেন। আর ছুটতে ছুটতেই একটা লাইফ সাইজ ছবির ফ্রেম খুঁজছেন। কাছাকাছি কোথাও দেখা পেলে ঢুকে পড়তেন। তাঁর পূর্ববঙ্গ পুনঃভ্রমণের সাধ মিটেছে। আর নয়।
ঘরে ঘরে ছবির ফ্রেমে আটকে থাকতে থাকতে ঠাকুরেরও হাঁফ ধরে গেল। ভাবলেন, যাই একটু ঘুরে আসি। অনেক তো হলো। যেই ভাবা, সেই কাজ। ফট করে নিউমার্কেটের একটি দোকানে টানানো ছবির ফ্রেম থেকে বের হয়ে এলেন। ভাগ্যিস লাইফ সাইজ ছিল ছবিটা। বেরিয়ে একটুক্ষণ খক খক করে কাশলেন। ‘এত ধুলা কোথা থেকে এল; হা পূর্ববঙ্গ, তুমিও!’
মুশকিল একটা হলো বটে। চারপাশে পোশাকের যে ধরন-ধারণ, তার সঙ্গে তাঁরটা একদমই যাচ্ছে না। সব কেমন ফিরিঙ্গি সাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে যাক। ঢাকার প্রতি অবশ্য তাঁর তেমন আকর্ষণ কোনো কালেই ছিল না। কিন্তু ঠিক কোন জায়গায় যেন তাঁর যাওয়ার ছিল, ঠিক মনে করতে পারছেন না। নিজের পুরোনো খাতা-পত্র দেখে যে মিলিয়ে নেবেন, তারও উপায় নেই। এ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় হাঁটছেন। এমন সময় একজনের কণ্ঠ কানে এল—‘চুল দেখছ ব্যাটার?’ ঝট করে তাকালেন, আর সঙ্গে সঙ্গে বুঝলেন, তাঁকে নিয়েই বলা হচ্ছে। সঙ্গে এও বুঝলেন যে, তিনি এরই মধ্যে দর্শনীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছেন। যতটা না পোশাকের কারণে, তারও চেয়ে বেশি, তাঁর চুল-দাঁড়ির কারণে।
একটু আড়ষ্ট হয়ে যেতে হলো। কিন্তু তাঁর তো স্মৃতিতে শান দেওয়াটা জরুরি। কী করা যায়? ভাবতে ভাবতেই চোখ পড়ল স্তূপ করা বইয়ের দোকানে। ‘বাহ বেশ তো, আমিও আছি!’ দ্রুত গিয়ে বই হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন। হন্যে হয়ে যখন খুঁজছেন, তখনই দোকানির সজোর কাশির আওয়াজ তাঁর কানে ঢুকল। কিছুক্ষণ এড়িয়ে গেলেন। তিনি তো আর চিকিৎসক নন। কিন্তু এবারে দোকানি বেশ রুষ্টভাবেই বললেন, ‘ভালো ফন্দি আঁটছেন মিয়া। খাড়ায়া খাড়ায়াই বইটা সাবাড় করতাছেন।’ একেবারে গুটিয়ে যেতে হলো। দ্রুত সেই স্থান থেকে সরে এসে দাঁড়ালেন আরেক দোকানের সামনে। কাচে ঘেরা সেই দোকানের ভেতরে বেশ চৌকোনা কিছু বাক্স, যার একটির ভেতরে নিজেকে দেখে রীতিমতো চমকে উঠলেন। ‘দারুণ ব্যাপার, এও হয় নাকি!’ কান খাড়া করলেন। শুনলেন তাঁকে নিয়েই আলাপ হচ্ছে। এক বক্তা বলছেন, ‘এই শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ বারবার ফিরে এসেছেন। এ ভূমির মায়ায় তিনি আটকা পড়েছিলেন। এই শাহজাদপুরের গ্রামেগঞ্জে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। এখানে বসেই তিনি লিখেছিলেন ‘ছুটি’-এর মতো ছোটগল্প। সোনার তরী কাব্যের ‘পুরস্কার’, ‘দুই পাখি’সহ বেশ কয়েকটি কবিতা তিনি এখানে বসেই লিখেছিলেন।’
চকিতে মনে পড়ে গেল সব। আহা শাহজাদপুর। এমন ব্রহ্ম মুহূর্তেই সে দোকানের ছোকরা সেলসম্যান এসে যমের মতো দাঁড়াল সামনে। কচি কণ্ঠে ভারিক্কি টেনে প্রশ্ন ছুড়ল—‘কী চাই হ্যাঁ?’ উত্তর দিতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে রবীন্দ্রনাথ বলে বসলেন, ‘শাহজাদপুর’। ‘এটা টিভির দোকান। কোনো শাহজাদপুর নাই’, বলল সেই ছোকরা। এবার একটু ধাতস্থ স্বরে রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘মানে শাহজাদপুর যেতে চাই। খুব ভালোবাসার জায়গা।’ এইটুকু বলে নিজের লেখা পুরস্কার কবিতা থেকে আবৃত্তি শুরু করলেন—‘বহু মানবের প্রেম দিয়ে ঢাকা,/বহু দিবসের সুখে দুখে আঁকা,/লক্ষ যুগের সংগীতে মাখা/সুন্দর ধরাতল।’ আরও কিছুটা এগোবেন ভাবছিলেন। কিন্তু ছোকরার ধৈর্যে কুলাল না—‘থামুন থামুন। কী সব বলছেন। দেখি কোন শাহজাদপুর।’ রবীন্দ্রনাথের চোখের কোণে একটু অশ্রুও জমা হলো। আহা ছোকরাকে যতটা রূঢ় মনে হয়েছিল, ততটা তো নয়। কী মায়ায় ভরা। কথা একটু চ্যাটাং চ্যাটাং বলে ঠিক, কিন্তু হদিস মেলানোর চেষ্টা তো করছে।
অবশেষে শাহজাদপুরের খোঁজ মিলল। কিন্তু মুশকিল হলো যাওয়ার উপায় নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ তো নৌপথ ছাড়া আর কিছুর কথা ভাবতেই পারছেন না। এদিকে নৌপথ তো সব হজম হয়ে গেছে। অগত্যা সেই ছোকরার মতো আরও দু-একজনের সাহায্যে পৌঁছালেন শাহজাদপুরে। সেখানে গিয়ে এদিক হাঁটেন, ওদিক হাঁটেন। যত এগোন ততই সব পরাবাস্তবময় হয়ে ওঠে। যে কুঠিবাড়ি রেখে গিয়েছিলেন গেল যাত্রায়, এ যাত্রায় তার দশা দেখে তিন দিন শুধু কেঁদে কাটালেন। নদী-মাখা গ্রামের দৃশ্যগুলো স্মৃতিতে তো আগেই ঝাপসা ছিল, এবার আরও কেমন যেন হয়ে গেলেন। সব মিলিয়ে তিনি কেমন একটা দমে গেলেন। রাস্তাতেই থাকছেন। কারণ, তাঁরই কুঠিবাড়ি এখন তাঁর নামের জাদুঘর। ফলে সেখানে থাকা বারণ।
রাস্তায় বিচিত্র মানুষের বাস। সেখানে বসে থাকেন, ঘুমান, কেউ কিছু দিলে খানও। কিন্তু ভালো লাগছে। এখনো কোনো শারীরিক হেনস্তার শিকার তো হতে হয়নি। ভাবেন, নাহ, এই পূর্ববঙ্গ এখনো বেশ মায়াময়ই আছে।
দিনটা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১। হঠাৎ রাস্তায় একটা ডাক বেশ কানে লাগল। এক ছোকরা চিৎকার করে রিকশা ডাকছে—‘এই যাবে মহিলা কলেজ।’ ছেলেটা রিকশা পেয়েও গেল। এদিকে রবীন্দ্রনাথ ভাবছেন—এই ছেলে মহিলা কলেজে কী করবে? নিশ্চয় লাইন মারতে যাচ্ছে। আহা ছেলে-মেয়েরা এখনো প্রেম করছে। যাই দেখে আসি। যেই ভাবা সেই কাজ। রবীন্দ্রনাথ গেলেন মহিলা কলেজের সামনে। সেখানে গিয়ে তাঁর চোখ চড়কগাছ। তাঁর নামেই একটা আস্ত বিশ্ববিদ্যালয়। আবেগের আতিশয্যে তিনিও ঢুকে পড়লেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। দেখলেন বেশ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে লাইন ধরে। আর এক শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে। একজন একজন করে ছাত্র এগোচ্ছে, আর ওই শিক্ষক কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দিচ্ছেন। তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন। লাইনে দাঁড়িয়েই জানলেন, ওই শিক্ষক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের। বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব একাই পালন করছেন। নাম—ফারহানা ইয়াসমিন। এদিকে একে একে চৌদ্দজন ছাত্রের চুল কাটা হলো। এবার তাঁর পালা। ফারহানা ইয়াসমিন কাঁচি হাতে ভ্রু কুঁচকে দাঁড়িয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঘামছেন। শেষে কোনো কিছু না ভেবেই উল্টো দৌড় লাগালেন। পেছন থেকে ডাক এল—এই ছেলে এই ছেলে, ভালো হবে না বলছি।
রবীন্দ্রনাথ ছুটছেন। তাঁর সারা শরীর কাঁপছে। তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ নিয়ে ভাবছেন। আর ছুটতে ছুটতেই একটা লাইফ সাইজ ছবির ফ্রেম খুঁজছেন। কাছাকাছি কোথাও দেখা পেলে ঢুকে পড়তেন। তাঁর পূর্ববঙ্গ পুনঃভ্রমণের সাধ মিটেছে। আর নয়।
উড়োজাহাজ ভ্রমণ অনেক মানুষেরই পছন্দ। তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো কুমির কিংবা তার জাত ভাই অ্যালিগেটরদের এ ধরনের শখ হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার এক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজগুলোর মাঝখান দিয়ে হেঁটে বেড়ানো অ্যালিগেটরটিকে যারা দেখেছেন তাঁদের এই সন্দেহ মাথায় আসাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।
১ দিন আগেমার্কিন নাগরিক জেরি হিকস গত মঙ্গলবার যখন দরকারি কিছু জিনিসপত্র কিনতে যাচ্ছিলেন তখন কল্পনাও করেননি তাঁর জীবনটা বদলে যেতে চলেছে। দোকানটির পার্কিংয়ে ২০ ডলারের একটি নোট পড়ে থাকতে দেখেন এ সময়। ওটা তুলে নিয়ে খরচ করলেন লটারির টিকিট কিনতে। তাতেই জিতলেন দশ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
৩ দিন আগে২০১৯ সালে দেয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো একটি কলা এক লাখ ২০ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। তখন এটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। শিল্পকর্মটি দিয়ে আসলে কী বোঝানো হয়েছে সেটি নিয়েও শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক।
৪ দিন আগেপৃথিবীতে এমন কিছু প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যেগুলো দেখলে ওই সময় মানব নির্মিত কোনো স্থাপনা বলে বিশ্বাস করা কঠিন! কারণ, এসব স্থাপনার নির্মাণশৈলী একই সঙ্গে জটিল ও বিশাল।
৯ দিন আগে