অনলাইন ডেস্ক
ভালো-মন্দ, উদার-স্বার্থপর, সঠিক-ভুল—এভাবে মানুষকে লেবেল সেঁটে দেওয়ার কাজটা সহজ। কারও আচরণ বিচারে মানুষ সিদ্ধহস্ত। কিন্তু বিজ্ঞানী ফ্রিটজ হ্যাবারের ব্যাপারটা অত সাদা-কালো নয়। ফ্রিটজ হ্যাবার এই দুই প্রান্তের সমসাময়িক হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন—তিনি উদার, নিঃস্বার্থ, একই সঙ্গে তাঁর একটা ভয়ংকর অন্ধকার দিকও আছে। বহু মানুষকে ক্ষুধা থেকে বাঁচতে সহায়তা করেছেন, আবার তিনিই রাসায়নিক অস্ত্রের কারিগর, যে অস্ত্র মৃতের স্তূপ তৈরি করেছিল।
ফ্রিটজ হ্যাবারকে বলা হয় রসায়নের দেবদূত। তিনি একজন জার্মান রসায়নবিদ। ১৮৬৮ সালে প্রুশিয়ার ব্রেসলাউতের একটি অভিজাত ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। ১৮৮৬ সালে বিখ্যাত রসায়নবিদ রবার্ট বুনসেন এবং কার্ল লিবারম্যানের নির্দেশনায় রসায়নে গবেষণা শুরু করেন। ১৮৯১ সালে ফ্রেডরিক উইলহেম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেন। ১৮৯৪ সালে কার্লসরুহে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন।
১৮৯৪ এবং ১৯১১ সালের মধ্যে রসায়নবিদ কার্ল বোশের সঙ্গে কাজ করেছিলেন ফ্রিটজ হ্যাবার। হ্যাবার-বশ নামে যে বিখ্যাত প্রক্রিয়া সেটির বিকাশ করেছিলেন এই দুজনে। এটি একটি বৈপ্লবিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে হাইড্রোজেন এবং নাইট্রোজেন থেকে সরাসরি অ্যামোনিয়া সংশ্লেষণ করা যায়। অ্যামোনিয়ার প্রধান উপযোগিতা পটাশিয়াম এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উৎপাদনে। এগুলো ব্যবহৃত হয় মূলত সার হিসেবে। হ্যাবার-বশ প্রক্রিয়া বিকাশের আগে, অ্যামোনিয়া তৈরির সহজ বা সস্তা কোনো উপায় কারও জানা ছিল না।
হ্যাবার এবং বশ যৌথভাবে বিকশিত প্রক্রিয়ার কল্যাণেই শিল্প পর্যায়ে সার তৈরি সম্ভব হয়েছে। পটাশিয়াম এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবনের ফলে ফসল উৎপাদন রাতারাতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থান সম্ভব করেছে এই উদ্ভাবন।
এই বৈপ্লবিক উদ্ভাবনের জন্য ফ্রিটজ হ্যাবার ১৯১৮ সালে রসায়নে নোবেল পান। হ্যাবার-বশ প্রক্রিয়া এখনো অ্যামোনিয়া তৈরির জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের অর্ধেক খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত সারের পেছনে রয়েছে এই অপরিহার্য পদ্ধতি। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, হ্যাবারের উদ্ভাবনের জন্যই পৃথিবীর পাঁচজনের দুজন খেয়ে বেঁচে থাকতে পারছে।
হ্যাবারের কাজকর্ম কিন্তু দ্রুতই কুৎসিত মোড় নিয়েছে। এই জার্মান রসায়নবিদের গল্প এত ভালো উদ্ভাবনের মধ্যেই শেষ হলে মানুষ তাঁকে নায়ক হিসেবে মনে রাখত। কিন্তু তাঁর জীবনের গতিপথ একটি অন্ধকার মোড় নেয়, যা ফ্রিটজ হ্যাবারকে ‘রাসায়নিক যুদ্ধের জনক’ অভিধা এনে দেয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ফ্রিটজ হ্যাবার জার্মান সমর মন্ত্রণালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। এর আগেই অবশ্য হ্যাবার ধর্ম পরিবর্তন করেন। ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে লুথারানিজম গ্রহণ করেন।
লুথারানিজম হলো প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানের অন্যতম বৃহৎ একটি শাখা। ষোলো শতকের জার্মান ধর্মগুরু ও সংস্কারক মার্টিন লুথার কিং এই মতবাদের প্রবক্তা। তিনি ক্যাথলিক চার্চের ধর্মতত্ত্ব ও ধর্মচর্চার ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেন, পরবর্তীতে যা প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কার আন্দোলন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
অবশ্য ফ্রিটজ হ্যাবারের ধর্মান্তরের কারণ খুব একটা স্পষ্ট নয়। ওই সময় জার্মানিতে ইহুদি-বিরোধিতা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। অনেকে ধারণা করেন, ফ্রিটজ হ্যাবার হয়তো আরও ভালো একাডেমিক অবস্থান পাওয়ার আশায় ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।
তবে এই রসায়নবিদ খাঁটি দেশপ্রেমিক ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি ক্লোরিন গ্যাসের উন্নয়নে কাজ করা দলের নেতৃত্ব দেন। এই গ্যাস অন্যান্য প্রাণঘাতী গ্যাসের সঙ্গে ট্রেঞ্চ ফাইটিংয়ে ব্যবহার করা হতো।
বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে হ্যাবার বুঝতে পারেন, কম ঘনত্বের বিষাক্ত গ্যাসের মধ্যে দীর্ঘ সময় কেউ অবস্থান করলে তার ওপর ধীরে ধীরে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অর্থাৎ এটিকে স্লো পয়জনিং বলা যেতে পারে।
এই সূত্রটি ‘হ্যাবারের নিয়ম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। যুদ্ধে গ্যাসের ব্যবহার তাতে উৎসাহিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর হ্যাবার জার্মানির জন্য রাসায়নিক অস্ত্রের উন্নয়নে গোপনে কাজ চালিয়ে যান।
কাইজার উইলহেম ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বও গ্রহণ করেন হ্যাবার। ১৯৩১ সালের মধ্যে জার্মান জাতীয়তাবাদের বাড়বাড়ন্ত চলতে থাকে। ইহুদি একাডেমিক, বিজ্ঞানী, গবেষকেরা ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েন। কাইজার উইলহেম ইনস্টিটিউটকে সব ইহুদিকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। হ্যাবার এতে ক্ষুব্ধ হন। তিনি তাঁর ইহুদি সহকর্মীদের বরখাস্ত বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছিলেন যতক্ষণ না তাঁরা অন্য কোনো চাকরি খুঁজে পান।
১৯৩৩ সালের ৩০ এপ্রিল ফ্রিটজ হ্যাবার ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি একই বছর ব্রিটিশ রসায়নবিদদের সহায়তায় বার্লিন ত্যাগ করেন।
এরই মধ্যে হ্যাবারের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছিল। ১৯৩৪ সালে পঁয়ষট্টি বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি। ফ্রিটজ হ্যাবারের মৃত্যুর পরে জার্মানির নাৎসি বাহিনী তাঁর উদ্ভাবিত রাসায়নিক পদ্ধতির ভয়ংকর ব্যবহার করেছে। তাঁর গবেষণার ফল কাজে লাগিয়ে হিটলারের গবেষকেরা জাইক্লোন বি গ্যাস উদ্ভাবন করে। এই বিষাক্ত গ্যাস দিয়েই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে হ্যাবারেরই বন্ধু ও পরিচিতসহ লাখ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়।
সবশেষে বলা যায়, ফ্রিটজ হ্যাবার সেই প্রতিভা যিনি বিশ্বের ক্ষুধা মেটাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আবার বলা যেতে পারে, তিনি এমন এক দুষ্টু বিজ্ঞানী যিনি বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করেছিলেন। এর দায় কি তিনি এড়াতে পারেন। বেঁচে থাকলে তিনি কি তাঁর উদ্ভাবন দিয়ে লাখ লাখ মানুষ হত্যার ঘটনা দেখে দুঃখ পেতেন, যেমনটি আইনস্টাইন হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনার পর নিজের উদ্ভাবনের জন্য খেদ প্রকাশ করেছিলেন।
ভালো-মন্দ, উদার-স্বার্থপর, সঠিক-ভুল—এভাবে মানুষকে লেবেল সেঁটে দেওয়ার কাজটা সহজ। কারও আচরণ বিচারে মানুষ সিদ্ধহস্ত। কিন্তু বিজ্ঞানী ফ্রিটজ হ্যাবারের ব্যাপারটা অত সাদা-কালো নয়। ফ্রিটজ হ্যাবার এই দুই প্রান্তের সমসাময়িক হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন—তিনি উদার, নিঃস্বার্থ, একই সঙ্গে তাঁর একটা ভয়ংকর অন্ধকার দিকও আছে। বহু মানুষকে ক্ষুধা থেকে বাঁচতে সহায়তা করেছেন, আবার তিনিই রাসায়নিক অস্ত্রের কারিগর, যে অস্ত্র মৃতের স্তূপ তৈরি করেছিল।
ফ্রিটজ হ্যাবারকে বলা হয় রসায়নের দেবদূত। তিনি একজন জার্মান রসায়নবিদ। ১৮৬৮ সালে প্রুশিয়ার ব্রেসলাউতের একটি অভিজাত ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। ১৮৮৬ সালে বিখ্যাত রসায়নবিদ রবার্ট বুনসেন এবং কার্ল লিবারম্যানের নির্দেশনায় রসায়নে গবেষণা শুরু করেন। ১৮৯১ সালে ফ্রেডরিক উইলহেম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট করেন। ১৮৯৪ সালে কার্লসরুহে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন।
১৮৯৪ এবং ১৯১১ সালের মধ্যে রসায়নবিদ কার্ল বোশের সঙ্গে কাজ করেছিলেন ফ্রিটজ হ্যাবার। হ্যাবার-বশ নামে যে বিখ্যাত প্রক্রিয়া সেটির বিকাশ করেছিলেন এই দুজনে। এটি একটি বৈপ্লবিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে হাইড্রোজেন এবং নাইট্রোজেন থেকে সরাসরি অ্যামোনিয়া সংশ্লেষণ করা যায়। অ্যামোনিয়ার প্রধান উপযোগিতা পটাশিয়াম এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উৎপাদনে। এগুলো ব্যবহৃত হয় মূলত সার হিসেবে। হ্যাবার-বশ প্রক্রিয়া বিকাশের আগে, অ্যামোনিয়া তৈরির সহজ বা সস্তা কোনো উপায় কারও জানা ছিল না।
হ্যাবার এবং বশ যৌথভাবে বিকশিত প্রক্রিয়ার কল্যাণেই শিল্প পর্যায়ে সার তৈরি সম্ভব হয়েছে। পটাশিয়াম এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবনের ফলে ফসল উৎপাদন রাতারাতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থান সম্ভব করেছে এই উদ্ভাবন।
এই বৈপ্লবিক উদ্ভাবনের জন্য ফ্রিটজ হ্যাবার ১৯১৮ সালে রসায়নে নোবেল পান। হ্যাবার-বশ প্রক্রিয়া এখনো অ্যামোনিয়া তৈরির জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের অর্ধেক খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত সারের পেছনে রয়েছে এই অপরিহার্য পদ্ধতি। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, হ্যাবারের উদ্ভাবনের জন্যই পৃথিবীর পাঁচজনের দুজন খেয়ে বেঁচে থাকতে পারছে।
হ্যাবারের কাজকর্ম কিন্তু দ্রুতই কুৎসিত মোড় নিয়েছে। এই জার্মান রসায়নবিদের গল্প এত ভালো উদ্ভাবনের মধ্যেই শেষ হলে মানুষ তাঁকে নায়ক হিসেবে মনে রাখত। কিন্তু তাঁর জীবনের গতিপথ একটি অন্ধকার মোড় নেয়, যা ফ্রিটজ হ্যাবারকে ‘রাসায়নিক যুদ্ধের জনক’ অভিধা এনে দেয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ফ্রিটজ হ্যাবার জার্মান সমর মন্ত্রণালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রধান নিযুক্ত হন। এর আগেই অবশ্য হ্যাবার ধর্ম পরিবর্তন করেন। ইহুদি ধর্ম ত্যাগ করে লুথারানিজম গ্রহণ করেন।
লুথারানিজম হলো প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টানের অন্যতম বৃহৎ একটি শাখা। ষোলো শতকের জার্মান ধর্মগুরু ও সংস্কারক মার্টিন লুথার কিং এই মতবাদের প্রবক্তা। তিনি ক্যাথলিক চার্চের ধর্মতত্ত্ব ও ধর্মচর্চার ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেন, পরবর্তীতে যা প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কার আন্দোলন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
অবশ্য ফ্রিটজ হ্যাবারের ধর্মান্তরের কারণ খুব একটা স্পষ্ট নয়। ওই সময় জার্মানিতে ইহুদি-বিরোধিতা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। অনেকে ধারণা করেন, ফ্রিটজ হ্যাবার হয়তো আরও ভালো একাডেমিক অবস্থান পাওয়ার আশায় ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।
তবে এই রসায়নবিদ খাঁটি দেশপ্রেমিক ছিলেন। যুদ্ধের সময় তিনি ক্লোরিন গ্যাসের উন্নয়নে কাজ করা দলের নেতৃত্ব দেন। এই গ্যাস অন্যান্য প্রাণঘাতী গ্যাসের সঙ্গে ট্রেঞ্চ ফাইটিংয়ে ব্যবহার করা হতো।
বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে হ্যাবার বুঝতে পারেন, কম ঘনত্বের বিষাক্ত গ্যাসের মধ্যে দীর্ঘ সময় কেউ অবস্থান করলে তার ওপর ধীরে ধীরে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অর্থাৎ এটিকে স্লো পয়জনিং বলা যেতে পারে।
এই সূত্রটি ‘হ্যাবারের নিয়ম’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। যুদ্ধে গ্যাসের ব্যবহার তাতে উৎসাহিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর হ্যাবার জার্মানির জন্য রাসায়নিক অস্ত্রের উন্নয়নে গোপনে কাজ চালিয়ে যান।
কাইজার উইলহেম ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বও গ্রহণ করেন হ্যাবার। ১৯৩১ সালের মধ্যে জার্মান জাতীয়তাবাদের বাড়বাড়ন্ত চলতে থাকে। ইহুদি একাডেমিক, বিজ্ঞানী, গবেষকেরা ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েন। কাইজার উইলহেম ইনস্টিটিউটকে সব ইহুদিকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। হ্যাবার এতে ক্ষুব্ধ হন। তিনি তাঁর ইহুদি সহকর্মীদের বরখাস্ত বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছিলেন যতক্ষণ না তাঁরা অন্য কোনো চাকরি খুঁজে পান।
১৯৩৩ সালের ৩০ এপ্রিল ফ্রিটজ হ্যাবার ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি একই বছর ব্রিটিশ রসায়নবিদদের সহায়তায় বার্লিন ত্যাগ করেন।
এরই মধ্যে হ্যাবারের স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছিল। ১৯৩৪ সালে পঁয়ষট্টি বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি। ফ্রিটজ হ্যাবারের মৃত্যুর পরে জার্মানির নাৎসি বাহিনী তাঁর উদ্ভাবিত রাসায়নিক পদ্ধতির ভয়ংকর ব্যবহার করেছে। তাঁর গবেষণার ফল কাজে লাগিয়ে হিটলারের গবেষকেরা জাইক্লোন বি গ্যাস উদ্ভাবন করে। এই বিষাক্ত গ্যাস দিয়েই কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে হ্যাবারেরই বন্ধু ও পরিচিতসহ লাখ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়।
সবশেষে বলা যায়, ফ্রিটজ হ্যাবার সেই প্রতিভা যিনি বিশ্বের ক্ষুধা মেটাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আবার বলা যেতে পারে, তিনি এমন এক দুষ্টু বিজ্ঞানী যিনি বিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করেছিলেন। এর দায় কি তিনি এড়াতে পারেন। বেঁচে থাকলে তিনি কি তাঁর উদ্ভাবন দিয়ে লাখ লাখ মানুষ হত্যার ঘটনা দেখে দুঃখ পেতেন, যেমনটি আইনস্টাইন হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনার পর নিজের উদ্ভাবনের জন্য খেদ প্রকাশ করেছিলেন।
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
১ দিন আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
৩ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে