যে হোটেলে বুকিং দিতে পারবেন না কখনোই

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১০: ০৮
Thumbnail image

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের রাজধানী মেলবোর্নের এক সড়কের পাশে হোটেল ইস্টলিংকের অবস্থান। এ হোটেলে কখনোই থাকার জন্য একটি কামরা পাওয়া সম্ভব হবে না আপনার পক্ষে। কারণ দেখে একটি হোটেলের মতো মনে হলেও এটি আসলে কোনো হোটেলই নয়। 

হোটেল ইস্টলিংক আদপে একটি ভাস্কর্য। স্থানীয় শিল্পী কলাম মর্টনের নকশা করা হোটেল ইস্টলিংকের উদ্বোধন হয় ২০০৭ সালে। কিন্তু ১৬ বছর পরও এটি এই পথে যাতায়াত করা গাড়ির আরোহীদের বিভ্রান্ত করে।

রাতের বেলা বাতিও জ্বলতে দেখবেন হোটেলে। ছবি: ফেসবুকহোটেল ইস্টলিংক অবশ্য খুব বড় কোনো কাঠামো নয়। উচ্চতা ২০ মিটার বা ৬৫ ফুটের মতো, চওড়ায় ১২ মিটার বা ৩৯ ফুট। তবে এর পাশ দিয়ে যখন দ্রুতগতিতে কোনো গাড়ি বা মোটরসাইকেল যায় এর চালক বা যাত্রীদের বোঝার সাধ্য নেই এটি সত্যিকারের কোনো হোটেল নয়। আরও বেশি বিভ্রান্তি ছড়ায় রাতে। কারণ তখন হোটেলের কামরা বলে যে জিনিসগুলোকে মনে হয় সেখানকার কোনো কোনোটিতে বাতিও জ্বলতে দেখা যায়। এটা দেখে যে কারও মনে হবে ভেতরে মানুষ আছেন। চলতি পথে এক নজর দেখা এই হোটেলে মুগ্ধ কেউ কেউ পরে ইন্টারনেটে এখানকার একটি কামরার বুকিং দিতে গিয়েই বোকা বনে গেছেন।

কারণ হোটেলটি ইস্টলিংকে কোনো রুমই নেই। এমনকি এতে প্রবেশেরও সুযোগ নেই। এটি শোভাবর্ধনকারী একটি ভাস্কর্য ছাড়া আর কিছু নয়।

‘গাড়ির আরোহীদের কাছে একে একটি হোটেল বলেই মনে হবে। তবে সময়ের সঙ্গে থিম পার্ক কিংবা ফিল্মের সেট থেকে চলে আসা একটা কিছু বলে একে বিবেচনা করবেন মানুষ।’ নির্মাণ শেষে বলেছিলেন শিল্পী কলাম মর্টন। কিন্তু মজার ঘটনা দেড় যুগেরও বেশি পেরিয়ে গেলেও রাস্তাটা পেরোনো গাড়ির আরোহীদের বিভ্রান্ত করে মর্টনের ভাস্কর্য।

হোটেল তথা ভাস্কর্যটির উচ্চতা ২০ মিটার বা ৬৫ ফুটের মতো। ছবি: ফেসবুকপ্রথম দেখায় বড় লাল সাইনে ‘হোটেল’ লেখা আয়তাকার দালানটিকে সাধারণই মনে হবে আপনার। তবে একটু ভালোভাবে খেয়াল করলেই বুঝবেন দেখে যা মনে হচ্ছে এটি আসলে তা নয়। তা ছাড়া খোলা একটি মাঠের মধ্যে একাকী দাঁড়িয়ে আছে কাঠামোটি। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়বে আপনার মনে। একপর্যায়ে বুঝতে পাবেন এক শিল্পীর করা নকশায় দৃষ্টিবিভ্রমের শিকার হয়েছেন।

আশ্চর্য এই ভাস্কর্যের দেখা পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে মেলবোর্নের ডানডেনংয়ের পাশের ইস্টলিংক টোল রোডে। ইস্টলিংক আর্ট স্কালপচার পার্কের অংশ হিসেবে ইস্পাত, কংক্রিট ও কাচ দিয়ে তৈরি করা হয় এটি। নির্মাণে খরচ হয় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ডলার (এখনকার হিসেবে ৬ কোটি ৯৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা)।  

প্রথম দেখায় বড় লাল সাইনে ‘হোটেল’ লেখাটি শোভা পাওয়া আয়তাকার দালানটিকে সাধারণই মনে হবে আপনার। ছবি: ফেসবুকহোটেল ইস্টলিংক ফ্যান সাইট সূত্র জানা যায়, প্রচুর সংখ্যায় মানুষ হোটেলটির রুম ভাড়া, রুম খালি আছে কিনা কিংবা পার্কিংয়ের কী অবস্থা জানতে যোগাযোগ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাঙ্ক ব্যান্ড ভায়োলেন্ট ফেমসের ২০১৯ সালের অ্যালবাম হোটেল লাস্ট রিসোর্ট অ্যালবামের কভারে স্থান পায় হোটেলটি।

ট্রিপ এডভাইজরে একজন এর রিভিও করেছেন এভাবে, একে প্যারালাল ইউনিভার্সের কিছু একটা বলে মনে হয়। নকল হোটেলে বেড পাওয়ার চেষ্টা করবেন না কখনো। হোটেল ইস্টলিংক অতিথি গ্রহণ করে না, সত্যি বলতে কখনো কেউ থাকেইনি এখানে।

সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল, ডেইলি মেইল, আর্ট সিলেক্ট ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত