সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন, ঢাকা
কিছুদিন আগে নেটফ্লিক্সে ‘এনোলা হোমস’ নামে একটি সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তি মুক্তি পেয়েছে। না, সিনেমা নিয়ে কথা হবে না এখানে। তবে সিনেমার অন্যতম চরিত্র সারা চ্যাপম্যানকে নিয়ে কথা বলা যায়। তিনি অবশ্য শুধু এই সিনেমার চরিত্র নন, ইতিহাস রচনাকারী একজন নারীও বটে। হ্যাঁ, সত্যিকারের মানুষ ছিলেন তিনি। যিনি কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন।
সালটা ১৮৮৮। সারার বয়স তখন মাত্র ১৯। কাজ করতেন লন্ডনের ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে নামের একটি ম্যাচ প্রস্তুতকারক কারখানায়। তিনি ছিলেন বুকার। এটা-সেটা বইয়ে লিপিবদ্ধ করা ছিল তাঁর কাজ। সেই সুবাদে কারখানার অন্য মেয়েদের তুলনায় বেতন একটু বেশিই ছিল সারার। কিন্তু সারা বুঝতে পেরেছিলেন, অন্য মেয়েদের সঙ্গে ইনসাফ হচ্ছে না। বাকিরা অতিরিক্ত সময় কাজ করেও কম বেতন পেতেন। তাঁদের জন্য কাজের পরিবেশ ছিল ভয়ানক, ছিল অন্যায়ভাবে মেয়েদের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের প্রক্রিয়া। ম্যাচ তৈরিতে যে সাদা ফসফরাস ব্যবহার করা হতো, সেটি মারাত্মক। কর্মচারীদের ‘ফসি জ’ নামের রোগ হতো। এতে মুখ বাঁকা হয়ে ঝুলে যেত চোয়াল। নিরাপদ কাজের পরিবেশ না থাকাটা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে-তে কর্মরত নারীদের ভাবিয়ে তুলেছিল।
এই ম্যাচ গার্লদের সাহায্য করেছিলেন অ্যানি বেসান্ট নামের এক নারী। তিনি ছিলেন নারী অধিকার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। অ্যানি এই ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মের মেয়েদের পক্ষে লিখেছিলেন। তাঁর লেখা পড়ে অনেক সাধারণ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির ম্যাচ বয়কট করেছিলেন।
৫ জুলাই সারা এবং তাঁর সঙ্গীদের নেতৃত্বে ১ হাজার ৪০০ নারী সেই কারখানা ত্যাগ করেন। নারীদের এই হরতালের যে কমিটি গঠন করা হয়, সেই কমিটির পাঁচ সদস্যের অন্যতম ছিলেন সারা চ্যাপম্যান। এর পরদিন সারা, মিসেস কামিংস ও মিসেস নউলস প্রায় ২০০ নারীকে নিয়ে অ্যানির সঙ্গে দেখা করতে যান। অ্যানির সঙ্গে এই সাক্ষাৎ পরবর্তী সময়ে তাঁদের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ করে দেয়। এরপর সারারা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মের পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের শর্ত উত্থাপনের সুযোগ পান। সব মেয়েকেই ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে-তে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার শর্ত ছাড়াও ছিল পুরুষদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং কাজের পরিবেশ নিরাপদ করা। সেই সঙ্গে সব ধরনের জরিমানার পদ্ধতি বাতিলের জন্যও বলা হয়েছিল। তাঁরা সফল হয়েছিলেন।
বিয়ের আগ পর্যন্ত সারা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে কারখানায় বুকার হিসেবেই কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন দা ইউনিয়ন অব উইমেন ম্যাচ মেকারের (টিইউসি) প্রথম প্রতিনিধি।
নারীদের জন্য তাঁর ছোট ছোট ভাবনা যে ইতিহাস গড়ে দিতে পেরেছিল, তা কি তিনি আগে থেকে জানতেন?
১৯৪৫ সালে ৮৩ বছর বয়সে মারা যান সারা চ্যাপম্যান। জানতেই পারেননি, এরপর কত কিছু হয়ে গেছে পৃথিবীতে। নারীরা এগিয়েছে আরও।
তথ্যসূত্র: ইস্ট অ্যান্ড উইমেনস মিউজিয়াম, পিপলস হিস্ট্রি মিউজিয়াম
কিছুদিন আগে নেটফ্লিক্সে ‘এনোলা হোমস’ নামে একটি সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তি মুক্তি পেয়েছে। না, সিনেমা নিয়ে কথা হবে না এখানে। তবে সিনেমার অন্যতম চরিত্র সারা চ্যাপম্যানকে নিয়ে কথা বলা যায়। তিনি অবশ্য শুধু এই সিনেমার চরিত্র নন, ইতিহাস রচনাকারী একজন নারীও বটে। হ্যাঁ, সত্যিকারের মানুষ ছিলেন তিনি। যিনি কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন।
সালটা ১৮৮৮। সারার বয়স তখন মাত্র ১৯। কাজ করতেন লন্ডনের ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে নামের একটি ম্যাচ প্রস্তুতকারক কারখানায়। তিনি ছিলেন বুকার। এটা-সেটা বইয়ে লিপিবদ্ধ করা ছিল তাঁর কাজ। সেই সুবাদে কারখানার অন্য মেয়েদের তুলনায় বেতন একটু বেশিই ছিল সারার। কিন্তু সারা বুঝতে পেরেছিলেন, অন্য মেয়েদের সঙ্গে ইনসাফ হচ্ছে না। বাকিরা অতিরিক্ত সময় কাজ করেও কম বেতন পেতেন। তাঁদের জন্য কাজের পরিবেশ ছিল ভয়ানক, ছিল অন্যায়ভাবে মেয়েদের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের প্রক্রিয়া। ম্যাচ তৈরিতে যে সাদা ফসফরাস ব্যবহার করা হতো, সেটি মারাত্মক। কর্মচারীদের ‘ফসি জ’ নামের রোগ হতো। এতে মুখ বাঁকা হয়ে ঝুলে যেত চোয়াল। নিরাপদ কাজের পরিবেশ না থাকাটা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে-তে কর্মরত নারীদের ভাবিয়ে তুলেছিল।
এই ম্যাচ গার্লদের সাহায্য করেছিলেন অ্যানি বেসান্ট নামের এক নারী। তিনি ছিলেন নারী অধিকার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। অ্যানি এই ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মের মেয়েদের পক্ষে লিখেছিলেন। তাঁর লেখা পড়ে অনেক সাধারণ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির ম্যাচ বয়কট করেছিলেন।
৫ জুলাই সারা এবং তাঁর সঙ্গীদের নেতৃত্বে ১ হাজার ৪০০ নারী সেই কারখানা ত্যাগ করেন। নারীদের এই হরতালের যে কমিটি গঠন করা হয়, সেই কমিটির পাঁচ সদস্যের অন্যতম ছিলেন সারা চ্যাপম্যান। এর পরদিন সারা, মিসেস কামিংস ও মিসেস নউলস প্রায় ২০০ নারীকে নিয়ে অ্যানির সঙ্গে দেখা করতে যান। অ্যানির সঙ্গে এই সাক্ষাৎ পরবর্তী সময়ে তাঁদের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ করে দেয়। এরপর সারারা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মের পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের শর্ত উত্থাপনের সুযোগ পান। সব মেয়েকেই ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে-তে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার শর্ত ছাড়াও ছিল পুরুষদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং কাজের পরিবেশ নিরাপদ করা। সেই সঙ্গে সব ধরনের জরিমানার পদ্ধতি বাতিলের জন্যও বলা হয়েছিল। তাঁরা সফল হয়েছিলেন।
বিয়ের আগ পর্যন্ত সারা ব্রায়ান্ট অ্যান্ড মে কারখানায় বুকার হিসেবেই কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন দা ইউনিয়ন অব উইমেন ম্যাচ মেকারের (টিইউসি) প্রথম প্রতিনিধি।
নারীদের জন্য তাঁর ছোট ছোট ভাবনা যে ইতিহাস গড়ে দিতে পেরেছিল, তা কি তিনি আগে থেকে জানতেন?
১৯৪৫ সালে ৮৩ বছর বয়সে মারা যান সারা চ্যাপম্যান। জানতেই পারেননি, এরপর কত কিছু হয়ে গেছে পৃথিবীতে। নারীরা এগিয়েছে আরও।
তথ্যসূত্র: ইস্ট অ্যান্ড উইমেনস মিউজিয়াম, পিপলস হিস্ট্রি মিউজিয়াম
দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে গত বছর। বছরটি নারীর জন্য ছিল অম্ল-মধুর। যে বিষয়টি বলার তা হলো, বিভিন্ন পদক্ষেপ, আইন, শাস্তি—কোনো কিছুই নারীর প্রতি সহিংসতা আর নির্যাতন বন্ধ করতে পারছে না।
৪ দিন আগেজামেলা খাতুনের বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। অনেক আগেই কর্মশক্তি হারিয়েছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। কোটরাগত দুচোখ তাঁর সর্বস্ব হারানোর বিশদ উপাখ্যান। স্বামী সমেজ মিয়াকে হারিয়েছেন এক যুগ আগে। যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। মানসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার..
৪ দিন আগেআমার বয়স ১৮ বছর, স্বামীর ৪৫। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছিল দেড় বছর আগে। আমার ননদ বিয়ের সূত্রে অন্য জেলায় থাকে এবং পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলায়। নানা রকম মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি গত দেড় বছরে। আমার ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয়নি তারা। বাড়ির একটি রুম নিয়ে পারলার দিয়েছিলাম...
৪ দিন আগেএকজন বন্দী কারাগারে থেকে কিসের বিনিময়ে ভালো সেবা পেতে পারেন? অনেকের মনে ঘুরতে পারে এর অনেক উত্তর। কিন্তু যদি শোনেন, এই ‘বিনিময়’ সেই বন্দীর পরিবারকে দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রস্তাব! অনেকে হোঁচট খাবেন। তেমনই এক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন
৪ দিন আগে