অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
বয়ঃসন্ধিকালের রোমান্টিক সম্পর্কে নির্যাতনের ঘটনা পুরো বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা প্রজনন, যৌনস্বাস্থ্যসহ স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করছে। দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো, এটি পুরো বিশ্বেই সহিংসতার সঙ্গে সংঘটিত হচ্ছে। এর নামকরণ করা হয়েছে টিন ডেটিং ভায়োলেন্স। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকালীন ডেটিংয়ের সহিংসতা।
ডেটিং শব্দটি ব্যক্তি এবং বিভিন্ন সমাজে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়। এর সঙ্গে যৌন সহিংসতার সম্পৃক্ততা থাকে। এই শব্দ এখনো আমাদের সমাজে নতুন। প্রশ্ন হলো, রোমান্টিক আন্তসম্পর্কে একজন নির্যাতনকারী সঙ্গী কেন নির্যাতনের পন্থা বেছে নেয়?
মনস্তাত্ত্বিক গবেষণালব্ধ উপাত্ত বলছে, ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ১৮ বছরের কম বয়সীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে সহিংস আচরণের প্রবণতা বাড়ছে। দৈহিক, মনস্তাত্ত্বিক ও যৌন নির্যাতনের বাইরে এটি সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সংকট তৈরি করে। ফলে এই বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করে মানুষটি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠেন, তখনো তিনি এই নির্যাতনের অদৃশ্য জাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকেন। লক্ষ করার বিষয় হলো, অনেকে বারবার ভুল সম্পর্কে জড়ান, প্রতিবারই ভুল সিদ্ধান্ত নেন এবং নির্যাতকের খপ্পরে পড়েন। ফলে ভুক্তভোগীর এমন এক মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আসে যে তিনি একই ধরনের নির্যাতনকারী মানসিকতার মানুষের সঙ্গেই যুক্ত হন। তীব্র মাত্রায় ধর্ষণ থেকে শুরু করে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, গর্ভপাত এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত এই ঘটনার পরিণতি হতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমের অগ্রগতির কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ই-মেইল পাসওয়ার্ডের আদান-প্রদানের মতো ঘটনা এ ধরনের ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
যৌনতৃপ্তি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া এ ধরনের নির্যাতনের উদ্দেশ্য।
পরিসংখ্যান জেনে নিন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া নারীদের ২৪ শতাংশ তাঁদের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সে রোমান্টিক সম্পর্কে শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫৯ শতাংশ বিগত ১২ মাসে এ ধরনের সহিংসতার রিপোর্ট করেছেন। তাঁদের ৬০ শতাংশ মানসিক, ১৮ শতাংশ দৈহিক এবং ১৮ শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার। এদিকে সাইবার নির্যাতনের শিকার
বয়ঃসন্ধিকালীন মানুষের ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ। এ ধরনের সমস্যার কথা বিগত এক দশকে বাংলাদেশে খুব বেশি শোনা যায়নি। অবাধ ইন্টারনেটের সুবিধায় এখন এ সমস্যা দৃশ্যমান। এ ছাড়া করোনা অতিমারির পর বেড়ে যাওয়া লৈঙ্গিক সহিংসতায় নারীরা অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীরা এতে আক্রান্ত হচ্ছেন একই জনগোষ্ঠীর পুরুষের তুলনায় বেশি।
প্রতিটি সমাজ তার নিজস্ব লেন্সের মাধ্যমে মানুষকে সংজ্ঞায়নের চেষ্টা করে। যেখানেই এর ব্যত্যয় ঘটে, সেখানেই নেমে আসে নির্যাতন।
এতে নিম্ন আয়ের মানুষ ভোগান্তির শিকার হয় বেশি। খেয়াল করার বিষয় হলো, বয়ঃসন্ধিকালীন নারী তাঁর বেশি বয়সী কারও সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কে জড়ালে নারীটির নির্যাতিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। গবেষণালব্ধ উপাত্ত বলছে, সম্পর্কে বয়সের পার্থক্য দুই বছরের বেশি হলে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং অনিরাপদ যৌনচর্চা, যৌন রোগের প্রবণতা ইত্যাদি বেড়ে যায়।
এসব কারণে বয়ঃসন্ধিতে নারীর গর্ভধারণ ও যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ব্যাপক বেড়েছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর এ ধরনের যৌন নির্যাতন নেতিবাচকভাবে যৌনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে, নেশায় আসক্তের হার বাড়ে এবং স্কুল থেকে ড্রপআউটের সংখ্যা বাড়ে। এতে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক আয়ের সক্ষমতা কমেছে এবং হত্যার প্রবণতা, বিশেষ করে নারীদের হত্যা করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে যত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেগুলোর ৭ শতাংশ করে ১১ থেকে ১৮ বছরের এবং ১৫ শতাংশ করে ১৯ থেকে ২৪ বছর বয়সের নারীর সঙ্গীরা।
মা-বাবা যা করবেন
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ
বয়ঃসন্ধিকালের রোমান্টিক সম্পর্কে নির্যাতনের ঘটনা পুরো বিশ্বে মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা প্রজনন, যৌনস্বাস্থ্যসহ স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করছে। দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো, এটি পুরো বিশ্বেই সহিংসতার সঙ্গে সংঘটিত হচ্ছে। এর নামকরণ করা হয়েছে টিন ডেটিং ভায়োলেন্স। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকালীন ডেটিংয়ের সহিংসতা।
ডেটিং শব্দটি ব্যক্তি এবং বিভিন্ন সমাজে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়। এর সঙ্গে যৌন সহিংসতার সম্পৃক্ততা থাকে। এই শব্দ এখনো আমাদের সমাজে নতুন। প্রশ্ন হলো, রোমান্টিক আন্তসম্পর্কে একজন নির্যাতনকারী সঙ্গী কেন নির্যাতনের পন্থা বেছে নেয়?
মনস্তাত্ত্বিক গবেষণালব্ধ উপাত্ত বলছে, ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ১৮ বছরের কম বয়সীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে সহিংস আচরণের প্রবণতা বাড়ছে। দৈহিক, মনস্তাত্ত্বিক ও যৌন নির্যাতনের বাইরে এটি সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক সংকট তৈরি করে। ফলে এই বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করে মানুষটি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠেন, তখনো তিনি এই নির্যাতনের অদৃশ্য জাঁতাকলে পিষ্ট হতে থাকেন। লক্ষ করার বিষয় হলো, অনেকে বারবার ভুল সম্পর্কে জড়ান, প্রতিবারই ভুল সিদ্ধান্ত নেন এবং নির্যাতকের খপ্পরে পড়েন। ফলে ভুক্তভোগীর এমন এক মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আসে যে তিনি একই ধরনের নির্যাতনকারী মানসিকতার মানুষের সঙ্গেই যুক্ত হন। তীব্র মাত্রায় ধর্ষণ থেকে শুরু করে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, গর্ভপাত এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত এই ঘটনার পরিণতি হতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমের অগ্রগতির কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ই-মেইল পাসওয়ার্ডের আদান-প্রদানের মতো ঘটনা এ ধরনের ভোগান্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
যৌনতৃপ্তি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া এ ধরনের নির্যাতনের উদ্দেশ্য।
পরিসংখ্যান জেনে নিন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া নারীদের ২৪ শতাংশ তাঁদের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সে রোমান্টিক সম্পর্কে শারীরিক অথবা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫৯ শতাংশ বিগত ১২ মাসে এ ধরনের সহিংসতার রিপোর্ট করেছেন। তাঁদের ৬০ শতাংশ মানসিক, ১৮ শতাংশ দৈহিক এবং ১৮ শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার। এদিকে সাইবার নির্যাতনের শিকার
বয়ঃসন্ধিকালীন মানুষের ২৫ থেকে ৪১ শতাংশ। এ ধরনের সমস্যার কথা বিগত এক দশকে বাংলাদেশে খুব বেশি শোনা যায়নি। অবাধ ইন্টারনেটের সুবিধায় এখন এ সমস্যা দৃশ্যমান। এ ছাড়া করোনা অতিমারির পর বেড়ে যাওয়া লৈঙ্গিক সহিংসতায় নারীরা অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীরা এতে আক্রান্ত হচ্ছেন একই জনগোষ্ঠীর পুরুষের তুলনায় বেশি।
প্রতিটি সমাজ তার নিজস্ব লেন্সের মাধ্যমে মানুষকে সংজ্ঞায়নের চেষ্টা করে। যেখানেই এর ব্যত্যয় ঘটে, সেখানেই নেমে আসে নির্যাতন।
এতে নিম্ন আয়ের মানুষ ভোগান্তির শিকার হয় বেশি। খেয়াল করার বিষয় হলো, বয়ঃসন্ধিকালীন নারী তাঁর বেশি বয়সী কারও সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কে জড়ালে নারীটির নির্যাতিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। গবেষণালব্ধ উপাত্ত বলছে, সম্পর্কে বয়সের পার্থক্য দুই বছরের বেশি হলে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং অনিরাপদ যৌনচর্চা, যৌন রোগের প্রবণতা ইত্যাদি বেড়ে যায়।
এসব কারণে বয়ঃসন্ধিতে নারীর গর্ভধারণ ও যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ব্যাপক বেড়েছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর এ ধরনের যৌন নির্যাতন নেতিবাচকভাবে যৌনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে, নেশায় আসক্তের হার বাড়ে এবং স্কুল থেকে ড্রপআউটের সংখ্যা বাড়ে। এতে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক আয়ের সক্ষমতা কমেছে এবং হত্যার প্রবণতা, বিশেষ করে নারীদের হত্যা করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে যত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেগুলোর ৭ শতাংশ করে ১১ থেকে ১৮ বছরের এবং ১৫ শতাংশ করে ১৯ থেকে ২৪ বছর বয়সের নারীর সঙ্গীরা।
মা-বাবা যা করবেন
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ
দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে গত বছর। বছরটি নারীর জন্য ছিল অম্ল-মধুর। যে বিষয়টি বলার তা হলো, বিভিন্ন পদক্ষেপ, আইন, শাস্তি—কোনো কিছুই নারীর প্রতি সহিংসতা আর নির্যাতন বন্ধ করতে পারছে না।
৩ দিন আগেজামেলা খাতুনের বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। অনেক আগেই কর্মশক্তি হারিয়েছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। কোটরাগত দুচোখ তাঁর সর্বস্ব হারানোর বিশদ উপাখ্যান। স্বামী সমেজ মিয়াকে হারিয়েছেন এক যুগ আগে। যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। মানসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার..
৩ দিন আগেআমার বয়স ১৮ বছর, স্বামীর ৪৫। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছিল দেড় বছর আগে। আমার ননদ বিয়ের সূত্রে অন্য জেলায় থাকে এবং পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলায়। নানা রকম মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি গত দেড় বছরে। আমার ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয়নি তারা। বাড়ির একটি রুম নিয়ে পারলার দিয়েছিলাম...
৩ দিন আগেএকজন বন্দী কারাগারে থেকে কিসের বিনিময়ে ভালো সেবা পেতে পারেন? অনেকের মনে ঘুরতে পারে এর অনেক উত্তর। কিন্তু যদি শোনেন, এই ‘বিনিময়’ সেই বন্দীর পরিবারকে দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রস্তাব! অনেকে হোঁচট খাবেন। তেমনই এক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন
৩ দিন আগে