কাশফিয়া আলম ঝিলিক
জাতিগতভাবে আমরা বহন করছি ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে আমাদের ভাষা আন্দোলনের একটা অংশজুড়ে ছিলেন নারীরা। ভারতের মানভুমে (বর্তমান পুরুলিয়া) ১৯১২ সালে শুরু হয়েছিল বাংলা ভাষার আন্দোলন। ১৯৫৬ সালে তা সফল হয়। সেই ধারাবাহিক আন্দোলনে ১৯৫৪ সালে হয়েছিল টুসু সত্যাগ্রহ। সেই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃস্থানীয় ছিলেন লাবণ্য প্রভা ঘোষ ও ভাবিনী মাহাতো। আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তাঁরা দুজনে যথাক্রমে ২২ ও ২৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৬১ সালের ১৯ মে, আসামে বাংলা ভাষার জন্য শহীদ হন কমলা ভট্টাচার্য। ১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চ বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সুদেষ্ণা সিংহ। সে সময় আহত হন প্রমোদিনী সিংহ, নমিতা সিংহ, রত্না সিংহসহ অনেক সংগ্রামী নারী। ভাষার মাসে তাঁদের কথা ভুলে যাওয়ার নয়।
ভাষার জন্য নারীদের এই আন্দোলন ও আত্মত্যাগের রোমাঞ্চকর ইতিহাসের বাইরে রয়েছে এক নীরব ইতিহাস। সেই ইতিহাস মস্তিষ্কের। ভাষা, মানুষ ও সমাজের চমকপ্রদ মিথস্ক্রিয়া নিয়ে হয়েছিল সেসব গবেষণা। সেসব গবেষণায় পাওয়া ফল পৃথিবীকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকখানি। গবেষণাগুলো থেকে আবিষ্কৃত হওয়া তত্ত্ব শুধু সেই ভাষাই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষাবিষয়ক গবেষণা ও শিক্ষা, বিশেষত শিশুশিক্ষাকে ভীষণভাবে এগিয়ে নিয়েছে।
‘জোরে জোরে পড়ো, বারবার পড়ো। আমি যেন পাশের ঘর থেকে তোমার পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই।’ মনে করে দেখুন তো, জীবনে একবার হলেও এ কথাটা মা-বাবার কাছে শুনেছেন কি না। বারবার পড়লে বেশি মনে থাকে। আর যুগের পর যুগ পড়া মনে রাখার এ কৌশলটা দেশে দেশে, ঘরে ঘরে প্রচলিত। এ পদ্ধতি গবেষণায় প্রমাণ করা হয়েছে। জানেন, কে সেই গবেষক? তাঁর নাম ক্যারল ডরিস চমস্কি।
শিশুরা কীভাবে পড়ার ক্ষমতার বিকাশ ঘটায়, তা বোঝার জন্য একটি গবেষণা করেন ক্যারল। গবেষণার অংশ হিসেবে তিনি গত শতকের সত্তরের দশকের শেষের দিকে ‘বারবার পড়া’ পদ্ধতিটি তৈরি করেন। ভাষা শিক্ষা ও প্রচারের ক্ষেত্রে বলতে গেলে প্রথমেই আসে ক্যারল চমস্কির নাম। তিনি শিক্ষাগত সংস্কার ও রিডিং রিকভারি প্রোগ্রামের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ করে শিশুদের ভাষা শিক্ষা নিয়ে তাঁর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই রয়েছে।
২০২০ সালে প্রয়াত মনোভাষাবিদ লীলা গ্লিটম্যানের গবেষণাও শিশুরা কীভাবে ভাষা শেখে, তা বোঝার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। বিশেষ করে ব্যাকরণ ও বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে। আরও একজন মনোভাষাবিদ ইভ ক্লার্ক গবেষণা করেছেন আভিধানিক ও ব্যাকরণগত কাঠামো নিয়ে।
উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষার ওপর মাঠপর্যায়ে ব্যাপক কাজ করেছেন ভাষাবিদ মেরি রোসামুন্ড হাস। তাঁর গবেষণা এই ভাষাগুলোর তথ্য সংরক্ষণে ব্যাপক অবদান রেখেছে। মস্তিষ্ক কীভাবে ভাষা প্রক্রিয়া করে ও বুঝতে পারে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন মনোভাষাবিদ অ্যান কাটলার। হিব্রু ভাষাতত্ত্ব নিয়ে বিশেষ গবেষণা পরিচালনা করেছেন ভাষাবিদ টসভিয়া ওয়ালডেন। তিনি ভাষায় শব্দ আত্তীকরণ, বাক্য গঠন ও শব্দার্থবিদ্যার মতো বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর এসব গবেষণা আধুনিক হিব্রু ভাষাতত্ত্বের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। টসভিয়া ১৯৮৪ সালে ইসরায়েলের বেইট বার্ল কলেজে চাইল্ড ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার এবং ১৯৯৬ সালে ইনস্টিটিউট ফর হোল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কম্পিউটারস প্রতিষ্ঠা করেন।
কীভাবে সামাজিক শ্রেণি ভাষার ব্যবহারকে প্রভাবিত করে এবং ভাষা যেভাবে সামাজিক বৈষম্য প্রতিফলিত ও পুনরুৎপাদন করে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন সমাজ ভাষাবিদ অ্যানেট লারেউ। বিপন্ন ভাষা সংরক্ষণ ও ভাষাগত বৈচিত্র্য উন্নত করার জন্য কাজ করেন ব্রিটিশ ভাষা ও শিক্ষাবিদ সুজান রোমাইন। এলিজাবেথ ক্লস ট্রাউগট, ডেবোরাহ ট্যানেন, লারিসা ভোলোখনস্কি, ক্যাথরিন বুরিজ, মিরা এরিয়েলের মতো গবেষকেরাও বিভিন্নভাবে ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে।
ভাষার জন্য ভালোবাসা আরও প্রসারিত হোক। ভাষা জীবন্ত থাক প্রবহমান নদীর মতো।
জাতিগতভাবে আমরা বহন করছি ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে আমাদের ভাষা আন্দোলনের একটা অংশজুড়ে ছিলেন নারীরা। ভারতের মানভুমে (বর্তমান পুরুলিয়া) ১৯১২ সালে শুরু হয়েছিল বাংলা ভাষার আন্দোলন। ১৯৫৬ সালে তা সফল হয়। সেই ধারাবাহিক আন্দোলনে ১৯৫৪ সালে হয়েছিল টুসু সত্যাগ্রহ। সেই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃস্থানীয় ছিলেন লাবণ্য প্রভা ঘোষ ও ভাবিনী মাহাতো। আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে তাঁরা দুজনে যথাক্রমে ২২ ও ২৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৬১ সালের ১৯ মে, আসামে বাংলা ভাষার জন্য শহীদ হন কমলা ভট্টাচার্য। ১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চ বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন সুদেষ্ণা সিংহ। সে সময় আহত হন প্রমোদিনী সিংহ, নমিতা সিংহ, রত্না সিংহসহ অনেক সংগ্রামী নারী। ভাষার মাসে তাঁদের কথা ভুলে যাওয়ার নয়।
ভাষার জন্য নারীদের এই আন্দোলন ও আত্মত্যাগের রোমাঞ্চকর ইতিহাসের বাইরে রয়েছে এক নীরব ইতিহাস। সেই ইতিহাস মস্তিষ্কের। ভাষা, মানুষ ও সমাজের চমকপ্রদ মিথস্ক্রিয়া নিয়ে হয়েছিল সেসব গবেষণা। সেসব গবেষণায় পাওয়া ফল পৃথিবীকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকখানি। গবেষণাগুলো থেকে আবিষ্কৃত হওয়া তত্ত্ব শুধু সেই ভাষাই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ভাষাবিষয়ক গবেষণা ও শিক্ষা, বিশেষত শিশুশিক্ষাকে ভীষণভাবে এগিয়ে নিয়েছে।
‘জোরে জোরে পড়ো, বারবার পড়ো। আমি যেন পাশের ঘর থেকে তোমার পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই।’ মনে করে দেখুন তো, জীবনে একবার হলেও এ কথাটা মা-বাবার কাছে শুনেছেন কি না। বারবার পড়লে বেশি মনে থাকে। আর যুগের পর যুগ পড়া মনে রাখার এ কৌশলটা দেশে দেশে, ঘরে ঘরে প্রচলিত। এ পদ্ধতি গবেষণায় প্রমাণ করা হয়েছে। জানেন, কে সেই গবেষক? তাঁর নাম ক্যারল ডরিস চমস্কি।
শিশুরা কীভাবে পড়ার ক্ষমতার বিকাশ ঘটায়, তা বোঝার জন্য একটি গবেষণা করেন ক্যারল। গবেষণার অংশ হিসেবে তিনি গত শতকের সত্তরের দশকের শেষের দিকে ‘বারবার পড়া’ পদ্ধতিটি তৈরি করেন। ভাষা শিক্ষা ও প্রচারের ক্ষেত্রে বলতে গেলে প্রথমেই আসে ক্যারল চমস্কির নাম। তিনি শিক্ষাগত সংস্কার ও রিডিং রিকভারি প্রোগ্রামের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি বিশেষ করে শিশুদের ভাষা শিক্ষা নিয়ে তাঁর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই রয়েছে।
২০২০ সালে প্রয়াত মনোভাষাবিদ লীলা গ্লিটম্যানের গবেষণাও শিশুরা কীভাবে ভাষা শেখে, তা বোঝার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। বিশেষ করে ব্যাকরণ ও বাক্য গঠনের ক্ষেত্রে। আরও একজন মনোভাষাবিদ ইভ ক্লার্ক গবেষণা করেছেন আভিধানিক ও ব্যাকরণগত কাঠামো নিয়ে।
উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষার ওপর মাঠপর্যায়ে ব্যাপক কাজ করেছেন ভাষাবিদ মেরি রোসামুন্ড হাস। তাঁর গবেষণা এই ভাষাগুলোর তথ্য সংরক্ষণে ব্যাপক অবদান রেখেছে। মস্তিষ্ক কীভাবে ভাষা প্রক্রিয়া করে ও বুঝতে পারে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন মনোভাষাবিদ অ্যান কাটলার। হিব্রু ভাষাতত্ত্ব নিয়ে বিশেষ গবেষণা পরিচালনা করেছেন ভাষাবিদ টসভিয়া ওয়ালডেন। তিনি ভাষায় শব্দ আত্তীকরণ, বাক্য গঠন ও শব্দার্থবিদ্যার মতো বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তাঁর এসব গবেষণা আধুনিক হিব্রু ভাষাতত্ত্বের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। টসভিয়া ১৯৮৪ সালে ইসরায়েলের বেইট বার্ল কলেজে চাইল্ড ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার এবং ১৯৯৬ সালে ইনস্টিটিউট ফর হোল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কম্পিউটারস প্রতিষ্ঠা করেন।
কীভাবে সামাজিক শ্রেণি ভাষার ব্যবহারকে প্রভাবিত করে এবং ভাষা যেভাবে সামাজিক বৈষম্য প্রতিফলিত ও পুনরুৎপাদন করে, তা নিয়ে গবেষণা করেছেন সমাজ ভাষাবিদ অ্যানেট লারেউ। বিপন্ন ভাষা সংরক্ষণ ও ভাষাগত বৈচিত্র্য উন্নত করার জন্য কাজ করেন ব্রিটিশ ভাষা ও শিক্ষাবিদ সুজান রোমাইন। এলিজাবেথ ক্লস ট্রাউগট, ডেবোরাহ ট্যানেন, লারিসা ভোলোখনস্কি, ক্যাথরিন বুরিজ, মিরা এরিয়েলের মতো গবেষকেরাও বিভিন্নভাবে ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে।
ভাষার জন্য ভালোবাসা আরও প্রসারিত হোক। ভাষা জীবন্ত থাক প্রবহমান নদীর মতো।
দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে গত বছর। বছরটি নারীর জন্য ছিল অম্ল-মধুর। যে বিষয়টি বলার তা হলো, বিভিন্ন পদক্ষেপ, আইন, শাস্তি—কোনো কিছুই নারীর প্রতি সহিংসতা আর নির্যাতন বন্ধ করতে পারছে না।
৪ দিন আগেজামেলা খাতুনের বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। অনেক আগেই কর্মশক্তি হারিয়েছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। কোটরাগত দুচোখ তাঁর সর্বস্ব হারানোর বিশদ উপাখ্যান। স্বামী সমেজ মিয়াকে হারিয়েছেন এক যুগ আগে। যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। মানসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার..
৪ দিন আগেআমার বয়স ১৮ বছর, স্বামীর ৪৫। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছিল দেড় বছর আগে। আমার ননদ বিয়ের সূত্রে অন্য জেলায় থাকে এবং পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলায়। নানা রকম মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি গত দেড় বছরে। আমার ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয়নি তারা। বাড়ির একটি রুম নিয়ে পারলার দিয়েছিলাম...
৪ দিন আগেএকজন বন্দী কারাগারে থেকে কিসের বিনিময়ে ভালো সেবা পেতে পারেন? অনেকের মনে ঘুরতে পারে এর অনেক উত্তর। কিন্তু যদি শোনেন, এই ‘বিনিময়’ সেই বন্দীর পরিবারকে দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রস্তাব! অনেকে হোঁচট খাবেন। তেমনই এক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন
৪ দিন আগে