বাবার অনুপ্রেরণা
উচ্চমাধ্যমিকে ভ্যালী ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। কিন্তু তাঁর বাবা রাজনীতি পছন্দ করতেন। তিনি চেয়েছেন, সন্তানদের একজন আইনজীবী হোক। দেশের মানুষের উপকারে আসুক। বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই মূলত ভ্যালীর আইন বিষয়ে পড়া। ভ্যালীর বাবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন।
আইনজীবী হিসেবে নিজের অর্জনের কথা বলতে গিয়ে ভ্যালী বলেন, ‘বাবা বলতেন, “মা, আমাদের সম্প্রদায়ে কোনো নারী ব্যারিস্টার নেই। তুমি যদি চাও, তাহলে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম নারী ব্যারিস্টার হতে পারো।”’ সেই অনুপ্রেরণাতেই ভ্যালী চাকমা আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে গত বছরের নভেম্বরে লন্ডনের অনারেবল সোসাইটি অব লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করেন। ভ্যালী চাকমা দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে প্রথম নারী ব্যারিস্টার।
মায়ের অবদান
ভ্যালী চাকমার ব্যারিস্টার হওয়ার পেছনে যেমন বাবার অনুপ্রেরণা ছিল, তেমনি ছিল মা অনুভা চাকমার অবদান। শৈশবে ভ্যালী চাকমার পড়ালেখা শুরু হয় মায়ের তত্ত্বাবধানে। কোন বিষয়ে দুর্বল, কোন বিষয়ের জন্য শিক্ষক প্রয়োজন—সবকিছু তাঁর মায়ের তদারকিতেই হয়েছে। বলা যায়, আইন বিষয়ে পড়তে যাওয়ার আগপর্যন্ত সবকিছু মায়ের পরামর্শেই হয়। এই সফলতার যাত্রায় ভ্যালী চাকমা মায়ের এই অবদানের কথা খুব গুরুত্বের সঙ্গে মনে রাখেন।
রাঙামাটি-খুলনা-চট্টগ্রাম-ঢাকা-লন্ডন
ভ্যালীর বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। তাই চাকরির বদলির কারণে এক বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে চলে যান খুলনায়। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে বাবার বদলির সুবাদে চলে আসেন চট্টগ্রামে। সেখানে আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি এবং চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকার ভূঁইয়া একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে চলে যান যুক্তরাজ্যে। সেখানে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ২০১৫ সালে এলএলবি সম্পন্ন করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ঢাকার জজকোর্টের আইনজীবী হন ২০১৬ সালে এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ২০১৯ সালে। এরপর আসে স্বপ্নপূরণের দিন। ২০২২ সালের নভেম্বরে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন।
প্রথম নারী ব্যারিস্টার
কোনো কিছুতে প্রথম হওয়া বিষয়টি সবার মধ্যে অন্য রকম এক আবেগ তৈরি করে। ভ্যালী চাকমাও এর ব্যতিক্রম নন। চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম নারী ব্যারিস্টার হিসেবে অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘সেই অনুভূতি কেমন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। গৌরব ও আনন্দ—দুটোই মিশে আছে তাতে।’
প্রয়োজন মনোবলদৃঢ় মনোবল না থাকলে কোনো কাজে সফলতা আসে না। জীবনে সফল হতে এর সঙ্গে দরকার নিষ্ঠা—এমনটিই মনে করেন ভ্যালী। আইন পেশার ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন, এই পেশার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে মানসিক দৃঢ়তা। যাঁরা এই পেশায় আসতে চান, যাঁদের স্বপ্ন এই পেশা ঘিরে, তাঁদের সবার আগে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে বলে মনে করেন তিনি। নেতিবাচক চিন্তা পেছনে ফেলে মনোবল ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া ভ্যালী চাকমার মূল মন্ত্র।
লড়াইটা কঠিন
ভ্যালী চাকমার লড়াইটা কঠিন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমাজ এখনো অনেকটাই পিছিয়ে পড়া। সেখানে এখনো অনেক দুর্গম জায়গা রয়েছে, যেখানে খাওয়ার পানি, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। তেমন একটি এলাকার মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা কঠিন। সেই চেষ্টা সাধ্যমতো করে চলেছেন ভ্যালী। এ এক নিরন্তর লড়াই। অন্যদিকে নিজের পেশা। অবশ্য তিনি মনে করেন, আইন পেশায় এখন লৈঙ্গিক বিভেদের দেয়াল অনেকটাই ভেঙে গেছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা এখন এ পেশায় যুক্ত হচ্ছেন এবং সাফল্য পাচ্ছেন।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
আমাদের দেশে আইন পেশা বেশ পুরোনো ও পরিচিত। এ পেশায় যুক্ত থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশের চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম ব্যারিস্টার চাকমা সার্কেলের চিফ রাজা দেবাশীষ রায়। রাজার পর বার অ্যাট ল ডিগ্রিধারী ভ্যালী চাকমা। সে হিসেবে তিনি নারীদের মধ্যে প্রথম এবং নারী ও পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যারিস্টার। ভ্যালী মনে করেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হওয়া অনেক গৌরবের বিষয়। আমি অনেক গর্বিত যে আমার সম্প্রদায়কে আমি প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। ভবিষ্যতে আমি সব মানুষের জন্য কাজ করতে চাই; বিশেষ করে যারা অসহায় ও নির্যাতিত।’
বাবার অনুপ্রেরণা
উচ্চমাধ্যমিকে ভ্যালী ছিলেন বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। কিন্তু তাঁর বাবা রাজনীতি পছন্দ করতেন। তিনি চেয়েছেন, সন্তানদের একজন আইনজীবী হোক। দেশের মানুষের উপকারে আসুক। বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই মূলত ভ্যালীর আইন বিষয়ে পড়া। ভ্যালীর বাবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন।
আইনজীবী হিসেবে নিজের অর্জনের কথা বলতে গিয়ে ভ্যালী বলেন, ‘বাবা বলতেন, “মা, আমাদের সম্প্রদায়ে কোনো নারী ব্যারিস্টার নেই। তুমি যদি চাও, তাহলে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম নারী ব্যারিস্টার হতে পারো।”’ সেই অনুপ্রেরণাতেই ভ্যালী চাকমা আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে গত বছরের নভেম্বরে লন্ডনের অনারেবল সোসাইটি অব লিংকনস ইন থেকে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করেন। ভ্যালী চাকমা দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে প্রথম নারী ব্যারিস্টার।
মায়ের অবদান
ভ্যালী চাকমার ব্যারিস্টার হওয়ার পেছনে যেমন বাবার অনুপ্রেরণা ছিল, তেমনি ছিল মা অনুভা চাকমার অবদান। শৈশবে ভ্যালী চাকমার পড়ালেখা শুরু হয় মায়ের তত্ত্বাবধানে। কোন বিষয়ে দুর্বল, কোন বিষয়ের জন্য শিক্ষক প্রয়োজন—সবকিছু তাঁর মায়ের তদারকিতেই হয়েছে। বলা যায়, আইন বিষয়ে পড়তে যাওয়ার আগপর্যন্ত সবকিছু মায়ের পরামর্শেই হয়। এই সফলতার যাত্রায় ভ্যালী চাকমা মায়ের এই অবদানের কথা খুব গুরুত্বের সঙ্গে মনে রাখেন।
রাঙামাটি-খুলনা-চট্টগ্রাম-ঢাকা-লন্ডন
ভ্যালীর বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। তাই চাকরির বদলির কারণে এক বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে চলে যান খুলনায়। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে বাবার বদলির সুবাদে চলে আসেন চট্টগ্রামে। সেখানে আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০০৬ সালে এসএসসি এবং চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ২০০৮ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকার ভূঁইয়া একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে চলে যান যুক্তরাজ্যে। সেখানে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ২০১৫ সালে এলএলবি সম্পন্ন করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ঢাকার জজকোর্টের আইনজীবী হন ২০১৬ সালে এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন ২০১৯ সালে। এরপর আসে স্বপ্নপূরণের দিন। ২০২২ সালের নভেম্বরে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন।
প্রথম নারী ব্যারিস্টার
কোনো কিছুতে প্রথম হওয়া বিষয়টি সবার মধ্যে অন্য রকম এক আবেগ তৈরি করে। ভ্যালী চাকমাও এর ব্যতিক্রম নন। চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম নারী ব্যারিস্টার হিসেবে অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘সেই অনুভূতি কেমন, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। গৌরব ও আনন্দ—দুটোই মিশে আছে তাতে।’
প্রয়োজন মনোবলদৃঢ় মনোবল না থাকলে কোনো কাজে সফলতা আসে না। জীবনে সফল হতে এর সঙ্গে দরকার নিষ্ঠা—এমনটিই মনে করেন ভ্যালী। আইন পেশার ক্ষেত্রে তিনি মনে করেন, এই পেশার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে মানসিক দৃঢ়তা। যাঁরা এই পেশায় আসতে চান, যাঁদের স্বপ্ন এই পেশা ঘিরে, তাঁদের সবার আগে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে বলে মনে করেন তিনি। নেতিবাচক চিন্তা পেছনে ফেলে মনোবল ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া ভ্যালী চাকমার মূল মন্ত্র।
লড়াইটা কঠিন
ভ্যালী চাকমার লড়াইটা কঠিন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমাজ এখনো অনেকটাই পিছিয়ে পড়া। সেখানে এখনো অনেক দুর্গম জায়গা রয়েছে, যেখানে খাওয়ার পানি, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। তেমন একটি এলাকার মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা কঠিন। সেই চেষ্টা সাধ্যমতো করে চলেছেন ভ্যালী। এ এক নিরন্তর লড়াই। অন্যদিকে নিজের পেশা। অবশ্য তিনি মনে করেন, আইন পেশায় এখন লৈঙ্গিক বিভেদের দেয়াল অনেকটাই ভেঙে গেছে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরা এখন এ পেশায় যুক্ত হচ্ছেন এবং সাফল্য পাচ্ছেন।
ভবিষ্যতের স্বপ্ন
আমাদের দেশে আইন পেশা বেশ পুরোনো ও পরিচিত। এ পেশায় যুক্ত থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব। বাংলাদেশের চাকমা সম্প্রদায়ের প্রথম ব্যারিস্টার চাকমা সার্কেলের চিফ রাজা দেবাশীষ রায়। রাজার পর বার অ্যাট ল ডিগ্রিধারী ভ্যালী চাকমা। সে হিসেবে তিনি নারীদের মধ্যে প্রথম এবং নারী ও পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় ব্যারিস্টার। ভ্যালী মনে করেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হওয়া অনেক গৌরবের বিষয়। আমি অনেক গর্বিত যে আমার সম্প্রদায়কে আমি প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। ভবিষ্যতে আমি সব মানুষের জন্য কাজ করতে চাই; বিশেষ করে যারা অসহায় ও নির্যাতিত।’
ডেস্কে বসে কপের খবর নেওয়া আর আকাশের চাঁদ ছোঁয়ার মধ্যে যেন তেমন কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু হঠাৎ মনে পড়ল আনিকা তাবাসসুমের কথা। এই মুহূর্তে তিনি আছেন আজারবাইজানের বাকুতে। এত এত অ্যাপের দুনিয়ায় তাঁকে ধরা কি খুব কঠিন? চেষ্টা করতেই তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল উত্তর। আমরাও চটপট কথা বলে ফেললাম আনিকার সঙ্গে।
৩ দিন আগেবাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন এখন। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বায়োমেট্রিক ডেটাবেইস থেকে পাওয়া গেছে এ তথ্য। এই বিশালসংখ্যক শ্রমিকের মধ্যে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫৯ জন বা ৫২ দশমিক ২৮ শতাংশ নারী...
৩ দিন আগেআরব অঞ্চলের দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী খেলা উটের দৌড়। একসময় আমাদের দেশে যেমন ঘোড়দৌড় হতো, বিষয়টি তেমনই। সেখানে শুধু ঘোড়ার বদলে থাকে উট। সে উট যাঁরা চালনা করেন, তাঁরা হলেন জকি। এত দিন জকি হিসেবে সৌদি আরবে ছিল পুরুষদের দাপট। দেশটিতে সেই প্রচলিত প্রথা অবশ্য ভেঙেছে ২০২২ সালে...
৩ দিন আগেঅ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পেনিসিলিনের আবিষ্কার মানবজাতিকে স্বস্তি দিয়েছিল। তারপর আবিষ্কৃত হয় ছত্রাকজনিত রোগের বিরুদ্ধে কর্মক্ষম অ্যান্টিবায়োটিক নাইস্ট্যাটিন। এটির সঙ্গে যুক্ত আছে রাচেল ফুলার ব্রাউন এবং তাঁর সহযোগী এলিজাবেথ হ্যাজেনের নাম। এই দুজনের আবিষ্কারটি ছিল ছত্রাকজনিত রোগের বিরুদ্ধে প্রথম কার্যকর
৩ দিন আগে