সুমাইয়া সুগরা অনন্যা
‘যদিও আমি একজন নারী এবং অল্পবয়সী। এই মৃত্যু এবং আরও হাজার হাজার মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস রয়েছে। স্বাধীনতা দীর্ঘজীবী হোক।’ স্প্যানিশ ভাষায় এই লাইনগুলো লেখা আছে একটি ভাস্কর্যের বেসমেন্টে।
কলম্বিয়ার বোগোটায় স্থাপিত এই ভাস্কর্য এক নারীর, যাঁর দুই হাত বাঁধা পেছনের দিকে। একটি চেয়ারে তিনি চোখ খুলে বসে আছেন মৃত্যুর অপেক্ষায়। কলম্বিয়ার প্রখ্যাত ভাস্কর ডিওনিসিও কর্টেস এই ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন। ভাস্কর্যের এই চরিত্র পরিচিত ছিল লা পোলা নামে।
মৃত্যুর আগে তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘এই মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস আছে। আমার উদাহরণ ভুলবেন না।’
কলম্বিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন লা পোলা। তাঁর পুরো নাম পলিকার্পা সালাভারিয়েটার। তিনি ছিলেন কলম্বিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামে নিবেদিত সৈনিকদের মধ্যে অন্যতম।
ষোলো শতকে স্প্যানিশরা জয় করেছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া। উনিশ শতকের প্রথম দিকে দেশটির জনসাধারণ স্পেন থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার সংগ্রাম শুরু করে। স্পেন তার উপনিবেশের এই ঔদ্ধত্য সহজে মেনে নেয়নি। স্বাভাবিকভাবে কলম্বিয়ার সাধারণ মানুষের ওপর নেমে এসেছিল নির্যাতনের খড়্গ। অচিরেই কলম্বিয়ায় শুরু হয় প্রকাশ্য লুণ্ঠন। সেখানকার নারীরা শিকার হতে থাকে ধর্ষণের আর বিপ্লবীরা খুনের। ১৮১৫ সাল থেকে লা পোলা প্যাট্রিয়ট গেরিলা বাহিনীকে সমর্থন দেওয়া শুরু করেন।
লা পোলার জন্ম ১৭৯৫ সালের ২৬ জানুয়ারি। কিশোরী বয়সেই অনাথ হয়ে যান তিনি। তবে ভাইবোনেরা থাকতেন একসঙ্গে। লা পোলার সব ভাইবোন বিশ্বাস করতেন, তাঁদের স্প্যানিশ শাসন থেকে মুক্তি দরকার। সেই বিশ্বাস থেকে কিশোরী বয়সে লা পোলা ও তাঁর বেশ কয়েকজন ভাই সক্রিয় বিপ্লবী হয়ে ওঠেন। তিনি ও তাঁর এক ভাই কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় লুকিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করতে থাকেন। লা পোলা সেলাই শিখেছিলেন। তাই দ্রুত দরজির কাজ পেয়ে যান।
এই মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস আছে। আমার উদাহরণ ভুলবেন না।
তিনি স্পেনের অনুগত বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাড়িতে কাজ পান। যেখানে পোশাক ও ইউনিফর্ম তৈরি করা শুরু করেন। ধীরে ধীরে শুনতে থাকেন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কথোপকথন। সেখান থেকে শুরু হয় তাঁর গুপ্তচরের কাজ। লা পোলা ধীরে ধীরে বিপ্লবী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন। তিনি সংগ্রাম পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছেন, নিজের দলকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন এবং বিপ্লবী দলের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করেছেন। এসব করতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি।
১৮১৬ সালের দিকে লা পোলাকে বন্দী করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। স্প্যানিশরা তাঁকে
তাঁর কার্যকলাপ বাদ দেওয়ার সুযোগ দিলেও সেই সুযোগ তিনি নেননি। ফলে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড।
১৮১৭ সালের ১৪ নভেম্বর সকালে লা পোলার প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তাঁর দুই হাত বেঁধে বের করে আনা হয়েছিল
জেল থেকে। মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু খেতে বলা হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, তিনি শত্রুর হাতে কিছুই খাবেন না। মৃত্যুর আগে তিনি চিৎকার করে স্প্যানিশদের অভিশাপ দিয়েছিলেন, তাদের পরাজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং বিপ্লবীদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর প্রতিবাদী কথা যাতে সাধারণ মানুষ ঠিকমতো শুনতে না পারে, সে জন্য গভর্নর উপস্থিত ড্রামারদের জোরে ড্রাম বাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সব শব্দ ভেদ করে বেশ কয়েকটি বুলেট গিয়ে বিঁধেছিল লা পোলার শরীরে।
লা পোলাকে কলম্বিয়ার স্বাধীনতার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে সম্মান করা হয় এখনো। কলম্বিয়ার মুদ্রা ও সরকারি স্ট্যাম্পে তাঁর মুখাবয়ব মুদ্রিত করা হয়েছে। আর তাঁর মৃত্যুর দিনটিকে কলম্বিয়ার নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
‘যদিও আমি একজন নারী এবং অল্পবয়সী। এই মৃত্যু এবং আরও হাজার হাজার মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস রয়েছে। স্বাধীনতা দীর্ঘজীবী হোক।’ স্প্যানিশ ভাষায় এই লাইনগুলো লেখা আছে একটি ভাস্কর্যের বেসমেন্টে।
কলম্বিয়ার বোগোটায় স্থাপিত এই ভাস্কর্য এক নারীর, যাঁর দুই হাত বাঁধা পেছনের দিকে। একটি চেয়ারে তিনি চোখ খুলে বসে আছেন মৃত্যুর অপেক্ষায়। কলম্বিয়ার প্রখ্যাত ভাস্কর ডিওনিসিও কর্টেস এই ভাস্কর্য তৈরি করেছিলেন। ভাস্কর্যের এই চরিত্র পরিচিত ছিল লা পোলা নামে।
মৃত্যুর আগে তিনি চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘এই মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস আছে। আমার উদাহরণ ভুলবেন না।’
কলম্বিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন লা পোলা। তাঁর পুরো নাম পলিকার্পা সালাভারিয়েটার। তিনি ছিলেন কলম্বিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামে নিবেদিত সৈনিকদের মধ্যে অন্যতম।
ষোলো শতকে স্প্যানিশরা জয় করেছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া। উনিশ শতকের প্রথম দিকে দেশটির জনসাধারণ স্পেন থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার সংগ্রাম শুরু করে। স্পেন তার উপনিবেশের এই ঔদ্ধত্য সহজে মেনে নেয়নি। স্বাভাবিকভাবে কলম্বিয়ার সাধারণ মানুষের ওপর নেমে এসেছিল নির্যাতনের খড়্গ। অচিরেই কলম্বিয়ায় শুরু হয় প্রকাশ্য লুণ্ঠন। সেখানকার নারীরা শিকার হতে থাকে ধর্ষণের আর বিপ্লবীরা খুনের। ১৮১৫ সাল থেকে লা পোলা প্যাট্রিয়ট গেরিলা বাহিনীকে সমর্থন দেওয়া শুরু করেন।
লা পোলার জন্ম ১৭৯৫ সালের ২৬ জানুয়ারি। কিশোরী বয়সেই অনাথ হয়ে যান তিনি। তবে ভাইবোনেরা থাকতেন একসঙ্গে। লা পোলার সব ভাইবোন বিশ্বাস করতেন, তাঁদের স্প্যানিশ শাসন থেকে মুক্তি দরকার। সেই বিশ্বাস থেকে কিশোরী বয়সে লা পোলা ও তাঁর বেশ কয়েকজন ভাই সক্রিয় বিপ্লবী হয়ে ওঠেন। তিনি ও তাঁর এক ভাই কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় লুকিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করতে থাকেন। লা পোলা সেলাই শিখেছিলেন। তাই দ্রুত দরজির কাজ পেয়ে যান।
এই মৃত্যু সহ্য করার জন্য আমার যথেষ্ট সাহস আছে। আমার উদাহরণ ভুলবেন না।
তিনি স্পেনের অনুগত বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাড়িতে কাজ পান। যেখানে পোশাক ও ইউনিফর্ম তৈরি করা শুরু করেন। ধীরে ধীরে শুনতে থাকেন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কথোপকথন। সেখান থেকে শুরু হয় তাঁর গুপ্তচরের কাজ। লা পোলা ধীরে ধীরে বিপ্লবী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন। তিনি সংগ্রাম পরিচালনার জন্য বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছেন, নিজের দলকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন এবং বিপ্লবী দলের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করেছেন। এসব করতে গিয়ে ধরা পড়েন তিনি।
১৮১৬ সালের দিকে লা পোলাকে বন্দী করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয় গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ। স্প্যানিশরা তাঁকে
তাঁর কার্যকলাপ বাদ দেওয়ার সুযোগ দিলেও সেই সুযোগ তিনি নেননি। ফলে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড।
১৮১৭ সালের ১৪ নভেম্বর সকালে লা পোলার প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তাঁর দুই হাত বেঁধে বের করে আনা হয়েছিল
জেল থেকে। মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু খেতে বলা হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, তিনি শত্রুর হাতে কিছুই খাবেন না। মৃত্যুর আগে তিনি চিৎকার করে স্প্যানিশদের অভিশাপ দিয়েছিলেন, তাদের পরাজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং বিপ্লবীদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর প্রতিবাদী কথা যাতে সাধারণ মানুষ ঠিকমতো শুনতে না পারে, সে জন্য গভর্নর উপস্থিত ড্রামারদের জোরে ড্রাম বাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সব শব্দ ভেদ করে বেশ কয়েকটি বুলেট গিয়ে বিঁধেছিল লা পোলার শরীরে।
লা পোলাকে কলম্বিয়ার স্বাধীনতার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে সম্মান করা হয় এখনো। কলম্বিয়ার মুদ্রা ও সরকারি স্ট্যাম্পে তাঁর মুখাবয়ব মুদ্রিত করা হয়েছে। আর তাঁর মৃত্যুর দিনটিকে কলম্বিয়ার নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
চীন, রাশিয়া কিংবা ইউরোপের গণপরিবহনে পাঠকদের প্রায়ই মগ্ন দেখা যায়। জার্মানিতে রাস্তাঘাট ও পার্কে আছে ছোট ছোট লাইব্রেরি। সেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। জার্মানির এমন দৃশ্যের মনোজ্ঞ বর্ণনা নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন বাংলাদেশি যুবক মানো বিশ্বাস।
১ দিন আগেআমার এক কাজিনের মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়েন। একদিন কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় এক লোক তাঁকে ভয় দেখিয়ে বাসায় নিয়ে গিয়ে যৌন হেনস্তা করেন। তারপর তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। ওই মেয়ে টাকা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি এসে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এখন কলেজে যেতে ভয় পাচ্ছেন...
১ দিন আগেগ্রামের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের পাশে সাজেদার মৎস্য চাষ প্রকল্প। ২০২২ সালে ২০ শতাংশের পুকুর দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। পরে বর্গা নিয়ে আরও ৮০ শতাংশ জমির প্রকল্পে যুক্ত করেছেন। সাজেদার সঙ্গে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি—সবার শ্রমে তৈরি হয় এক একর আয়তনের প্রকল্প পুকুর। সেই পুকুরে মাছ...
১ দিন আগেপৃথিবীতে নারীদের এখনো পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয়। তবে নিজের দেশ ও জাতীয় সত্তা এগিয়ে নিয়ে যেতে যুগে যুগে নারীরা নিয়েছিল বিভিন্ন পদক্ষেপ। তাতে শুধু নারীরাই নয়, পুরো দেশ হয়েছে আলোকিত।
১ দিন আগে