আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
আর দশজনের মতো মেধাবী শিক্ষার্থী তৃষ্ণার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে একদিন বড় হবে। পরিবারের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু এতে বাদ সাধে দারিদ্র্য। পিতা তুলসী রাজবংশী ওয়েল্ডিং মিস্ত্রির সহকারী। পরিবারের পাঁচ সদস্যের ঠিকমতো খাওয়ার জোগান দেওয়াতেই তাঁর হিমশিম অবস্থা। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই পড়ালেখায় থেমে যেতে হয় তৃষ্ণাকে। কিন্তু হার মানেনি সে।
গ্রামে কুটিরশিল্পের বাঁশের বানা (মাছ ধরার ফাঁদ) তৈরির কাজে যোগ দেয় সে। প্রথমে কষ্ট হলেও ধীরে ধীরে আয়ত্ত করে। প্রথম মাসে উপার্জন করে ৩ হাজার টাকা। তা দিয়ে চালিয়ে নেয় তার পড়াশোনা। তৃষ্ণা এখন জাবরা শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। নিজের পড়াশোনার খরচ বাদে বাকি টাকা তুলে দেয় পরিবারের হাতে।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের জাবরা মাঝিপাড়া গ্রাম। তৃষ্ণার বাড়ি এখানেই। এ গ্রামে গেলে এখন দেখা যায়, দুই শতাধিক নারী বাঁশের বানা তৈরি করছেন। বাঁশের এই বানায় তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন নতুন চলার পথ। একসময় অভাব-অনটনের সংসার ছিল তাঁদের। এখন সন্তানদেরও উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কর্মজীবী হিসেবে গড়ে তুলছেন এই বানা তৈরি করে।
তৃষ্ণার মতো দেবী রাজবংশী, পূজা রাজবংশী, কামনা রানি, সনকা রাজবংশীদের অভাব কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। তাঁরা এখন পরিবারের কাছে সোনায় সোহাগা। এই অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কারণে গ্রামে বাড়ছে নারীশিক্ষার হার।
মাঝিপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতি পরিবারের সদস্যরা বাঁশের বানা তৈরিতে ব্যস্ত। বাড়ির বউ-ঝিরা বসে না থেকে ঘর-গৃহস্থালির কাজ শেষে যোগ দেন পুরুষদের সঙ্গে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামটিতে চলছে বানা তৈরির কাজ। এখানে স্বামীর রোজগারের পাশাপাশি গৃহবধূরা সংসার খরচের টাকা আয় করছেন। পাশাপাশি সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার কাজেও সহায়তা করছেন। এ শিল্পকে তাঁরা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের চালিকা শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। গ্রামে এখন আর বেকার বলতে কেউ নেই, এমনটাই দাবি করেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
জাবরা নয়াপাড়া গ্রামের গৃহবধূ ছালমা বেগম (৪৫) জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি বানা তৈরি করছেন। প্রতিদিন ঘরের কাজের পাশাপাশি দুটি বানা তৈরি করা যায় বলে জানিয়েছেন ছালমা বেগম। এতে গড়ে দিনপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়।
জাবরা গ্রামের তৈরি বাঁশের বানা ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, নরসিংদীসহ প্রায় ১৪টি জেলায় পাইকারি বিক্রি হয়। জাবরা মাঝিপাড়া এলাকার বয়োবৃদ্ধ মাদারি রাজবংশী প্রায় তিন যুগ আগে ওই গ্রামে বাঁশ দিয়ে বানা তৈরির কাজ বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছিলেন। তাঁর সফলতা ও সম্ভাবনা দেখে বর্তমানে জাবরা গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার ধীরে ধীরে এ কাজে জড়িত হয়ে পড়ে।
বানা বিক্রির কেন্দ্র ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক কমল রাজবংশী বলেন, দেড় থেকে দুই শ পরিবার এই বানা তৈরির কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি এ কাজে মাসে গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করছে। এতে তারা পড়াশোনার খরচ ছাড়াও পরিবারের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
স্থানীয় বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মন্দিরা রাজবংশী জানায়, সংসারে অন্যান্য কাজ ও লেখাপড়া শেষে বানা তৈরির কাজ করে সে। তাতে তার মা-বাবার কষ্ট অনেকটা দূর হয়েছে এবং সেই সঙ্গে কিছু বাড়তি আয়ও হয়।
পাইকারি বাজারজাতকারী উজ্জ্বল কুমার রাজবংশী জানান, ৯ ফুট বাই ১৫ ফুট আয়তনের একটি বানা তৈরি করতে গড়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয় হয়। সেটি বিক্রি হয় ২ হাজার টাকায়।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ‘জাবরা গ্রামের এই কুটিরশিল্পের সম্ভাবনা আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তাঁদের উৎপাদিত বাঁশশিল্পের প্রসার ঘটাতে সরকারি পর্যায়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আর দশজনের মতো মেধাবী শিক্ষার্থী তৃষ্ণার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে একদিন বড় হবে। পরিবারের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু এতে বাদ সাধে দারিদ্র্য। পিতা তুলসী রাজবংশী ওয়েল্ডিং মিস্ত্রির সহকারী। পরিবারের পাঁচ সদস্যের ঠিকমতো খাওয়ার জোগান দেওয়াতেই তাঁর হিমশিম অবস্থা। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই পড়ালেখায় থেমে যেতে হয় তৃষ্ণাকে। কিন্তু হার মানেনি সে।
গ্রামে কুটিরশিল্পের বাঁশের বানা (মাছ ধরার ফাঁদ) তৈরির কাজে যোগ দেয় সে। প্রথমে কষ্ট হলেও ধীরে ধীরে আয়ত্ত করে। প্রথম মাসে উপার্জন করে ৩ হাজার টাকা। তা দিয়ে চালিয়ে নেয় তার পড়াশোনা। তৃষ্ণা এখন জাবরা শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। নিজের পড়াশোনার খরচ বাদে বাকি টাকা তুলে দেয় পরিবারের হাতে।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের জাবরা মাঝিপাড়া গ্রাম। তৃষ্ণার বাড়ি এখানেই। এ গ্রামে গেলে এখন দেখা যায়, দুই শতাধিক নারী বাঁশের বানা তৈরি করছেন। বাঁশের এই বানায় তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন নতুন চলার পথ। একসময় অভাব-অনটনের সংসার ছিল তাঁদের। এখন সন্তানদেরও উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কর্মজীবী হিসেবে গড়ে তুলছেন এই বানা তৈরি করে।
তৃষ্ণার মতো দেবী রাজবংশী, পূজা রাজবংশী, কামনা রানি, সনকা রাজবংশীদের অভাব কিছুটা হলেও দূর হয়েছে। তাঁরা এখন পরিবারের কাছে সোনায় সোহাগা। এই অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কারণে গ্রামে বাড়ছে নারীশিক্ষার হার।
মাঝিপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতি পরিবারের সদস্যরা বাঁশের বানা তৈরিতে ব্যস্ত। বাড়ির বউ-ঝিরা বসে না থেকে ঘর-গৃহস্থালির কাজ শেষে যোগ দেন পুরুষদের সঙ্গে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামটিতে চলছে বানা তৈরির কাজ। এখানে স্বামীর রোজগারের পাশাপাশি গৃহবধূরা সংসার খরচের টাকা আয় করছেন। পাশাপাশি সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলার কাজেও সহায়তা করছেন। এ শিল্পকে তাঁরা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের চালিকা শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। গ্রামে এখন আর বেকার বলতে কেউ নেই, এমনটাই দাবি করেন ওই গ্রামের বাসিন্দারা।
জাবরা নয়াপাড়া গ্রামের গৃহবধূ ছালমা বেগম (৪৫) জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি বানা তৈরি করছেন। প্রতিদিন ঘরের কাজের পাশাপাশি দুটি বানা তৈরি করা যায় বলে জানিয়েছেন ছালমা বেগম। এতে গড়ে দিনপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়।
জাবরা গ্রামের তৈরি বাঁশের বানা ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, নরসিংদীসহ প্রায় ১৪টি জেলায় পাইকারি বিক্রি হয়। জাবরা মাঝিপাড়া এলাকার বয়োবৃদ্ধ মাদারি রাজবংশী প্রায় তিন যুগ আগে ওই গ্রামে বাঁশ দিয়ে বানা তৈরির কাজ বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছিলেন। তাঁর সফলতা ও সম্ভাবনা দেখে বর্তমানে জাবরা গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার ধীরে ধীরে এ কাজে জড়িত হয়ে পড়ে।
বানা বিক্রির কেন্দ্র ভাই ভাই ট্রেডার্সের মালিক কমল রাজবংশী বলেন, দেড় থেকে দুই শ পরিবার এই বানা তৈরির কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি এ কাজে মাসে গড়ে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করছে। এতে তারা পড়াশোনার খরচ ছাড়াও পরিবারের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
স্থানীয় বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মন্দিরা রাজবংশী জানায়, সংসারে অন্যান্য কাজ ও লেখাপড়া শেষে বানা তৈরির কাজ করে সে। তাতে তার মা-বাবার কষ্ট অনেকটা দূর হয়েছে এবং সেই সঙ্গে কিছু বাড়তি আয়ও হয়।
পাইকারি বাজারজাতকারী উজ্জ্বল কুমার রাজবংশী জানান, ৯ ফুট বাই ১৫ ফুট আয়তনের একটি বানা তৈরি করতে গড়ে ১ হাজার ৬০০ টাকা ব্যয় হয়। সেটি বিক্রি হয় ২ হাজার টাকায়।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ‘জাবরা গ্রামের এই কুটিরশিল্পের সম্ভাবনা আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তাঁদের উৎপাদিত বাঁশশিল্পের প্রসার ঘটাতে সরকারি পর্যায়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে গত বছর। বছরটি নারীর জন্য ছিল অম্ল-মধুর। যে বিষয়টি বলার তা হলো, বিভিন্ন পদক্ষেপ, আইন, শাস্তি—কোনো কিছুই নারীর প্রতি সহিংসতা আর নির্যাতন বন্ধ করতে পারছে না।
৪ দিন আগেজামেলা খাতুনের বয়স ৮০ পেরিয়ে গেছে। অনেক আগেই কর্মশক্তি হারিয়েছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। কোটরাগত দুচোখ তাঁর সর্বস্ব হারানোর বিশদ উপাখ্যান। স্বামী সমেজ মিয়াকে হারিয়েছেন এক যুগ আগে। যমুনার ভাঙনে হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। মানসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্বামী মারা যাওয়ার..
৪ দিন আগেআমার বয়স ১৮ বছর, স্বামীর ৪৫। পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়েছিল দেড় বছর আগে। আমার ননদ বিয়ের সূত্রে অন্য জেলায় থাকে এবং পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলায়। নানা রকম মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি গত দেড় বছরে। আমার ভরণপোষণও ঠিকমতো দেয়নি তারা। বাড়ির একটি রুম নিয়ে পারলার দিয়েছিলাম...
৪ দিন আগেএকজন বন্দী কারাগারে থেকে কিসের বিনিময়ে ভালো সেবা পেতে পারেন? অনেকের মনে ঘুরতে পারে এর অনেক উত্তর। কিন্তু যদি শোনেন, এই ‘বিনিময়’ সেই বন্দীর পরিবারকে দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করার প্রস্তাব! অনেকে হোঁচট খাবেন। তেমনই এক ঘটনার কথা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন
৪ দিন আগে