গোপাল হালদার

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮: ০৯

গোপাল হালদার ছিলেন সাহিত্যিক, সাংবাদিক, মননশীল প্রাবন্ধিক ও রাজনীতিবিদ। তাঁর জন্ম ১৯০২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের বিদগাঁও গ্রামে। পিতা নোয়াখালীতে আইন পেশায় যুক্ত থাকার কারণে সেখানেই তাঁর শৈশবকাল কাটে। সেখানকার আর কে জুবিলি স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে আইএ এবং ইংরেজিতে স্নাতক পাস করেন গোপাল হালদার। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ এবং আইন পাস করে সম্মানজনক ট্র্যাগোর-ল অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

তাঁর কর্মজীবন পিতার মতোই ওকালতি দিয়ে শুরু হয়। স্কুলজীবনে তিনি যুগান্তর দলে যুক্ত হন। এরপর সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সহসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৬ সালে তিনি কলকাতায় চলে যান। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি জেলবন্দী থাকেন। জেলেই তিনি অধ্যয়ন, গবেষণা, সাহিত্য সৃষ্টি ও মার্ক্সীয় মতাদর্শ চর্চায় অতিবাহিত করেন। কারামুক্তির পর সুভাষচন্দ্রের সহকারী হিসেবে তিনি ‘সাপ্তাহিক ফরোয়ার্ড’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তারপর তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন।

গোপাল হালদার ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘ওয়েলফেয়ার’-এও সহসম্পাদক পদে কাজ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতত্ত্ব বিভাগে ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেন, বীরেন্দ্রনাথ রায় ও রবীন্দ্র মজুমদারের সঙ্গে ‘পরিচয়’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন।

তাঁর সংস্কৃতি বিষয়ের বইগুলো এখনো পাঠকের কাছে সমাদৃত। বই তিনটি হলো: ‘সংস্কৃতির রূপান্তর’, ‘বাঙালী সংস্কৃতির রূপ’, ‘বাঙালী সংস্কৃতি প্রসঙ্গ’। আরও কিছু প্রবন্ধের বাইরে তিনি গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। ‘রূপনারায়নের কূলে’ তাঁর আত্মজীবনী। বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যের ইতিহাস আলোচনায় তিনি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন। যেমন বাংলা সাহিত্যের রূপরেখা, ইংরেজি সাহিত্যের রূপরেখা ও রুশ সাহিত্যের রূপরেখা বইগুলো তার প্রমাণ। তিনি বিভিন্ন সময়ে অমৃতকণ্ঠ চট্টোপাধ্যায়, শ্রীকশ্যপ শেষ মহসঙ্গীতি, প্রফুল্ল হালদার ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।

১৯৯৩ সালের ৩ অক্টোবর গোপাল হালদার মৃত্যুবরণ করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত