প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়

সম্পাদকীয়
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭: ৫৩
প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়

বাংলা সাহিত্যে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় নামে দুজন লেখক আছেন। একজন কথাসাহিত্যিক আর অন্যজন হলেন রবীন্দ্র জীবনীকার। আজ স্মরণ করা হবে দ্বিতীয়জনকে।

প্রভাতকুমারের জন্ম ১৮৯২ সালের ২৫ জুলাই কলকাতার নদীয়ার রানাঘাটে। তিনি বিহারের গিরিডি ন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি হন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার অপরাধে তাঁকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর ১৯০৮ সালে জাতীয় শিক্ষা পরিষদের (বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করে ১০ টাকা বৃত্তি লাভ করেন। বাবার মৃত্যুর কারণে একাডেমিক শিক্ষার এখানেই সমাপ্তি ঘটে। এরপর শিক্ষক হিমাংশুপ্রকাশ রায়ের সঙ্গে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সান্নিধ্য লাভ করেন। ১৯০৯ সালে তিনি রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রমে যোগ দেন। মাঝখানে এক বছর তিনি সিটি কলেজের গ্রন্থাগারিক ছিলেন। আবার তিনি শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন। এখানে তিনি শিক্ষক ও গ্রন্থাগারিক পদে কাজ করার পর ১৯২৬ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।

শান্তিনিকেতনে কাজ করতে করতে তিনি রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য লাভ করেন। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ হলো চার খণ্ডে রবীন্দ্রনাথের জীবনী রচনা করা। যদিও রবীন্দ্রনাথ জীবনীর মাত্র এক খণ্ড দেখে যেতে পেরেছিলেন।

রবীন্দ্রজীবনী রচনার পাশাপাশি তিনি গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন। এ বিষয়ে তাঁর কাজ হলো ‘বাংলা গ্রন্থ বর্গীকরণ’ ও ‘বাংলা দশমিক বর্গীকরণ’ বই দুটি। গ্রন্থাগারিক ছিলেন বলে কবিগুরু তাঁকে হাস্যচ্ছলে সম্বোধন করতেন ‘বৈবাহিক’ (বই-বাহিক) বলে।

রবীন্দ্র বিষয়ে তাঁর অন্য বইগুলো হলো রবীন্দ্র গ্রন্থপঞ্জী, রবীন্দ্র জীবনকথা, রবীন্দ্রনাথের চেনাশোনা মানুষ, রবিকথা, শান্তিনিকেতন-বিশ্বভারতী প্রভৃতি। এর বাইরে তিনি ইতিহাস বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। এ বিষয়ক তাঁর বইগুলো হলো ভারতের জাতীয়তা, ভারত পরিচয়, ভারতের জাতীয় আন্দোলন, প্রাচীন ইতিহাসের গল্প, বঙ্গ পরিচয়, ভারত পরিচয়। এসবের পাশাপাশি তিনি চীনের বৌদ্ধ সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করেছেন রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায়। তিনি ১৯৮৫ সালের ৮ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত