মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা

মানুষ জীবন ধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করে, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা ও আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সেই ভাষা বোঝা যায় না।
সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্রাণ উজাড় করে। ভালোবাসার সেই জায়গা থেকে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা অপ্রয়োজনীয়, মূল্যহীন নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি করেন বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম।
রাস্তাঘাটে নিতান্তই অবহেলায় পড়ে থাকা উপকরণ দিয়ে ভাস্কর্য তৈরির প্রসঙ্গে সনাতন বলেন, ‘শিল্পকর্ম, চিন্তা, চর্চা, সাধনা বা সংরক্ষণ এক সূত্রে গাঁথা। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটা মূল বিষয় বলে মনে হয় না আমার কাছে। আগ্রহ বা ভালোবাসা থাকলে যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ অনেক কিছু তৈরি করতে পারে। আমার কাজের মূল উপাদান রাস্তাঘাটে, মাঠে, জঙ্গলে, পুকুরপাড়ে, নদীর ধারে পড়ে থাকা গাছের শেকড়, ভাঙা ডালপালা, লতাপাতা ও পশু-পাখির হাড়গোড়। ভাস্কর্য নিয়ে আমার কাজ করা ভালো লাগার জায়গা থেকে। এই ভালো লাগাটা ক্রমাগত ভালোবাসায় পরিবর্তিত হচ্ছে। তবে এই ভালোবাসাকে যত্ন ও পরিচর্যায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আন্তরিকতার। সেই আন্তরিকতার গভীরে আছে মানবিক সমাজ গঠনে নিজেকে নিবেদন করা।’
তবে নিজের তৈরি শিল্পকর্মকে ‘ভাস্কর্য’ বলার চেয়ে ‘রূপান্তর’ বলতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন সনাতন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো কোনো কিছু সৃষ্টি বা তৈরি করতে পারি না; বরং এই প্রকৃতিতে যা আছে, সেটাকে চিন্তা আর ইচ্ছেশক্তির সমন্বয়ে রূপান্তর করতে পারি মাত্র। আমরা কেউ গাছ বা পাখি সৃষ্টি করতে পারি না। কিন্তু গাছের শেকড়, পাতা, ফুল বা পাখির পালক, এমনকি ফেলে দেওয়া যেকোনো প্রাকৃতিক উপকরণ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারি। প্রাকৃতিক এই উপকরণগুলো একসময় সেই সময়ের ইতিহাসকে বহন করবে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া সভ্যতা যখন মানুষ মাটি খুঁড়ে আবিষ্কার করে, তখন সেখান থেকে উদ্ধারকৃত ভাস্কর্য এবং অন্যান্য শিল্পকর্মই বলে দেয় সেই সময়ের ইতিহাস।’
এ ধরনের শিল্পকর্মের দিকে সনাতনের আকর্ষণ কিন্তু ছোটবেলা থেকেই। বলা যায়, বেড়ে ওঠার সঙ্গেই কাঠ খোদাইয়ের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে। সনাতন বলছেন, ‘তখন আমি বড়জোর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাড়িতে প্রায় প্রতিবছর বর্ষাকালের শুরু কিংবা শীতের শেষে চার-পাঁচজনের একদল কাঠমিস্ত্রি আসতেন। তাঁরা মাসাধিককাল কিংবা তারও বেশি সময় ধরে নতুন নৌকা বানানো, পুরোনো নৌকা মেরামতের পাশাপাশি কাঠের নানা আসবাব তৈরি করতেন। বাড়ির খুব কাছেই ছিল কুমার নদ। তাঁরা নদের পাড়ে নৌকার বাদাম টানিয়ে ছায়াময় জায়গা তৈরি করে সেখানে কাজ করতেন সকাল থেকে রাত অবধি। স্কুল থেকে ফিরে প্রায় সারা দিনই কাটত সেই মিস্ত্রিদের সঙ্গে। হাতুড়ি, বাটাল, বাইসখান, রেন্দা, করাত, শীল ইত্যাদি হাতিয়ারের আলাদা আলাদা শব্দ আমাকে খুব টানত। কখনো কখনো টুকরো কাঠের ওপর হাতুড়ি ও বাটাল নিয়ে কিছু একটা করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করতাম। বলতে গেলে শুরুর প্রথমটা সেখান থেকেই।’
সনাতনের চারুকলায় পড়ার ভীষণ ইচ্ছা থাকলেও উপযুক্ত গাইডলাইন বা অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সেদিকে আর যাননি। কোনো সম্ভ্রান্ত বা বনেদি পরিবারে তাঁর জন্ম হয়নি। খুব সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী পরিবারে জন্ম। সনাতনের পূর্বপুরুষের পেশা ছিল মাছ ধরা। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ও বৈরী স্রোতে দাঁড় বেয়ে, জাল বেয়ে, মাছ ধরে, কখনো বিক্রি করে তাঁর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাজীবন শেষ হয়। সনাতনের ছোটবেলা কেটেছে জল-কাদা, স্রোত, রোদ-বৃষ্টি, ঝড়, নৌকা, নদী, অন্ধকার রাত আর নদীতে ভেসে যাওয়া সুখ-দুঃখের গল্পের সঙ্গে। পাড় ভেঙে জলে পড়ে যাওয়া গাছ, শেকড়, লতাপাতা আরও অনেক কিছুর সঙ্গে মিলেমিশে কেটেছে তাঁর ছেলেবেলা। একসময় মাছ ধরার নৌকায়ও কুপিবাতির আলোয় পড়ালেখা করেছেন।
২০০৫ সালে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। ছাত্রজীবন শেষে ঢোকেন বেসরকারি চাকরিতে। এর মধ্যে তিনি সময় ও সুযোগ বের করে তাঁর কাজ করার উপাদান সংগ্রহ করতেন। কাজের প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে গেলে সেখান থেকে তিনি নিয়ে আসতেন গাছের টুকরো বা শেকড়সহ বিভিন্ন উপকরণ। এ ছাড়া পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের বেসমেন্টে তাঁর কাজের জন্য একটা রুম ছিল। সেখানে তিনি তাঁর কাজগুলো সংরক্ষণে রাখতেন। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে হাজারো মানুষের অনেক মূল্যবান জিনিসের সঙ্গে তাঁর কাজগুলোও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনার পরে ক্ষোভে অনেক দিন তিনি কাজ থেকে দূরে ছিলেন।
বর্তমানে কাজের পরিবেশ বা পরিধির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘সীমিত আয়ের চাকরি করে ভাস্কর্যের মতো বিরাট বিষয়ে চর্চা করা দুঃসাহস ছাড়া আর কিছুই নয়। সংগ্রহে থাকা কিছু কাঠ আর শিকড় নিয়ে সাধারণ অ্যান্টিকাটার ও হাতুড়ি-বাটাল দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এভাবে কাজ করা ভীষণ কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। একদিকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম, অন্যদিকে শিল্পচর্চা। নিজের জীবনের টানাপোড়েন মাঝেমধ্যে এই কাজে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যদি টাকা-পয়সা উপার্জনের চাপ না থাকত, তবে নিজের মনের মতো করে তৈরি করতাম বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম। যদিও মাঝেমধ্যে মনে হয় এই উন্মাদনা নিতান্তই বিলাসিতা।’
সনাতন গান করেন, লেখেন। কাঠের তৈরি এসব ভাস্কর্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিজের গানের কাছেই ফিরে গেলেন তিনি। বললেন, ‘আমার লেখা একটা গানের একটা প্রিয় লাইন হলো—“পাখিটা বুকের ভেতর রয়…”। আমি আমার কাজে প্রথম এবং সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পাই প্রকৃতির কাছ থেকে। দু-একজন জানেন আমি বড় গাছদের “মা”, আর ছোট গাছদের “সন্তান” বলে ডাকি। সুযোগ পেলে গাছ লাগাই। বৃক্ষ নিধনে ভীষণ কষ্ট পাই। পরিবারের সহযোগিতা না থাকলে কেউ কোনো কাজই ভালোভাবে করতে পারে না। আমি কৃতজ্ঞ আমার ব্যক্তিগত এবং আত্মিক পরিবারের কাছে। আত্মিক পরিবারের দু-একজন সুহৃদ কিছু কাজ সংরক্ষণের জন্য জায়গা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এর বাইরে সহযোগিতা বলতে যা বোঝায়, তা পাইনি কারও কাছ থেকে।’
সনাতনের করা এই ‘ব্যক্তিগত’ ও ‘আত্মিক’ পরিবারের উল্লেখ বেশ আগ্রহী করে তুলল। জানতে চাইলে বললেন, ‘আমি তিন রকম পরিবারের সদস্য। একটি নিজস্ব বা ব্যক্তিগত, একটি বৃহত্তর, আরেকটি আদর্শিক। ব্যক্তিগত পরিবার বলতে বৈবাহিক সূত্রে শিল্পী আক্তার আমার জীবনবন্ধু। আমাদের একটি কন্যাসন্তান আছে। তার নাম মেঘবতী স্লোগান। সে ৮ পেরিয়ে ৯-এর পথে। ক্লাস ওয়ানে পড়ে। আমরা বলি, “স্লোগান শিল্পী সনাতন—এক সত্তায় তিনজন”। মা-বাবা আছেন। আমার তিন বোন ও চার ভাই। এ ছাড়া দেশ ও দেশের সীমানা ছাড়িয়ে মানবধর্মে বিশ্বাসী অগণিত আপনজন আমার আদর্শিক পরিবারের সদস্য।’
এই কাজ নিয়ে পরিকল্পনা কী—জানতে চাইলে সনাতন বলেন, ‘এটা আমার পেশা নয়। আবার শুধু শখের বসে করছি, তা-ও নয়। তবে যদি কখনো জীবনযাপনের সঙ্গে একে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত করতে পারি, তবে জীবন সার্থক হবে। অনেক কিছু নিয়ে অনেক ভাবনা আছে, সবটা তো আর বাস্তবায়ন সম্ভব না। প্রতিনিয়ত কাজ করা এবং কাজগুলো সংরক্ষণের মতো একটি জায়গা হলে একটি গ্যালারি করতাম। কাজগুলো সবাইকে দেখানোর জন্য প্রদর্শন করতে চাই। পাখিরা যাতে ভালো থাকে, তার জন্য পৃথিবীকে সবুজ করতে চাই। দেশ যে আদর্শের জন্য স্বাধীন হয়েছে, সেই আলোকে অগণিত ভাস্কর্য করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে এই বিষয়ের প্রতি আগ্রহী করতে একটি পাঠশালা করার ভাবনা অনেক দিনের। যদিও আমার চলমান বাস্তবতায় এটা অনেকটাই অলীক কল্পনা। সব থেকে বড় কথা হলো, আমি প্রতিনিয়ত শিখতে চাই, জানতে চাই এবং কাজ করতে চাই।’
আলাপে পাখির প্রসঙ্গই ঘুরেফিরে আসে বারবার। নিজের স্বপ্ন ও কাজ যেন পাখির ডানাতেই ভর করে আছে। যেন সবুজই সনাতনের একমাত্র আরাধ্য। বললেন, ‘পৃথিবী ক্রমাগত পাখিশূন্য হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রিয় শরীর খাঁচাটাও একদিন পাখিশূন্য হয়ে যাবে। যেদিন পৃথিবী থেকে শেষ পাখিটা বিলুপ্ত হবে, সেই দিন সেই পৃথিবীতে কোনো মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে কি না, সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমি আমার কাজের মাধ্যমে একটা কথা বারবার বলতে চাই। সেটা হলো, মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই পাখিদের বাসযোগ্য করতে হবে পৃথিবীকে।’

মানুষ জীবন ধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করে, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা ও আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সেই ভাষা বোঝা যায় না।
সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্রাণ উজাড় করে। ভালোবাসার সেই জায়গা থেকে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা অপ্রয়োজনীয়, মূল্যহীন নানা উপকরণ দিয়ে তৈরি করেন বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম।
রাস্তাঘাটে নিতান্তই অবহেলায় পড়ে থাকা উপকরণ দিয়ে ভাস্কর্য তৈরির প্রসঙ্গে সনাতন বলেন, ‘শিল্পকর্ম, চিন্তা, চর্চা, সাধনা বা সংরক্ষণ এক সূত্রে গাঁথা। এ ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটা মূল বিষয় বলে মনে হয় না আমার কাছে। আগ্রহ বা ভালোবাসা থাকলে যেকোনো জায়গা থেকে মানুষ অনেক কিছু তৈরি করতে পারে। আমার কাজের মূল উপাদান রাস্তাঘাটে, মাঠে, জঙ্গলে, পুকুরপাড়ে, নদীর ধারে পড়ে থাকা গাছের শেকড়, ভাঙা ডালপালা, লতাপাতা ও পশু-পাখির হাড়গোড়। ভাস্কর্য নিয়ে আমার কাজ করা ভালো লাগার জায়গা থেকে। এই ভালো লাগাটা ক্রমাগত ভালোবাসায় পরিবর্তিত হচ্ছে। তবে এই ভালোবাসাকে যত্ন ও পরিচর্যায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আন্তরিকতার। সেই আন্তরিকতার গভীরে আছে মানবিক সমাজ গঠনে নিজেকে নিবেদন করা।’
তবে নিজের তৈরি শিল্পকর্মকে ‘ভাস্কর্য’ বলার চেয়ে ‘রূপান্তর’ বলতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন সনাতন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা তো কোনো কিছু সৃষ্টি বা তৈরি করতে পারি না; বরং এই প্রকৃতিতে যা আছে, সেটাকে চিন্তা আর ইচ্ছেশক্তির সমন্বয়ে রূপান্তর করতে পারি মাত্র। আমরা কেউ গাছ বা পাখি সৃষ্টি করতে পারি না। কিন্তু গাছের শেকড়, পাতা, ফুল বা পাখির পালক, এমনকি ফেলে দেওয়া যেকোনো প্রাকৃতিক উপকরণ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারি। প্রাকৃতিক এই উপকরণগুলো একসময় সেই সময়ের ইতিহাসকে বহন করবে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া সভ্যতা যখন মানুষ মাটি খুঁড়ে আবিষ্কার করে, তখন সেখান থেকে উদ্ধারকৃত ভাস্কর্য এবং অন্যান্য শিল্পকর্মই বলে দেয় সেই সময়ের ইতিহাস।’
এ ধরনের শিল্পকর্মের দিকে সনাতনের আকর্ষণ কিন্তু ছোটবেলা থেকেই। বলা যায়, বেড়ে ওঠার সঙ্গেই কাঠ খোদাইয়ের বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে। সনাতন বলছেন, ‘তখন আমি বড়জোর তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাড়িতে প্রায় প্রতিবছর বর্ষাকালের শুরু কিংবা শীতের শেষে চার-পাঁচজনের একদল কাঠমিস্ত্রি আসতেন। তাঁরা মাসাধিককাল কিংবা তারও বেশি সময় ধরে নতুন নৌকা বানানো, পুরোনো নৌকা মেরামতের পাশাপাশি কাঠের নানা আসবাব তৈরি করতেন। বাড়ির খুব কাছেই ছিল কুমার নদ। তাঁরা নদের পাড়ে নৌকার বাদাম টানিয়ে ছায়াময় জায়গা তৈরি করে সেখানে কাজ করতেন সকাল থেকে রাত অবধি। স্কুল থেকে ফিরে প্রায় সারা দিনই কাটত সেই মিস্ত্রিদের সঙ্গে। হাতুড়ি, বাটাল, বাইসখান, রেন্দা, করাত, শীল ইত্যাদি হাতিয়ারের আলাদা আলাদা শব্দ আমাকে খুব টানত। কখনো কখনো টুকরো কাঠের ওপর হাতুড়ি ও বাটাল নিয়ে কিছু একটা করার প্রাণান্তকর চেষ্টা করতাম। বলতে গেলে শুরুর প্রথমটা সেখান থেকেই।’
সনাতনের চারুকলায় পড়ার ভীষণ ইচ্ছা থাকলেও উপযুক্ত গাইডলাইন বা অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সেদিকে আর যাননি। কোনো সম্ভ্রান্ত বা বনেদি পরিবারে তাঁর জন্ম হয়নি। খুব সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী পরিবারে জন্ম। সনাতনের পূর্বপুরুষের পেশা ছিল মাছ ধরা। অর্থনৈতিক টানাপোড়েন ও বৈরী স্রোতে দাঁড় বেয়ে, জাল বেয়ে, মাছ ধরে, কখনো বিক্রি করে তাঁর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাজীবন শেষ হয়। সনাতনের ছোটবেলা কেটেছে জল-কাদা, স্রোত, রোদ-বৃষ্টি, ঝড়, নৌকা, নদী, অন্ধকার রাত আর নদীতে ভেসে যাওয়া সুখ-দুঃখের গল্পের সঙ্গে। পাড় ভেঙে জলে পড়ে যাওয়া গাছ, শেকড়, লতাপাতা আরও অনেক কিছুর সঙ্গে মিলেমিশে কেটেছে তাঁর ছেলেবেলা। একসময় মাছ ধরার নৌকায়ও কুপিবাতির আলোয় পড়ালেখা করেছেন।
২০০৫ সালে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। ছাত্রজীবন শেষে ঢোকেন বেসরকারি চাকরিতে। এর মধ্যে তিনি সময় ও সুযোগ বের করে তাঁর কাজ করার উপাদান সংগ্রহ করতেন। কাজের প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে গেলে সেখান থেকে তিনি নিয়ে আসতেন গাছের টুকরো বা শেকড়সহ বিভিন্ন উপকরণ। এ ছাড়া পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের বেসমেন্টে তাঁর কাজের জন্য একটা রুম ছিল। সেখানে তিনি তাঁর কাজগুলো সংরক্ষণে রাখতেন। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবে হাজারো মানুষের অনেক মূল্যবান জিনিসের সঙ্গে তাঁর কাজগুলোও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ ঘটনার পরে ক্ষোভে অনেক দিন তিনি কাজ থেকে দূরে ছিলেন।
বর্তমানে কাজের পরিবেশ বা পরিধির বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘সীমিত আয়ের চাকরি করে ভাস্কর্যের মতো বিরাট বিষয়ে চর্চা করা দুঃসাহস ছাড়া আর কিছুই নয়। সংগ্রহে থাকা কিছু কাঠ আর শিকড় নিয়ে সাধারণ অ্যান্টিকাটার ও হাতুড়ি-বাটাল দিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এভাবে কাজ করা ভীষণ কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। একদিকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম, অন্যদিকে শিল্পচর্চা। নিজের জীবনের টানাপোড়েন মাঝেমধ্যে এই কাজে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যদি টাকা-পয়সা উপার্জনের চাপ না থাকত, তবে নিজের মনের মতো করে তৈরি করতাম বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম। যদিও মাঝেমধ্যে মনে হয় এই উন্মাদনা নিতান্তই বিলাসিতা।’
সনাতন গান করেন, লেখেন। কাঠের তৈরি এসব ভাস্কর্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিজের গানের কাছেই ফিরে গেলেন তিনি। বললেন, ‘আমার লেখা একটা গানের একটা প্রিয় লাইন হলো—“পাখিটা বুকের ভেতর রয়…”। আমি আমার কাজে প্রথম এবং সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পাই প্রকৃতির কাছ থেকে। দু-একজন জানেন আমি বড় গাছদের “মা”, আর ছোট গাছদের “সন্তান” বলে ডাকি। সুযোগ পেলে গাছ লাগাই। বৃক্ষ নিধনে ভীষণ কষ্ট পাই। পরিবারের সহযোগিতা না থাকলে কেউ কোনো কাজই ভালোভাবে করতে পারে না। আমি কৃতজ্ঞ আমার ব্যক্তিগত এবং আত্মিক পরিবারের কাছে। আত্মিক পরিবারের দু-একজন সুহৃদ কিছু কাজ সংরক্ষণের জন্য জায়গা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এর বাইরে সহযোগিতা বলতে যা বোঝায়, তা পাইনি কারও কাছ থেকে।’
সনাতনের করা এই ‘ব্যক্তিগত’ ও ‘আত্মিক’ পরিবারের উল্লেখ বেশ আগ্রহী করে তুলল। জানতে চাইলে বললেন, ‘আমি তিন রকম পরিবারের সদস্য। একটি নিজস্ব বা ব্যক্তিগত, একটি বৃহত্তর, আরেকটি আদর্শিক। ব্যক্তিগত পরিবার বলতে বৈবাহিক সূত্রে শিল্পী আক্তার আমার জীবনবন্ধু। আমাদের একটি কন্যাসন্তান আছে। তার নাম মেঘবতী স্লোগান। সে ৮ পেরিয়ে ৯-এর পথে। ক্লাস ওয়ানে পড়ে। আমরা বলি, “স্লোগান শিল্পী সনাতন—এক সত্তায় তিনজন”। মা-বাবা আছেন। আমার তিন বোন ও চার ভাই। এ ছাড়া দেশ ও দেশের সীমানা ছাড়িয়ে মানবধর্মে বিশ্বাসী অগণিত আপনজন আমার আদর্শিক পরিবারের সদস্য।’
এই কাজ নিয়ে পরিকল্পনা কী—জানতে চাইলে সনাতন বলেন, ‘এটা আমার পেশা নয়। আবার শুধু শখের বসে করছি, তা-ও নয়। তবে যদি কখনো জীবনযাপনের সঙ্গে একে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত করতে পারি, তবে জীবন সার্থক হবে। অনেক কিছু নিয়ে অনেক ভাবনা আছে, সবটা তো আর বাস্তবায়ন সম্ভব না। প্রতিনিয়ত কাজ করা এবং কাজগুলো সংরক্ষণের মতো একটি জায়গা হলে একটি গ্যালারি করতাম। কাজগুলো সবাইকে দেখানোর জন্য প্রদর্শন করতে চাই। পাখিরা যাতে ভালো থাকে, তার জন্য পৃথিবীকে সবুজ করতে চাই। দেশ যে আদর্শের জন্য স্বাধীন হয়েছে, সেই আলোকে অগণিত ভাস্কর্য করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে এই বিষয়ের প্রতি আগ্রহী করতে একটি পাঠশালা করার ভাবনা অনেক দিনের। যদিও আমার চলমান বাস্তবতায় এটা অনেকটাই অলীক কল্পনা। সব থেকে বড় কথা হলো, আমি প্রতিনিয়ত শিখতে চাই, জানতে চাই এবং কাজ করতে চাই।’
আলাপে পাখির প্রসঙ্গই ঘুরেফিরে আসে বারবার। নিজের স্বপ্ন ও কাজ যেন পাখির ডানাতেই ভর করে আছে। যেন সবুজই সনাতনের একমাত্র আরাধ্য। বললেন, ‘পৃথিবী ক্রমাগত পাখিশূন্য হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রিয় শরীর খাঁচাটাও একদিন পাখিশূন্য হয়ে যাবে। যেদিন পৃথিবী থেকে শেষ পাখিটা বিলুপ্ত হবে, সেই দিন সেই পৃথিবীতে কোনো মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে কি না, সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমি আমার কাজের মাধ্যমে একটা কথা বারবার বলতে চাই। সেটা হলো, মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই পাখিদের বাসযোগ্য করতে হবে পৃথিবীকে।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল পাশবিক হত্যাযজ্ঞ। ঢাকার গাবতলীর পাশের তুরাগ নদের উত্তর পারেই সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইসাকাবাদ গ্রাম অবস্থিত। গ্রামটি থেকে স্পষ্ট দেখা যেত গাবতলী সেতু। সেই গ্রামেরই বয়স্ক এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময়ের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা করেছেন এভাবে, প্রতিদিন রাতের বেলা মিলিটারি আর বিহারিরা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে করে এই সেতুতে মানুষদের নিয়ে আসত। রাত গভীর হলে সেতুর দুই পাশের বাতি নিভিয়ে গুলি চালানো হতো। পুরো যুদ্ধের সময় এখানে এমন রাত ছিল না, যে রাতের বেলা সেখানে লাশ ফেলানো হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও এখনো এ জায়গাকে বধ্যভূমি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

মানুষ জীবনধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করেন, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা এবং আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সে ভাষা বোঝা যায় না। সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্র
২৭ নভেম্বর ২০২১
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
অনেক লেখকই আছেন যাঁরা খুব ধর্মপ্রাণ, কেউবা আবার কমিউনিস্ট ৷ হিউম্যানিস্ট লেখক যেমন আছেন, তেমনই আছেন অথোরিটারিয়ান লেখক।
তবে সে যা-ই হোক, ভালো সাহিত্যিকের মধ্যে দুটো কমিটমেন্ট থাকতেই হবে—সততা আর স্টাইলের দক্ষতা। নিজের কাছেই যে-লেখক অসৎ, যা লেখেন তা যদি তিনি নিজেই না বিশ্বাস করেন, তাহলে সেই লেখকের পতন অনিবার্য।
কোনো লেখক আবার যদি নিজের ভাষার ঐশ্বর্যকে ছেঁকে তুলতে ব্যর্থ হন, একজন সংগীতশিল্পীকে ঠিক যেভাবে তাঁর যন্ত্রটিকে নিজের বশে আনতে হয়, ভাষার ক্ষেত্রেও তেমনটা যদি কোনো লেখক করতে না পারেন, তাহলে একজন সাংবাদিক ছাড়া আর কিছুই হতে পারবেন না তিনি। সত্য এবং স্টাইল—একজন সাহিত্যিকের বেসিক কমিটমেন্ট হলো শুধু এই দুটো।
সূত্র: সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ টুডে’ পত্রিকার মার্চ, ১৯৮৪ সংখ্যায়, সাক্ষাৎকার গ্রহীতা সেরাজুল ইসলাম কাদির, অনুবাদক নীলাজ্জ দাস, শিবনারায়ণ রায়ের সাক্ষাৎকার সংগ্রহ, পৃষ্ঠা-২৭।

মানুষ জীবনধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করেন, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা এবং আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সে ভাষা বোঝা যায় না। সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্র
২৭ নভেম্বর ২০২১
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। প্রায় ৫০০ বছর আগে বদ্রী নারায়ণের যোশী মঠের সন্ন্যাসী গোপাল গিরি ঢাকায় এসে রমনায় প্রথমে একটি আখড়া স্থাপন করেন। তখন এ আখড়াটি কাঠঘর নামে পরিচিত ছিল।
পরে সম্ভবত ১৭ শতকের প্রথম দিকে এ স্থানেই হরিচরণ গিরি মূল মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কালীবাড়ি মন্দিরটি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়। তারা মন্দির ও আশ্রমটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মন্দিরের সেবায়েতসহ প্রায় ১০০ সন্ন্যাসী, ভক্ত এবং সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষ নিহত হন। যদিও এখন বধ্যভূমির কোনো চিহ্ন নেই। তবে সেটাকে বধ্যভূমি হিসেবে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ছবি: সংগৃহীত

মানুষ জীবনধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করেন, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা এবং আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সে ভাষা বোঝা যায় না। সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্র
২৭ নভেম্বর ২০২১
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
৯ দিন আগেসম্পাদকীয়

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

...এটা অনস্বীকার্য যে আমরা বিজয়ী। আমরা জয়ী আর শোষকেরা পরাজিত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন সামনে রেখেই, তাঁদের ত্যাগকে স্বীকার করেই আমরা সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বলেছিলাম, ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের সরকার নির্ধারণ করবে।
এগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক আছে বলে মনে করি না। কিন্তু বর্তমানে এটা কী হচ্ছে? যদি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সঠিক পথে এগোচ্ছে না, তাহলে সেই না এগোনোর কারণটা কী, তা নিয়ে কেন অর্থপূর্ণ আলোচনা হচ্ছে না? আমি আপনাদের কাছে প্রশ্ন আকারেই উত্থাপন করছি। আমাদের অর্জন অনেক। আজ আমাদের গার্মেন্টসশিল্প বিশ্বে তৃতীয়। আমরা খুব দ্রুত দ্বিতীয় বা প্রথমের কাতারে চলে যাব। আমাদের লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। প্রতিবছর কৃষির উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু এসবের পরেও কী হচ্ছে? বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
... পাকিস্তানিদের কথা আর কী বলব! আক্ষরিক অর্থেই তারা তখন আমাদের পা ধরেছিল। ‘তোমরা এদের ছেড়ে দাও, আমরা নিজের দেশে নিয়ে গিয়ে এদের বিচার করব।’ ১৯৫ জনকে আমরা চিহ্নিত করি তখন। বঙ্গবন্ধু তখন রাশিয়াতে ছিলেন, তারা সেখানে বঙ্গবন্ধুর কাছে লোক পাঠিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বলেছে, ‘আপনারা যদি এ বিচার করেন তাহলে ভুট্টোর কল্লা থাকবে না। আমাদের কাছে ফেরত দিন, আমরা এদের বিচার করব।’ এটা সে সময় ‘লন্ডন টাইমস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। একেবারে তারা আন্ডারটেকিং দিয়েছে, ‘ছেড়ে দিন, আমরা বিচার করব। আর কোনো সাক্ষী লাগলে তোমাদের ডেকে পাঠানো হবে।’ শিল্পকলা একাডেমির যে বিল্ডিং ভেঙে এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে, ওই বিল্ডিংয়ে ভর্তি ছিল স্টেটমেন্টগুলো। এগুলো কী হয়েছে, কে গুম করেছে, আমি জানি না। এর মধ্যে অনেক সরকার এসেছে, গেছে। তবে আমরা খুব পরিশ্রম করেই এগুলো সংগ্রহ করেছিলাম।
সূত্র: শারমিনুর নাহার কর্তৃক ড. কামাল হোসেনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ; ‘সময় সমাজ ও রাজনীতির ভাষ্য’, পৃষ্ঠা: ৩১-৩২।

মানুষ জীবনধারণের জন্য যা কিছু গ্রহণ করেন, তার সিংহভাগই আসে প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণের আছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে পশু-পাখি ও মানুষের সঙ্গে প্রতিটি গাছের ভাষা এবং আচরণ আলাদা। গাছের কাছে না গেলে সে ভাষা বোঝা যায় না। সনাতন মালো উল্লাস। প্রকৃতিকে ভালোবাসেন মনপ্র
২৭ নভেম্বর ২০২১
মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র মিরপুর পরিণত হয়েছিল এক বধ্যভূমিতে। আর বৃহত্তর মিরপুরে অবস্থিত গাবতলী এলাকা। তুরাগ নদের ওপরই গাবতলী সেতু অবস্থিত। সেই গাবতলীতে কয়েক বছর আগেও নদের ওপর ছিল পুরোনো একটি লোহার সেতু। সেই পুরোনো সেতুতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা চালিয়েছিল...
১৯ ঘণ্টা আগে
সৃজনশীল সাহিত্য কিন্তু দেয়াললিখন বা স্লোগান দেওয়া নয়। জীবন এতই জটিল যে তাকে কোনো ফর্মুলায় বেঁধে ফেলা যায় না। মানুষের মূল্যবোধ নানা রকমের। আর সেগুলো দিয়ে যে সিস্টেমগুলো পাওয়া যেতে পারে, তা-ও নানা রকমের। একেক লেখকের কমিটমেন্ট একেক রকম মূল্যবোধের কাছে।
২ দিন আগে
বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ীর আশ্রম। এটি রমনা কালীবাড়ি নামেও পরিচিত। ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। কথিত আছে, শংকরাচার্যের অনুগামী দর্শনার্থী সম্প্রদায় এ কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করে।
৮ দিন আগে