জাহাঙ্গীর আলম
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার আলোচনা শুরুর পর থেকেই পূর্ব ইউরোপে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। গত বছরের শুরু থেকেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। পুতিন কী করবেন—এ নিয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যে চাপা উদ্বেগ দেখা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পুতিন ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করেন। মার্কিন গোয়েন্দারা এর আগেই সতর্ক করেছিলেন যে রাশিয়া সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথম দিকে বিষয়টি অভাবনীয় মনে হলেও ক্রমেই সর্বাত্মক আক্রমণের সব লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে।
২০১৪ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর ২০২১ সালের বসন্তে আরেকটি আক্রমণের ড্রেস রিহার্সাল দেয় পুতিনের সেনাবাহিনী। সীমান্তে সেনা জড়ো করা হয়।
পশ্চিমা সহায়তায় কিয়েভ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নতি স্বীকার করার কোনো লক্ষণ না দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পুতিন। ইউক্রেনের জাতীয় পরিচয় ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রকাশ্যে। এরপরও ২০২২ সালে একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী শক্তির প্রতিবেশী দেশে আগ্রাসনে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
ইউক্রেন হামলা এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জন্য একটি বিপর্যয় বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। পুতিনের পরিকল্পনা মতে, এই আক্রমণ ইউক্রেনকে বশীভূত করা, পশ্চিমকে দুর্বল করা এবং ক্রেমলিনকে শক্তিশালী করার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি তো হয়নি, বরং রাশিয়ার অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হয়তো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাবও খর্ব হয়েছে।
এতে উল্টো ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয়েছে এবং কিয়েভকে আরও ইউরোপের কাছাকাছি ঠেলে দিয়েছে।
ন্যাটোতে কিয়েভের যোগদান নিয়েই যখন এত কিছু, এই যুদ্ধের মধ্যে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন জোটে ভিড়ছে। এটি নাটকীয়ভাবে উত্তর ইউরোপে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনবে। ন্যাটো সদস্যদের সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্তের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণের চেয়েও বেশি হতে চলেছে।
সিরিয়া (২০১৫) ও ইউক্রেনে (২০১৪ ও ২০১৫) ছদ্মবেশী অভিযান ছিল মস্কোর, কিন্তু এবারের যুদ্ধ রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দুর্বলতা নগ্নভাবে প্রকাশ্য করে তুলেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল বিশ্বজুড়েই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের ছায়া ফেলেছে। তবুও, যুদ্ধ শেষ হয়নি। রাশিয়ার অর্থনীতি ব্যাপক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। ক্রেমলিন নিশ্চিত যে রাশিয়ার সক্ষমতা আছে। মস্কো এখনো একটি কঠোর বন্দোবস্তে যেতে পশ্চিমকে বাধ্য করতে পারে এবং অন্যত্র আগ্রাসনের উদ্বেগজনক নজির স্থাপন করতে পারে।
অন্যদিকে, যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনীয়দের অগ্রগতি বা অন্যান্য কারণে পুতিন যদি সত্যিকারের বিপদ আঁচ করে, তবে এটা উড়িয়ে দেওয়া যায় না যে তিনি পাশার শেষ দান হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে ফেলতে পারেন।
ইউক্রেনে যা-ই ঘটুক না কেন, পশ্চিম এবং রাশিয়ার দ্বন্দ্ব ঘুচে যাওয়ার সমূহ কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
এই সময় যুদ্ধকে চীন মাথাব্যথার কারণ হিসেবেই দেখছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের পুতিনকে আলিঙ্গন করা এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও, যুদ্ধ প্রশ্নে মস্কোর পক্ষে বেইজিংয়ের কিন্তু সমর্থন অপ্রতুল।
শি চিন পিং রাশিয়াতে অস্ত্র পাঠাননি। পুতিনের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কায় বিরক্তি প্রকাশ করেছে বেইজিং।
তবে এটাও সত্য যে বেইজিং মস্কোর বড়ভাই সুলভ আচরণে বাগড়া দিয়ে ছোট করবে না। অথবা পুতিনকে সমঝোতায় পৌঁছাতে বাধ্য করার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু বেইজিং আক্রমণে মদদ দিয়ে পশ্চিমাদের উসকে দেওয়ার অপরিণামদর্শী পদক্ষেপও নেবে না।
এশিয়ায় মার্কিন মিত্ররা প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে ওয়াশিংটনকেই পাশে রাখতে আগ্রহী বলে মনে হয়। এমনকি তারা এখনো চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার চায়।
ইউক্রেন যুদ্ধ তাইওয়ানে চীনা হামলার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আক্রমণ করাটাকে বেইজিং খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করছে। অন্তত আপাতত এমন সম্ভাবনা কম।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক—যা আগামী দশকগুলোতে নানা ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব বিস্তার করবে—ভূরাজনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এ ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পরিবর্তন করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির গত আগস্টে তাইওয়ান সফর বেইজিংকে বিরক্ত করেছিল। কিন্তু তিন মাস পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং শির মধ্যে বৈঠকে সংলাপ পুনরায় শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
যদিও দুই দেশের বৈদেশিক নীতির মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্টই। তাইওয়ানের ওপর চীনের হাত সেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে না। যদিও বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি প্রযুক্তি বাজার নিয়ে দ্বৈরথে রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ অ-পশ্চিমা মধ্যশক্তির প্রভাব এবং স্বায়ত্তশাসনের ওপর আলো ফেলেছে। তুরস্ক দীর্ঘদিন ন্যাটোর সদস্য থেকে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় একটি কঠিন পথ ধরে হাঁটছে। জাতিসংঘের সঙ্গে কৃষ্ণসাগর হয়ে ইউক্রেনের শস্য বিশ্ববাজারে রপ্তানির একটি চুক্তি করেছে। এই উদ্যোগটি লিবিয়া ও দক্ষিণ ককেশাসে যুদ্ধক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা এবং ড্রোন বিক্রয় সম্প্রসারণসহ বিদেশে তুরস্কের অবস্থানের দৃঢ়তার প্রমাণ হিসেবে বছরের পর বছর বহাল থাকবে।
বাজার থেকে রুশ জ্বালানি তেলের আকস্মিক প্রত্যাহার সৌদি আরবের জন্য একটি আশীর্বাদ ছিল। এই ঘটনা জো বাইডেনকে রিয়াদ সফরে বাধ্য করে। যদিও তিনি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বয়কট করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেছিলেন।
রিয়াদ অন্যান্য তেল উৎপাদকদের সঙ্গে দাম বেশি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ওয়াশিংটনের ক্ষোভের কারণ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একসময়ের নিরাপত্তা অংশীদার এবং রাশিয়ার অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা ভারত রাশিয়ার তেল কিনেছে। পাশাপাশি পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়ার সমালোচনাও করেছে।
এটি কিন্তু কোনো সমন্বিত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন নয়। কিন্তু মধ্যম মানের শক্তিগুলো তাদের নিজস্ব গতিপথ নির্ধারণ করার জন্য এটিই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছে। অনেকেই মনে করছেন, বৃহৎ পরাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা বহু মেরুর বিশ্বের সুযোগ অবারিত করবে।
এদিকে বৈশ্বিক দক্ষিণের কোথাও কোথাও যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে। বেশির ভাগ অ-পশ্চিমী দেশ রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোট দিয়েছে। তবে এর মধ্যে কমই প্রকাশ্যে পুতিনের নিন্দা করেছে বা নিষেধাজ্ঞায় সায় দিয়েছে।
তবে বাণিজ্যিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্কে জড়িত পক্ষগুলো এবং যারা ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ ওয়াগনার গ্রুপের ওপর নির্ভরশীল তাদের মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক সহজে ভাঙার নয়। ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের স্পষ্ট পক্ষ অবলম্বন এবং অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা করাকে তারা তাদের স্বার্থবিরোধী বলেই মনে করছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুত, অভিবাসন নীতি বা জলবায়ু নীতির কারণে পশ্চিমের ওপরও বাকি বিশ্বের হতাশা বাড়ছে। অন্যত্র পশ্চিমাদের বারবার হস্তক্ষেপ এবং ঔপনিবেশিক ইতিহাসের কারণে অনেকেই ইউক্রেনে পশ্চিমের দ্বিমুখী নীতির অভিযোগ তুলছেন। অনেক বৈশ্বিক দক্ষিণ নেতা বিশ্বাস করেন, বিশেষত যখন নিষেধাজ্ঞার কথা আসে, পশ্চিমা সরকারগুলো তখন বিশ্ব অর্থনীতির কথা না ভেবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
প্রকৃতপক্ষে, ইউরোপের বাইরে, যুদ্ধের সবচেয়ে বড় প্রভাব অর্থনৈতিক। আগ্রাসন এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনীতিতে কোভিডের ধাক্কা আরও প্রকট হয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে, জীবনযাত্রার সংকট সৃষ্টি করেছে। মূল্যস্ফীতি এখনো সহনীয় মাত্রার বেশি, ঋণের সমস্যাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মহামারি এবং অর্থনৈতিক সংকট দুটি পরস্পরকে প্রবল করে তোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দুর্বল দেশগুলোকে আরও গভীর সংকটে ফেলতে পারে এবং সেসব দেশে অস্থিরতা বাড়তে পারে। গত বছর এই তালিকায় পাকিস্তান একটি প্রধান উদাহরণ। অনেক দেশ একই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
২০২২ যে সবই খারাপ জিনিস দিয়েছে, এমন নয়। পশ্চিমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের কারণে ইউক্রেনের পতন ঘটেনি। বেশ কিছু জনমনোরঞ্জনবাদী (পপুলিস্ট) নেতা রাজনীতিতে সম্প্রতি অনেক বিভেদের বীজ বপন করেছেন, গত বছর তাঁরাও হারিয়ে গেছেন। জেইর বলসোনারো ব্রাজিলে পরাজিত হয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন ক্ষয়িষ্ণু। মেরিন লো পেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। ইতালিতে পপুলিস্টরা ক্ষমতায় এসেছে। অবশ্য বেশির ভাগ সময় তাঁরা একবারের বেশি কেন্দ্রে টিকতে পারেনি।
তাই বলে উগ্র ডানপন্থী পপুলিস্টদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়নি। যদিও তাঁদের মধ্যের চ্যাম্পিয়নরা বিপর্যয়ের মুখে। সেই সঙ্গে বহু পাক্ষিক কূটনীতির মধ্য দিয়ে ব্যাপক গোলমাল হয়েছে। পারস্পরিক তিক্ত মতপার্থক্য সত্ত্বেও, চীন, রাশিয়া এবং পশ্চিমা শক্তিগুলো এখনো বেশির ভাগই ইউক্রেনের বাইরে সংকট মোকাবিলার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে নির্ভরতার স্থান হিসেবে দেখেছে। একটি চুক্তি যা ইথিওপিয়ার ভয়ংকর যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে এবং কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা সম্পর্কে উষ্ণতা—এই আশাই দেখাচ্ছে যে ইউরোপে সংঘাত সত্ত্বেও অন্যত্র শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি।
সামগ্রিকভাবে, যদিও ২০২২ সালে একটি অস্থির বছর পার হয়েছে। মহামারি বিশ্বের বেশির ভাগ অংশকে বিপর্যস্ত করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা মার্কিন ক্যাপিটলে হামলা করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন ইউরোপে একটি বড় যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের ‘মূল হোতা’ পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বেশ কয়েকটি দরিদ্র দেশ ঋণসংকট, ক্ষুধা এবং চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার মুখোমুখি।
এ ঘটনাগুলোর কোনোটিই কিন্তু আগাম সতর্কতা ছাড়া আসেনি। আগেই এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া যেত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেকোনো সময়ের তুলনায় সংঘাতে নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং যুদ্ধের কারণে অনেক বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত বা ক্ষুধার্ত হওয়ার শর্ত তৈরি হয়েছে।
সুতরাং, ২০২৩ কি বড় শক্তিগুলোর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কাল হতে যাচ্ছে? প্রায় ৮০ বছরের পারমাণবিক অস্ত্রের নিষেধাজ্ঞা কি ভাঙবে? রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক ও জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে কি সারা বিশ্বেই সামাজিক বিপর্যয় ঘটবে? এই বছরের বড় প্রশ্নগুলোর সবচেয়ে আতঙ্ক জাগানিয়া জবাবগুলো সুদূরপ্রসারী বলেই মনে হচ্ছে। এ ঘটনাগুলোকে অচিন্তনীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া হবে স্রেফ অপরিণামদর্শী আত্মতুষ্টি।
তথ্যসূত্র: এএফপি, ক্রাইসিস গ্রুপ ও ফরেন পলিসি
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার আলোচনা শুরুর পর থেকেই পূর্ব ইউরোপে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। গত বছরের শুরু থেকেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। পুতিন কী করবেন—এ নিয়ে বিশ্বনেতাদের মধ্যে চাপা উদ্বেগ দেখা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পুতিন ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন করেন। মার্কিন গোয়েন্দারা এর আগেই সতর্ক করেছিলেন যে রাশিয়া সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথম দিকে বিষয়টি অভাবনীয় মনে হলেও ক্রমেই সর্বাত্মক আক্রমণের সব লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে।
২০১৪ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর ২০২১ সালের বসন্তে আরেকটি আক্রমণের ড্রেস রিহার্সাল দেয় পুতিনের সেনাবাহিনী। সীমান্তে সেনা জড়ো করা হয়।
পশ্চিমা সহায়তায় কিয়েভ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নতি স্বীকার করার কোনো লক্ষণ না দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পুতিন। ইউক্রেনের জাতীয় পরিচয় ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রকাশ্যে। এরপরও ২০২২ সালে একটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী শক্তির প্রতিবেশী দেশে আগ্রাসনে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
ইউক্রেন হামলা এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জন্য একটি বিপর্যয় বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। পুতিনের পরিকল্পনা মতে, এই আক্রমণ ইউক্রেনকে বশীভূত করা, পশ্চিমকে দুর্বল করা এবং ক্রেমলিনকে শক্তিশালী করার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি তো হয়নি, বরং রাশিয়ার অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হয়তো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাবও খর্ব হয়েছে।
এতে উল্টো ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয়েছে এবং কিয়েভকে আরও ইউরোপের কাছাকাছি ঠেলে দিয়েছে।
ন্যাটোতে কিয়েভের যোগদান নিয়েই যখন এত কিছু, এই যুদ্ধের মধ্যে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন জোটে ভিড়ছে। এটি নাটকীয়ভাবে উত্তর ইউরোপে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনবে। ন্যাটো সদস্যদের সঙ্গে রাশিয়ার সীমান্তের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণের চেয়েও বেশি হতে চলেছে।
সিরিয়া (২০১৫) ও ইউক্রেনে (২০১৪ ও ২০১৫) ছদ্মবেশী অভিযান ছিল মস্কোর, কিন্তু এবারের যুদ্ধ রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দুর্বলতা নগ্নভাবে প্রকাশ্য করে তুলেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল বিশ্বজুড়েই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের ছায়া ফেলেছে। তবুও, যুদ্ধ শেষ হয়নি। রাশিয়ার অর্থনীতি ব্যাপক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। ক্রেমলিন নিশ্চিত যে রাশিয়ার সক্ষমতা আছে। মস্কো এখনো একটি কঠোর বন্দোবস্তে যেতে পশ্চিমকে বাধ্য করতে পারে এবং অন্যত্র আগ্রাসনের উদ্বেগজনক নজির স্থাপন করতে পারে।
অন্যদিকে, যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনীয়দের অগ্রগতি বা অন্যান্য কারণে পুতিন যদি সত্যিকারের বিপদ আঁচ করে, তবে এটা উড়িয়ে দেওয়া যায় না যে তিনি পাশার শেষ দান হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে ফেলতে পারেন।
ইউক্রেনে যা-ই ঘটুক না কেন, পশ্চিম এবং রাশিয়ার দ্বন্দ্ব ঘুচে যাওয়ার সমূহ কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
এই সময় যুদ্ধকে চীন মাথাব্যথার কারণ হিসেবেই দেখছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের পুতিনকে আলিঙ্গন করা এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও, যুদ্ধ প্রশ্নে মস্কোর পক্ষে বেইজিংয়ের কিন্তু সমর্থন অপ্রতুল।
শি চিন পিং রাশিয়াতে অস্ত্র পাঠাননি। পুতিনের পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কায় বিরক্তি প্রকাশ করেছে বেইজিং।
তবে এটাও সত্য যে বেইজিং মস্কোর বড়ভাই সুলভ আচরণে বাগড়া দিয়ে ছোট করবে না। অথবা পুতিনকে সমঝোতায় পৌঁছাতে বাধ্য করার সম্ভাবনাও নেই। কিন্তু বেইজিং আক্রমণে মদদ দিয়ে পশ্চিমাদের উসকে দেওয়ার অপরিণামদর্শী পদক্ষেপও নেবে না।
এশিয়ায় মার্কিন মিত্ররা প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে ওয়াশিংটনকেই পাশে রাখতে আগ্রহী বলে মনে হয়। এমনকি তারা এখনো চীনা বাজারে প্রবেশাধিকার চায়।
ইউক্রেন যুদ্ধ তাইওয়ানে চীনা হামলার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আক্রমণ করাটাকে বেইজিং খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলেই মনে করছে। অন্তত আপাতত এমন সম্ভাবনা কম।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক—যা আগামী দশকগুলোতে নানা ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব বিস্তার করবে—ভূরাজনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এ ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পরিবর্তন করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির গত আগস্টে তাইওয়ান সফর বেইজিংকে বিরক্ত করেছিল। কিন্তু তিন মাস পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং শির মধ্যে বৈঠকে সংলাপ পুনরায় শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
যদিও দুই দেশের বৈদেশিক নীতির মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্টই। তাইওয়ানের ওপর চীনের হাত সেভাবে বিস্তৃত হচ্ছে না। যদিও বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি প্রযুক্তি বাজার নিয়ে দ্বৈরথে রয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ অ-পশ্চিমা মধ্যশক্তির প্রভাব এবং স্বায়ত্তশাসনের ওপর আলো ফেলেছে। তুরস্ক দীর্ঘদিন ন্যাটোর সদস্য থেকে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় একটি কঠিন পথ ধরে হাঁটছে। জাতিসংঘের সঙ্গে কৃষ্ণসাগর হয়ে ইউক্রেনের শস্য বিশ্ববাজারে রপ্তানির একটি চুক্তি করেছে। এই উদ্যোগটি লিবিয়া ও দক্ষিণ ককেশাসে যুদ্ধক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা এবং ড্রোন বিক্রয় সম্প্রসারণসহ বিদেশে তুরস্কের অবস্থানের দৃঢ়তার প্রমাণ হিসেবে বছরের পর বছর বহাল থাকবে।
বাজার থেকে রুশ জ্বালানি তেলের আকস্মিক প্রত্যাহার সৌদি আরবের জন্য একটি আশীর্বাদ ছিল। এই ঘটনা জো বাইডেনকে রিয়াদ সফরে বাধ্য করে। যদিও তিনি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে বয়কট করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেছিলেন।
রিয়াদ অন্যান্য তেল উৎপাদকদের সঙ্গে দাম বেশি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ওয়াশিংটনের ক্ষোভের কারণ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একসময়ের নিরাপত্তা অংশীদার এবং রাশিয়ার অস্ত্রের প্রধান ক্রেতা ভারত রাশিয়ার তেল কিনেছে। পাশাপাশি পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়ার সমালোচনাও করেছে।
এটি কিন্তু কোনো সমন্বিত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন নয়। কিন্তু মধ্যম মানের শক্তিগুলো তাদের নিজস্ব গতিপথ নির্ধারণ করার জন্য এটিই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছে। অনেকেই মনে করছেন, বৃহৎ পরাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা বহু মেরুর বিশ্বের সুযোগ অবারিত করবে।
এদিকে বৈশ্বিক দক্ষিণের কোথাও কোথাও যুদ্ধের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে। বেশির ভাগ অ-পশ্চিমী দেশ রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোট দিয়েছে। তবে এর মধ্যে কমই প্রকাশ্যে পুতিনের নিন্দা করেছে বা নিষেধাজ্ঞায় সায় দিয়েছে।
তবে বাণিজ্যিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্কে জড়িত পক্ষগুলো এবং যারা ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ ওয়াগনার গ্রুপের ওপর নির্ভরশীল তাদের মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক সহজে ভাঙার নয়। ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের স্পষ্ট পক্ষ অবলম্বন এবং অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা করাকে তারা তাদের স্বার্থবিরোধী বলেই মনে করছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুত, অভিবাসন নীতি বা জলবায়ু নীতির কারণে পশ্চিমের ওপরও বাকি বিশ্বের হতাশা বাড়ছে। অন্যত্র পশ্চিমাদের বারবার হস্তক্ষেপ এবং ঔপনিবেশিক ইতিহাসের কারণে অনেকেই ইউক্রেনে পশ্চিমের দ্বিমুখী নীতির অভিযোগ তুলছেন। অনেক বৈশ্বিক দক্ষিণ নেতা বিশ্বাস করেন, বিশেষত যখন নিষেধাজ্ঞার কথা আসে, পশ্চিমা সরকারগুলো তখন বিশ্ব অর্থনীতির কথা না ভেবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
প্রকৃতপক্ষে, ইউরোপের বাইরে, যুদ্ধের সবচেয়ে বড় প্রভাব অর্থনৈতিক। আগ্রাসন এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে অর্থনীতিতে কোভিডের ধাক্কা আরও প্রকট হয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েছে, জীবনযাত্রার সংকট সৃষ্টি করেছে। মূল্যস্ফীতি এখনো সহনীয় মাত্রার বেশি, ঋণের সমস্যাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
মহামারি এবং অর্থনৈতিক সংকট দুটি পরস্পরকে প্রবল করে তোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দুর্বল দেশগুলোকে আরও গভীর সংকটে ফেলতে পারে এবং সেসব দেশে অস্থিরতা বাড়তে পারে। গত বছর এই তালিকায় পাকিস্তান একটি প্রধান উদাহরণ। অনেক দেশ একই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
২০২২ যে সবই খারাপ জিনিস দিয়েছে, এমন নয়। পশ্চিমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের কারণে ইউক্রেনের পতন ঘটেনি। বেশ কিছু জনমনোরঞ্জনবাদী (পপুলিস্ট) নেতা রাজনীতিতে সম্প্রতি অনেক বিভেদের বীজ বপন করেছেন, গত বছর তাঁরাও হারিয়ে গেছেন। জেইর বলসোনারো ব্রাজিলে পরাজিত হয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন ক্ষয়িষ্ণু। মেরিন লো পেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। ইতালিতে পপুলিস্টরা ক্ষমতায় এসেছে। অবশ্য বেশির ভাগ সময় তাঁরা একবারের বেশি কেন্দ্রে টিকতে পারেনি।
তাই বলে উগ্র ডানপন্থী পপুলিস্টদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়নি। যদিও তাঁদের মধ্যের চ্যাম্পিয়নরা বিপর্যয়ের মুখে। সেই সঙ্গে বহু পাক্ষিক কূটনীতির মধ্য দিয়ে ব্যাপক গোলমাল হয়েছে। পারস্পরিক তিক্ত মতপার্থক্য সত্ত্বেও, চীন, রাশিয়া এবং পশ্চিমা শক্তিগুলো এখনো বেশির ভাগই ইউক্রেনের বাইরে সংকট মোকাবিলার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে নির্ভরতার স্থান হিসেবে দেখেছে। একটি চুক্তি যা ইথিওপিয়ার ভয়ংকর যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে এবং কলম্বিয়া-ভেনেজুয়েলা সম্পর্কে উষ্ণতা—এই আশাই দেখাচ্ছে যে ইউরোপে সংঘাত সত্ত্বেও অন্যত্র শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি।
সামগ্রিকভাবে, যদিও ২০২২ সালে একটি অস্থির বছর পার হয়েছে। মহামারি বিশ্বের বেশির ভাগ অংশকে বিপর্যস্ত করেছে। বিক্ষুব্ধ জনতা মার্কিন ক্যাপিটলে হামলা করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন ইউরোপে একটি বড় যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের ‘মূল হোতা’ পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বেশ কয়েকটি দরিদ্র দেশ ঋণসংকট, ক্ষুধা এবং চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার মুখোমুখি।
এ ঘটনাগুলোর কোনোটিই কিন্তু আগাম সতর্কতা ছাড়া আসেনি। আগেই এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া যেত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেকোনো সময়ের তুলনায় সংঘাতে নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং যুদ্ধের কারণে অনেক বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত বা ক্ষুধার্ত হওয়ার শর্ত তৈরি হয়েছে।
সুতরাং, ২০২৩ কি বড় শক্তিগুলোর যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কাল হতে যাচ্ছে? প্রায় ৮০ বছরের পারমাণবিক অস্ত্রের নিষেধাজ্ঞা কি ভাঙবে? রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক ও জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে কি সারা বিশ্বেই সামাজিক বিপর্যয় ঘটবে? এই বছরের বড় প্রশ্নগুলোর সবচেয়ে আতঙ্ক জাগানিয়া জবাবগুলো সুদূরপ্রসারী বলেই মনে হচ্ছে। এ ঘটনাগুলোকে অচিন্তনীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া হবে স্রেফ অপরিণামদর্শী আত্মতুষ্টি।
তথ্যসূত্র: এএফপি, ক্রাইসিস গ্রুপ ও ফরেন পলিসি
সম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৩ ঘণ্টা আগেএকটা সময় ইসরায়েলের ছোট ও সুসংহত সমাজকে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন বিষয়টি কার্যত বদলে গেছে। বর্তমান সংঘাত, ইসরায়েলে উগ্র ডানপন্থার উত্থান এবং নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিচার বিভাগ সংস্কারের মতো বিষয়গুলো দেশটির সমাজে বিদ্যমান সূক্ষ্ম বিভাজনগুলো
১১ ঘণ্টা আগেট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রূপ এবং যুদ্ধ ও বাণিজ্য সম্পর্কের পরিবর্তন নিয়ে বিশ্লেষণ। চীন, রাশিয়া ও ইউরোপের সাথে নতুন কৌশল এবং মার্কিন আধিপত্যের ভবিষ্যৎ।
২ দিন আগেকোভিড-১৯ মহামারির পর সোশ্যাল মিডিয়া ফাস্ট ফ্যাশন শিল্পকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। জায়গা করে নিচ্ছে ভয়াবহ মানবাধিকার সংকট সৃস্টিকারী ‘আলট্রা-ফাস্ট ফ্যাশন’। সেই শিল্পে তৈরি মানুষেরই ‘রক্তে’ রঞ্জিত পোশাক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে কিনছে অনবরত। আর রক্তের বেসাতি থেকে মালিক শ্রেণি মুনাফা কামিয়েই যাচ্ছে।
৫ দিন আগে