অনলাইন ডেস্ক
পেরুর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। স্প্যানিশ ভাষার এই লেখক শুধু সৃষ্টিশীল সাহিত্য নয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী রচনার জন্যও তিনি খ্যাতি পেয়েছেন। সাহিত্যে উপন্যাসের জন্য বার্গাস যোসার পরিচিতি বেশি। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে আছে ‘কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল (১৯৬৯)’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৮১)’ ও ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার (১৯৭৭)’।
সর্বশেষ উপন্যাসের কাহিনী অবলম্বনে ‘টিউন ইন টুমরো’ নামে একটি সিনেমাও হয়।১৯৯০ সালে নির্মিত ওই ছবিতে অভিনয় করেন কিয়ানু রিভস ও বারবারা হারশি। ২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান বার্গাস যোসা। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাঁর লেখনীর ভূয়সী প্রশংসা করে।
পেশায় সাংবাদিক ও ব্রডকাস্টার বার্গাস যোসা পেরুর দক্ষিণাঞ্চলে জন্ম নেন বার্গাস যোসা। তাঁর প্রথম জীবন কাটে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায়। স্পেনের মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তীতে এক ডজনেরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয় বইটি। ফরাসি লেখক গুস্তাভে ফ্লবার্ত ছিলেন তাঁর লেখার অনুপ্রেরণা। নোবেল জয়ের পর এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা তুলে ধরেছেন।
উপন্যাস, গল্প ও সাহিত্য সমালোচনা ছাড়াও মারিও বার্গাস যোসা বিশ্বরাজনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। ইউরোপ ও মধ্যপাচ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর ভাবনা উদ্রেককারী মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ ছিল তাঁর।
বাংলাদেশের এসিডদগ্ধ নারীদের করুণ ঘটনাও তাঁর সার্বজনীন কৌতূহলকে ছুঁয়ে গেছে। নির্যাতিত এই নারীদের নিয়েও লিখেছিলেন তিনি। স্পানঞা থেকে প্রকাশিত এল পাইস পত্রিকায় ১৯৯৯ সালে এসিডদগ্ধ নারীদেরকে নিয়ে তাঁর লেখাটি প্রকাশিত হয়। পরে ২০০১ সালে লেঙ্গুয়াহে দে লা পাশিয়ন নামের বইতে এটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০৪ সালে ‘দ্য লেঙ্গুয়েজ অব প্যাশন’ নামে সেটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়। ইংরেজি বইটিতে অন্তর্ভুক্ত ‘Weaker sex’ নামের প্রবন্ধে বাংলাদেশের এসিডদগ্ধ নারীদের কথা আছে।
মারিও বার্গাস যোসা লিখেছেন, ‘আমার সামনের ছবিটি হতে পারত হরর মুভির কোনো স্থিরচিত্র। বাংলাদেশের ছয়টি মেয়েকে দেখা যাচ্ছে, সালফিউরিক অ্যাসিডে যাদের চেহারা নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁদের দুজনই নিতান্ত শিশু। একজন অন্ধ হয়ে গেছে, কালো চশমা তাঁর চোখের শূণ্য কোটর ঢেকে রেখেছে। ভৌতিকভাবে বিকৃত হয়ে গেছে তাঁদের চেহারা। রাসায়নিক পরীক্ষাগারের কোনো দুর্ঘটনা নয়; অজ্ঞতা, বোকামি আর নিষ্ঠুরতার শিকার তারা।’
তিনি আরো লিখেন, মানবতাবাদী সংগঠনের সহায়তায় তাঁরা ভ্যালেনসিয়ার আগুয়াস বিবাস হাসপাতালে এসেছে। সেখানে তাদের অপারেশন হবে ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। তবে চিকিৎসক ও সার্জনের দক্ষতা থাকার পরও মেয়েগুলোর জীবন যে চিরদিন মর্মান্তিক বেদনার সাক্ষ্য হয়ে থাকবে, তা বুঝার জন্য ওদের চেহারা দেখাই যথেষ্ট।
এসিডদগ্ধ মেয়েদের সঙ্গে যাওয়া ঢাকার চিকিৎসক লুনা আহমেদের বরাতে সাংবাদিকে যোসা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে মেয়েদের মুখে সালফিউরিক অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার প্রথার অবসান ঘটানো কঠিন। প্রতিবছর গড়ে এধরনের ২৫০টি ঘটনা ঘটে। প্রত্যাশিত যৌতুক না পেয়ে ক্রুদ্ধ স্বামীরা সাধারণত এ ধরনের কাজ করে থাকে। আবার পারিবারিক ঐকমত্যে আয়োজিত বিয়ের ক্ষেত্রেও নারীদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবু বরও এমন কাজ করে।’
নোবেলজয়ী এই লেখক বলছেন, ‘তেলের পাম্পে হয়তো সালফিউরিক অ্যাসিড কেনা যায়। অপরাধীরা কখনো গ্রেপ্তার করা হলেও বিচারকদের ঘুষ দিয়ে পার পেয়ে যান। অপরাধী সাব্যস্ত হলেও দণ্ড খুব গুরুতর নয়। কারণ কোনো নারীর চেহারাকে দানবীয় রূপ দেওয়ার অপরাধে বড়জোর চার কি পাঁচ ডলার জরিমানা দিতে হয়।’
সূত্র: The Language of Passion: Selected Commentary, Picador; Reprint edition (June 1, 2004), p 218-219)
পেরুর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। স্প্যানিশ ভাষার এই লেখক শুধু সৃষ্টিশীল সাহিত্য নয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী রচনার জন্যও তিনি খ্যাতি পেয়েছেন। সাহিত্যে উপন্যাসের জন্য বার্গাস যোসার পরিচিতি বেশি। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসের মধ্যে আছে ‘কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল (১৯৬৯)’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৮১)’ ও ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার (১৯৭৭)’।
সর্বশেষ উপন্যাসের কাহিনী অবলম্বনে ‘টিউন ইন টুমরো’ নামে একটি সিনেমাও হয়।১৯৯০ সালে নির্মিত ওই ছবিতে অভিনয় করেন কিয়ানু রিভস ও বারবারা হারশি। ২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান বার্গাস যোসা। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তাঁর লেখনীর ভূয়সী প্রশংসা করে।
পেশায় সাংবাদিক ও ব্রডকাস্টার বার্গাস যোসা পেরুর দক্ষিণাঞ্চলে জন্ম নেন বার্গাস যোসা। তাঁর প্রথম জীবন কাটে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায়। স্পেনের মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। পরবর্তীতে এক ডজনেরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয় বইটি। ফরাসি লেখক গুস্তাভে ফ্লবার্ত ছিলেন তাঁর লেখার অনুপ্রেরণা। নোবেল জয়ের পর এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা তুলে ধরেছেন।
উপন্যাস, গল্প ও সাহিত্য সমালোচনা ছাড়াও মারিও বার্গাস যোসা বিশ্বরাজনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ লিখেছেন। ইউরোপ ও মধ্যপাচ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর ভাবনা উদ্রেককারী মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ ছিল তাঁর।
বাংলাদেশের এসিডদগ্ধ নারীদের করুণ ঘটনাও তাঁর সার্বজনীন কৌতূহলকে ছুঁয়ে গেছে। নির্যাতিত এই নারীদের নিয়েও লিখেছিলেন তিনি। স্পানঞা থেকে প্রকাশিত এল পাইস পত্রিকায় ১৯৯৯ সালে এসিডদগ্ধ নারীদেরকে নিয়ে তাঁর লেখাটি প্রকাশিত হয়। পরে ২০০১ সালে লেঙ্গুয়াহে দে লা পাশিয়ন নামের বইতে এটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০০৪ সালে ‘দ্য লেঙ্গুয়েজ অব প্যাশন’ নামে সেটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়। ইংরেজি বইটিতে অন্তর্ভুক্ত ‘Weaker sex’ নামের প্রবন্ধে বাংলাদেশের এসিডদগ্ধ নারীদের কথা আছে।
মারিও বার্গাস যোসা লিখেছেন, ‘আমার সামনের ছবিটি হতে পারত হরর মুভির কোনো স্থিরচিত্র। বাংলাদেশের ছয়টি মেয়েকে দেখা যাচ্ছে, সালফিউরিক অ্যাসিডে যাদের চেহারা নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁদের দুজনই নিতান্ত শিশু। একজন অন্ধ হয়ে গেছে, কালো চশমা তাঁর চোখের শূণ্য কোটর ঢেকে রেখেছে। ভৌতিকভাবে বিকৃত হয়ে গেছে তাঁদের চেহারা। রাসায়নিক পরীক্ষাগারের কোনো দুর্ঘটনা নয়; অজ্ঞতা, বোকামি আর নিষ্ঠুরতার শিকার তারা।’
তিনি আরো লিখেন, মানবতাবাদী সংগঠনের সহায়তায় তাঁরা ভ্যালেনসিয়ার আগুয়াস বিবাস হাসপাতালে এসেছে। সেখানে তাদের অপারেশন হবে ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। তবে চিকিৎসক ও সার্জনের দক্ষতা থাকার পরও মেয়েগুলোর জীবন যে চিরদিন মর্মান্তিক বেদনার সাক্ষ্য হয়ে থাকবে, তা বুঝার জন্য ওদের চেহারা দেখাই যথেষ্ট।
এসিডদগ্ধ মেয়েদের সঙ্গে যাওয়া ঢাকার চিকিৎসক লুনা আহমেদের বরাতে সাংবাদিকে যোসা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে মেয়েদের মুখে সালফিউরিক অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার প্রথার অবসান ঘটানো কঠিন। প্রতিবছর গড়ে এধরনের ২৫০টি ঘটনা ঘটে। প্রত্যাশিত যৌতুক না পেয়ে ক্রুদ্ধ স্বামীরা সাধারণত এ ধরনের কাজ করে থাকে। আবার পারিবারিক ঐকমত্যে আয়োজিত বিয়ের ক্ষেত্রেও নারীদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হবু বরও এমন কাজ করে।’
নোবেলজয়ী এই লেখক বলছেন, ‘তেলের পাম্পে হয়তো সালফিউরিক অ্যাসিড কেনা যায়। অপরাধীরা কখনো গ্রেপ্তার করা হলেও বিচারকদের ঘুষ দিয়ে পার পেয়ে যান। অপরাধী সাব্যস্ত হলেও দণ্ড খুব গুরুতর নয়। কারণ কোনো নারীর চেহারাকে দানবীয় রূপ দেওয়ার অপরাধে বড়জোর চার কি পাঁচ ডলার জরিমানা দিতে হয়।’
সূত্র: The Language of Passion: Selected Commentary, Picador; Reprint edition (June 1, 2004), p 218-219)
নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
৮ দিন আগেমৃত্তিকাবিজ্ঞানী অধ্যাপক আলমগীর হাইয়ের প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা, ৫ নম্বর গ্যালারিতে চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়।
৯ দিন আগেজর্জ দুহামেল ১৮৮৪ সালের ৩০ জুন প্যারিসের জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবার আর্থিকভাবে খুব একটা সচ্ছল ছিল না। তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান। সব মিলিয়ে তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি খুব একটা সুখকর নয়; যা তাঁর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস লে নতেয়্যাখ দু হ্যাভখ (Le Notaire du Havre) এ ফুটে ওঠে।
৯ দিন আগেলাতিন আমেরিকার বিখ্যাত ঔপন্যাসিক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের জন্মদিন আজ। ১৯২৭ সালের আজকের এই দিনে, অর্থাৎ ৬ মার্চ দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার অ্যারাকাতাকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মার্কেজ তাঁর লেখায় ‘নিঃসঙ্গতা’ ফুটিয়ে তোলার জন্য বিখ্যাত।
০৬ মার্চ ২০২৫