রাজু নূরুল
২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার আগে ড. আকবর আলি খান সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতাম না। সে সময় দেশের গণতন্ত্রের সীমাহীন ক্রান্তিলগ্নে তিনিসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টার দৃঢ় অবস্থান দেশের আপামর জনতার মতো আমাকেও মুগ্ধ করেছিল। পদত্যাগের সংস্কৃতিহীন বাংলাদেশে পদত্যাগের মাধ্যমে দেশকে এক কঠিন সংকট থেকে বাঁচিয়েছিলেন তাঁরা; যা ছিল এক বিরল দৃষ্টান্ত। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অনার্স শেষ হয়েছে কেবল, মাস্টার্সের ক্লাস শুরুর জন্য অপেক্ষা করছি। পদত্যাগী উপদেষ্টাদের নিয়ে পত্রপত্রিকায় নানা গুণগ্রাহী লেখা ছাপা হয়। সেসব পড়েই আকবর আলি খান বিষয়ে আগ্রহের জন্ম। ধীরে ধীরে তাঁর লেখার সঙ্গে পরিচয় হতে থাকলাম। সে পরিচয়পর্ব আজও চলছে।
প্রথম পড়েছিলাম, ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’। আমি নিজে অর্থনীতির ছাত্র। তত দিনে জেনেছি, অর্থনীতি মানেই হিসাব-নিকাশ, নানা গাণিতিক সূত্র আর থিউরির সন্নিবেশ। যেসব থিউরির প্রায় সবই শুরু হয় ‘ধরি’ বা ‘মনে করি’ দিয়ে। ফলে আকবর আলি খান পড়ে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছিলাম। অর্থনীতির মতো আপাত দাঁতভাঙা একটা বিষয়কে নিতান্ত হাস্যরসের মাধ্যমে কত সহজে উপস্থাপন করা যায়, ১৫টি অতি সুখপাঠ্য প্রবন্ধের মাধ্যমে আকবর আলি খান তা দেখিয়েছিলেন। বইটি পড়লে অর্থনীতির নানা খুঁটিনাটি তো বটেই; এই কঠিন বিষয় সম্পর্কে যে কারও গভীর আগ্রহ যে তৈরি হবে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আরও পরে, উন্নয়ন খাতে কাজ শুরু করার বেশ কিছু বছর পরে, বইটি দ্বিতীয়বার হাতে নিয়েছি। উন্নয়ন আর সুশাসনের নানা সংকট বুঝতে বইটির নানা অংশ পুনঃপাঠ করেছি। মনে হয়েছে, উন্নয়ন অর্থনীতিতে আগ্রহ আছে, এমন যে কারও জন্য এই বই অবশ্যপাঠ্য।
প্রশ্ন জেগেছে, হাস্যরসের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে অর্থনীতির মতো এত সিরিয়াস একটা বিষয় লঘু হয়ে যায় কি না! বিষয়বস্তুর গুরুত্ব কি খাটো হয়ে আসে? এর উত্তরও আকবর আলি খান ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বইয়ে দিয়েছেন। উত্তরের জন্য রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিয়েছেন, ‘আমারে পাছে সহজে বোঝ, তাইতো এত লীলার ছিল; বাহিরে যার হাসির ছটা, ভিতরে তার চোখের জল।’ তাঁর মতে, ‘হালকা ও চটুল ভঙ্গি অর্থনীতির বক্তব্যকে লঘু করে দেয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে গভীরতর দ্যোতনা দেয়। তিনি লিখেছেন, ‘অর্থনীতির দুজ্ঞেয় তত্ত্ব ও দুর্বোধ্য পদ্ধতি রাজনীতিবিদ ও প্রশাসকদের মধ্যে প্রবল অনীহা সৃষ্টি করে। ফলে বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদের অবস্থা রবীন্দ্রনাথের “বিদায় অভিশাপ” কবিতার অভিশপ্ত কচের মতো; তারা যা শিখেছেন তা প্রয়োগ করতে পারেন না। উদাহরণের জন্যও তিনি কৌতুকের আশ্রয় নিয়েছেন, লিখছেন, একবার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তাঁর একটি প্রিয় প্রকল্পের দুর্বলতা বোঝাতে গিয়ে “অপরচুনিটি কস্ট” (বিকল্পের নিরিখে ব্যয়) সম্পর্কে কিছু বক্তব্য পেশের চেষ্টা করেছিলাম। কর্মকর্তাটি রেগে বললেন, “অপরচুনিস্ট” (সুবিধাবাদ) তিনি মোটেও পছন্দ করেন না।’
বইটিরই একটি প্রবন্ধের নাম ‘শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি’। এই প্রবন্ধে তিনি ব্রিটিশ আমলের আসানসোলের মহকুমা প্রশাসক মাইকেল ক্যারিটের কথা লিখেছেন। মাইকেল ক্যারিট তাঁর সঙ্গে এক পাঞ্জাবি ঠিকাদারের কথোপকথন বর্ণনা করেছেন এভাবে, সেই পাঞ্জাবি ঠিকাদার বলেছিল, হুজুর, এ দেশে তিন ধরনের মানুষ আছে। যারা ঘুষ খায় না। যারা ঘুষ খায় এবং কাজ করে। আর ৩ নম্বর দলে আছে কিছু শুয়োরের বাচ্চা, যারা ঘুষও খায় কিন্তু কাজ করে দেয় না। তাঁর মতে, শুয়োরের বাচ্চার অর্থনীতি হলো, ৩ নম্বরও দলের লোকজন, যারা ঘুষ খেয়েও কাজ করে দেয় না। আর শুয়োরের বাচ্চাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হলো, যারা ঝাড়ু হাতে ফটোসেশন করলেও রাস্তাটা পরিষ্কার করে না।
বইটা পড়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে তাঁর সব লেখা পড়ার সুযোগ হয়েছে। নানা জনকে দেওয়া তাঁর প্রতিটা সাক্ষাৎকার, পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ, বিভিন্ন ঈদসংখ্যায় প্রকাশিক প্রবন্ধ খুঁজে খুঁজে পড়েছি, আর দারুণভাবে উপকৃত হয়েছি। তাঁর লেখা পড়ে উন্নয়নের সঠিক দিশা বুঝতে সহায়ক হয়েছে। বৈষম্য নিয়ে সম্যক ধারণা পেয়েছি। বছর কয়েক আগে একটি দৈনিক পত্রিকার ঈদসংখ্যায় দুনিয়াজুড়ে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা নিয়ে একটা প্রবন্ধ ছাপা হলো, সেখানে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারত-পাকিস্তান, কানাডা, যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন কতগুলো সাম্প্রদায়িক হামলা হয়, তার সবিস্তার তুলে এনেছিলেন। জ্ঞান অনুসন্ধানে কতটা অন্তঃপ্রাণ হলে ওরকম একটা লেখা তৈরি করা যায়। হাস্যরস, কৌতুকপ্রধান কিংবা সর্বোপরি সুলেখকই শুধু নন, তিনি ছিলেন পরিশ্রমী লেখক। তাঁর প্রতিটি বই, সাক্ষাৎকার কিংবা নিবন্ধ তথ্য ও উপাত্তনির্ভর। এ ক্ষেত্রে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি নিয়ে পিএইচডি গবেষণা যে তাঁকে সহযোগিতা করেছিল সেটা তাঁর বয়ানেই জানা যায়। তিনি লিখেছেন, ‘প্রায় সাতাশ বছর আগে আমি যখন কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে এমএ পড়তে যাই, তখন আমার শিক্ষকদের কণ্ঠে গণিত বিনা কোনও গীত ছিল না। তাই আমাকে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে অর্থনীতির বুলি (জারগান) ও দূরধিগম্য পদ্ধতি রপ্ত করতে হয়েছে।’
সমাজবিজ্ঞানের দুয়োরানী অর্থনীতিই আজকের সমাজবিজ্ঞানের সম্রাজ্ঞী। রাষ্ট্রচালনা থেকে ইতিহাস, জীবনযাপনের সর্বস্তরে অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ রাখে। অর্থনীতির বই মানে বিদেশি লেখকদের কঠিন ইংরেজিতে লেখা তত্ত্ব। বাংলায় অর্থনীতি পড়ার ইচ্ছে পোষণ যেন অপরাধতুল্য! অথচ জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক এরকম নানা বিষয় নিয়ে তিনি বাংলায় লিখেছেন, ‘আজব ও জবর আজব অর্থনীতি’। যে বইটির সূচিপত্র পাঠককে কৌতূহলোদ্দীপক করে তুলবে। বইটিতে সন্নিবেশ ঘটেছে ‘মিত্রপক্ষের গুলি: অনভিপ্রেত পরিণামের অর্থনীতি’, ‘সুখের লাগিয়া’, ‘জন্মদিনের অর্থনীতি’ নামের দারুণ সুখপাঠ্য প্রবন্ধ।
দারিদ্র্য নিয়ে সুসংবাদ হলো, ১৯৯০ সালে বিশ্বে ৫৫.১ শতাংশ মানুষ সহনীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। ২০১৫ সালে এ হার ২৬.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। দুঃসংবাদ হলো, ২০১৫ সালে পৃথিবীতে ১৯৩ কোটি মানুষ ছিল দরিদ্র, অথচ ১৯০০ সালে সারা দুনিয়ার জনসংখ্যাই ছিল ১৬৫ কোটি। ফলে সম্পূর্ণ দারিদ্র্য বিমোচন এখনো বহু দূরে। এসব নিয়ে তাঁর লেখা বই ‘দারিদ্র্যের অর্থনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’। গোটা বইয়ে যে পরিমাণ তথ্য ও উপাত্ত তিনি হাজির করেছেন, তা দেখে খানিকটা আন্দাজ করা যায়, কতটা শ্রমলব্ধ লেখক ছিলেন তিনি।
শুধু অর্থনীতির বই নয়, সাহিত্যের আরও নানা শাখায় তিনি সাবলীল ছিলেন। যেমন ‘দুর্ভাবনা ও ভাবনা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে’। বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর প্রতিভার মূল্যায়ন নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার আছে। একদল যেমন রবীন্দ্রনাথকে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ লেখক মনে করে, ঠিক আরেক দল আছে যারা মনে করে রবীন্দ্রনাথ অতিমূল্যায়িত হয়েছেন, তারা মনে করে, রবীন্দ্রনাথ ইতিমধ্যে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চলমান অপপ্রচারগুলো তালিকাবদ্ধ করেছেন বইটিতে। তারপর নানা ব্যাখ্যা, ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ দিয়ে সাতটি প্রবন্ধে তিনি প্রমাণ করেছেন যে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চলমান অপপ্রচারের সারবত্তা নেই। আবার রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যারা অতিভক্তি দেখায়, তাদের জন্য আছে আরও সাতটি প্রবন্ধ। আবার জীবনানন্দ দাশের বনলতা কবিতার বই নিয়ে লিখেছেন, ‘চাবিকাঠির খোঁজে: নতুন আলোকে জীবনানন্দের বনলতা সেন’।
২০২২ সালের বইমেলায় ‘পুরানো সেই দিনের কথা’ নামে তাঁর আত্মজীবনীর প্রথম খণ্ড বেরিয়েছে। বেশ ঢাউস সাইজের বই। দামও বেশ চড়া। অথচ এই বইটি এবারের মেলায় প্রকাশিত সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় বইগুলোর অন্যতম। নন-ফিকশন ক্যাটাগরিতে সম্ভবত সবচেয়ে বিক্রীত বই ছিল এটি। লেখক হিসেবে তিনি কতটা অনন্য ছিলেন, পাঠকের কতখানি কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলেন, এটিই তার প্রমাণ। বইয়ের ভূমিকায় বলেছেন, তাঁর আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড আসবে, যেখানে ৭৫-পরবর্তী সময়ের নানা কথা থাকবে। তবে সেটি প্রকাশিত হবে তাঁর মৃত্যুর পরে, কারণ জীবদ্দশায় সব কথা বলে যাওয়া সম্ভব নয়। যদিও প্রবল আগ্রহ নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করেছি; কিন্তু আরও বহু দিন তাঁকে পেতে চেয়েছে দেশ।
লেখক হিসেবে শুধু অর্থনীতির বই নয়, তার রয়েছে আরও অসামান্য সব কাজ। আকবর আলি খানের বইসমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এ দেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ লেখা আছে তাঁর।
সুলেখকের পাশাপাশি তিনি ছিলেন সংগঠকও। ৭১-পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি। নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সঙ্গে কর্তব্য পালনে পিছপা হননি।
এই যে প্রবল উচ্চকণ্ঠ হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাওয়া, অকপটে সত্য কথা বলা, সরকারের খোলাখুলি সমালোচনা করা, এটা বোধ হয় তাঁর মতো এ দেশে আর কেউ করেননি। জেনেছি, একজন মানুষ কতখানি দেশপ্রেমিক হতে পারে, কতটা সৎ হলে কেউ বলতে পারেন যে, ‘আমি সত্য বলতে চেষ্টা করি।’
চাকরিজীবনের শেষের দিকে এসে লেখায় মনোনিবেশ করেন। অবসরের পর তাঁর আবির্ভাব ঘটে পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে। গত কয়েক বছর নিজ হাতে লিখতেও পারতেন না। হাত কাঁপত। শ্রুতলিখনের সাহায্য নিয়েছেন। যদি আরও আগে লেখা শুরু করতেন, যদি সুস্থ থাকতেন, তবে আরও দারুণ সব কাজ উপহার দিয়ে যেতেন নিঃসন্দেহে।
আকবর আলি খানের মৃত্যুতে স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করছি। একজন পাঠক হিসেবে তাঁর কাছ থেকে যা পেয়েছি, সে অনন্য; এ ঋণ শোধের সাধ্য নেই। তাঁর লেখা পড়লে আমাদের বারবার মনে পড়বে যে, একজন লেখক কতটা পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান হতে পারেন। মনে করিয়ে দেবে, কীভাবে প্রচলিত চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হয়। যেকোনে প্রতিকূলতায় শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে তাঁর লেখা বইগুলোর কাছে বারবার ফেরত যেতে হবে আমাদের। বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে, তাঁর মতো এক গুণীকে তার ঔরসে ধারণ করেছে। এক গুণমুগ্ধ পাঠকের পক্ষ থেকে শত সহস্র প্রণতি।
২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হওয়ার আগে ড. আকবর আলি খান সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতাম না। সে সময় দেশের গণতন্ত্রের সীমাহীন ক্রান্তিলগ্নে তিনিসহ আরও কয়েকজন উপদেষ্টার দৃঢ় অবস্থান দেশের আপামর জনতার মতো আমাকেও মুগ্ধ করেছিল। পদত্যাগের সংস্কৃতিহীন বাংলাদেশে পদত্যাগের মাধ্যমে দেশকে এক কঠিন সংকট থেকে বাঁচিয়েছিলেন তাঁরা; যা ছিল এক বিরল দৃষ্টান্ত। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের অনার্স শেষ হয়েছে কেবল, মাস্টার্সের ক্লাস শুরুর জন্য অপেক্ষা করছি। পদত্যাগী উপদেষ্টাদের নিয়ে পত্রপত্রিকায় নানা গুণগ্রাহী লেখা ছাপা হয়। সেসব পড়েই আকবর আলি খান বিষয়ে আগ্রহের জন্ম। ধীরে ধীরে তাঁর লেখার সঙ্গে পরিচয় হতে থাকলাম। সে পরিচয়পর্ব আজও চলছে।
প্রথম পড়েছিলাম, ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’। আমি নিজে অর্থনীতির ছাত্র। তত দিনে জেনেছি, অর্থনীতি মানেই হিসাব-নিকাশ, নানা গাণিতিক সূত্র আর থিউরির সন্নিবেশ। যেসব থিউরির প্রায় সবই শুরু হয় ‘ধরি’ বা ‘মনে করি’ দিয়ে। ফলে আকবর আলি খান পড়ে রীতিমতো বিস্মিত হয়েছিলাম। অর্থনীতির মতো আপাত দাঁতভাঙা একটা বিষয়কে নিতান্ত হাস্যরসের মাধ্যমে কত সহজে উপস্থাপন করা যায়, ১৫টি অতি সুখপাঠ্য প্রবন্ধের মাধ্যমে আকবর আলি খান তা দেখিয়েছিলেন। বইটি পড়লে অর্থনীতির নানা খুঁটিনাটি তো বটেই; এই কঠিন বিষয় সম্পর্কে যে কারও গভীর আগ্রহ যে তৈরি হবে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আরও পরে, উন্নয়ন খাতে কাজ শুরু করার বেশ কিছু বছর পরে, বইটি দ্বিতীয়বার হাতে নিয়েছি। উন্নয়ন আর সুশাসনের নানা সংকট বুঝতে বইটির নানা অংশ পুনঃপাঠ করেছি। মনে হয়েছে, উন্নয়ন অর্থনীতিতে আগ্রহ আছে, এমন যে কারও জন্য এই বই অবশ্যপাঠ্য।
প্রশ্ন জেগেছে, হাস্যরসের মাধ্যমে উপস্থাপন করলে অর্থনীতির মতো এত সিরিয়াস একটা বিষয় লঘু হয়ে যায় কি না! বিষয়বস্তুর গুরুত্ব কি খাটো হয়ে আসে? এর উত্তরও আকবর আলি খান ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ বইয়ে দিয়েছেন। উত্তরের জন্য রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিয়েছেন, ‘আমারে পাছে সহজে বোঝ, তাইতো এত লীলার ছিল; বাহিরে যার হাসির ছটা, ভিতরে তার চোখের জল।’ তাঁর মতে, ‘হালকা ও চটুল ভঙ্গি অর্থনীতির বক্তব্যকে লঘু করে দেয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে গভীরতর দ্যোতনা দেয়। তিনি লিখেছেন, ‘অর্থনীতির দুজ্ঞেয় তত্ত্ব ও দুর্বোধ্য পদ্ধতি রাজনীতিবিদ ও প্রশাসকদের মধ্যে প্রবল অনীহা সৃষ্টি করে। ফলে বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদের অবস্থা রবীন্দ্রনাথের “বিদায় অভিশাপ” কবিতার অভিশপ্ত কচের মতো; তারা যা শিখেছেন তা প্রয়োগ করতে পারেন না। উদাহরণের জন্যও তিনি কৌতুকের আশ্রয় নিয়েছেন, লিখছেন, একবার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তাঁর একটি প্রিয় প্রকল্পের দুর্বলতা বোঝাতে গিয়ে “অপরচুনিটি কস্ট” (বিকল্পের নিরিখে ব্যয়) সম্পর্কে কিছু বক্তব্য পেশের চেষ্টা করেছিলাম। কর্মকর্তাটি রেগে বললেন, “অপরচুনিস্ট” (সুবিধাবাদ) তিনি মোটেও পছন্দ করেন না।’
বইটিরই একটি প্রবন্ধের নাম ‘শুয়োরের বাচ্চাদের অর্থনীতি’। এই প্রবন্ধে তিনি ব্রিটিশ আমলের আসানসোলের মহকুমা প্রশাসক মাইকেল ক্যারিটের কথা লিখেছেন। মাইকেল ক্যারিট তাঁর সঙ্গে এক পাঞ্জাবি ঠিকাদারের কথোপকথন বর্ণনা করেছেন এভাবে, সেই পাঞ্জাবি ঠিকাদার বলেছিল, হুজুর, এ দেশে তিন ধরনের মানুষ আছে। যারা ঘুষ খায় না। যারা ঘুষ খায় এবং কাজ করে। আর ৩ নম্বর দলে আছে কিছু শুয়োরের বাচ্চা, যারা ঘুষও খায় কিন্তু কাজ করে দেয় না। তাঁর মতে, শুয়োরের বাচ্চার অর্থনীতি হলো, ৩ নম্বরও দলের লোকজন, যারা ঘুষ খেয়েও কাজ করে দেয় না। আর শুয়োরের বাচ্চাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হলো, যারা ঝাড়ু হাতে ফটোসেশন করলেও রাস্তাটা পরিষ্কার করে না।
বইটা পড়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে তাঁর সব লেখা পড়ার সুযোগ হয়েছে। নানা জনকে দেওয়া তাঁর প্রতিটা সাক্ষাৎকার, পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধ, বিভিন্ন ঈদসংখ্যায় প্রকাশিক প্রবন্ধ খুঁজে খুঁজে পড়েছি, আর দারুণভাবে উপকৃত হয়েছি। তাঁর লেখা পড়ে উন্নয়নের সঠিক দিশা বুঝতে সহায়ক হয়েছে। বৈষম্য নিয়ে সম্যক ধারণা পেয়েছি। বছর কয়েক আগে একটি দৈনিক পত্রিকার ঈদসংখ্যায় দুনিয়াজুড়ে চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা নিয়ে একটা প্রবন্ধ ছাপা হলো, সেখানে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারত-পাকিস্তান, কানাডা, যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন কতগুলো সাম্প্রদায়িক হামলা হয়, তার সবিস্তার তুলে এনেছিলেন। জ্ঞান অনুসন্ধানে কতটা অন্তঃপ্রাণ হলে ওরকম একটা লেখা তৈরি করা যায়। হাস্যরস, কৌতুকপ্রধান কিংবা সর্বোপরি সুলেখকই শুধু নন, তিনি ছিলেন পরিশ্রমী লেখক। তাঁর প্রতিটি বই, সাক্ষাৎকার কিংবা নিবন্ধ তথ্য ও উপাত্তনির্ভর। এ ক্ষেত্রে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি নিয়ে পিএইচডি গবেষণা যে তাঁকে সহযোগিতা করেছিল সেটা তাঁর বয়ানেই জানা যায়। তিনি লিখেছেন, ‘প্রায় সাতাশ বছর আগে আমি যখন কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে এমএ পড়তে যাই, তখন আমার শিক্ষকদের কণ্ঠে গণিত বিনা কোনও গীত ছিল না। তাই আমাকে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে অর্থনীতির বুলি (জারগান) ও দূরধিগম্য পদ্ধতি রপ্ত করতে হয়েছে।’
সমাজবিজ্ঞানের দুয়োরানী অর্থনীতিই আজকের সমাজবিজ্ঞানের সম্রাজ্ঞী। রাষ্ট্রচালনা থেকে ইতিহাস, জীবনযাপনের সর্বস্তরে অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ রাখে। অর্থনীতির বই মানে বিদেশি লেখকদের কঠিন ইংরেজিতে লেখা তত্ত্ব। বাংলায় অর্থনীতি পড়ার ইচ্ছে পোষণ যেন অপরাধতুল্য! অথচ জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক এরকম নানা বিষয় নিয়ে তিনি বাংলায় লিখেছেন, ‘আজব ও জবর আজব অর্থনীতি’। যে বইটির সূচিপত্র পাঠককে কৌতূহলোদ্দীপক করে তুলবে। বইটিতে সন্নিবেশ ঘটেছে ‘মিত্রপক্ষের গুলি: অনভিপ্রেত পরিণামের অর্থনীতি’, ‘সুখের লাগিয়া’, ‘জন্মদিনের অর্থনীতি’ নামের দারুণ সুখপাঠ্য প্রবন্ধ।
দারিদ্র্য নিয়ে সুসংবাদ হলো, ১৯৯০ সালে বিশ্বে ৫৫.১ শতাংশ মানুষ সহনীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। ২০১৫ সালে এ হার ২৬.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। দুঃসংবাদ হলো, ২০১৫ সালে পৃথিবীতে ১৯৩ কোটি মানুষ ছিল দরিদ্র, অথচ ১৯০০ সালে সারা দুনিয়ার জনসংখ্যাই ছিল ১৬৫ কোটি। ফলে সম্পূর্ণ দারিদ্র্য বিমোচন এখনো বহু দূরে। এসব নিয়ে তাঁর লেখা বই ‘দারিদ্র্যের অর্থনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’। গোটা বইয়ে যে পরিমাণ তথ্য ও উপাত্ত তিনি হাজির করেছেন, তা দেখে খানিকটা আন্দাজ করা যায়, কতটা শ্রমলব্ধ লেখক ছিলেন তিনি।
শুধু অর্থনীতির বই নয়, সাহিত্যের আরও নানা শাখায় তিনি সাবলীল ছিলেন। যেমন ‘দুর্ভাবনা ও ভাবনা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে’। বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর প্রতিভার মূল্যায়ন নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার আছে। একদল যেমন রবীন্দ্রনাথকে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ লেখক মনে করে, ঠিক আরেক দল আছে যারা মনে করে রবীন্দ্রনাথ অতিমূল্যায়িত হয়েছেন, তারা মনে করে, রবীন্দ্রনাথ ইতিমধ্যে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চলমান অপপ্রচারগুলো তালিকাবদ্ধ করেছেন বইটিতে। তারপর নানা ব্যাখ্যা, ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ দিয়ে সাতটি প্রবন্ধে তিনি প্রমাণ করেছেন যে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে চলমান অপপ্রচারের সারবত্তা নেই। আবার রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যারা অতিভক্তি দেখায়, তাদের জন্য আছে আরও সাতটি প্রবন্ধ। আবার জীবনানন্দ দাশের বনলতা কবিতার বই নিয়ে লিখেছেন, ‘চাবিকাঠির খোঁজে: নতুন আলোকে জীবনানন্দের বনলতা সেন’।
২০২২ সালের বইমেলায় ‘পুরানো সেই দিনের কথা’ নামে তাঁর আত্মজীবনীর প্রথম খণ্ড বেরিয়েছে। বেশ ঢাউস সাইজের বই। দামও বেশ চড়া। অথচ এই বইটি এবারের মেলায় প্রকাশিত সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় বইগুলোর অন্যতম। নন-ফিকশন ক্যাটাগরিতে সম্ভবত সবচেয়ে বিক্রীত বই ছিল এটি। লেখক হিসেবে তিনি কতটা অনন্য ছিলেন, পাঠকের কতখানি কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলেন, এটিই তার প্রমাণ। বইয়ের ভূমিকায় বলেছেন, তাঁর আত্মজীবনীর দ্বিতীয় খণ্ড আসবে, যেখানে ৭৫-পরবর্তী সময়ের নানা কথা থাকবে। তবে সেটি প্রকাশিত হবে তাঁর মৃত্যুর পরে, কারণ জীবদ্দশায় সব কথা বলে যাওয়া সম্ভব নয়। যদিও প্রবল আগ্রহ নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করেছি; কিন্তু আরও বহু দিন তাঁকে পেতে চেয়েছে দেশ।
লেখক হিসেবে শুধু অর্থনীতির বই নয়, তার রয়েছে আরও অসামান্য সব কাজ। আকবর আলি খানের বইসমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এ দেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ লেখা আছে তাঁর।
সুলেখকের পাশাপাশি তিনি ছিলেন সংগঠকও। ৭১-পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি। নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সঙ্গে কর্তব্য পালনে পিছপা হননি।
এই যে প্রবল উচ্চকণ্ঠ হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাওয়া, অকপটে সত্য কথা বলা, সরকারের খোলাখুলি সমালোচনা করা, এটা বোধ হয় তাঁর মতো এ দেশে আর কেউ করেননি। জেনেছি, একজন মানুষ কতখানি দেশপ্রেমিক হতে পারে, কতটা সৎ হলে কেউ বলতে পারেন যে, ‘আমি সত্য বলতে চেষ্টা করি।’
চাকরিজীবনের শেষের দিকে এসে লেখায় মনোনিবেশ করেন। অবসরের পর তাঁর আবির্ভাব ঘটে পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে। গত কয়েক বছর নিজ হাতে লিখতেও পারতেন না। হাত কাঁপত। শ্রুতলিখনের সাহায্য নিয়েছেন। যদি আরও আগে লেখা শুরু করতেন, যদি সুস্থ থাকতেন, তবে আরও দারুণ সব কাজ উপহার দিয়ে যেতেন নিঃসন্দেহে।
আকবর আলি খানের মৃত্যুতে স্বজন হারানোর বেদনা অনুভব করছি। একজন পাঠক হিসেবে তাঁর কাছ থেকে যা পেয়েছি, সে অনন্য; এ ঋণ শোধের সাধ্য নেই। তাঁর লেখা পড়লে আমাদের বারবার মনে পড়বে যে, একজন লেখক কতটা পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান হতে পারেন। মনে করিয়ে দেবে, কীভাবে প্রচলিত চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হয়। যেকোনে প্রতিকূলতায় শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ফলে তাঁর লেখা বইগুলোর কাছে বারবার ফেরত যেতে হবে আমাদের। বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে, তাঁর মতো এক গুণীকে তার ঔরসে ধারণ করেছে। এক গুণমুগ্ধ পাঠকের পক্ষ থেকে শত সহস্র প্রণতি।
আকাশি রঙের বাড়ি। দোতলায় দুটি কক্ষে আলো জ্বলছে। সন্ধ্যার আবছা আঁধারে ছেয়ে আছে বাড়িটির চারদিকের গাছগুলো। সন্ধ্যার নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। বাড়ির সামনে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জলাশয়ে প্রকৃতির এই মোহনীয় ছবি প্রতিফলিত হয়েছে।
২ দিন আগেচারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
১৩ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
২০ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
২০ দিন আগে