তিল ধারণের ঠাঁই নেই কুয়াকাটায়, হোটেল-মোটেলে ভাড়া দ্বিগুণ

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২২, ১৭: ০২
Thumbnail image

টানা পাঁচ দিনের ছুটি ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসছেন মনোমুগ্ধকর সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায়। বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে তালে মেতে উঠছেন ভ্রমণপিপাসুরা। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তবে নাগরিক কোলাহল থেকে সাগরের বিশালতা উপভোগ করতে এলেও পদে পদে বিব্রত হচ্ছেন পর্যটকেরা। 

পর্যটকেরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ছুটির দিনগুলোতে হোটেল-মোটেলে ভাড়া দ্বিগুণ নিচ্ছেন মালিকেরা। এক হাজার টাকা রুমের ভাড়া বেড়ে আড়াই থেকে তিন হাজারে গিয়ে ঠেকেছে বলে অভিযোগ পর্যটকদের। এ ছাড়া খাবারের দামও খুব বেশি। দামের ব্যাপারে সহনীয় পর্যায়ে হলে কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়বে বলেও মন্তব্য তাঁদের। 

জানা গেছে, বুধবার ছিল দুর্গাপূজার ছুটি, শুক্র ও শনি সাপ্তাহিক ছুটি এবং রোববার ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি। মাঝখানে বৃহস্পতিবার এক দিনের বাড়তি ছুটি নিয়ে টানা পাঁচ দিনের ছুটি উপভোগ করতে পর্যটকেরা ছুটে আসেন কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে। কেউ স্বামী-স্ত্রী, কেউ পুরো পরিবার নিয়ে এবং কেউ কেউ একা উপভোগ করতে এসেছেন কুয়াকাটার নয়নাভিরাম দৃশ্য। বিগত বছরগুলোতে এই বর্ষা মৌসুমের দীর্ঘ ছুটিতেও কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত থাকত প্রাণহীন ও স্পন্দনহীন। একাধিক ফেরি ভোগান্তির কারণে কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন পর্যটকেরা। কিন্তু এ বছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পদ্মা সেতু পাল্টে দিয়েছে ।নেক কিছু। এখন আর মৌসুমি পর্যটকের আগমন হচ্ছে না, পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে কুয়াকাটায় প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে থাকছে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি। এ কারণে শরতের বিদায়লগ্নেও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর এই সমুদ্রসৈকত। 
 
ঢাকার উত্তরা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা পর্যটক আহমেদ হাসান বলেন, ‘এই সপ্তাহে বড় একটা ছুটি পেয়েই কুয়াকাটায় এলাম। ভালোই লেগেছে, তবে ব্যবসায়ীদের আর একটু সহনশীল হওয়া উচিত। পর্যটক দেখলেই দাম বাড়ানোটা বিব্রতকর। ক্ষেত্রবিশেষে হোটেল ভাড়াও দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে।’ 

মিরপুর থেকে ঘুরতে আসা গৃহবধূ নাজনীন আক্তার লুনা বলেন, ‘চাকরিজীবী হওয়ায় পরিবারকে খুব কম সময় দেওয়া হয়। তাই এই ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। যেহেতু কক্সবাজার থেকে কুয়াকাটায় এখন আসতে অনেক কম সময় লাগছে, তাই পদ্মা পাড়ি দিয়ে কুয়াকাটায় চলে এসেছি। সব মিলিয়ে ভালো লেগেছে। তবে এখানের থাকার হোটেলে ভাড়া দ্বিগুণ এবং খাবারের হোটেলগুলোতেও খাবারের দাম দ্বিগুণ। এ ব্যাপারে প্রশাসনের একটু নজরদারি করা উচিত।’ 

টানা পাঁচ দিনের ছুটি ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। ছবি: আজকের পত্রিকাতবে হোটেল-মোটেলে ভাড়া বেশি নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব শরীফ। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে কুয়াকাটায় এখন পর্যটকে ভরা থাকবে। আর আমাদের নিবন্ধিত হোটেলগুলোতে পর্যটকদের কাছে ভাড়া বেশি রাখার কোনো সুযোগ নেই। যদি এমন হয় তাহলে আমরা মালিক সমিতি ব্যবস্থা নেব।’ 

পটুয়াখালী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহম্মদ সেলিম বলেন, ‘সম্প্রতি কুয়াকাটার এমন পরিস্থিতির কারণে বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল ও আবাসিক হোটেলকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযোগ পেলে ফের এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।’ 

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত