Ajker Patrika

নাব্যতা-সংকট: লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরি চলাচল ব্যাহত, দীর্ঘ যানজট

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩: ৩৯
নাব্যতা-সংকট: লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরি চলাচল ব্যাহত, দীর্ঘ যানজট

শীত মৌসুমে কুয়াশা ও নাব্যতার সংকটের কারণে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

আজ শনিবার সকালে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ভোলার ইলিশা ঘাটে যাওয়ার জন্য মজুচৌধুরীহাটের ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় বসে আছে। অপর পারেও একই অবস্থা। এক মাস ধরে মানুষের এই দুর্ভোগ চলছে।

বিআইডব্লিউটিসির কর্তকর্তারা জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুট দিয়ে যাতায়াত করে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটটি চালু করে সরকার। এখন কলমিলতা, কনকচাপা, কিষানী ও কাবেরীসহ পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া প্রতিদিন এই ঘাট থেকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে ৮ থেকে ১০টি লঞ্চ ভোলার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

মজুচৌধুীহাট ফেরিঘাটের এক কিলোমিটার দূরে রহমতখালী চ্যানেল। সম্প্রতি এই চ্যানেলে জেগে উঠেছে বিশাল এক ডুবোচর। এই নৌ-রুটের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকটি নতুন ডুবোচর জেগে উঠেছে। এসব ডুবোচরের আশপাশের এলাকায় ভাটার সময় থাকে কোমরসমান পানি। এতে করে প্রতিদিন চার থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান ডুবোচরে আটকে থাকে। জোয়ারের সময় নদীতে পানি কিছুটা বাড়ে। তখন ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ফেরি ও লঞ্চের চালকেরা জানান, চ্যানেলের মুখ সরু হয়ে পড়ায় ফেরি চলাচল বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফগ লাইট না থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে সামান্য কুয়াশায়ও মাঝনদীতে ফেরি নোঙর করাতে বাধ্য হন তাঁরা। ফলে দুই পারে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আটকে থাকতে হয় দিনের পর দিন।

ভোলাগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক মহিউদ্দিন বলেন, গত এক মাস ধরে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে নাব্যসংকটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় এই নৌ-রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের। সঠিক সময়ে গন্তব্যে ফেরি ও লঞ্চ না পৌঁছায় দুই পারে দিনের পর দিন আটকে থাকতে হয়। এ কারণে ট্রাকের কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা রডবোঝাই ট্রাকের চালক হানিফ মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার রাতে ঘাটে এসেছি। এখন পর্যন্ত সিরিয়াল পাইনি। ভোলা যাব, কিন্তু পানি কম থাকায় ডুবোচরের কারণে ঠিকমতো ফেরি চলাচল করতে পারছে না। এতে করে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছি। পাশাপাশি টয়লেট ও খাবারের হোটেলের সংকটও রয়েছে। এইভাবে আমার মতো আরও অনেক চালক পাঁচ থেকে সাত দিন ধরে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে ঘাটে বসে আছে।’

জেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, সঠিক সময়ে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রতিবছরই নামমাত্র ড্রেজিং করা হয়। বাস্তবে কোনো কাজ হচ্ছে না। দ্রুত জেগে ওঠা চরগুলো ড্রেজিং করে নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটের (বিআইডাব্লিউটিসি) ব্যবস্থাপক মো. কাউছার বলেন, বর্তমানে পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে। ঘন কুয়াশা ও নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়েই ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। এ ছাড়া প্রতিবছরই ড্রেজিং করা হয়। তবে নামমাত্র। এসব ড্রেজিং দিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এপ্রিলে আসছে সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসন, প্রস্তুত মডেল–লোগো

এ কে খন্দকারের নামে কুর্মিটোলা বিমানঘাঁটির নামকরণ

বিয়ের ১০ দিন আগে গয়না-নগদ টাকাসহ মেয়ের হবু স্বামীর সঙ্গে পালালেন মা

পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল

পাঠানো ছবি ও ভিডিও অন্যের ফোনে সেভ হওয়া ঠেকাতে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত