চট্টগ্রামে চার দফা পিটিয়ে যুবক হত্যা, তিন মাস পর গ্রেপ্তার ২

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ১৪
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ২৯
বিপ্লব উদ্যানে গণপিটুনির শিকার ইসলাম বিটুর লাশ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের খুলশীতে তিন মাস আগে এক যুবককে চোর-ছিনতাইকারী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করার পর বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন গাজী মো. আলমগীর প্রকাশ আলম (৩৫) এবং মো. জানে আলম (৩৩)। এঁদের মধ্যে আলমগীর পেশায় নৈশপ্রহরী এবং জানে আলম শ্রমিক।

এর আগে ৮ আগস্ট ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ইসলাম বিটু (২৫) নামে এক যুবককে চোর ও ছিনতাইকারী সন্দেহে ধাওয়া করা হয়। এরপর তাঁকে চার দফায় চার জায়গায় একাধিক ব্যক্তি মিলে পিটুনি দেয়। পরে তাঁর মৃত্যু হলে সবাই সটকে পড়ে। ওই দিন ২ নম্বর গেট কবরস্থানের পাশ থেকে ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরবর্তী সময় এ ঘটনায় নিহতের মা বিউটি বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। নিহত যুবক গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর থানার বনগ্রামের ছোট গয়েসপুর এলাকার মৃত ফুল মিয়ার ছেলে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘ভিকটিমের মায়ের মামলার পর তদন্তপ্রাপ্ত হয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিমকে প্রথমে চোর সন্দেহে তাড়া করে ২ নম্বর গেটসংলগ্ন ড্রেনের সামনে গিয়ে আটকায় এক নৈশপ্রহরী। এরপর গ্রেপ্তার আলমগীর গিয়ে ওই নৈশপ্রহরীর হাতে লোহার রড তুলে দিয়ে পেটানোর নির্দেশ দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এরপর দ্বিতীয় দফায় ভিকটিম বিটুকে ২ নম্বর গেট এলাকাসংলগ্ন নার্সারিতে, তৃতীয় দফায় মুরাদপুর এলাকার সড়ক বিভাজনের লোহার অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। ততক্ষণে আলমগীর এবং প্রথম প্রহারকারী নৈশপ্রহরীর সঙ্গে আরও কয়েকজন যোগ দেয়। যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার জানে আলমও ছিল। সর্বশেষ বিপ্লব উদ্যানে বেঁধে চতুর্থ দফায় একাধিকজন মিলে পিটিয়ে হত্যা করে বিটুকে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও প্রথমে যিনি লোহার রড দিয়ে মারধর করেছে তিনি পলাতক আছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’

গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক ঘটনার নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান এডিসি তারেক আজিজ।

উল্লেখ্য, বিটুকে যে সময় পিটিয়ে মারা হয়েছিল, তখন চট্টগ্রাম নগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি পর্যায়ে ছিল। হত্যার ঘটনার ঠিক তিন দিন আগে ৫ আগস্ট তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতার হামলার শিকার হয় নগরের থানাগুলো। এতে মূলত অচল ছিল নগরের থানা-পুলিশের কার্যক্রম।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত