Ajker Patrika

আ.লীগ নেতার ফ্ল্যাট দখল নিতে ত্রিপক্ষীয় লড়াই

  • নগরের খুলশী এলাকার সাইফ ভ্যালি ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন বিদ্যুৎ বড়ুয়া
  • সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। এ সুযোগে ওই ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা তিনজনের
  • অভিযুক্তরা হলেন আ.লীগের ফারুক চৌধুরী, ছাত্রদলের রানা ও কৃষক দলের সাইফুদ্দিন
 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়ার ভাই আওয়ামী লীগের নেতা বিদ্যুৎ বড়ুয়া থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের খুলশী আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের সাইফ ভ্যালি ভবনের একটি ফ্ল্যাটে। সরকার পতনের পর আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। এ সুযোগে ওই ফ্ল্যাট দখলে নিতে চেষ্টা করছেন বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস শেখ মোহাম্মদ ফারুক চৌধুরী, ছাত্রদল নেতা মো. রানা এবং সাইফ ভ্যালির মালিক কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুদ্দিন। এ নিয়ে মহড়াও দিয়েছে দুই পক্ষ।

গত ২৯ ডিসেম্বর বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় পুরো ঘটনা ধরা পড়েছে। এর ফুটেজ এ প্রতিবেদকের সংগ্রহেও এসেছে। ওই ঘটনায় মো. সাইফুদ্দিন নগরীর খুলশী থানায় একটি জিডি করেছেন। এতে মো. রানা, মো. জামাল, মো. মোজাম্মেল ও মো. নিরবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

ফুটেজে দেখা যায়, ফ্ল্যাটটির দখল নিতে বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস শেখ মোহাম্মদ ফারুক চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে পলিটেকনিক ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয়দানকারী মো. রানা দলবলসহ হাজির হন ভবনের সামনে। এ সময় মো. রানার সঙ্গে তাঁর স্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু সাইফ ভ্যালির মালিক মো. সাইফুদ্দিন তাঁদের বাধা দেন। এ অবস্থায় রানা তাঁর আরও লোকজনকে মোবাইল ফোনে ডেকে ওই ভবনের সামনে জড়ো করেন। তাঁদের অনেকে পলিটেকনিক ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পরিচয় দেন। মুহূর্তেই জড়ো হন শতাধিক লোক।

একপর্যায়ে ওই ভবনে ঢোকার জন্য মালিকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান রানা ও তাঁর লোকজন। পরে খুলশী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এতেও রানার লোকজন নিবৃত্ত না হলে ভবনমালিক সেনাবাহিনী ডাকার কথা বলেন। এ কথা শোনার পর রানা ও তাঁর লোকজন ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

এ বিষয়ে মো. সাইফুদ্দিন দাবি করেন, ‘আমার ভবনের ওই বাসায় বিদ্যুৎ বড়ুয়া জোর করে থাকতেন। পটপরিবর্তনের পর তিনি চলে যান। ওই দিন বিদ্যুৎ বড়ুয়ার পিএস ফারুক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা পরিচয় দেওয়া মো. রানা দলবল নিয়ে আমার ভবনের সামনে এসে ওই বাসায় ওঠার চেষ্টা করেন। আমি বাধা দিই। এ ঘটনায় আমি থানায় জিডি করেছি।’

তবে পিএস ফারুক বলেন, ‘বাসাটি বিদ্যুৎ দাদার ছিল। এ কারণে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।’

আর ছাত্রদল নেতা মো. রানা বলেন, ‘আমি বাসাটি বিদ্যুৎ দার কাছ থেকে বায়না করেছি।’

গত ৫ আগস্টের পর বিদ্যুৎ বড়ুয়া আত্মগোপনে; তাহলে কীভাবে বায়না করলেন—জানতে চাইলে রানা বলেন, মিডলম্যান তাঁকে বেকায়দায় ফেলেছেন।

এ বিষয়ে আত্মগোপনে থাকা বিদ্যুৎ বড়ুয়া ফোনে বলেন, ‘বাসাটি আমার। ভাড়াটে হিসেবে আমি মো. রানাকে সেখানে থাকতে বলেছিলাম। কিন্তু ভবনমালিক এতে বাধা দিয়েছেন। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে আমি খুলশী থানায় জিডি করেছিলাম।’ উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ বড়ুয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন।

বাধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভবনমালিক মো. সাইফুদ্দিন বলেন, ‘আমার ভবনের জায়গাটি ডেভেলপ করার জন্য একটি আবাসন কোম্পানিকে দিয়েছিলাম। ওই কোম্পানি আমার অংশের কাজ না করে তার অংশেরগুলো বিক্রি করা শুরু করে। এটা জানতে পেরে আমি ডেভেলপার অংশের ওই ফ্ল্যাটে ভাড়াটে রানাকে উঠতে বাধা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত