মহালছড়ির ৬ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা, ভোগান্তিতে ৫ গ্রামের মানুষ

প্রতিনিধি, মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২১, ১৩: ০১
Thumbnail image

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি সদরের জ্ঞানোদয় বনবিহার এলাকা থেকে কালাচানপাড়া পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ৫ গ্রামের ২-৩ হাজার মানুষ। বেশ কয়েক বছর যাবৎ গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে রাস্তাটি মেরামত করে আসছে। কিন্তু এবার তারও কোনো উপায় নেই। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটির পাশ ভেঙে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়, মহালছড়ি সদর থেকে প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার দূরে এলাকার পাঁচটি গ্রাম। কালাচানপাড়ায় একটি মাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছয় কিলোমিটার দূরে কেরেঙানালা গ্রামে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। একমাত্র এই রাস্তা দিয়ে কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এ ছাড়া ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলচালকেরা এ রাস্তায় ভাড়া চালিয়ে পরিবারের ভরণ–পোষণ করে থাকেন। কিন্তু এখন রাস্তার বেহাল অবস্থা হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, এলাকার শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ১০-১২ কিলো পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে জ্ঞানোদয় বনবিহার এলাকা থেকে কালাচানপাড়া পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা বর্ষার পানিতে ভেঙে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া রাস্তার বেশির ভাগ অংশে কাঁদা আর বড় বড় গর্ত রয়েছে।

এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মোটরসাইকেলচালক মিলন চাকমা বলেন, এই গ্রামে প্রায় ৫০ জন চালক ভাড়া মোটরসাইকেল চালিয়ে তাঁদের সংসার চালান। কিন্তু এখন রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় কীভাবে পরিবারের ভরণ–পোষণ করব ভেবে পাচ্ছি না। জানি না এই ভোগান্তি কত দিন পোহাতে হবে।

বসন্তপাড়া গ্রামের কার্বারি সুশীল জীবন চাকমা বলেন, `বর্তমানে রাস্তার যে হাল হয়েছে, এতে পায়ে হেঁটে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ রাস্তার সমস্যা নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেকবার বলেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে রাস্তার যে বেহাল অবস্থা, এতে গ্রামের কোনো জরুরি রোগী হাসপাতালে নিতে হলে তা কীভাবে মোকাবিলা করব ভেবে পাচ্ছি না। এ ছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফলন বাজারজাতকরণ, স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের যাতায়াত করা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামবাসী। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করে গ্রামবাসীর দুর্ভোগ নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।'

স্থানীয় ইউপি সদস্য টান্তু মনি চাকমা রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন,`রাস্তা সংস্কারের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেছি। অনুমোদন পেলে রাস্তার কাজ করা হবে।'

এ ব্যাপারে মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল বলেন, `তিন বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে রাস্তাটির কিছু অংশে মাটি কাটার কাজ হয়েছিল। কথা ছিল রাস্তাটিতে ইট সলিংয়ের কাজ করে দেবে। কিন্তু হঠাৎ কী কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেল তা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে ব্যবস্থা নেব।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত